somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাদকের হাট

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আগারগাঁও ও তেজগাঁওয়ের বিভিন্ন স্পট এমনকি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দিন-রাতের বিভিন্ন সময়ে যেন মাদকের হাট বসে থাকে। দিনের বেলা অনেকটা গোপনে বিভিন্ন ধরনের মাদক বিক্রি হলেও সন্ধ্যার পর থেকেই এসব এলাকা মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের আনাগোনায় সরগরম হয়ে ওঠে। পুরম্নষ মাদক ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি মহিলারাও এ ব্যবসায় সমান তালে সক্রিয় রয়েছে। পুলিশের নাকের ডগায় একাধিক চিহ্নিত চক্র অবাধে মাদকদ্রব্য বিক্রি করে আসলেও প্রতিকার মিলছে না। মাদক ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ মাঝেমধ্যে গ্রেপ্তার হলেও অল্প সময়ের মধ্যেই তারা জামিনে ছাড়া পেয়ে আবার মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে।ভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ সংলগ্ন বস্ত্মি, ঢাকা উদ্যান, বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, জেনেভা ক্যাম্প, টাউন হল বাজার, টাউন হল সুইপার কলোনি এলাকায় অবাধে বিক্রি হচ্ছে মাদকদ্রব্য। সুইপার কলোনিতে গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবা ও হেরোইন পাওয়া যায় সহজে। ২৫০ টাকায় হেরোইনের পুড়িয়া পাওয়া যায় টাউন হল বাজারের দোতলায় ও সুইপার পট্টিতে। এখানে প্রতিদিন কমপÿে ১০ থেকে ১৫ কেজি গাঁজা বিক্রি হয়। ২০ টাকার গাঁজার পুড়িয়া রাত ও দিনের যে কোনো সময় পাওয়া যায় বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের আশপাশের রাস্ত্মার ওপরে। রমিজ, আবুল, মোশারফ, গাঁজার চালান নিয়ে আসে। তাদের হয়ে আরো ১০/১৫ জন তরম্নণ পুড়িয়া তৈরী করে বিক্রি করে। মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে পাওয়া যায় সব ধরনের মাদকদ্রব্য। গত মাসে জেনেভা ক্যাম্প থেকে আইনশৃঙ্খলা রÿাকারী বাহিনীর সদস্যরা বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে।রাজধানীর সরচেয়ে বড় গাঁজার বাজার হচ্ছে তেজগাঁওয়ে। রেলস্টেশন থেকে শুরম্ন হয়ে কাওরানবাজার মাছের আড়ৎ পর্যন্ত্ম রেললাইনের পাশে এ গাঁজার বাজার। গাঁজা ছাড়াও এখানে অনায়াসে মেলে ফেনসিডিল। রেলাইনের বস্ত্মির ছোট ছোট ঘরগুলোতে বাইরে থেকে চরম দৈন্যতার ছাপ থাকলেও এর ভেতর থেকেই বিক্রি হয় হাজার হাজার টাকার মাদকদ্রব্য। গাঁজা ছাড়াও এখানে পাওয়া যায় হেরোইন ও ইয়াবা।
গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে, তেজগাঁও এলাকায় প্রতিদিন গড়ে ৩৫ থেকে ৪০ কেজি গাঁজা বিক্রি হয়। ময়মনসিংহ, হালুয়াঘাট, কুমিলস্না, বি-বাড়িয়া থেকে ট্রেনে আসে গাঁজা, ফেনসিডিল ও ইয়াবার চালান। খুচরা পর্যায়ে ১০ টাকা থেকে ২০০ টাকায় এক পুড়িয়া গাঁজা পাওয়া যায়। এই এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী মাদক ব্যবসায়ী। তারা পাইকারি দামে গাঁজা কিনে পুড়িয়া বানিয়ে বিক্রি করে। খুচরা পর্যায়ে বিক্রির জন্য আরো প্রায় শতাধিক নারী ও পুরম্নষ মাদক ব্যবসায়ী এখান থেকে গাঁজা কিনে নেয়। এরপর তারা ভ্রাম্যমাণ অবস্থায় বিক্রি করে। রাতের বেলায় তরকারির বাজার জমে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে মাদকের বাজারও জমে ওঠে। নারী মাদক ব্যবসায়ীরা গাঁজা ও হেরোইনের পুড়িয়া কোমড়ে গুজে বিভিন্ন স্থানে দাঁড়িয়ে থাকে। মাদকসেবীরা এসব মহিলাদের চেনে। তারা এসে মিনিটের মধ্যে মাদক কিনে কেটে পড়ে। এক সময় পাওয়া না গেলেও এখন মরণ নেশা হিসাবে খ্যাত ইয়াবা ট্যাবলেটও পাওয়া যায় অনায়াসে। তৌফিক নামের এক মাদক ব্যবসায়ী ইয়াবার মূল সরবরাহকারী। কক্সবাজার, টেকনাফ থেকে বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে ইয়াবা সংগ্রহ করে তৌফিক। কাওরান বাজার এলাকার ইয়াবাসেবীদের কাছে তিনি ‘ইয়াবা তৌফিক’ নামেই পরিচিত। তৌফিক এক স্থানে বেশি সময় অবস্থান করে না। কিছুদিন ধরে তার হয়ে আরো কয়েকজন তরম্নণ কাজ করছে বলে জানা গেছে। একটি ইয়াবা বিক্রি হয় ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। প্রতিরাতে শতাধিক ইয়াবা বিক্রি হয় বলে গোয়েন্দারা জানতে পেয়েছেন। তেজগাঁওয়ে নারী মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাব সুফিয়া বেগমের। তিনি হেরোইন বিক্রি করেন। ২০০ টাকা থেকে শুরম্ন করে বিভিন্ন দামে হোরোইনের পুড়িয়া পাওয়া যায় তার কাছে। রম্নবেলের মা নামেও সুফিয়ার পরিচিতি আছে।
রাজধানীর আগারগাঁও এলাকার মাদক ব্যবসা চলছে আগের গতিতেই। তালতলা, আগারগাঁও কলোনির আশপাশে অবাধে চলছে মাদক ব্যবসা। মাদক ব্যবসায়ীদের আনাগোনা চলে কলোনির ভেতর পর্যন্ত্ম তাদের কারণে কলোনির নিরীহ বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অনেকাংশেই ব্যহত হচ্ছে। নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন বয়সী যুবকরা আগারগাঁও এলাকায় এসে মাদক কিনে নিয়ে যাচ্ছে। আদনান, আজিজ, মনির, আবুল, সাজু এলাকার মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। এসব মাদক ব্যবসায়ীরা রাতের বেলায় ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটায়। গতমাসে পুলিশ ছিনতাইকালে একটি প্রাইভেটকারসহ আগারগাঁও নতুন রাস্ত্মার সামনে থেকে গ্রেপ্তার করে মাদক ব্যবসায়ী ও ছিনতাইকারী সাজু ও আজিজুলকে। তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশী পিস্ত্মল ও ৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। সাজুর কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে আগারগাঁও এলাকার মাদক সিন্ডিকেটের বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীর নাম।
এদিকে মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বর্তমানে মাদক উদ্যানে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত্ম সেখানে চলে মাদক সেবনসহ মাদক কেনা-বেচা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসমাগমকে কেন্দ্র করে সেখানে গড়ে উঠেছে প্রায় ৫ শতাধিক দোকান। সেখানে রাতে দেয়া হচ্ছে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগও।
সূত্র মতে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে মাদকের স্পটে পরিণত করেছে একটি চক্র। এখানে যৌন ব্যবসাসহ নানা ধরনের অনৈতিক কার্যক্রমও চলে। একটি চক্র সাধারণ মানুষের হাতে কৌশলে মাদক তুলে দিয়ে আসছে। সৌজন্যে:স্টেটনিউজবিডি.কম
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×