শিরোনামে ১৮+ ট্যাগ দিয়া হিট কামানোর আগ্রহ নাই । বাস্তবতার আলোকে লিখা...তাহার পরও যাহারা বাছিয়া চলিতে চাহেন তাহাদের না পড়িলেও চলিবে ।
দাদা মারা যাওয়ার সময় শরফুদ্দিনকে পই পই করিয়া বলিয়া দিয়াছেন শিক্ষিত মেয়ে বিবাহ না করিতে। বিবাহ পরবর্তী সময়ে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ না করিতে । তাহাতে নাকি ধর্ম নষ্ট হয় । মেয়েরা নাকি যতো শিক্ষিত হয় ততো বেহায়া, নষ্ট চরিত্রের হয় ! মেয়েদেরকে নষ্ট চরিত্রের, বেহায়া, ব্যাভিচারীনি রুপে দেখিতে অভ্যস্থ বিশাল ব্যবসায়ী, ক অক্ষর গোমাংস শরফুদ্দিন সমাপনী পাশ দেওয়া এক কন্যাকে বিবাহ করিল। বিবাহের রাত্রেই জৈব আনন্দের আতিশয্যে সুন্দরী বঁধু মিরার গর্ভে সন্তান দিতে সক্ষম হইল।
আহা ! আর মাত্র ১০ মাস পার হইলেই আমি সন্তানের পিতা হইব...
ভাবিতে ভাবিতে শরফুদ্দিনের আনন্দের সীমা রহিল না । নতুন বঁধুকে লইয়া তাহার টুইটম্বুর প্রেম বাঁধ সাধিল যখন তখন বঁধুর বমন ভাবের উদয়ে !
শরফুদ্দিন ইদানিং জৈব চাহিদা নিবৃত্তির লক্ষ্যে মিরার নিকট গমন করিলেই গর্ভবতী মিরার শারীরিক অনাগ্রহে পরিপূর্ণ রূপে শরফুদ্দিনের ক্ষুধা নিবৃত্তি হয় না । অর্ধভূক্ত হইয়া তাহার দিন কাটিতে লাগিল ! মাঝে মাঝেই তাহার হস্তখানিই সম্বল হইয়া উঠে।
বিবাহের বছর পার হইবার পূর্বেই ঘর আলো করিয়া কন্যা সন্তান আসিল।
শরফুদ্দিনের মাথায় হাত!
একি হইল! আমার বংশের প্রদীপ জ্বালাইবার জন্য তো কেউ আসিল না !তবে?!
জন্মনিয়ন্ত্রণ প্রথার নিন্দা জানাইয়া পরের বছর শরফুদ্দিন মিরার গর্ভে আবারো সন্তান দান করিল ! কিন্তু এইভঅবেতো আর চলে না !
মিরার প্রতি তাহার ভালবাসার কোনরূপ কমতি নাই । তথাপি শরীর তো মানে না ! মিরাকে হাসি হাসি মুখখানি করিয়া বলিল-
তোমার যত্ন করিবার জন্য বিবাহ করিয়া একখানা বাদী আনিতে চাই, তাহাতে লোকে নিন্দা দিতে পারিবে না যে, আমি ঘরে সোমত্ত বেগানা যুবতী রাখিয়াছি । আর তুমিও পায়ের উপর পা তুলিয়া আরাম করিতে পারিবা
অনেক কান্নাকাটি করিয়া অবশেষে একগাদা গহণা উপহার পাইয়া মিরার মন প্রবোদ মানিল ।
নতুন বউ সাথীকে লইয়া উদ্যাম রাত্রি মহানন্দেই চলিতে লাগিল । কিন্তু বছর না ঘুড়িতেই সাথী বংশের প্রদীপ জ্বালাইবার নিয়শ্চতা প্রদান করিল পুত্র সন্তান জন্ম দান করিয়া ।
এইভাবেই শরফুদ্দিন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিকে বৃদ্ধাঙ্গুল প্রদর্শন করিয়া মিরা আর সাথীকে ফি বছর মা হইতে উৎসাহ প্রদান করিতে লাগিল।
বছর বছর পিতা হইতে যাইয়া শরফুদ্দিনের কষ্ট বাড়িতে লাগিল এই কারণে নয় যে তাহার ঘর বাচ্চা-কাচ্চায় ভরিয়া যাইতেছে বরং গর্ভবতী থাকার কারণে শরফুদ্দিনের দৈহিক আরাম ব্যারামে পরিণত হইতেছে !
অতঃপর আর সহিতে না পারিয়া দুই স্ত্রীকে জমি-জমা, গহণা দিয়া হাত করিয়া পালাক্রমে তৃতীয় আর চতুর্থ বিবাহ খানাও সম্পন্ন করিয়া লইল।
এর মধ্যে বছর বছর সন্তান জন্মদান করিতে যাইয়া মাতৃত্বজনিত জটিলতায় মিরা ইহলোক ত্যাগ করিল।
প্রথমা স্ত্রী ইন্তেকাল করায় শরফুদ্দিন অনেক কাঁদিল ! পরে এক সময় গা ঝাড়া দিয়া মিরার অন্তর্ধানের ব্যথা ভুলিয়া মিরার শূন্যস্থান পূর্ণ করিতে বাটিতে নতুন আরেকজন স্ত্রীলোককে ধর্মমতো লইয়া আসিলেন।
এতো কিছু করার পরও যখন তাহার ক্ষুধা সবসময় ঠিকঠাক মতো মিটে না পোয়াতী বউদের কারণে তখন শরফুদ্দিন আর উপায় না পাইয়া হস্তবিশারদ হইয়া, মনের দুঃখে মৃত দাদার উদ্দেশ্যে বলিতে লাগিল...
দাদা, আপনার মতো জ্ঞানী মুরুব্বীর পরামর্শ মানিয়া ধর্মকে সাথী করিয়া এতো কিছু করিলাম কিন্তু আমারতো সমস্যার সামাধান হইল না !
--------------------------
ধর্ম মানব কল্যাণেই প্রচারিত হয়। সময়ের সাথে সাথে যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে সময়ের প্রয়োজনে মানব কল্যানের কথা বিবেচনা করেই ধর্ম চলে তার আপন গতিতে । সেখানে প্রয়োজন হয়, সুযোগ্য ধর্ম জ্ঞানীদের দ্বারা ইজমা, ক্বিয়াসের আলোকে ধর্মকে ব্যাখ্যা করা।
ধর্মকে ভুল ব্যাখ্যার মাধ্যমে মানুষ শুধু বিপদেই পড়তে পারে।