*****
ইতিবাচক এবং নেতিবাচক, শব্দ দুটোকে আমরা চিনেছি ভিন্ন অর্থে।
আমরা যা’ বুঝি, তাতে প্রত্যেকটি বিষয়ই সমমাত্রায় যুগপৎ ঐ শব্দদ্বয়কে ধারণ করে।
ঘৃণা, ভালোবাসা, লোভ, ত্যাগ, ভোগ, উৎসাহ, সান্ত্বনা, অভয়, তেল, ক্যালসিয়াম, লোহা, কাঁঠাল, চর্বি, চিনি, কম্পিউটার, ডিশ, এস.এম.এস., চ্যাটিং, জল, কুমড়ো, বায়ু, বিদ্যুৎ, প্রবাহ, স্থৈর্য, ধৈর্য, অস্থিরতা, বিত্তবানতা, হাসি, বিত্তহীনতা, দৌড়, ঝাপ, সাঁতার, জ্ঞানদান, মিথ্যাচার, সত্যবাদিতা, প্রতারণা, এসিড, ক্ষার, ভাবনা, খাঁটি, খাদ, জয়, পরাজয়, বৃদ্ধি, ক্ষয়, বিশ্বাস, অবিশ্বাস, কান্না, অভিমান, অভিনয়, অভিসন্তাপ, অভিসম্পাত, অভিলাষ, ব্যক্ত বা অব্যক্ত কোনো বিশেষ্য বা বিশেষণ, কোনোকিছুকেই যৌক্তিকভাবে আমরা শুধুই নেতিবাচক কিম্বা শুধুই ইতিবাচক হিসেবে নিতে পারি না।
স্থান-কাল-ব্যক্তি-সমষ্টি-সমাজ সাপেক্ষেই যেকোনো একটি বিষয় ইতিবাচক অথবা নেতিবাচক হিসেবে গণ্য হয়, যা’ অনস্বীকার্য।
জটিলভাবে বলতে গেলে, ব্যষ্টিকের সমন্বিত ভারসাম্যের ভিতরে থাকলে সমষ্টির কাছে যা’ ইতিবাচক, ব্যক্তিস্বার্থের বাইরে চলে যাওয়াতে ব্যক্তির বিবেচনায় সেটাই নেতিবাচক, অন্তত আমার ধারনায়।
ব্যক্তিগতভাবে আমার ক্ষেত্রে যেটি নেতিবাচক সেটি অন্যে কারো ক্ষেত্রে ইতিবাচক হওয়াটাই স্বাভাবিক, --তা’ মানতে না-চেয়ে, তাকে যদি আমি আমার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে বাধ্য করার চেষ্টা চালাই, তাহলে নিশ্চয়ই আমি সাধারণ্যে ঘৃণ্য স্বেচ্ছাচারী হিসেবে গণ্য হবো।
আমরা যদি কোনো ব্যক্তির এধরনের ‘ঘৃণ্য স্বৈরাচারিত্ব’-কে কখনো আমাদের পছন্দ করার স্বাধীনতাগুণে পছন্দ করি, করতেও পারি, অসম্ভব নয়। তবে, অমন ‘পছন্দ’-কে ইতিবাচক ‘পছন্দ’ হিসেবে সার্বজনীনভাবে মেনে নেওয়া যায় না, কিম্বা, ঐ ‘ঘৃণ্য স্বৈরাচারিত্ব’-র প্রতি গণ-ঘৃণাকে, আমরা নেতিবাচক ঘৃণা হিসেবে গণ্য করতে পারি না, আর পারি না এজন্যেই যে, --এমন ধরণের স্বাধীন ‘পছন্দ’গুলো, পরিণতি বিবেচনায় ব্যক্তিসমষ্টির সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের চূড়ান্ত বিচারে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ইতিবাচক পছন্দ হিসেবে গণ্য হয় না।
‘পছন্দ’ শব্দটি ইতিবাচক শোনালেও যেমন সর্বক্ষেত্রে ইতিবাচক নয়,- -তেমনিভাবে ‘ঘৃণা’ শব্দটি, এমনিতে নেতিবাচকের মতো শোনালেও,- -ক্ষেত্রবিশেষে ঘৃণাও হতে পারে ইতিবাচক।
রঙ্গপুর : ১২/১২/২০১১
করণিক : আখতার ২৩৯