মার্কিন সরকার যে ড্রোন হামলা চালিয়ে পাকিস্তানের হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে, ইরান সেই ড্রোনের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিয়ে আকাশ থেকে মাটিতে নামিয়ে এনেছে।
ড্রোন কি : ড্রোন পাইলটবিহীন বিমান। ছোট আকারের এই আকাশযান আকাশের অনেক উপর দিয়ে উড়ে যেতে পারে, কিন্তু রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আফগানিস্তানের ঘাঁটি থেকে মার্কিনীরা এই বিমান আকাশে উড়িয়ে দেয় এবং তা নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে ওই ঘাঁটিতে বসে। পাকিস্তানের নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে দিন বা রাতের যে কোন সময় ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করে ড্রোনটি পুনরায় ওই ঘাঁটিতে ফিরে যায়।
আরেক ধরনের ড্রোন আছে যা শুধু গুপ্তচরবৃত্তির কাজে ব্যবহৃত হয়। এগুলো আকাশের অনেক উপর দিয়ে উড়ে যায় বা আকাশে অবস্থান করে ছবি ও ভিডিও ফুটেজ তুলে তা কেন্দ্রে পাঠাতে থাকে। ইরানের আকাশে এ ধরনেরই একটি ড্রোন পাঠিয়েছিল মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ।
যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে, তাদের ড্রোন আকাশে ওড়ার পর এর নিয়ন্ত্রণ শুধু তাদের হাতেই থাকে। এগুলোতে স্টিল্থ প্রযুক্তি সংযোজন করা হয়েছে, অর্থাৎ কোন রাডার ব্যবস্থা দিয়ে এগুলোকে সনাক্ত করা সম্ভব নয়। তবে আকাশের নীচু দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় কেউ যদি এটি লক্ষ্য করে রকেট লাঞ্চার বা অন্য কোন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আঘাত করে, তবে এটি বিস্ফোরিত হয়ে আকাশেই ধ্বংস হয়ে যাবে। এটিকে অক্ষত অবস্থায় আটক করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়। ড্রোনগুলো এমনই উন্নত প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
কিন্তু ইরান ওই ড্রোনকে শুধু তার রাডার ব্যবস্থা দিয়ে সনাক্তই করে নি। সেটির নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিয়ে নিয়েছে। যে ড্রোনটি ইরান মাটিতে নামিয়ে এনেছে সেটি ৫৫,০০০ ফুট উচ্চতায় উড়তে সক্ষম। যাত্রীবাহী বৃহৎ পরিসরের বিমান আকাশে ওড়ে ৩৩,০০০ ফুট উপর দিয়ে। তাহলে বুঝুন, ইরান কত বড় সাংঘাতিক কাজ করেছে।
ইরানের কর্মকর্তারা বলেছেন, মার্কিন ড্রোন মাটিতে নামিয়ে তারা তাদের প্রযুক্তিগত দক্ষতার সামান্যই প্রদর্শন করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর হামলার হুমকিসহ ইলেকট্রনিক যুদ্ধের কথা বলছে। কিন্তু সেই ইলেকট্রনিক যুদ্ধের প্রকৃত রূপ কী হতে পারে তা ইরানই আগে দেখিয়ে দিল। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ তাদের ড্রোন ইরানের হাতে চলে আসায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, এই প্রযুক্তি এখন ইরান হস্তগত করে ফেলেছে। বিবিসি জানিয়েছে, এ ধরনের ড্রোন বা অন্য কোন আকাশযান ইরানের আকাশে পাঠাতে পশ্চিমারা এখন থেকে একশ'বার ভাববে।
ইসরাইলও অনেক হম্বিতম্বি করে এই কথা বলে যে, জঙ্গীবিমান পাঠিয়ে সে ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো ধ্বংস করে দেবে। যে দেশ রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম মার্কিন ড্রোন আকাশ থেকে নামায়, সে দেশের গহীন অভ্যন্তরে ইসরাইলি জঙ্গীবিমান অনুপ্রবেশ করলে তার ফল কী হতে পারে, তা হয়তো বহু আগেই বুঝে গেছে ইসরাইল ও তার পৃষ্ঠপোষকরা। এ কারণেই হামলা হামলা মুখে করে, কাজে করার সাহস পায় না।
ইরানের হাতে মার্কিন ড্রোন আটক সংক্রান্ত কয়েকটি খবরের লিঙ্ক দিলাম। আগ্রহী ব্যক্তিরা দেখে নিতে পারেন।
Click This Link
Click This Link
Click This Link
এটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কাজে ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র
উপরের এই দু'টি ড্রোন দিয়ে গুপ্তচরবৃত্তি হয়, যা ইরান নামিয়ে এনেছে
ইরানের হাতে আটক মার্কিন ড্রোন
মার্কিন ড্রোন নামিয়ে এনেছে ইরান : এই ইরানের সঙ্গে ইলেকট্রনিক যুদ্ধ করবে যুক্তরাষ্ট্র!
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
১৮টি মন্তব্য ১১টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!
রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।
আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!
এই... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাঁচতে হয় নিজের কাছে!
চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু। লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা
২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন
নিউ ইয়র্কের পথে.... ২
Almost at half distance, on flight CX830.
পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১
হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন
সামুতে আপনার হিট কত?
প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন