somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিশু লালন পালন বিষয়ক - শীতে গোসলের গরম পানি আর আমাদের শিশু সন্তানেরা

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১১ ভোর ৬:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শীত এসেই গেছে প্রায় আর তাই গরম পানির ব্যবহার বেড়ে যাচ্ছে। অনেক উন্নত দেশেই হয়তো গোসলের জন্য আলাদা করে চুলা থেকে গরম পানি করতে হয়না। বাংলাদেশেও অনেকেই গরম পানির মেশিন সেটআপ করে নিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এখনো সকলের বাসায় গোসলের গরম পানি রান্নাঘরের চুলা থেকেই হয়ে থাকে। আপনারা অনেকেই হয়তো সচেতন নন যে, প্রতিবছর গরম পানিতে অনেক দূর্ঘনা ঘটে বাসা-বাড়িতেই। একটু অসতর্কতার কারনে সামান্য গরম পানিতে প্রতিবছর অনেক শিশুর মারাত্নক ক্ষতি হয়ে থাকে। আর এ ধরনের দূর্ঘটনার জন্য একজন শিশু নয় বরং আমরা বড়রা দায়ী।


ঘটনা-১
গোসলের গরম পানি বাথরুমে রেখে চলে আসে। বাথরুমের দরজা খোলা ছিলো। হাঁটা শিখেছে এমন শিশু ছিলো ঐ বাসায়। কখন যে শিশুটি বাথরুমে চলে গিয়ে গরম পানিতে হাত দিয়ে দেয় কেউ বুঝতেই পারেনি। তারপর বুঝতেই পারছেন। কারো কারো কাছে শুনেছি অটোমেশিনের গরম পানিও বেশ গরম হয়ে থাকে। বাথটাবে সেই গরম পানি রেখে দরজা খুলে রাখায় পরবর্তিতে বাসার শিশু সেই পানিতে পড়ে গিয়ে ঘটেছে বড় দূর্ঘটনা।

ঘটনা-২
গোসলের গরম পানি রান্নাঘর থেকে বাথরুমে নেবার সময় দরজা পার হতে হয়েছিলো। দরজার পর্দা সরানো ছিলো না, ঝোলানো ছিলো। যখন গরম পানির হাড়ি নিয়ে বহনকারী দরজার পর্দার এপার, ঠিক তখনি একজন শিশু পর্দার ওপার দিয়ে দৌড়ে আসছিলো। ব্যাস, দুজনের সংঘাত ঠিক পর্দার মাঝে একসাথে আর সাথে সাথে বড় দূর্ঘটনা। অথচ গরম পানি বহনের আগে একটু সতর্ক হলেই এই ধরনের দূর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব ছিলো।


ঘটনা-৩
গোসলের গরম পানি হাড়িতে। রান্নাঘর থেকে বাথরুমে নেবার সময় হাত থেকে ফস্‌কে পড়ে যায় আর সেই গরম পানিই ছিটকে গায়ে পড়ে গরম পানি বহনকারী শিশু গৃহপরিচারিকা (বা যাদেরকে সোজা বাংলায় কাজের লোক বলে থাকি আমরা।)।

তিনটি ঘটনাই বাস্তব আর আশা করি তিনটি ঘটনা যথেষ্ট গরম পানির কারনে যে বড় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে তা বুঝার জন্য। যে বাসায় শিশুরা থাকে সেই বাসার বড়দের অধিক সচেতন হওয়া দরকার শীতে গোসলের গরম পানি ব্যবহার করা নিয়ে।

আমার বাসায় কিভাবে গোসলের গরম পানি ব্যবহার হয়?
প্রথমত আমার বাসায় গোসলের গরম পানি হাড়িতে বহন করা হয়না। হাড়িতে বহন করতে হলে দুই হাতে হাড়ি ধরতে হয় আর সেটা আমাদের বুকের বা পেটের কাছাকাছি থাকে যা ভুমি থেকে অনেক উপরে। এটা অনেক বিপদজনক।


আমার বাসায় বড় বালতিতে গোসলের গরম পানি বহন করা হয়। বালতির হাতল ধরে খুব সহজে রান্নাঘর থেকে বাথরুমে নেয়া যায়। হাত ফসকে পড়ার চান্স খুবি কম। আর যদি পড়েও যায় সেটা হতে বড় দূর্ঘটনা হবার চান্স কম। কারন বালতিটা ভুমি থেকে খুব সামান্য উঁচুতেই থাকে। ফেসবুকে একজন পাঠক আরো ভালো বুদ্ধি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, "প্রয়োজনীয় পোস্ট এর জন্য ধন্যবাদ, শিবলী ভাই। গোসলের গরম পানি থেকে নিরাপদ থাকার জন্য আমাদের বাসায় আমরা আর একটা কাজ করি. রান্না ঘর থেকে যে বালতিতে করে পানি আনি তাতে আগেই একটু ঠাণ্ডা পানি নিয়ে নেই, এতে কোন সময় ই খুব গরম পানি বহনের ঝুঁকি থাকেনা."

আমার জমজ দুটি মেয়ে আছে। ওদেরকে খুব ভালো করেই বুঝিয়ে দিয়েছি গরম পানির ভয়াবহতা। যখন বালতিতে রান্না ঘর থেকে বাথরুমে পানি নেই আমরা আগে নিশ্চিত হই বাচ্চা সাবধানে দুরে আছে। আর গরম পানি যদি টয়লেটে রাখতেই হয় কিছুক্ষনের জন্য, দরজা বন্ধ রাখি। আর বাচ্চাদের বুঝিয়ে দিয়েছি যেন গরম পানি দেখলে সেটার কাছে না যায় এবং বাসার বড়দের সেটা বলে দেয়।


এটাই যথেষ্ট নয় বাচ্চাকে বোঝাবার জন্য। সাবধান করার পরেও শিশুর কৌতুহুল থেকে যেতেই পারে গরম পানির উপর। তাই, বাচ্চাকে দুরে রেখে নিজেই গরম পানিতে হাত দেবার অভিনয় করুন। যেমন একটা গ্লাসে কুসুম গরম পানি নিয়ে সেটাতে আমার আঙ্গুল ডুবিয়ে বাচ্চাদের দেখিয়েছিলাম। যখন গরম পানিতে আঙ্গুল ডুবিয়েছিলাম, যোরে উফ্‌ করে চিৎকার দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিলাম গরম পানির যন্‌ত্রনা অনেক। এভাবে শিশুদের সচেতন করা যায় বিপদ জনক বিষয়গুলিতে।

তবে শিশুকে সচেতন করার চাইতেও বাসার বড়দের অধিক সচেতন থাকবে হবে গরম পানি ব্যবহারে।


তবে শুধু গোসলের গরম পানিই নয়। যে কোন গরম জিনিষ থেকেই সাবধান থাকবেন। যেমন: মাইক্রোওভেন থেকে গরম খাবার বের করে টেবিলে রাখলেন আর বাচ্চা এসে চট করে সেটা ধরে খেতে গেলো। বা গরম আইরন মেঝেতে বা টেবিলে এমনভাবে রাখলেন যে শিশুর নাগালে চলে আসলো।

এই ধরনের ক্ষেত্রে আপনারা আপনার শিশু সন্তানের নিরাপত্তা কিভাবে নিশ্চিত করে থাকেন তা শেয়ার করুন আমাদের সকলের সাথে। অনেকেই উপকৃত হবে।

আপনার সন্তানকে নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকলে এখানে ক্লিক্‌ করে প্রশ্ন করতে পারেন। শিশু লালন পালন সংক্রান্ত বিষয়ে আরো আলোচনা হয়ে থাকে ফেসবুকেও। শিশু লালন পালন বিষয়ে আরো জানতে এখানে গিয়ে পড়ুন।

ছবি: ইন্টারনেট থেকে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১২:২৬
৬টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রান্ত নিথর দেহে প্রশান্তির আখ্যান..... (উৎসর্গঃ বয়োজ্যেষ্ঠ ব্লগারদের)

লিখেছেন স্বপ্নবাজ সৌরভ, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৪২



কদিন আমিও হাঁপাতে হাঁপাতে
কুকুরের মত জিহবা বের করে বসবো
শুকনো পুকুর ধারের পাতাঝরা জামগাছের নিচে
সুশীতলতা আর পানির আশায়।

একদিন অদ্ভুত নিয়মের ফাঁদে নেতিয়ে পড়বে
আমার শ্রান্ত শরীর , ধীরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাপ, ইদুর ও প্রণোদনার গল্প

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

বৃটিশ আমলের ঘটনা। দিল্লীতে একবার ব্যাপকভাবে গোখরা সাপের উৎপাত বেড়ে যায়। বৃটিশরা বিষধর এই সাপকে খুব ভয় পেতো। তখনকার দিনে চিকিৎসা ছিলনা। কামড়ালেই নির্ঘাৎ মৃত্যূ। বৃটিশ সরকার এই বিষধর সাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×