somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সহীহ্ নাম-নামা

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ৩:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গাজী সাহেবের মিজাজ সক্কাল হইতে বহুত বিলা হইয়া আছে। নয়ন সম্মুখে যাহাকে দেখিতেছেন তাহাকেই কামড়াইতে ইচ্ছা করিতেছে। মিজাজ বিলা হইলে থাবড়াইতে চাওয়াই স্বাভাবিক বলিয়া গন্য হইয়া থাকে কিন্তু এই ক্ষেত্রে গাজী সাহেব বিশেষ ব্যাতিক্রম। তাই দূর্জনে তাহাকে আড়ালে-অবডালে বিশেষ শ্রেণীর প্রাণীকুলের নাম ধরিয়া ডাকিয়া থাকে। পূর্বে এই জাতীয় কথপোকথনে গাজী সাহেব প্রচন্ড ক্ষেপিলেও, বর্তমানে বন্ধু মাধবের পরামর্শে দাঁতে দাঁত পিষিয়া সবর ধরিয়া থাকে। শপিদ বলিয়া এক দুষ্টু লোক এই সুযোগে গাজী সাহেবের উপর বহুত মজা লুটিয়াছে।

আজিকার মিজাজ বিলা হইবার কারণ একখান হইলেও তাহার সহিত আরো বহুবিদ বিষয় জড়ি্ত। দুষ্টু লোকের ফাইলামির বিষয় বাদ দিলেও সন্মানহানির বিষয়টা একেবারে ফেলিয়া দেয়া যায়না। তাহার উপর পিয়ারের বিবি কহিয়াছেন, "যাহা-তাহা হইলে চলিবেনা আমার সর্বসেরা চাই-ই চাই, না হইলে তোমার সংসারের খোমায় ঝাঁটা মারিয়া আমি চলিলাম বাপের বাড়ী।" ভরা ময়দানে গাজী সাহেব নিজের লুংগী খোয়াইতে পারেন কিন্তু বিবি বিনে তাহার চলিবেনা। বিবি যদি সত্যই সংসারের মুখে ঝাঁটা মারিয়া যায় তাহা হইলে দূর্জন শপিদ তাঁহার আস্তা রাখিবেনা। তাহার উপরে চান্দির ছাগলের মতো উঠকো ঝামেলা যুক্ত হইয়াছে। দুষ্টু শপিদ যদি খোমাখাতায় মানে ফেসবুকে তাহাকে লইয়া দু'কলম কিছু লিখে তাহাতেই চান্দি ছাগল লাইক মারিয়া কমেন্ট করিয়া বসে, 'সুপার লাইক।রাগে রাগে দন্ত কিড়কিড় করিলেও লোকজন তাহার কমেন্ট দেখিবে বলিয়া মন্দ কিছু কহিতেও পারেনা আবার কামড়াইতেও পারেনা। বিচারা! তাহার উপরে অতি সম্প্রতি টাইমলাইন চালু করিয়া প্রাইভেসির বারোটা বাজিয়া গিয়াছে। লন্ডনীর সহিত ঠেলাঠেলী না করিয়া দুষ্টু শপিদ তাঁহার পিছনে লাগিয়াছে। অথচ লন্ডনী খোমাখাতায় তাড়াইয়া তাড়াইয়া দুষ্টু শপিদের ইজ্জ্বতের হালুয়া রন্ধন করিয়াছে। তাহাতেও শপিদ ব্যাটার কোনো বিকার নাই। গত কিছুদিন আগে আর একখান বিষয় খিয়াল করিয়া গাজীসাহবের গাত্রদাহ শুরু হইয়াছে। তাহা হইলো খোমাখাতায় তাহার বন্ধু সংখ্যা মোটে ২৯১খান। অথচ দুষ্টু শপিদের ৩২৪ আর লন্ডনী তো ছয়শত ছাড়াইয়া গিয়াছে বহু আগে। আর চান্দি ছাগল সেইদিন মাত্রই খোমা খাতায় নাম লিখাইয়া বন্ধুসংখ্যা শ ছুঁই ছুঁই। তবে আগডুম-বাগডুম এডাইনা কহিয়া এই যাত্রা সামলাইবার চেষ্টা করিলেও বাস্তবে তাহার পরিচিতির সংখ্যা নিতান্তই কম। ইহার একখান বিহিত করিবার পূর্বেই ঘর সামলাইবার দৌড়ঝাপ শুরু হইয়া গিয়াছে।

কিছুকাল পূর্বেই গাজীসাহেব একখানা চাঁদবদন পুত্র সন্তানের পিতা হইয়াছে। তেনার বিবি দিন তিনেক লেবাররুমে কাটাইলেও সাহেবের তেমন ঝামেলা মনে হয় নাই। অবশ্য বাচ্চা তো আর সে পেটে ধরে নাই ঝামেলার কি বুঝিবে? যাহা ঝড় গিয়াছে বেচারি বিবি তাহা সামলাইয়াছে। কিন্তু, এখন বিবি বলিয়াছে, বাচ্চার নাম রাখিতে হইবে। যেনতেন নাম রাখিলে চলিবে না। নাম হইতে হইবে সেইরকম। যাহা সহজে ডাকিয়া ফেলা যায় কিন্তু ব্যতিক্রম। পরিচিতজনের কাহারও সন্তানের নামের সহিত মিল থাকিতে পারিবেনা। এতসব শর্ত মানিয়া গাজী সাহেব যখন নাম সন্ধান করিতে গেলেন তখনই বুঝিতে পারিলেন এই শর্তে নাম রাখিবার চাইতে গর্ভবান হইয়া বাচ্চা জনম দেওয়া বহুগুনে সোজা। নানা পুস্তক ঘাটিয়া কোনো নাম পছন্দ করিলেই দেখা যায় একই নামে কোনো আত্মীয়ের সন্তানাদি বর্তমান। কিছুকাল পূর্বে এক তারকা দম্পতির যমজ সন্তানের নাম রাখা হইয়াছে হিং আর টিং। বিবি-কে এই কথা জানানো মাত্রই তাড়াইয়া ঘরের কোণে ঠেসিয়া ধরিয়া কহিলো: "ওহে বোকাপাঁঠা মিনসে, তুমি তারকা হইলে তোমার সন্তানের নাম টিউবলাইট রাখিলেও পাবলিকে খাইতো। তুমি হইতেছো ম্যাংগো-জনতা। দু'আনা মুরোদ - তাই দেখিয়া শুনিয়া সাধারণ ও ভদ্র কিন্তু ব্যাতিক্রম নামই তোমার রাখিতে হইবে।"

তাই নাম বিষয়ক ঝামেলা লইয়া গাজী সাহেবের মিজাজ বহুত বিলা। কাউকে কামড়াইতে ইচ্ছা করিতেছে।


পুনঃশ্চ: এই কাহিনীর ঘটনা এবং নামসমূহ সম্পূর্ণ লেখকের কল্পনাপ্রসূত। বাস্তবের সহিত কোনো মিল পড়িয়া গেলে তাহা কাকতালীয় বলিয়া গন্য হইবে। কেহ মাইন্ড খাইলে নিজ দ্বায়িত্বে খাইবেন। মাইন্ড খাওয়ার উপর লেখকের কোনো হাত নাই। তবে মাইন্ড খাইলে জিন্দেগীতে সাইন করিতে পারিবেননা।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×