somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের সংবিধান লঙ্ঘন !

৩০ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বাংলাদেশের একজন মানুষ তাঁর জীবদ্দশায় “আদালত অবমাননা” শব্দদ্বয় যতবার শোনেন অন্য যেকোনো দেশের মানুষ তার ১০০ ভাগের এক ভাগও শোনেন কিনা সন্দেহ। পান থেকে চুন খসলেই অবমাননা! সম্মানের ভিত্তিটা মনে হয় খুবই দুর্বল! আপনার কি মনে হয় না “আদালত অবমাননা” ধারনাটিই “বাক স্বাধীনতার” সাথে সাংঘর্ষিক? শুধু তাই না শর্ষের মধ্যে যে কত বিশাল ভুত লুকিয়ে আছে তা আমরা অধিকাংশ নাগরিকই জানি না অথবা খেয়াল করি না। যাঁদের সবচেয়ে বেশি জানা উচিত তাঁরা জানেন কিন্তু মানেন না এমন কি কাউকে জানতে দিতেও চান না! ব্যাপারটা একটু খোলাসা করা দরকার –
আদালত অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্ত হউয়ার শতভাগ ঝুঁকি মাথায় নিয়েই লিখছি। বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের “হাই কোর্ট বিভাগ” এবং “আপীল বিভাগ” উভয় বিভাগের ‘বিচারকেরা’ নিজেদের ‘বিচারপতি’ হিসেবে পরিচয় দিতে পছন্দ করেন, ভালবাসেন। কিন্তু মজার ব্যপার হচ্ছে সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশে একজন মাত্র বিচারপতি থাকার কথা!

সংবিধানের ৯৪ অনুচ্ছেদে পরিস্কার বলা আছে -

(১) “বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট” নামে বাংলাদেশের একটি সর্বোচ্চ আদালত থাকিবে এবং আপীল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ লইয়া তাহা গঠিত হইবে।

(২) প্রধান বিচারপতি (যিনি “বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি” নামে অভিহিত হইবেন) এবং প্রত্যেক বিভাগে আসন গ্রহনের জন্য রাষ্ট্রপতি যেরূপ সংখ্যক ‘বিচারক’ নিয়োগের প্রয়োজন বোধ করিবেন, সেইরূপ সংখ্যক অন্যান্য ‘বিচারক’ লইয়া সুপ্রিম কোর্ট গঠিত হইবে।

সংবিধানের কোথাও প্রধান বিচারপতি ছাড়া অন্য কাউকে বিচারপতি বলা হয় নি। ইংরেজি ভার্শনে ‘বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি’ এর স্থলে “CHIEF JUSTICE OF BANGLADESH” এবং ‘বিচারক’ এর স্থলে “JUDGE” পদবী ব্যবহার করা হয়েছে।

Paragraph-94: Establishment of Supreme Court

(1) There shall be a Supreme Court for Bangladesh (to be Known as the Supreme Court of Bangladesh) comprising the Appellate Division and the High Court Division.

(2) The Supreme Court shall consist of the Chief Justice, to be known as the Chief Justice of Bangladesh and such number of other Judges as the President may deem it necessary to appoint to each division.

ব্যাপারটাতে কোন অস্পষ্টতা আছে কি?

তারপরও এই অন্যায্য পদবীটাই এখন বাংলাদেশের উচ্চ আদালতের বিচারকদের অলংকার এবং অহংকার!

যাঁরা আদালত অবমাননা এবং বিচারবিভাগ অবমাননা নিয়ে এত বেশী অনুভূতিপ্রবন তাঁরা নিজেরাই যে নিজেদের নামের পূর্বে, সুপ্রিম কোর্টের ক্যালেন্ডারে, বক্তৃতায়, বহনকারী গাড়ির পতাকায়, নিজের পরিচয় দানে এবং এমনকি বাড়ির নাম ফলকে “বিচারপতি” শব্দটি ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত সংবিধান অবমাননা করে চলেছেন,তার বিচার কে করবে?

সুপ্রিম কোর্ট কে বলা হয় সংবিধানের রক্ষক। এক্ষেত্রে কি রক্ষক স্বয়ং ভক্ষক হয়ে যাচ্ছেন না?

আরো বেশি অবাক হই যখন দেখি প্রথম আলো, ইত্তেফাক,সমকাল, কালের কন্ঠ, DAILY STAR অথবা BDNEWS24 এর মতো শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমগুলোও একই ভুলের পুনরাবৃত্তি করে প্রকারান্তরে ভুলটাকেই বৈধতা দিয়ে দিচ্ছে!

বিচারের দন্ড যার হাতে, যিনি চাইলে পত্রিকার সম্পাদক অথবা জাঁদরেল সরকারী আমলাকেও ঘন্টার পর ঘন্টা কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, যার হাতে আমরা সঁপে দিয়েছি আমাদের পবিত্র সংবিধান রক্ষার গুরুদায়িত্ব - তিনি কেন সংকির্ণতার উর্দ্ধে উঠতে পারবেন না? তিনি কেন নিজের নামের সাথে জুড়ে দেবেন এমন একটি পদবী যা মোটেও তাঁর প্রাপ্য নয়?

যে ব্যক্তি দেশের সর্বোচ্চ আইন (সংবিধান) কে অবমাননা করেন, অন্য কোন অবমাননার বিচার করার নৈতিক অধিকার কি তাঁর থাকা উচিত?

একটা লিংক দিলাম। এখানে সংবিধান এর ৯৪ থেকে ১১৬ অনুচ্ছেদ পর্যন্ত দেয়া আছে। এই অংশটাতে বিচার বিভাগের গঠন সম্পর্কে বলা আছে। আরো CLARIFICATION চাইলে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেয়া সংবিধানের সর্বশেষ সংস্করণ পড়ে নিতে পারেন

লিংক

সংগৃহীত: মন্তব্য করতে সরাসরি চলে যান এখানে
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শৈল্পিক চুরি

লিখেছেন শেরজা তপন, ০১ লা জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭


হুদিন ধরে ভেবেও বিষয়টা নিয়ে লিখব লিখব করে লিখা হচ্ছে না ভয়ে কিংবা সঙ্কোচে!
কিসের ভয়? নারীবাদী ব্লগারদের ভয়।
আর কিসের সঙ্কোচ? পাছে আমার এই রচনাটা গৃহিনী রমনীদের খাটো... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কোথায় বেনজির ????????

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা জুন, ২০২৪ দুপুর ১২:০৫




গত ৪ মে সপরিবারে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছেন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ। সঙ্গে আছেন তার স্ত্রী ও তিন মেয়ে। গত ২৬ মে তার পরিবারের সকল স্থাবর সম্পদ... ...বাকিটুকু পড়ুন

‘নির্ঝর ও একটি হলুদ গোলাপ’ এর রিভিউ বা পাঠ প্রতিক্রিয়া

লিখেছেন নীল আকাশ, ০১ লা জুন, ২০২৪ দুপুর ১:৫৭



বেশ কিছুদিন ধরে একটানা থ্রিলার, হরর এবং নন ফিকশন জনরার বেশ কিছু বই পড়ার পরে হুট করেই এই বইটা পড়তে বসলাম। আব্দুস সাত্তার সজীব ভাইয়ের 'BOOKAHOLICS TIMES' থেকে এই বইটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিতর্ক করার চেয়ে আড্ডা দেয়া উত্তম

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ০১ লা জুন, ২০২৪ রাত ১১:২৬

আসলে ব্লগে রাজনৈতিক, ধর্মীয় ইত্যাদি বিতর্কের চেয়ে স্রেফ আড্ডা দেয়া উত্তম। আড্ডার কারণে ব্লগারদের সাথে ব্লগারদের সৌহার্দ তৈরি হয়। সম্পর্ক সহজ না হলে আপনি আপনার মতবাদ কাউকে গেলাতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে প্রাণ ফিরে এসেছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০১ লা জুন, ২০২৪ রাত ১১:৩৪



ভেবেছিলাম রাজিবের অনুপস্হিতিতে সামু রক্তহীনতায় ভুগবে; যাক, ব্লগে অনেকের লেখা আসছে, ভালো ও ইন্টারেষ্টিং বিষয়ের উপর লেখা আসছে; পড়ে আনন্দ পাচ্ছি!

সবার আগে ব্লগার নীল আকাশকে ধন্যবাদ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×