somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগ প্রশ্নঃ রফিক-উল হক ও আমীরুলের ভিন্ন মত

০৮ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন ১৯৭৩-এর ক্ষেত্রে প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন প্রযোজ্য হবে কি না, সে বিষয়ে ভিন্ন মত দিয়েছেন অ্যামিকাস কিউরি রফিক-উল হক ও আমীর-উল ইসলাম।
মানবতাবিরোধী অপরাধী কাদের মোল্লার দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানিকালে ওঠা দুটি গুরুত্বপূর্ণ আইনগত প্রশ্নের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে আজ সোমবার এ মতামত দিয়েছেন এই দুই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী।
বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন ১৯৭৩-এর ক্ষেত্রে প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন প্রযোজ্য নয় বলে মত দিয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রফিক-উল হক। তিনি বলেছেন, ২০১৩ সালে আইনের ২১ নম্বর ধারায় সংশোধনী আনা হয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট এটাকে অসাংবিধানিক ঘোষণা না করছেন, ততক্ষণ তা ২০০৯ সালের ১৪ জুলাই থেকে কার্যকর বলে গণ্য হবে।
রফিক-উল হক আরও বলেন, সংবিধানের ৪৭ (৩) অনুচ্ছেদে এ আইনের বিধানগুলোকে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। তাই মানবতাবিরোধী অপরাধী কাদের মোল্লার দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করতে সরকারের সব ধরনের অধিকার রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে আদালতে রফিক-উল হকের এই বক্তব্য উপস্থাপন করেন আইনজীবী মৌলবি মো. ওয়াহিদ উল্লাহ। প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি চলছে।
রফিক-উল হকের পর বক্তব্য দেন অপর অ্যামিকাস কিউরি আমীর-উল ইসলাম। এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বলেন, ১৯৭৩ সালে যখন আইনটি করা হয়, তখন প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইনগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে তা করা হয়েছে। প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন ১৯৭৩-এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। আপিলের সমানাধিকার নিশ্চিতের জন্য আইন সংশোধন করা হয়েছে। সংবিধান অনুসারে বিচারে সমান সুযোগ থাকতে হবে। অসম বিচার হলে আইন সংশোধন করে সমতা সৃষ্টির বিধান করতে পারে সংসদ। এ কারণে আইন সংশোধন করা হয়েছে। এটা সংবিধানবিরোধী নয়।
পরে আমীর-উল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এই সংশোধনী কাদের মোল্লার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
কাল মঙ্গলবার আবার বক্তব্য উপস্থাপন করবেন আমীর-উল ইসলাম।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ৫ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আনা ছয়টি অভিযোগের মধ্যে দুটিতে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ, তিনটিতে ১৫ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেন। অন্য একটি অভিযোগ থেকে তাঁকে খালাস দেওয়া হয়। এরপর ৩ মার্চ কাদের মোল্লার সর্বোচ্চ সাজা চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। পরদিন ট্রাইব্যুনালের দেওয়া দণ্ডাদেশ বাতিল করে অব্যাহতি চেয়ে আরজি জানিয়ে আপিল করেন কাদের মোল্লা।
এরপর কাদের মোল্লার দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানি শুরু হয়। শুনানিকালে দুটি গুরুত্বপূর্ণ আইগত প্রশ্ন ওঠে। প্রশ্ন দুটি হলো—আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন-১৯৭৩-এর অধীনে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন প্রযোজ্য হবে কি না? দ্বিতীয়টি হচ্ছে—গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন সংশোধন করে ২০০৯ সালের ১৪ জুলাই থেকে এর ভূতাপেক্ষ কার্যকারিতা দেওয়া হয়েছে, যাতে খালাস বা দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষকে আপিলের অধিকার দেওয়া হয়। কাদের মোল্লার দণ্ড ঘোষণার পর আইনের ২১ ধারায় আনা ওই সংশোধনীতে রাষ্ট্রপক্ষকে আপিলের যে সুযোগ দেওয়া হলো, তা কাদের মোল্লার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কি না?
এসব প্রশ্ন ওঠায় গত ২০ জুন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এ বিষয়ে মতামত দিতে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি সহায়তাকারী) হিসেবে জ্যেষ্ঠ সাত আইনজীবীর নাম ঘোষণা করেন। আজ তাঁদের মতামত দিতে বলা হয়।
কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়ের পর মানবতাবিরোধী অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শুরু হয় আন্দোলন। শাহবাগে গড়ে ওঠে গণজাগরণ মঞ্চ। এরপর ১৭ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) (সংশোধন) বিল, ২০১৩ জাতীয় সংসদে পাস হয়। সংশোধিত আইনে রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অধিকার-সংক্রান্ত ধারায় সংশোধনী আনা হয়।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×