হক সাহেবের স্ত্রী শহরের শিক্ষিত, বড় চাকুরিতে নিয়োজিত। তিনি নারী অধিকারের ব্যাপারে সচেতন। অসচেতন গ্রাম্য নারীদের প্রতি তিনি বিরক্ত। সংসার চালাতে গিয়ে স্বামীর সাথে কাজ নিয়ে ভাগাভাগি করেন। স্বামীও স্ত্রীর প্রতি সহনশীল নয়।
হক সাহেবের স্ত্রীর নাম রোকেয়া আখতার। নারী অধিকার সচেতনতা থাকার পরও রোকেয়া আখতারের নাম হয়ে যায় মিসেস হক। "মিসেস হক " নামটুকুর মধ্যে তার নিজের কি রইল?
গ্রামের কৃষক লোকমান মিয়ার স্ত্রী মোসাম্মৎ রাহেলা বেগম। যিনি নারী অধিকার কী তা জানেন না। স্বামী, সন্তান, শ্বশুর-শ্বাশুড়ি নিয়ে সুখেই আছেন। তিনি একজন দক্ষ গৃহীনি, মমতাময়ী মা, স্নেহধন্য বউমা। নারী অধিকার সচেতন না হলেও তিনি সবার প্রিয় পাত্র। তার নাম এখনও মোসাম্মৎ রাহেলা বেগম। বিয়ের আগেও ছিল তা-ই। পাল্টায়নি।
এখন বলুন কে বেশি আধুনিক। নারী অধিকার কার রক্ষা হল। শিক্ষিতের না অশিক্ষিতের? আসলে বেশি শিখতে শিখতে আমরা আরো বেশি অশিক্ষিত হয়ে যাই।
মহিলাদের নামের সাথে স্বামীর নাম যুক্ত করার প্রচলন খ্রিস্টান, প্রাচ্য সমাজ থেকে আমদানী করাতো, তাই এদেশের শিক্ষিতরাও তা-ই করে।
ইসলামিক দেশসমূহে বিশেষ করে সৌদী আরব, ইরাক, ইরান ইত্যাদি দেশে যার যার নাম তার তারই থাকে। সাইনবোর্ড লাগাতে হয় না।
আমাদের দেশের শিক্ষিত নারীরা সাইনবোর্ড লাগাতে ভালোবাসে, আবার তারা প্রগতিশীল বলেও নিজেদের দাবী করে।
চিন্তা করে দেখুন আসলে কারা সত্যিকার আধুনিক।