আমার মনের মাঝে একটা সূর্য্যদীঘল বাড়ি আছে। সেখানে সুখেদের বসবাস দীর্ঘস্থায়ী হয়না। দুঃখরা বারবার এসে ভর করে। রানুদির কথা আজ বড়বেশী মনে পড়ে। রানুদি ভালোবেসেছিলো। সুমনদাকে দিয়েছিলো তাঁর সমস্ত নীল পদ্ম। সুমনদার হৃদয়ের ফুলদানীতে সে ফুল শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। শুকনো পাপড়িগুলো হাতড়ে সুমনদা রানুদির স্পর্শ খোঁজে। রানুদি কথা রাখতে চেয়েছিলো। কর্কট রোগে নিজের সমস্ত ভালোবাসা সাথে নিয়ে তাকে সঙ্গী হতে হয়েছে,মৃত্যুর। সুমনদা রানুদিকে কোনদিন ক্ষমা করবেনা। যাবার কালে রানুদি তাকে সঙ্গে নেয়নি বলে। সুমনদা আজো কাঁদে। লুকিয়ে চোখের জল মোছে,রানুদির জন্য।
আমাদের পাড়ায়, নীলাদের বাড়ি ছিলো। নীলাদের গোলাপের চারাটা নীলার সাথে পাল্লা দিয়ে সুন্দর হয়েছে। আমার মতো কিছু কর্মহীন ছেলে ভালোবাসার নামে,সে ফুলের ঘ্রান নিতে চাইতো। নীলার গোলাপ পাওয়া হয়নি,কারো। আমিও পাইনি। আমি পেয়েছি, নীলার কাছে প্রত্যাখানের যন্ত্রনা।
মোড়ের চা দোকানে সকাল-বিকাল হিন্দি গানের রেকর্ড বাজতো। আমরা শুনে শুনে সে গান মুখে তুলে নিতাম। বিকেলের আড্ডায় হেড়ে গলায় সে গানের দফারফা হতো। বিশ্বাস করুন,আড্ডায় অপুর্ব এক প্রান সৃষ্টি হতো। বাবা-কাকাদের ভালো লাগেনি। তাদের গম্ভীর মুখে, "ঘোর কলিকাল" শুনতে শুনতে আমরাও একদিন বাবা-কাকা হয়ে গেলাম। আজ আমরাও বলি "ঘোর কলিকাল"!
আমাদের সবার মনে সূর্য্যদীঘল বাড়ি। আমরা হাসতে জানিনা। আমরা হাসতে চাই। প্রান খুলে। জয়গুনের মতো প্রতিবাদী হতে চাই।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুন, ২০১২ রাত ৯:২২