somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শঙ্খচূড় - দ্বিতীয় পর্ব "খ"

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ৯:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পূর্বকথা
শঙ্খচূড় - প্রথম পর্ব "ক"
শঙ্খচূড় - প্রথম পর্ব "খ"
শঙ্খচূড় - দ্বিতীয় পর্ব "ক"
পরদিন ফযরের সময় দুই ভাই হাজী খামির উদ্দিন ও হাজী মেহের বকস মসজিদের কুয়া থেকে পানি তুলে ওযু করছিলেন। পূর্বাকাশে সুবহ সাদিকের আবছা আলো। এখনো কেউ মসজিদে আসেনি। মেহের বকস ওযু শেষে মসজিদের ভেতর পা রাখলেন, মসজিদে প্রবেশের দোয়াটা শব্দ করে পড়লেন, “আল্লাহুম্মাফতাহলী আবওয়াবা রাহমাতিকা।”
ভেতরে হারিকেন রাখা আছে এক কোনায়। ম্যাচও রাখা আছে একতা তাকে। গিয়ে হারিকেন জ্বালালেন। হাজী খামিরুদ্দিনের ওযু সেষ হয়েছে। রুমাল দিয়ে হাত মুখের পানি মুছতে মুছতে এগিয়ে এলেন।
“ভাই আপনি আযানটা দিয়া দেন।” মেহের বকস হারিকেনটা মাঝামাঝি জায়গায় রাখতে রাখতে বড় ভাইকে বললেন।
মাথায় টুপিটা ঠিক করতে করতে মসজিদের উঠানের একপাশে গিয়ে দাঁড়ালেন খামিরুদ্দিন। দু’কানে হাত দিয়ে পশ্চিম মুখো হয়ে আযান দিলেন। মেহের বকস ভেতর থেকে আযান শ্রবণ করলেন মুগ্ধ হয়ে। বড় ভাই এত সুন্দর করে আযান দেন- মনে হয় যেন স্বয়ং আল্লাহ পাক তাঁর কন্ঠে নূর ভরে দিয়েছেন।
আযান শেষ হতেই দেখা গেলশীতে ঠক ঠক করে কাঁপতে কাঁপতে এগিয়ে আসছে খায়রুল আনাম। তাঁর পেছন পেছন মান্নান, আবুক কালাম, দুলাল। সব ভাইগুলো কুয়া পাড়ে গিয়ে বালতি টেনে পানি তুলে ওযু সারল। হালকা স্বরে নিজেদের মধ্যে কথা চলছে ভাইগুলোর।
হাজী খামিরুদ্দিন মসজিদের ভেতরে গিয়ে সুন্নত নামায পড়া শুরু করলেন। আস্তে আস্তে আরো লোকজন এসে গেল। সবাই রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়, বাহিরের কেউ নেই এ গ্রামে বলতে গেলে।
হাজী খামির উদ্দিন ইমামতি করলেন নামাযের। নামায শেষে আরো কিছুক্ষণ বসে থাকার অভ্যাস তাঁর। সূর্য ওঠার পর এশরাকের নামায পড়ে তারপরে বাড়ি যান। মেহের বকসও তাই। বাকিরা প্রায় সবাই চলে যায়, কিন্তু আজ গেল না। কারণ নামায শেষে পেছনের কাতার থেকে খামির উদ্দিনের চাচাতো ভাই হাফিজুল আলম সামনের দিকে গলা বাড়িয়ে নিচু গলায় বললেন, “বড় ভাই, একটা খারাপ সংবাদ আছে।”
“কি?”
“বিশারুর বৌটা কাল রাতে গলায় ফাঁস দিছে। একটু আগে খবর পাইলা।”
“ইন্নালিল্লাহ! এর আগেও মনে হয় একবার গলায় শাড়ি প্যাঁচাইয়া মরার চেষ্টা করছিল না?”
“হ্যা। ঐ বার তো ফাঁসের শাড়িটা পুড়ায় দেয়া হইছিল পরে, যাতে শয়তানে আর না ডাকে। কিন্তু লাভ তো হইল না।”
“যার মাথায় শয়তান থাকে তার আবার শাড়ি পুড়ায়ে লাভ আছে? ফাঁসির দড়িটা বারবার ডাকতে থাকে বলেই না পুড়াইছিলাম। সব সময় কাজ হয় না। অন্য ভাবে মরার চেষ্টা করতোই। আত্মহত্যা খারাপ জিনিস। একবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হইলেও শয়তানে বার বার ইন্ধন দিতে থাকে।” কপালে চিন্তার বলিরেখা আরো স্পষ্ট হল, “লাশ নামাইছে?”
“হ্যা। উঠানে রাখছে। পুলিশরে খবর দেয়া হয় নাই এখনো।”
“কান্ডটা করল কোথায়? ঘরের মানুষ কোথায় ছিল?”
“ঘরে করলে তো কথা ছিল না, বাঁচানোর মানুষের অভাব নাই। আকাম করছে তো বাড়ির পিছের শিল কড়ই গাছটার ডালে। রাতের বেলা বাইর হইছিল একলা, ঘরের মানুষ ভাবছে পানি বদলাইতে গেছে। পরে দেরি দেইখা বিশারুর মা খুঁজতে বাইর হইছিল। যায়া দেখে এই ঘটনা। শক্ত মহিলা, ভয় না পাইয়া বাকিদের ডাকে তুলছে। লাশ নামাইছে।”
কাছাকাছি যারা বসে ছিল সবাই কান খাড়া করে কথা শুনছে ওনাদের।
“আরেকটা কথা আছে বড় ভাই।” চাপা গলায় বললেন হাফিজ।
“কি?” বৌটা পোয়াতি আছিল। আগের বার তো বাচ্চা হয় না বলে মরতে গেছিল। এইবার হঠাৎ কি যে হইল.....” একটু মন খারাপ হয়ে এলো হাফিজের।
হাজী খামিরুদ্দিনেরও মন খারাপ হল কথাটা শুনে, প্রকাশ করলেন না, “এক কাজ করো, পুলিশকে খবর দেও। ব্যাপারটা পুলিশকে জানায় রাখা ভাল। বাকিদের খবর দেও। আমি মেহেরকে নিয়া এখনই যাবো। তুমি লাশ দাফন..... ও না থাক। পুলিশ আগে আসুক। দাফনের কাজটা পরে করা যাবে। ময়না তদন্ত করতে চাইতে পারে লাশটার।”
“জী আচ্ছা, আমি তাইলে যায়ে পুলিশরে খবর দেই।”
“যাও।”
হাফিজ তাড়াতাড়ি উঠে হন্ত দন্ত হয়ে বেরিয়ে গেলেন আরো কয়েকজন লোক নিয়ে। হাজী খামিরুদ্দিন মেহের বকসের দিকে তাকালেন, “কি একটা ঘটনা হল বল তো! দুনিয়া যে কুন দিকে যাইতেছে বুঝতেছি না। যাবা নাকি আমার সাথে?”
“চলেন, যায়ে দেখে আসি। আমার তো লাগে সুলতান শিকদার এতক্ষণে গিয়া হাজির হইছে ওখানে।” মেহের বকস চিন্তিত মুখে বললেন।
“তাহলে ছেলেদের যাইতে মানা করে দেওয়া ভাল। আমি চাইনা সুলতানের ছায়া মাড়াক এরা।” আঁড় চোখে খায়রুল আনামদের দিকে তাকালেন খামিরুদ্দিন। উঠে দাঁড়ালেন। তাঁর কাঠের ছড়িটা তুলে নিলেন পেছন থেকে। সুলেমান মিয়া নিয়ে এসেছে ওটা। ভোর বেলা মসজিদে আসার সময় ভুলে ওটা আনা হয়নি। ছড়ির হাতলে আঙ্গুল নাড়াচাড়া করতে করতে বললেন, “খায়রুল, মান্নান- তোমরা বাড়ি চলে যাও বাকিদের নিয়া। তোমাদের আসার প্রয়োজন নাই। পুলিশি জিনিস। দূরে থাকাই ভাল।”
বাকিরাও উঠে দাঁড়িয়েছে। খায়রুল মাথা কাত করে বলল, “জী আব্বা।” বাকিদের নিয়ে চুপচাপ বেরিয়ে গেল মসজিদ থেকে। যদিও ওদের যাওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল। কিন্তু খামিরুদ্দিনের কথার ওপর কথা বলার দুঃসাহস কারো নেই।
“সুলেমান?” ডাক দিলেন।
নিঃশব্দে এসে হাজির হল সুলেমান।
“আমাদের সঙ্গে চল। সুলতান শিকদার থাকতে পারে ওইখানে। মাথা ঠান্ডা রাখবা। আমার হুকুম ছাড়া কিছু করবা না, ঠিক আছে?”
মাথা নিচু করে রেখেছে সে। একবার শুধু ঝাঁকাল।
মসজিদ থেকে বের হতে হতে দোয়া পড়লেন খামিরুদ্দিন, “আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা মিন ফাদ্বলিকা।”
আকাশের দিকে তাকালেন, আকাশটা পরিষ্কার হয়ে এসেছে। বুক ভরে দম নিলেন, “চল।” হাটতে লাগলেন। তাঁর পেছন পেছন মেহের বকস। সুলেমান লাঠি হাতে নিঃশব্দে হাটছে। চোখ মাটির দিকে। তারপরও বোঝা যাচ্ছে শ্বাপদের মত জ্বলজ্বল করছে ওর চোখ দুটো।


বিশারুর বাড়িটা গ্রামের পূর্ব দিকে। গ্রামের একেবারে শেষ সীমায়। তারপরেই জমি আর ঝিল। হাজী বাড়ির দূর সম্পর্কের আত্মীয়। অনেক গরীব। জাতে আধিয়ার না বলে মাঝ গ্রামে থাকে না, এখানেই থাকে। কিন্তু পেশাতে আধিয়ারই অনেকটা। হাজী বাড়ির জমি চাষ করে জীবিকা চালায় বিশারু আর তার পরিবার। ঘরে মানুষ বলতে আছে কেবল আমেনা বিবি- তার মা, ছোট বোন ফয়জুন্নেছা, ছোট ভাই কাদের। বিয়ে করেছিল প্রায় সাত আট বছর হবে। ময়দান দীঘি এলাকার মেয়ে আফিয়াকে। দেখতে সুন্দরী বলে শুরু থেকেই গ্রামের খারাপ লোকদের নজরে পড়ে গিয়েছিল আফিয়া। প্রায়ই এর-তার কাছ থেকে প্রস্তাব পেতো স্বামীকে তালাক দিয়ে পালিয়ে যেতে, বিয়ে করতে। কিন্তু বিশারুকে অনেক ভালোবাসতো মেয়েটা। সন্তান না হওয়ায় বন্ধা বলে কথা শুনতে হত সবার কাছে, তাও বিশারুর ঘর ছাড়েনি। মাঝখানে একবার আত্মহত্যা করতে গিয়েছিল গলায় শাড়ি পেঁচিয়ে ফাঁস দিতে। পারেনি। বিশারু বাঁচিয়েছিল। সেবার সন্তান না হওয়ার কষ্ট সইতে না পেরে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিল আফিয়া, কিন্তু এবার যখন গর্ভে সন্তান এলো হঠাৎ কেন আত্মহত্যা করল বুঝে উঠতে পারছে না কেউ। বিশারু তো খারাপ স্বামী না। কেউ কোনো দিন শোনেনি বিশারু আফিয়াকে বকাঝকা করেছে কিংবা মেরেছে। স্বামী যদি মারধোর করত তাহলেও না হয় একটা কথা ছিল। লোকজন আফিয়ার মৃত্যুটার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছে না।
হাজী খামির উদ্দিনরা যখন ওদের বাড়িটায় গিয়ে পৌছালেন, বাড়ির উঠান ভরা মানুষ। সকাল হয়েছে। হাজীদের দেখে লোকজন পথ করে দিল ভেতরে যাবার জন্য। ছোট বাড়ি। বাঁশের বেড়া আর ছনের দিয়ে বানানো। তিন ঘরের বাড়ি। মেঝেটা মাটি লেপা। বোধ হয় দু’দিন আগেই গোবর দিয়ে লেপেছে, হালকা গন্ধ। বাড়ির চারপাশে গাছপালা অনেক। কাছাকাছি বাড়ি বলতে গেলে সেটাও দুইশো তিনশো গজ দূরে। এছাড়া আর কোনো বাড়ি নেই।
বাড়ির উঠানের মাঝখানে একটা চাটাইয়ের ওপর আফিয়ার লাশটা রাখা। একটা ছালা লম্বা লম্বি ভাবে তার ওপর ফেলে রাখা, কেবল মুখটা বের করা। বাড়িতে চাপা কান্নার রোল। ফয়জুন্নেছা আর আমেনা বিবি মুখে আঁচল চাপা দিয়ে কাঁদছে, ঘরের বারান্দায় বসে আছে ওরা। কাদের খালি গায়ে লুঙ্গি পরে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। মুখ গম্ভীর। বিশারুকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না।
হাজী খামিরউদ্দিন লাশটার দিকে তাকানোর আগে আরেকজনের দিকে তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকালেন। লাশের অন্যপাশে একটা কাঠের চেয়ারে বসে ছড়িতে ভর দিয়ে দু হাত রেখে তাঁর দিকে তাকিয়ে আছে একজন লোক। বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি হবে। ধবধবে সাদা গায়ের রঙ। মুখে ফিনফিনে পাতলা দাড়ি। মাথায় জালের টুপি, গায়ে খদ্দরের পাঞ্জাবী পাজামা। দুই চোখে কুতকুতে- শেয়ালের ধূর্ত দৃষ্টি। হাজী খামিরুদ্দিনকে দেখেই বিচিত্র একটা হাসি ফুটে উঠল তার চোখে। সামনের দিকে ঝুকে এসে দুই হাতের কব্জির ওপর থুতনি রেখে ভর দিল ছড়ির ওপর, দাঁত বের করে হাসল, “আসসালামুয়ালাইকুম হাজী সাব। সব চাল তো? কত দিন দেখা সাক্ষাত নাই। হাজার হোক আত্মীয় বলে কথা। আসেন আসেন..... ঐ কে আছিস? আমার সম্বুন্ধি সাহেবদের চেয়ার দে।” সঙ্গে সঙ্গে লোকটার পেছনে লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে থাকা দুজন লোক গিয়ে একটা চেয়ার আর জল চৌকি এনে দিল হাজী ভাইদের।
খামির উদ্দিন বসলেন না। বিড়বিড় করলেন কেবল, “ওয়ালাইকুম আসসালাম সুলতান শিকদার। ঠিকই হাজির হয়া গেছ দেখি।” একটু এগিয়ে গেলেন সামনে, আফিয়ার লাশের মুখটা দেখতে।
একটা মাছি এসে মুখে বসেছে লাশটার। ঠোঁট দুটো সামান্য ফাঁক করা, দাঁত দেখা যাচ্ছে। মাছিটা একবার ভেতরে গিয়ে আবার বেরিয়ে এলো। চোখগুলো বন্ধ। দেখে মনে হচ্ছে আর দশটা স্বাভাবিক দিনের মত ঘুমাচ্ছে বেচারি। মুখের ওপর কয়েক গোছা চুল এসে রয়েছে। কেউ সরায়নি। পুলিশ আসার অপেক্ষায় আছে। দেখতে অনেক মায়াকাড়া একটা মুখ। হাজী খামির উদ্দিন দীর্ঘ একটা মুহূর্ত তাকিয়ে রইলেন মেয়েটার লাশের দিকে। আহারে, আর ক’টা দিন বাঁচলে ছোট্ট একটা বাচ্চা ওর কোলে থাকতো। বন্ধ হয়ে যাওয়া ঐ চোখ দুটোতে বেঁচে থাকার অনেক স্বপ্ন থাকতো। ছালার ওপর থেকে ফুলে থাকা পেটের দিকটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে বড় অসময়ে চলে গেছে মেয়েটা।
ফোঁস করে একয়াট নিঃশ্বাস ফেললেন মেহের বকস, “নিজে মরবি মর। পেটের বাচ্চাটারেও মারে গেল মেয়েটা......” বড় ভাইয়ের দিকে তাকালেন, “বিশারুকে নাকি গত তিন দিন ধরে পাওয়া যাইতেছে না। শুনছেন কথাটা?”
ঝট করে তাকালেন ভাইয়ের দিকে খামিরুদ্দিন, “কি বললা? পাওয়া যাইতেছে না মানে?”
“লোকে তো বলতেছে গত পরশুর আগের দিন রাতের বেলা বাজারে গেছিল। আর আসে নাই। কেউ কেউ বলতেছে যাত্রাদলের মেয়ের সাথে ভাব হইছিল, পালায় গেছে।” নিচু গলায় জানালেন।
“হুম..... লোক লাগাও। খুঁজে বাইর করো বিশারুকে।....... ফয়জুন্নেছাকে আমাদের বাড়িতে পাঠায় দাও।” গম্ভীর গলায় বললেন খামিরুদ্দিন।
“জী? ফয়জুন্নেছা?” একটু অবাক হয়ে তাকালেন মেহের বকস, “ওরে বাড়িতে পাঠাবো কেনো ভাই?”
“যা বলতেছি করো। পরে বুঝায়ে বলবো। ফয়জুন্নেছা বড় হইছে। তারে এখানে বিশারুর অবর্তমানে রাখাটা সমীচিন মনে করতেছি না।”
“জী আচ্ছা ভাইজান।” মাথা কাত করলেন মেহের বকস। তিনি এগিয়ে গেলেন কাদেরের কাছে। বিশারুর এই ছোট ভাইটার বয়স তেরো বছর। ফয়জুন্নেছা এর বড়। নিচু গলায় কাদেরকে বললেন খামিরুদ্দিনের কথাটা।
হাজী খামির উদ্দিন পেছনে দাঁড়ানো সুলেমানকে গলার স্বর নামিয়ে বললেন, “সুলেমান, বাড়ির পিছনের শিল কড়ই গাছটার ওখানে গিয়া একটু দেইখা আসো তো- কোনো কানের দুল পাও কিনা?”
সুলেমান লাঠিটা মাটিতে একবার ঠুকে আঁড় চোখে সুলতান শিকদারের দিকে তাকাল। তারপর ঘুরে চলে গেল।
হাজী খামির উদ্দিন ফিরে তাকালেন লাশটার দিকে। আফিয়ার চুলগুলোর আড়ালে ডান কানের লতিটা দেখা যাচ্ছে। রক্ত জমে কালো হয়ে আছে, কেটে দুভাগ হয়ে গেছে। কানের দুলটা নেই....... গলার ওপর দিকে খুব হালকা একটা আঁচড়ের দাগ..... কিন্তু ফাঁসের জায়গাটায় কোনো গাঢ় দাগ নেই........


পুলিশ এসে গেছে ঘোড়া গাড়িতে করে। হাফিজুল আলম নিয়ে এসেছে। থানার দারোগা আর দুইজন কনষ্টেবল। দারোগা সাহেব এসেই লাশটাকে এক নজর দেখে শিল কড়ি গাছটা দেখতে পেছনে চলে গেলেন। ততক্ষণে সুলেমান গম্ভীর মুখে ফিরে এসেছে হাজী সাহেবের কাছে। কিছু বলেনি। চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। দারোগা আবিদুল হাসান ফিরে এসে বললেন, “ময়না তদন্ত করতে হবে। ময়না তদন্তের পর লাশ পাবে। মৃতার আত্মীয়দের মধ্যে অভিভাবক কে? তার কিছু কাগজ পত্র সই করতে হবে।”
হাজী খামিরুদ্দিন কিছু বললেন না। তার আগেই আমেনা বিবি চোখের পানি মুছতে মুছতে বলে উঠল, “হাজী খামির ভাই’ই অভিভাবক....... ভাইজান আপনে একটু দেখেন।” হাজী সাহেবকে কথাটা বলে আবার চোখে আঁচল চাপা দিলো সে। আফিয়ার লাশটার পাশে গিয়ে বসে কাঁদতে লাগল। ফয়জুন্নেছাও মায়ের পাশে এসে মাকে জড়িয়ে কাঁদা শুরু করল।
ফোঁস করে একটা নিঃশ্বাস ফেলে সুলতানের দিকে তাকালেন হাজী খামির উদ্দিন। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তাঁর দিকে সে। থানার দারোগাকে খামিরুদ্দিন বললেন, “ঠিক আছে। চলেন। আমি দেখবো।”
এতক্ষণ হাজী সাহেবকে খেয়াল করেননি আবিদ হাসান। হাজী সাহেবকে দেখে অবাক হলেন, “আরে প্রেসিডেন্ট সাহেব আপনি! আসসালামুআলাইকুম। আপনাকে আগে দেখি নাই বলে মাফ করবেন। কখন আসছেন?”
“ওয়ালাইকুম সালাম। এই তো, আপনার একটু আগে আসছিলাম। চলেন। কাজ কর্ম যত তাড়াতাড়ি শেষ হয় তত ভাল।” ছড়িতে ভর করে হাটা শুরু করলেন রাস্তার দিকে। তাঁর পিছু পিছু আসতে লাগলেন দারোগা সাহেব। বাকি কনষ্টেবল দুজন লাশটা ছালা দিয়ে পেঁচিয়ে এনে ঘোড়ার গাড়িতে তুলল। বাড়িতে কান্নার শব্দ আরো চড়া হল তখন।
হাজী মেহের বকস বাড়ির ভেতরে রয়েছেন। ফয়জুন্নেছাকে নিয়ে বোধ হয় আমেনা বিবির সঙ্গে কথা বলবেন কান্না সামলে উঠলে। অপেক্ষা করছেন কান্না থামার।
সুলতান শিকদার উঠে দাঁড়িয়েছে। চারদিকে এক নজর তাকিয়ে দেখল। নিজের লোকদের বলল, “চল। থাকে লাভ নাই।” ঘুরে হাটতে লাগল। বাড়ির বাহিরে রাস্তায় তার ঘোড়া গাড়িটা দাঁড় করানো। গাড়িতে উঠতে উঠতে চোখাচোখি হল হাজী খামিরুদ্দিনের সাথে, তিনি দারোগা সাহেবের সাথে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন, কথা থামিয়ে ফেললেন। সুলতান শিকদারের ঠোঁটের কোনে ধূর্ত একটা হাসি ফুটে উঠেই মিলিয়ে গেল। ঘোড়া গাড়িটা ছেড়ে দিল কোচুয়ান। খুড়ের শব্দ আর হ্রেষা ধ্বনি তুলে সামনে দিয়ে বেরিয়ে গেল গাড়িটা। ধূলা উড়ছে চারপাশে। হাজী সাহেব সেদিকে তাকিয়ে রইলেন এক দৃষ্টিতে।

রাতের বেলা খাওয়া শেষ করে বারান্দায় একটা চেয়ারে বসে হুকা টানছিলেন হাজী খামিরুদ্দিন। সামনে একয়াত হারিকেন জ্বলছে। আশে পাশে কেউ নেই। সারাদিন অনেক ব্যস্ততায় কেটেছে তাঁর। আফিয়ার ময়না তদন্তের জন্য নানা রকম কাগজ পত্র সই করতে হয়েছে, বাড়িতে কে কে আছে, কি করে- নানান প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে। তারপর যেতে হয়েছে পঞ্চগড়ে। ওনার বন্ধু বিষ্ণু প্রসাদের বাড়িতে গিয়েছিলেন। চুয়াল্লিশের দিকে তিনি আর বিষ্ণু প্রসাদ মিলে পঞ্চগড়ে একটা স্কুল দিয়েছিলেন। বিষ্ণু প্রসাদ জমি দেয়াতে স্কুলের নাম বি.পি. হাইস্কুল রাখা হয়েছে। যদিও এখনো মূল ভবনের অনেক কাজ করাই বাকি। খামিরুদ্দিন প্রচুর টাকা খরচ করে দুটো ভবন দাঁড় করিয়েছেন। আরো একটা ভবন হয়ে গেলে হাইস্কুলটা মোটামুটি ভাল একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠবে। শিক্ষক নিয়োগ নিয়েও বড় ধরণের একটা ঝামেলায় ভূগছেন। কারণ স্কুলটা এখনো সরকারী করতে পারেননি। ব্যক্তি প্রচেষ্টা থেকে তৈরি করা স্কুলগুলোবেশির ভাগই ইংরেজ সরকারের আমলে সরকারী হয়ে গিয়েছিল। দেশ ভাগের পরে সরকারী খাতায় নাম লেখানো ঝামেলা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পুরো অংশটাই পশ্চিমে গিয়ে ঠেকেছে। যার কারণে খামিরুদ্দিন সরকারী শিক্ষক যোগাতে পারছেন না। প্রেসিডেন্ট হবার পর থেকেই চেষ্টা করেছিলেন সরকারী করতে, কিন্তু পাক শাসনের মাঝে পড়ে সব তালগোল পাকিয়ে গেছে। আবারও নিজের খরচে আরেকয়াত ভবন দিতে চেষ্টা করছেন, অবশ্য বিষ্ণু প্রসাদ এবারে সাহায্য করবেন বলে কথা দিয়েছেন। উকিল মানুষ। পসার আছে। টাকা পয়সার অবস্থাও ভাল। স্কুলের জন্য খরচ করলে ভালই হয়। আপাতত ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে ভবনের খসরা করানোর কাজ নিয়ে ব্যস্ত তাঁরা। ভাল ইঞ্জিনিয়ার খুঁজছেন কাজটা দেয়ার জন্য। একটা সরকারী হাসপাতালের কাজ নিয়েও ব্যস্ত খামিরুদ্দিন গত ক’দিন ধরে। আজও সারাদিন ওটার পেছনেই ছিলেন। সারা দিনের হাজার খানেক নানান রকমের কাজ করে ক্লান্ত তিনি। একা একা হুকা টানতে টানতে অনেক চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে তাঁর।
রহীমা খাতুন এসে দাঁড়ালেন স্বামীর কাছে, “কি ব্যাপার? শুবেন না আজ? আর কতক্ষণ জাগে থাকবেন?”
রহীমা খাতুনের আসার শব্দ পাননি তিনি। চমকে উঠলেন, “তুমি? কখন আসলা? বেড়ালের মত হাটা চলা করো দেখি! টের পাইনা কিছু!”
“এই মাত্র। কি ভাবেন বলেন তো? তখন থেকে দেখতেহি হুকা টানতে আছেন আর কি ভাবতেছেন জানি। হুকা যে নিভে গেছে খেয়ালও করেন নাই।”
“অ! নিভে গেছে নাকি?” অন্যমনষ্ক ভাবে বললেন। রহীমা খাতুন দাঁড়িয়ে রইলেন। কিছু বললেন না।
“ফয়জুন্নেছা খাইছে রাতে? কার সাথে শুবে?”
“জী খায়েছে। আফেলার সাথে শুয়েছে সে। এখনো কান্না থামে নাই তার। ভাবী মরার শোঁকে মেয়েটা পাগল হয়ে যাবে দেখতেছি!”
“অ।”
“বারবার বলতেছে গত কয় রাত ধরে নাকি বাড়ির কুকুরগুলা খালি কানতো আর আঁচড়ায় আঁচড়ায় মাটি উঠাইতো উঠানের।”
“হুম........ কুকুরের মাটি খাঁমচায় উঠানো তো খারাপ লক্ষণ। কবর খোঁড়ার সংকেত দেয়। কেউ মরার আভাস।” বিড়বিড় করলেন হাজী সাহেব।
রহীমা খাতুন মাথা ঝাঁকালেন স্বামীর কথায়, “ঠিক বলছেন। আমেনা ঢিল মারে, লাঠি দিয়া খেদাই তো কুকুরগুলারে। লাভ হইতো না। আবার ফিরা আসে ডাকা লাগাইতো।”
“হুম.....”
“আফিয়াটা ক্যান যে হঠাৎ মরল..... বিশারুর বলে পাত্তা নাই? গায়েব তিন দিন ধরে?” স্বামীকে জিজ্ঞেস করলেন।
“হু?....... অ.....হ্যা। কোথায় যে গেছে। যাত্রাদলের মেয়ের সাথে পালাইছে অনেকে বলল। তাই যাত্রাদলের ম্যানেজারকে ডাকায় পাঠাইছিলাম। কারো সাথেই যায়নি সে। অনয কোথাও আছে। লোক লাগাইছি, খোঁজ পায়ে যাবো ইনশাআল্লাহ।”
“আফিয়ার লাশ দিবে কখন? ময়না তদন্ত কখন হবে জানেন?”
“এখনো লাশ কাটা ডাক্তার পায়নি। ঠাকুরগাঁও গেছেন ডাক্তার সাহেব। আসতে আসতে কাল বিকাল হয়ে যাবে। উনি আসলে কাজ হয়ে যাবে তাড়াতাড়ি। রিপোর্ট দিতে বিলম্ব হবে। লাশ দিয়া দিবে, ভাবিও না।”
“আহারে! মেয়েটা বড় সুন্দর আছিল তাই না? বাচ্চা হইতো আর কয়টা দিন গেলেই। পেটে যখন বাচ্চা আসল মেয়েটা বাড়ি আইসা পা ছুঁয়ে সালাম করে গেছিল আমাকে। বলছিল দোয়া করতে তার বাচ্চাটার জন্য। ক্যান যে মরতে গেল.......” আফসোস করে বললেন রহীমা। “আপনার কি মনে হয়? ক্যান আত্মহত্যা করলো?”
দীর্ঘ একটা মুহূর্ত ঝিম মেরে বসে বইলেন খামির উদ্দিন। তারপর আস্তে আস্তে বললেন, “আত্মহত্যা কিনা সেটাই আমি নিশ্চিত না বড় বৌ। কাউরে বলবা না কথাটা। আফিয়ার গলায় ফাঁসের দাগটা বড় বেশি হালকা লাগছে আমার কাছে। তারওপর খাঁমচির দাগ আর কানের একটা দুল নাই, লতি ছিঁড়া। কেউ খুন কইরা ফাঁসিতে ঝুলায় দিতে পারে দেখানোর জন্য।”
চমকে উঠলেন রহীমা খাতুন। চাপা গলায় বললেন, “কি বলতেছেন আপনি!”
“ঠিকই বলতেছি। গলায় আঁচড়ের দাগ দেখে খারাপ একটা চিন্তা আসতেছে মাথায়।”
“কি চিন্তা?” ভয়ে ভয়ে বললেন, “আপনি কি......” থেমে গেলেন কথাটা অসমাপ্ত রেখে।
“হ্যাঁ। আমিও তাই ভাবতেছি। কেউ হয়তো মেয়েটারে বলৎকার করে খুন করার পর গাছে ঝুলায় দিছিল।”
অস্ফূট একটা শব্দ করলেন রহীমা খাতুন, বোবা বনে গেছেন।
“সুলেমানরে বলছিলাম বাড়িটার পেছনে যায়ে একটু দেখতে কানের দুল পায় নাকি।” হাজী সাহেব পাঞ্জাবীর পকেট থেকে একয়াত কানের বল বের করলেন, “এটা পাইছে, সঙ্গে একটা হাতে বানানো তামাক ভরা বিড়ি।” লাল সুতা দিয়ে পেঁচানো আধ খাওয়া বিড়িটা বের করে দেখালেন। রহীমা কিছু বলতে পারলেন না। বিস্ময়ের ধাক্কাটা কাটিয়ে উঠতে পারেননি।
“তুমি যাও বৌ। আর আমার এসব কথা কাউরে বলবা না। যাও।” গম্ভীর গলায় বললেন।
রহীমা খাতুন চলে গেলেন।
কানের বলটা পকেটে ঢুকিয়ে রাখলেন হাজী সাহেব। বিড়িটা চোখের সামনে এনে ভ্রুঁ কুঁচকে উল্টে পালটে দেখলেন। আগেও কোথাও দেখেছেন এ রকম হাতে বানানো বিড়ি, কিন্তু মনে পড়ছে না কোথায়, কাকে খেতে দেখেছেন। কানের দুলটা যেখানে পাওয়া গেছে তার থেকে সামান্য দূরে পাওয়া গেছে বিড়িটা। পুলিশি কারবার নিয়ে তাঁর ভাবাটা কি ঠিক হচ্ছে? ভাবলেন একবার। এসব তো পুলিশের করা উচিত, তিনি কি করছেন?
পকেটে ঢুকিয়ে রাখলেন বিড়িটা।
হুকাতে যে আগুণ নেই মনে ছিল না তাঁর। হুকায় টান দিলেন আপন মনেই। খেয়াল করলেন না যে ধোঁয়া আসছে না।


গভীর রাত। হারিকেনের সলতে নামিয়ে রাখা। নিভু নিভু নীল আগুণ জ্বলছে হারিকেনে। রহীমা খাতুনের সঙ্গে আজ শুয়েছেন খামির উদ্দিন। রহীমা গভীর ঘুমে। কিন্তু তাঁর ঘুম আসছে না। এপাশ ওপাশ করে যাচ্ছেন কেবল। মাথার ভেতর নানান চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। উঠে বসলেন। রহীমা খাতুনের ঘুম না ভাঙ্গিয়ে নেমে গেলেন। হারিকেনটার সলতে বাড়িয়ে টেবিলের দিকে এগিয়ে গেলেন। তাঁর লিখতে থাকা বইটার কাগজপত্র রাখা সেখানে। খুব সাবধানে চেয়ার টেনে বসলেন যাতে শব্দ না হয়। হারিকেনটা টেবিলে রেখে ফাউন্টেন পেন আর দোয়াতটা এগিয়ে নিলেন। কালিতে ডুবিয়ে সাদা কাগজে খস খস করে লিখতে লাগলেন। মাথার রাজ্যের চিন্তাগুলো সরিয়ে দিয়ে হজ্জ্বের ভ্রমণ কাহিনীটা কবিতার ছন্দে বেঁধে ফেলতে লাগলেন দ্রুত। দুশ্চিন্তা গুলোকে উড়িয়ে দিয়ে ডুবে গেলেন কাগজ কলমের অন্য ভুবনে.......

“......বিয়াল্লিশ সাল জান, বাঙ্গালা সালের,
বিস্তিবারে দিল সিটী ষোলই মাঘের;
ঠিক বার ঘটিকায় চলিল জাহাজ,
নানাদেশী হাজী সহ দরিয়ার মাঝ।
ঘন্টা মধ্যে দশ মাইল চলিতে লাগিল,
চারি দিনে আন্দামান দূরে দেখা গেল;
ক্ষুনী আর ডাকাতের ধ’রে এই দ্বীপে,
পাঠে দেয় জন্মান্তরে শুনিয়াছি গল্পে।
ছয় দিন পরে তরী সিংহলে পৌছিল,
যাহার অনেক কথা পুথিত লিখিল।
রাবণ রাজত্ব যাহা, বীর হনুমানে,
পুড়িয়া করেছে ধ্বংস শুনিয়াছি কানে।
সরন্দ্বীপ একে বলে গোর আদমের,
আছে নাকি এইখানে খবর লোকের।
ইতিমধ্যে একদিন তুফান হইল,
তুফানে জাহাজ খানি দুলিতে লাগিল।
অনেকেরি মাথা ধর্ল, আরো হল বমি,
খোদার মেহেরে সব হয়ে গেল কমি।
এই ভাবে চলে তরী দিবা রাত্রি নাই,
খোদার কুদ্রতে কেচ্ছা লিখে যাই ভাই;
দেখিলাম ইতিমধ্যে দরিয়ার মাঝে,
এক দরিয়ার পানি কত রঙের আছে।
চাঁদ সূর্য উঠে ডুবে কোথা নাই কূল,
ঝকমকে ঢেউগুলি দেখিয়া আকুল.........”

নীরবে লিখে যাচ্ছেন হাজী খামিরুদ্দিন। ঘোরের মধ্যে চলে গেছেন। রহীমা খাতুন যে জেগে উঠেছেন খেয়াল নেই তাঁর। মশারির ভেতর বসে এক দৃষ্টিতে মমতা ভরা চোখে স্বামীর দিকে চেয়ে আছেন রহীমা খাতুন। ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে তাঁর দৃষ্টি।

(চলবে)
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৭



আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×