somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এ গল্পটা তোর জন্য (কাল্পনিক চিঠি-কারো জীবনের সাথে মিলে গেলে কাকতাল মাত্র)

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ৮:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সেদিন তোর সাথে এ নিয়ে কথা হচ্ছিল। তুই তোর বন্ধুদের সাথে মিশছিস, এটা শুনলে আমার ঈর্ষা হয় ওদেরকে। তবে কি এর মানে তোর প্রতি আমার অবিশ্বাস? নাহ! আমার মতে, ঈর্ষা আসলে ভালবাসারই উল্টো পিঠ। এই ঈর্ষার জন্ম ভালবাসা থেকেই। ভালবাসা না থাকলে এই ঈর্ষাবোধটা আসত না। আমাদের সম্পর্ক যখন শুধুই বন্ধুত্বের ছিল, তখনও তো তোকে আমি ভালবাসতাম। কিন্তু তখন তো এই ঈর্ষাবোধ, তিল পরিমাণ ছিল না। তুই তোর বন্ধুদের কথা বলতি, তাদের সাথে মিশতি। আসলে কি জানিস, বন্ধুত্বের ভালবাসা আর আমাদের এখনকার ভালবাসায় যোজন-যোজন ব্যবধান। একটাতে ঈর্ষাবোধ থাকে, অন্যটাতে থাকে না। আর তুই যদি মনে করিস এই ঈর্ষাবোধ থাকাতে আমাদের এখনকার ভালবাসা হীন হয়ে গেছে তাহলে বিরাট ভুল করবি। দু’ধরণের সম্পর্কই মহান, বিশাল ও পবিত্র। তোকে একটা উদাহরণ দেই। একজন মায়ের যদি একাধিক সন্তান থাকে তখন দেখা যায় প্রতিটি সন্তান একে অপরকে হিংসা করছে। ভাবছে, মা বোধ হয় আমাকে একটু কম ভালবাসেন। অথচ মায়ের ভালবাসাটা একেবারেই সরল, সহজ। সে কখনও কোনও সন্তানের প্রতি বৈষম্য দেখাতে পারে না। তার ভালবাসা সবার জন্যই সমান। কিন্তু তারপরও মায়ের প্রতি ভালবাসায় সন্তানদের মধ্যে ঈর্ষাবোধ থেকে যায়। এই ঈর্ষাবোধ কখনই অন্যকোন দৃষ্টিতে দেখা উচিত না। আমার মধ্যে সম্পূর্ণ নতুন এই বোধটার উপস্থিতিতে আমি কিন্তু গর্বিত। এর দ্বারা আমি বুঝে নেই আমি তোকে কতটা ভালবাসি। যেদিন তুই আমার মধ্যে এই বোধটার অনুপস্থিতি পাবি, সেদিন বুঝে নিস তোকে আর আমি ভালবাসিনা। তবে তুই শতভাগ নিশ্চিত থাক, এই ব্যাপারটা কখনো ঘটবে না। তুই পছন্দ করিস আর না করিস। আমার এই ঈর্ষাবোধ বাড়তে থাকবে, বাড়তেই থাকবে।

আমি এখন অনেকটা পাল্টে গেছি। আমার এই বর্তমান রূপ দেখে আমি বিস্মিত। আমি সত্যিই কখনো নিজেকে অতোটা পজেসিভ ভাবিনি। সেদিন তোর কাছে করা ফোনটা যখন তোর কোন এক ছেলেবন্ধু রিসিভ করল, আমার এতো কষ্ট হল! সত্যি, এতোটা কষ্টবোধ আমার কোনদিন হয়নি, কোনদিনও না। আমার মনে হচ্ছিল তুই শুধু আমার। শুধু আমার সাথে কথা বলবি তুই, আর কারো সাথে না। তোর উপর অধিকার শুধু আমার (আমার উপর যেমনটা তোর), আর কারো নয়। এখানে কিন্তু অবিশ্বাসের ব্যাপারটা (যা ভেবে তুই কষ্ট পেয়েছিস) আসতেই পারে না। আমি কখনো তোকে অবিশ্বাস করিনি, করবোও না। প্রচন্ড ঈর্ষাবোধ ও অধিকারবোধ থেকে এই কষ্টটার জন্ম। সেদিন যখন তুই বললি, তোর কালেকশনের সব চিঠিগুলো (তোকে লিখা) তুই সযত্নে সাজিয়ে রাখছিস, তখন আমার প্রথমে খুব ভাল লাগল। কিন্তু যখন বললি, ওই কালেকশনে আমার লিখা চিঠিগুলো ছাড়া আরো কয়েকজনের চিঠিও আছে, তখন কি আমার একটু হলেও খারাপ লাগছিল না? না, বললে মিথ্যে বলা হবে। আর আমরা চাই আমাদের মধ্যে কোন মিথ্যা থাকবেনা, লুকোচুরি থাকবে না। আসলে মিথ্যে, লুকোচুরি না থাকলে জীবনটা অনেক সহজ হয়ে যায়। যাই হোক, এই যে আমার এই খারাপ লাগাগুলো, আমি জানি তুই পছন্দ করিস না। কিন্তু তারপরও বলব তোকে নিয়ে আমার এই বোধগুলো কখনো হারাতে পারবনা। তোর জন্য আমি সব কিছু করতে রাজি। তুই আমাকে যেমনটা হতে বলবি ঠিক তেমনটাই হতে পারব। তুই আমাকে তোর ইচ্ছে মতো গড়ে নিতে পারিস। কিন্তু আমার অনুভূতিগুলো পাল্টাতে পারবিনা কোনদিন। তোকে যে আমি বড্ড ভালবাসি।

একটা স্বপ্নের কথা বলি। সেদিন দেখলাম, আমি তোকে লেখা একটা কবিতা শুনাতে চাচ্ছি। তুই তখন কাকে জানি চিঠি লিখছিলি। বললি, একটু দাঁড়া, চিঠিটা শেষ করে নেই। চিঠিটা শেষ হতে না হতেই কে জানি ফোন করল তোকে। তুই তাকে এভয়েড করতে পারলি না। আড্ডা জুড়িয়ে দিলি। ৫, ১০, ১৫... মিনিট আমি অপো করলাম তোমার আড্ডা শেষ হবার জন্য। একসময় শেষ হলো তা। কিন্তু পরণেই কল বেলের শব্দ আরও কেউ আসল তোর সাথে দেখা করার জন্য। আমি যে কী কষ্ট পাচ্ছিলাম তখন একা একা বসে বসে! ঘুম ভেঙে গেল সাথে সাথে। দেখি, চোখের কোণায় জল। দেখ, দৃশ্যটা কল্পনা করতেই চোখ থেকে একফোঁটা জল জড়িয়ে পৃষ্ঠায় পড়ে গেল! কথা দে, তুই আমাকে এমন কষ্ট কখনো দিবি না? আমি কিন্তু বলছিনা তোর বন্ধুদের তুই ছেড়ে দিবি। অবশ্যই এটা বলছিনা। ব্যাপারটা হচ্ছে ইমপটের্ন্সের। এই ইমপর্টেন্সটা আবার জোর করে আনতে হয়না। এটা ভেতর ভেতর থেকে আপনাআপনি আসে। ভালবাসা জোর জবরদস্তি করে হয়না। যেখানে যুক্তি আছে, সেখানে ভালবাসা নেই। যেখানে ভালবাসা আছে, সেখানে যুক্তি নেই।

ভাল থাকিস তুই। হয়তো আমি ভাল থাকবো না। তুই কষ্ট পাস না তাতে। ভেবে নিস, কেউ কেউ জন্মগ্রহণ করে ভাল না থাকার জন্য। কারো কারো জন্মই হয় অপেক্ষায় থাকার জন্য।...









০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×