somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাঞ্চা বয়সে মোর আগুন জ্বলে গায়

৩০ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিস্তি-১২ মেসের সন্ধানে


মহিলা গলা নিচু করে বললেন, সেও এখানে থাকে। আমি মাথা মুন্ডু কিছু বুঝলাম না। একটা রুম। এখানে একজন ঢাকা মেডিকেল পড়ুয়া ছাত্র থাকেন। আরেকজন লাগবে। তার রুমে। আবার একই রুমে কাজের মহিলা থাকে।
আমি কিছুটা বিস্মিত হয়ে তাকে জিজ্ঞেস কলাম, মানে? মহিলা আমার বোকামি দেখে হেসে দিলেন। আজিমপুর কবর স্থানের গেটের উল্টো দিকের ওই একতলা বাড়িতে আমি আর দ্বিতীয়বার যাইনি। এতটা নিম্ন রুচি আমার নয় যে, কাজের মহিলা নিয়ে ডাক্তার বেটার মত আমিও থাকব!
পরে খোঁজাখুঁজি করে একটা মেস পাওয়া গেলো- ললিত মোহন দাস লেনে। এক আইনজীবীর বাড়ির চারতলা। মেস করার জন্যই মনে হয় আলাদা আলাদা চারটা রুম নিয়ে চতুর্থ তলা। সেখানে গিয়ে পরিচয় ঘটে শফিক ভাইয়ের সাথে। সিএ করছেন রহমান রহমান হকে। ভালো ছাত্র। গোপালগঞ্জে বাড়ি। কেবল একটাই সমস্যা-রাগ বেশি। কিছু হলেই বটি নিয়া কোপাতে চান। আমি অবশ্য দেখিণি। কেবল শুনেছি। যেহেতু আমি বেশির ভাগ সময় মেসের বাইরে থাকি। তবে শফিক ভাই একদিন বললেন, ঢাকা কলেজের মান্নান নাকি বুয়াকে কুপ্রস্তাব দিযেছে। তাই তাকে খেদিয়ে দেয়া হলো। এত সঙ্কটের মধ্যে বুয়া নির্বাচনের দায়িত্বটা আমি নিলাম। ভালো একটা বুয়াটা পেয়েও গেলাম। পেশাদার নন, উনার স্বামী মারা যাওয়ার পর ঢাকায় আসেন। স্বামী যার বাড়িতে কাজ করতেন সেই বাড়িতে কাজ করেন। ভদ্র মহিলা ভালোই ছিলেন। কিন্তু আমাদের সাথে একটা ফ্যামিলি থাকতো, সেই ফ্যামিলির ভাবির আবার আমাদের বুয়াকে পছন্দ না। তা নিয়ে রাজ্যের ঝামেলা। তবুও এতে আমরা গা করি না।
মেস লাইফ খারাপ না। বেড়িবাঁধ ও পোস্টঅফিসের পাশের বাজার থেকে কেনাকাটা করে আনি, উনি রেঁধে দেন। সকালে ঘিয়ে ভাজা পরোটা, মাছ মাংসের ছড়াছড়ির কারণে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ- সবাইকে ফতুর করার বুগিদ্ধ করেছি। কেবল শফিক ভাই রিপন ভাই ও মিল্টন কিছু বলে না।

এখানে আমরা সবাই মিলে আড্ডা দিই। আমার সম সাময়িক কেউ ছিল না। পরে অবশ্য শফিক ভাইয়ের কাজিন মিল্টন আসলো। ও ঢাবিতে পড়ে। তাই আমি আর ও এক রুমে উঠলাম। পরে ওর বন্ধু মিজান। মানিকগঞ্জের পোলা। আমরা খুব মজা করতাম। মিজান প্রায় একটা গান গাইতো... ‌‌'যমুনার জল ঘোলা কইরা... ও সখি বলি গো তোমায়.. কাঞ্চা বয়সে মোর আগুন জ্বলে গায়।'

হা হা হা । এভাবেই ভালোই চলছিল। আমাদের সাথে থাকতেন রিপন ভাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয থেকে পাস করে একটি বেসরকারি ব্যাংকে জব করতেন। ভালোই। তার কাছ নব্বুইয়ের গণ অভু্যত্থানের গল্প শুনতাম। ভালোই লাগতো। এক সময় জাসদ কর্মী রিপন ভাই পরে চাকরী নিলেন ইসলামী ব্যাংকে। তার কাছে শোনা গল্প নায়িকা মৌসুমী নাকি আগে মল চত্বরে আড্ডা মারতেন। তার দিকে নাকি কেউ ফিরেও তাকাতেন না। হঠাৎ একদিন মৌসুমী নায়িকা। তাদের তো অবাক হবার পালা।
মেসে আমাদের সাথে আরেকটা ফ্যামিলি থাকতেন, সামর্থ সে রকম ছিল না বলে হয়ত। তবে তারাও বেশ আন্তরিক ছিলেন। সবচেয়ে আন্তরিক মনে হয়েছে বাড়িঅলাকে। তাদের বাসায় শুক্কুরবারে পোলাও রোস্ট হতো। তার একটা ভাগ চারতলার ব্যাচেলদের জন্য চলে আসতো। এত আদর আপ্যায়নের মধ্যে একটচা কঠিন শর্ত ছিল- ছাদে ওঠা যাবেনা, জানালা খোলা যাবে না। আমরা তাই করতাম। কিন্তু বাড়িঅলা দুইকন্যা যে আমাদের উত্যক্ত করত, সেটা কাউকে বলা যেতে না। বলতামও না। বিশেষ করে মিল্টন ও আমি এ দুজনের অত্যাচারের শিকার ছিলাম।
মেসে সবচেয়ে বেশি মজা হতো সুইটির মা ভাবিকে নিয়ে। তাকে নিয়ে এক পর্ব না লিখলেই নয় , আনন্দ অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।

পরের কিস্তি সুইটির মা ভাবিকে নিয়ে...



০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (দ্বিতীয় অংশ)

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:০৫


আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (প্রথমাংশ)
আমাদের সদ্য খনন করা পুকুরটা বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেল। যা মাছ সেখানে ছিল, আটকানোর সুযোগ রইল না। আমি আর দুইবোন শিউলি ও হ্যাপি জালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×