somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভুল বোঝাবুঝি : বুকের ভেতর অনির্বাণ দাহ

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




শাহনাজের সাথে ভুল বোঝাবুঝি

তখন নবম শ্রেণীতে পড়ি। ছুটির ঘণ্টা পড়লে যথারীতি ক্লাস থেকে বেরিয়েছি। মেইন রোডে ওঠার আগে বিশ-পঁচিশ গজ রাস্তা। সেই রাস্তা ধরে মেইন রোডের দিকে এগোচ্ছি। এই জায়গাটুকুতে ছাত্র-ছাত্রীদের তখন প্রচুর ভিড়- একটি মাত্র গেইট দিয়েই সবাইকে বের হতে হয়। ঠেলাঠেলি করে হাঁটছি, এমন সময়ে আমার স্পঞ্জের স্যান্ডেলের ফিতা ছিঁড়ে গেল। কী যে বিড়ম্বনা! একপাশে চেপে গিয়ে নিচু হয়ে কিছুক্ষণ গিঁঠু দিয়ে ফিতাটি আটকাবার চেষ্টা করলাম, কিন্তু কিছুই করতে পারলাম না। ছাত্র-ছাত্রীদের ভিড় অবশ্য ততোক্ষণে কমে গেছে। অগত্যা জুতাজোড়া হাতে নিয়ে খাতার পাতা ছিঁড়ে কাগজে মোড়ালাম, তারপর বই-খাতার সাথে জড়িয়ে নিলাম।

গেইট পেরিয়ে মেইন রোডে পা ফেলেই দেখি রাস্তার ওপারে আমাদের ক্লাসের সবগুলো মেয়ে দাঁড়িয়ে। ওরা সবাই আমার দিকে তাকিয়ে। ওরা কি বুঝতে পারছে আমার বইখাতার নিচে কাগজে মোড়ানো একজোড়া ছেঁড়া স্যান্ডেল লুকানো আছে? আমি লজ্জাবোধ করতে লাগলাম। আবার বেশ পুলকিত বোধও করলাম, এতোগুলো মেয়ের দৃষ্টির কেন্দ্রবিন্দু হওয়া পরম সৌভাগ্যের ব্যাপার।

আমি গোবেচারা মানুষ, বড় লাজুক, তবুও আমার ঠোঁটের কোণে একটু হাসির ঝিলিক ফুটিয়ে দিলাম, মৃদু করে। প্রত্যুত্তরে ওরা কেউ হাসলো না। ওদের কী হয়েছে? আমি ভাবতে থাকি। প্রতিদিন এখান থেকে ওরা দু-দলে ভাগ হয়ে যায় - একদল যায় দক্ষিণ দিকে, যাদের বাড়ি নারিশা, শিমুলিয়া, মেঘুলা, মালিকান্দা গ্রামে, যেমন শাহনাজ, সায়ন্তনী, বীনা সুলতানা, শামীমা। আরেক দল যায় উত্তর দিকে, যেমন নার্গিস, ঝিনুক, নাজনীন, বিউটি। ওদের গ্রামের নাম ঝনকী, সুতারপাড়া, মুন্সীকান্দা, গাজীরটেক, ইত্যাদি। ওরা দুদিকের যাত্রী, এখানে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে কেন? কপালে সামান্য ভাঁজ তুলে ভাবতে থাকি।

কিন্তু আমি তো আর যেচে ওদের কাছে এই কৌতূহল ব্যক্ত করতে পারি না। প্রথমত, মেয়েদের সাথে কথা বলার মতো অতোখানি চতুর ও বাকপটু আমি নই; দ্বিতীয়ত, ওদের সাথে অহরহ কথা বলার মতো অতো সাহসও আমার নেই। অতোখানি ঘনিষ্ঠতা কিংবা সখ্যতাও গড়ে ওঠে নি।

আমি ওদের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ধীর পায়ে উত্তর দিকে মোড় নিয়ে হাঁটছি, তখনই দেখি সবগুলো মেয়ে একযোগে উত্তর মুখে রওনা হলো এবং তখনো ওরা সবাই আমার দিকে স্থির চোখে তাকিয়ে আছে।

খ-লি-ল!
খানিকটা রুক্ষ ও তীক্ষ্ণ কণ্ঠে ডলি ডেকে উঠলা। বললো, আস্তে হাঁটো।
আমি আস্তে আস্তেই হাঁটছিলাম।
ডলির কঠিন দৃষ্টিতে আগুন ঠিকরে পড়ে। ওর ঠোঁটের কোণে বক্র ও বিদ্রূপাত্মক হাসির ঝাঁঝ, অন্তরে চাপা ক্ষোভ। লক্ষ করি, সবগুলো মেয়ের মধ্যেই তখন এই রূপ।

ডলি বললো, তোমার কাছে আমরা একটা সংজ্ঞা শিখতে চাই।
আমি মনে মনে গর্বের হাসি হাসলাম। আমি যে ক্লাসের সেরা ছাত্র মেয়েদের কাছে তাহলে অন্তত এই স্বীকৃতি এবং দামটুকু আছে। ওরা আজকাল আমার কাছ থেকে সামান্য হলেও কিছু শিক্ষালাভ করতে চায়।
যুগপৎ আমি অবশ্য আরেকটি বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্থ হলাম। ক্লাসের ছেলেমেয়েরা নিজেদের মধ্যে সবসময় তুই-তুকারি করেই কথা বলে, ওরা হঠাৎ করে আমার সাথে 'তুমি'তে চলে এলো কেন?
আমি আড়ষ্ট মুখে জিজ্ঞাসা করলাম, কিসের সংজ্ঞা?
ডলি বললো, আচ্ছা, আমাদের একটু ভালো করে বুঝিয়ে দাও তো 'পদার্থ' কাকে বলে?

আমি মনে মনে শব্দ (?) করে হেসে উঠলাম, ওরে নির্বোধ গণ্ডমূর্খের দল, গত পাঁচ বছর ধরে এই 'পদার্থে'র সংজ্ঞা পড়ছিস, আজও তার সঠিক সংজ্ঞা বুঝতে পারলি না? গর্দভের দল রে!
মুখে বললাম, পদার্থের সংজ্ঞা পারছিস না? এর চেয়ে সহজ সংজ্ঞা তো মনে হয় সায়েন্সে নেই। ভালো করে শোন্‌, আমি বুঝিয়ে বলছি- যার ওজন আছে এবং কিছু পরিমাণ জায়গা দখল করার ক্ষমতা আছে, তাকেই পদার্থ বলে। মনোযোগ দিয়ে শোন্‌, আমি আবার বলছি...।
আর বলতে হবে না, ডলি বললো, বলো তো, আমাদের কি ওজন আছে এবং আমরা কি কিছু পরিমাণ জায়গা দখল করে থাকি?
নিশ্চয়ই, আমি হেসে দিয়ে বললাম, তোদের একেক জনের ওজন তো মাশাল্লা কম করে হলেও চল্লিশ কেজি হবে। এবং পাঁচ হাত বাই চার হাত মাপের খাটটাও দখল করে থাকিস, অতএব....।
অতএব, আমরা সব্বাই 'পদার্থ', তাই তো? এবার বলো 'অপদার্থ' কাকে বলে?
বিদ্‌ঘুটে প্রশ্ন তো! বিজ্ঞান বইয়ের কোনো জায়গাতেই 'অপদার্থে'র সংজ্ঞা দেয়া নেই। কিন্তু পদার্থের সংজ্ঞা আছে তো। পদার্থের বিপরীত শব্দ হলো 'অ-পদার্থ', অর্থাৎ যা পদার্থ নয় তাই অপদার্থ।
আমার বুদ্ধিমত্তা খুব প্রখর, এ বিষয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই। আমি সাহিত্য ও বিজ্ঞানের ভাষা মিলিয়ে অপদার্থের সংজ্ঞা দিলাম- যা পদার্থ নয় তাই অপদার্থ, অর্থাৎ যার কোনো ওজন নেই, জায়গা দখল করতে পারে না, তাকে অপদার্থ ছাড়া অন্য কোনো কিছু বলা যায় না।
হঠাৎ সবগুলো মেয়ে প্রায় একযোগে উচ্চস্বরে বলে উঠলো, তাহলে তোকে (খাঁটি সম্বোধনে ফিরে এসে) ব্যাখ্যা করে বলতে হবে যে শাহনাজ কোন্‌ অর্থে অপদার্থ?
ওদের ডামাডোলে মাথা আউলে গেলো। বললাম, তোদের প্রশ্নটা বুঝতে পারি নি।
নাজনীন এবার ঘাড় উঁচু করে সামনে এগিয়ে এসে উত্তেজিত স্বরে জিজ্ঞাসা করে, তোর পণ্ডিতগিরির কাঁথা পুড়ি, শাহনাজকে অপদার্থ বললি কেন আগে তার জবাব দে।
নাজনীনের সংগে সংগে সবগুলো মেয়ে কলকলিয়ে তেড়ে উঠলো। আমি সম্পূর্ণ দিশেহারা হয়ে গেলাম। ওদের প্রশ্নের আগামাথা কিছুই বুঝতে পারলাম না।

আমাদের ক্লাসের পণ্ডিত অ-পণ্ডিত ছেলেগুলো অনেক দূর চলে গেছে। আমি একা ও অসহায়। তদুপরি, সিনিয়র ক্লাসের কয়েকজন ছাত্র আমার অসহায়ত্বকে বেশ উপভোগ করছেন, আর মেয়েগুলোর পক্ষাবলম্বন করে ওদের দৃষ্টি আকর্ষণ ও মন জয় করার চেষ্টা করছেন। ডলিদের পেছনে অবশ্য বেশ কয়েকজন অন্যান্য শ্রেণীর ছাত্রীও যোগ হয়েছে।
আমি বললাম, কে শাহনাজকে 'অপদার্থ' বলেছে? আমি, না অন্য কেউ?
তুই বলেছিস, তুই বলেছিস। ওরা চেঁচিয়ে উঠলো।
আমি ভীষণ ধাঁধায় পড়ে গেলাম। বললাম, কখন শাহনাজকে অপদার্থ বললাম? আমি কক্ষণো কাউকে অপদার্থ বলি নি।
খবরদার মিথ্যা বলবি না, অবশ্য অবশ্যই তুই শাহনাজকে অপদার্থ বলেছিস। বল্‌, বলিস নি?
আমি বলি নি।
বলেছিস।
বলি নি।
চুপ মিথ্যুকের হাড্ডি- একশোবার বলেছিস।
কখন বললাম?
ঐ যে কিবরিয়া স্যার যখন আমাদের মেয়েদের বকছিলেন, তুই বলেছিলি শাহনাজ একটা অপদার্থ।
চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করলো, আমি বলি নি। বলি নি। শাহনাজকে অপদার্থ বলি নি।
বিউটি বললো, শাহনাজের মতো মেয়েকে যে অপদার্থ বলতে পারে তার শাস্তি না হয়ে পারে না।
নাজনীন ঝাঁঝালো স্বরে বললো, তোকে দশবার কান ধরে ওঠ্‌-বস্‌ করতে হবে।
ঝিনুক তেঁজে ফেটে পড়লো। বললো, তোর হাড়-মাংস আমরা চিবিয়ে খাবো।
শামীমা বললো, আমরা তোর ঘাড় মটকাবো, হাড়-মাংস গুঁড়া করে ছাড়বো। তোর জিভ কেটে ফেলবো।
ডলি বললো, তুই ছাড়া অন্য কেউ এ-কথা বললে তাকে আমরা জুতা দিয়ে পিটাতাম।

আমার কানের লতি পর্যন্ত জ্বলতে থাকলো। আমি রাঙ্গা হয়ে উঠলাম, লজ্জা ও অপমানে। আমি কাঁদো কাঁদো হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, তোরা কি নিজ কানে শুনেছিস আমি শাহনাজকে অপদার্থ বলেছি?
শাহনাজ ক্লাসে বাঘিনীর মতো ছিল। কিন্তু এতোক্ষণ নিশ্চুপ ছিল। এবার সে অগ্রভাগে এসে গলার স্বরে তেজ মাখিয়ে বললো, নিশ্চয়ই বলেছিস, আমি স্পষ্ট শুনেছি তুই আমাকে 'অপদার্থ' বলেছিস।
আমিও নিশ্চিত, আমার অন্তর্যামী সাক্ষী, শুধু শাহনাজ কেন, জীবনে এই 'অপদার্থ' শব্দটি দ্বারা আমি অন্য কাউকেই গালি দিই নি।
কিন্তু আমার মনের কথাটা ওদেরকে আমি বোঝাতে পারলাম না। ওরা বোঝার চেষ্টাও করলো না।

আসমা, যে আমাদের দু-ক্লাস সিনিয়র ছিল, বাল্যবিবাহের কারণে ইতোপূর্বে যার দু-বার ফল-বিপর্যয় ঘটেছিল বলে গত দু-বছর যাবত আমাদের ক্লাসেই আছে, মায়াবী চেহারার সেই শ্যামলা মেয়েটি সমঝোতার প্রস্তাব নিয়ে এলো। বললো, তোমাকে কিন্তু শাস্তি পেতেই হবে (সে অবশ্য আগাগোড়া 'তুমি' করেই বলতো)।
নার্গিস সবচাইতে তীব্র আঘাত হানলো। বললো, আয়নায় তোর নিজের চেহারা কখনো দেখেছিস? দেখতে তো একেবারে বাঁদরের মতো! সে কিনা আবার শাহনাজকে বলে অপদার্থ।

নার্গিসের কথায় আমি খুব কষ্ট পেলাম। আমার অসহায় মুখাবয়ব ভীষণ ম্লান ও করুণ হয়ে গেলো। আমার অন্তরে নার্গিসের জন্য একটা অন্য রকমের স্থান ছিল। খবিরউদ্দিন আমার খুব ঘনিষ্ট সহপাঠী। নার্গিস খবিরের ছোটো বোন, একই শ্রেণীতে পড়ে। খবিরের বাসায় আমার হরহামেশাই যাওয়া-আসা হয়। খবিরের সাথে ওদের বাংলা ঘরে বসে কতো গল্প করি, পড়াশোনার বাইরের জগত নিয়ে। মাঝে মাঝে নার্গিস সে ঘরে আসে। নার্গিসকে দেখলে আমার প্রাণ জুড়িয়ে যায়। ওর চেহারাটা ঠিক আমার কর্পুরা খালার মতো। ও যখন সামনে দিয়ে হেঁটে যেতো আমার নাকে একটা অদ্ভূত মিষ্টি ঘ্রাণ এসে লাগতো - আমার কর্পুরা খালার গায়ে এরকম ঘ্রাণ ছিল। আমার কর্পুরা খালা নেই। নার্গিসকে দেখে আমি খালার কথা ভাবতাম।

সেই নার্গিস, আমার কর্পুরা খালার ছায়া, আমার ঘনিষ্ট সহপাঠীর ছোটো বোন, আমাকে এতোখানি অপমান করে কথা বললো? আমি মাথা নিচু করে হাঁটছিলাম। নার্গিসের কথায় আমি ওর দিকে তাকাতেই দরদর বেগে আমার চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো। আমার করুণ চাহনি দেখে কেন যেন হঠাৎ ওদের মায়া হয়, আস্তে আস্তে শোরগোল থেমে গেলো।
আসমা মুখে সহানুভূতির হাসি ফুটিয়ে বললো, আমার শাস্তিটা কিন্তু একটু অন্য রকমের।
আমি কথা বলতে পারলাম না। মেয়েদের কথার কিংবা কাজের প্রতিবাদ করার সাহস ও শক্তি কোনোটাই আমার নেই। আমি তার দিকে তাকালাম।
আসমা বললো, শাস্তিটা হলো আমাদের সবাইকে আজ তোমাদের বাসায় বেড়াতে নিয়ে যাবে। পারবে না?

আমি শার্টের হাতায় চোখ মুছতে মুছতে বললাম, ঠিক আছে।
আমরা কিন্তু রাতেও তোমাদের বাসায় থাকবো।
আমি বললাম, ঠিক আছে।
আচ্ছা, তোমাদের বাড়িতে কয়টা ঘর আছে?
একটা।
হায় আল্লাহ, ওই একটা ঘরে তো আমাদেরই জায়গা হবে না। তুমি থাকবে কই, তোমার মা-বাবা আর ভাই-বোনেরা কোথায় থাকবে?
রান্নাঘরে।
সবাই খিলখিল করে হেসে উঠলো।
ডলি বললো, একটা কাজ অবশ্য করা যায়, রাতে থাকার দরকার কী? খেয়েদেয়ে সন্ধ্যার আগে আগেই চলে এলাম, হয় না?
আমি ভাবছিলাম এতোক্ষণ ওরা আমার সাথে ঠাট্টা করছিল। কিন্তু ডলির কথায় মনে হলো, না, ঠাট্টা নয়। ওরা সত্যি সত্যিই আমাদের বাড়িতে বেড়াতে যাবে। তাহলে এই ছিল ওদের মনে? সম্পূর্ণ পূর্ব-পরিকল্পিত চাল!

আমি মনে মনে দারুণ বিপাকে পড়ে গেলাম। আমাদের ক্লাসের মেয়েদেরকে আপ্যায়ন করার মতো আমাদের ঘর-দোরের অবস্থা নয়। দুটি মাত্র ঘর, তা-ও আবার কুঁড়েঘর। পড়ার ঘর বলতে আমার কোনো ঘর নেই। বইখাতা আর কলম বড় ঘরে একটা তাকে রাখি। পড়ার সময়ে শুয়ে শুয়ে পড়ি। খেজুর পাতার পাটিতে শুই, ঘরে কোনো খাট নেই, চৌকি নেই, বসার জন্য একটা মোড়া কিংবা চেয়ার নেই। কাঠের পিঁড়িতে বসি। যখন লিখতে হয় পাটিতে বসে উঁবু হয়ে লিখি। টিনের থালা, মাটির বাসনে খাই, পিতলের একটি মাত্র বড় গেলাসে (দাদুর সম্পত্তি) সবাই মিলে পানি পান করি। এই যখন ঘর-দোরের অবস্থা, আমার ক্লাসের বান্ধবীরা এই হত-দরিদ্রের বাড়িতে এসে উল্টো ওরাই আরো লজ্জায় পড়ে যাবে না? আমি ভিতরে ভিতরে হাঁপিয়ে উঠলাম। একবার ভাবলাম, বলেই ফেলি, আজ আমার মা অসুস্থ। তোরা কাল আসিস্‌। আবার ভাবলাম, এতে না হয় আজ রক্ষা পাওয়া গেলো, ওরা যদি কাল আসে? সত্যি কথাটাই বলে ফেলতে দোষ কই, না রে, আমরা খুব গরীব। আমরা তোদেরকে খাতির করতে পারবো না।

শামীমা বললো, তোদের বাড়িটা আর কতোদূর?
আমি বললাম, আর বেশি দূর নেই। এই রাস্তায় ধাপারী খাল পর্যন্ত দশ মিনিট, তারপর ডান দিকে মোড়, ধাপারী খালের পাড় ধরে সুতারপাড়া গ্রামের ভিতর দিয়ে বিশ মিনিট, মাঝখানে অবশ্য শেরখান, জাহিদ আর বায়েজীদদের বাড়ি। তারপর আমাদের ডাইয়ারকুম গ্রাম। আমাদের গ্রামের উত্তর দিকটা অনেক সুন্দর, বিশাল সবুজ মাঠ। ধান হয়, পাট হয়, গম, আলু, সব হয়। আড়িয়াল বিল আছে না, ওটা কিন্তু আমাদের গ্রামের ঠিক পূর্ব দিকে। তোরা জানিস, আমাদের গ্রামের নাম 'ডাইয়ারকুম' হলো কেন? 'কুম' একটা আঞ্চলিক শব্দ যার মানে হলো বিশাল ডোবা, গর্ত, যাতে বারো মাস পানি থাকে। গ্রীষ্মে সব খাল আর পুকুরডোবা শুকিয়ে গেলেও আমাদের গ্রামের 'কুম'টিতে পানি থাকতো। আশেপাশের দশ গ্রামের মানুষ আসতো এই কুমে গোসল করতে। 'ডাইয়া' শব্দটার অর্থ হলো শক্ত-সামর্থ, বলিষ্ঠ, আবার আরেক অর্থে পিঁপড়াও। আমাদের গ্রামের মানুষগুলো খুব শক্ত, বলিষ্ঠ, তরতাজা, সাহসী। ওরা এতোই একতাবদ্ধ যে ও-গাঁয়ের কারো গতরে ভিন গ্রামের কেউ একটা টোকা দিলে ওরা হৈ হৈ রৈ রৈ করে একত্রে শত্রুর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাদেরকে ঘায়েল করে ছাড়তো। এজন্য ওদেরকে আশেপাশের গ্রামের মানুষ খুব ভয় পেতো, বলতো 'ডাইয়া'। সেই থেকে গ্রামটার নাম হয়ে গেল 'ডাইয়ারকুম'।

তোদেরকে আরেকটা কথা বলি। যাবার সময় তোদেরকে এক কবির বাড়িতে নিয়ে যাবো। মিজানুর রহমান শমশেরী। সুতারপাড়ার শেষ মাথায় বাড়ি। দেখবি, কবি ভাই তোদেরকে দাঁড় করিয়ে রেখেই একের পর এক কবিতা লিখে ফেলছেন। তাঁর একটা বিখ্যাত কবিতা আছে, শোন্‌ ...

হঠাৎ আমার খেয়াল হলো, আরে, আমি এতো কথা বলছি কেন? আসলে আমার অন্তরের ভিতর তখন আসন্ন লজ্জাকর পরিস্থিতির কথাই ঘুরপাক খাচ্ছিল। মুখে কী বলছিলাম সে বিষয়ে আমার হিতাহিত কোনো জ্ঞান ছিল না।
কথা বন্ধ করে ওদের দিকে তাকালাম। ওরা মিটিমিটি হাসছে। আমার মুখে কোনো হাসি ফুটছে না। কী যে বিব্রতকর অবস্হার সম্মুখীন হতে যাচ্ছি!
আর পঞ্চাশ গজ পরেই আমরা মেইন রোড থেকে নেমে ডান দিকে মোড় নিব। এ কথা ওদের জানানো মাত্রই ওরা একটু উজ্জ্বল ও সচকিত হলো।

আমি আগে আগে হাঁটছি। মোড়ের কাছে এসে থেমে বললাম, এবার ডান দিকে যেতে হবে। কিন্তু ওরা না থেমে ফিক ফিক করে হেসে উঠলো।
আমি বললাম, ব্যাপার কী, তোরা যাবি না?
নার্গিস বললো, যাবো কী, যাবার আগেই তো ভয় পেয়ে গেছিস।
আমার মনের ভয় কিছুতেই বাইরে প্রকাশ পেতে দিব না। আমি গলায় জোর আনার চেষ্টা করে বললাম, তোদের অবশ্যই যেতে হবে, অবশ্যই। ওদের সামনে গিয়ে দুহাত প্রসারিত করে থামাবার চেষ্টা করতে থাকলাম। ওরা খিল খিল করে হাসতে থাকলো।

আসমা বললো, ঠিক আছে রে ভাই, তোমাদের বাসায় অবশ্যই যাবো, তবে আজ না। আসলে আজ আমরা একটা বাসায় দাওয়াত খেতে যাচ্ছি। আজ বিউটির পুতুল বিয়ে তো, আমরা যাচ্ছি বাসর সাজাতে। বলতেই সবগুলো মেয়ে একযোগে হেসে আমাকে পাশ কাটিয়ে টা-টা দিয়ে চলে গেলো। আমি ওদের দিকে তাকিয়ে রইলাম। যদ্দুর দেখা গেলো, বেশ কয়েকজন পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখলো আমি তখনো তালগাছের মতো ঠাঁয় দাঁড়িয়ে কিনা। কিন্তু শাহনাজ? শাহনাজ একবারও তাকালো না। আমার মনের পর্দায় ওর জেদী, ত্রু²দ্ধ আর অহংকারী চেহারা বার বার ফুটে উঠতে থাকলো।

বাড়ি যাচ্ছিলাম আর মনে করার চেষ্টা করছিলাম, আমি কি সত্যি শাহনাজকে 'অপদার্থ' বলে গালি দিয়েছি? কখন দিয়েছি? অপদার্থ শব্দটা এর আগে আমি কখনো উচ্চারণ করেছি বলেও মনে পড়লো না। তাহলে কি আমার বিরুদ্ধে বানোয়াট অভিযোগ? তা কী করে হয়? আমার সঙ্গে কৌতুক? তা-ও না। কৌতুক এতো মারাত্মক ও অপমানকর হয় না। তাহলে ওরা এতো ক্ষেপলো কেন? আমি কোনো কূলকিনারা পাই নি।

এবং ঘটনাটি আমার মনে করুণ একটা দাগ কেটেছিল।

কীভাবে, কখন ভুল ভাঙলো

সুদীর্ঘ বিরতি। ঘটনার প্রায় ১৯-২০ বছর পরে একদিন শাহনাজের সাথে পুনর্যোগাযোগ ঘটলো, ফোনে। ওর সাথে অনেক কথা হয়। স্কুলজীবনের স্মৃতিচারণ। ক্লাসমেটরা কে কোথায়, কেমন আছে, তা হলো আলোচনার বিষয়বস্তু। এরও মাস তিনেক পর ওর সাথে কথা হচ্ছে। স্কুলজীবনের এই কথাটা ওর সাথে শেয়ার করছি, আর ঠিক সেই মুহূর্তে মনে পড়ে যায় শাহনাজকে 'অপদার্থ' বলার রহস্য। সেটাই বলছি।

ক্লাসে ছেলেদের সাথে মেয়েদের ঝগড়া হয়েছে। এক পাগলা টাইপের নতুন টিচার জোরে আমার কান সহ এক চড় মেরেছিলেন। এ দেখে মেয়েরা খুব হেসেছিল। পিরিয়ড শেষ হলে ছেলেরা এই ইস্যুতে মেয়েদের সাথে ঝগড়া শুরু করে দিল। ঝগড়া তুঙ্গে, তখন পরের পিরিয়ডের বাঘা বাংলা টিচার ঢোকেন। কিবরিয়া স্যার। 'কী হয়েছে?' কয়েকটা ছেলে বিস্তারিত জানালো। সব শুনে টিচার মেয়েদেরকে দোষী চিহ্নিত করে দাঁড় করিয়ে রাখলেন। অনেকক্ষণ পর, যেহেতু ঝগড়ার মূল কারণ আমি, মেয়েদের শাস্তি দেখে খুব নিচু স্বরে বলেছিলাম, 'স্যার, মেয়েরা 'অপরাধ' করেছে, এবারকার মতো মাফ করে দিন।' আমার কথা স্যারের কানে পৌঁছে নি। কিন্তু কোনো এক মেয়ে আমার মুখের 'মেয়েরা অপরাধ করেছে' কথাটাই হয়তো এভাবে শুনেছে 'মেয়েরা অপদার্থ।'
ভাগ্যের নির্মমতা হলো, যাদেরকে ক্ষমা করে দেবার জন্য অনুরোধ করলাম, সেই তারাই উলটো ভুল বুঝে এভাবে আমাকে আসামি সাব্যস্ত করেছিল। কিন্তু মেয়েদেরকে এই ভুল আর কোনোদিন ভেঙে দেবার সুযোগ হয় নি, একমাত্র শাহনাজ ছাড়া।
একটা কনফিউশন রয়ে গেলো। ওরা যদি আমাকে ভুল বুঝে থাকে, তাহলে বোঝা যায় আমার 'অপদার্থ' কথাটা বলা হয়েছিল সবার উদ্দেশে, অর্থাৎ সবকটা মেয়েকেই 'অপদার্থ' বলেছি। অথচ, মেয়েরা অভিযোগ তুলেছিল অপদার্থ বলেছি শাহনাজকে। এটা কীভাবে হলো? সত্যিই মেয়েদের কোনো চাল ছিল না তো?



একজন লেখকের সাথে ভুল বোঝাবুঝি


এটি ২০০৬ কী ২০০৭ সালের দিকে ঘটেছে। একুশে বইমেলায় এক লেখকের বই ছাপানো নিয়ে তাঁর সাথে একটি ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। তাঁর একটা বইয়ের অর্ধেক অংশ নিজের টাকায় টাইপ করিয়ে, বাকি অর্ধেক আমি নিজে অতি কষ্টে দেড় আঙুলে টাইপ করে, বাংলা বাজারে গিয়ে নিজে ট্রেসিং বের করে দিয়ে, বাজার থেকে নিজে কাগজ কিনে (টাকা আমার নয়) রিক্‌শায় করে ছাপাখানায় পৌঁছে দিয়ে, বই ছাপা হবার পর নিজের টাকায় তাঁর নির্দেশিত স্থানে বই কুরিয়ার করে, বইমেলা সহ বিভিন্ন জায়গায় বইটি বিলি করে, আমার শরীরের ঘাম বাতাসে না শুকোতে দেবার মতো কষ্ট করার পর একদিন লেখক খেদ করে আমাকে জানালেন যে, অন্য এক ব্যক্তির কাছে তিনি চিরকৃতজ্ঞ, কারণ, সেই ব্যক্তির একক ও অক্লান্ত পরিশ্রমেই কেবল তাঁর বইটি এতো সুন্দরভাবে ছাপা ও প্রকাশিত হতে পেরেছে।

এখানে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। এ লেখকের পাণ্ডুলিপি আমাকে দিয়েছিলেন অন্য এক লেখক। তিনি আমাকে বলেছিলেন, যে করেই হোক, এ বইটা এ বইমেলায় বের করে দিতে হবে। আমি তাঁর আবদার ফেলতে পারি নি, কারণ, তাঁকে খুব স্নেহ ও শ্রদ্ধা করতাম। বইটির সবকিছু সম্পন্ন করে প্রকাশকের কাছে দেবার পর, ওটা ছাপা হবার পর সবগুলো কাজ শেষ হবার প্রাক্কালে ব্যক্তিগত কাজে আমাকে ব্যস্ত হয়ে পড়তে হয়। আমি সবার কাছ থেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি। সম্ভবত, পরের লেখক ভেবেছিলেন যে এ বইটির খরচ আমি দিব (কারণ, আমি এর আগে কয়েকজন নতুন লেখকের বই ছাপাবার খরচ দিয়েছিলাম, এ থেকে তাঁর ধারণা হয়ে থাকতে পারে)। সম্ভবত মূল লেখক ভেবেছিলেন যে বইটির ছাপাখরচ দেবেন প্রকাশক। আর, সম্ভবত প্রকাশক ভেবেছিলেন যে ২য় লেখক খরচপাতি বহন করবেন। তাই ২য় লেখকের কাছেই তিনি খরচটা চেয়ে বসেন, এবং পেয়েও যান (প্রকাশকের সাথে আমার ঘনিষ্ঠতা ছিল। এ কারণে, কখনো সমস্ত খরচ আগেভাগে, কখনো বা সব শেষে দেয়া হতো)। ২য় লেখক সম্ভবত এ অবস্থার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। যাই হোক, তিনি সম্ভবত পরে মূল লেখককে বলেছিলেন যে বই ছাপাবার খরচটা তিনিই দিয়েছেন, প্রকাশক বা অন্য কেউ নন। এ কথা শুনে মূল লেখক বইয়ের খরচ পরিশোধের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু তাঁর কাছে সম্ভবত তখন টাকা ছিল না। তিনি সম্ভবত কয়েক কিস্তিতে এ টাকা ২য় লেখককে পরিশোধ করেছিলেন। এটাই তাঁর গাত্রদাহের কারণ বলে ধারণা করছি। আর সম্ভবত, মূল লেখক জানতেন না যে তাঁর পাণ্ডুলিপিটা ২য় লেখক আমাকে হস্তান্তর করেছিলেন বই আকারে প্রকাশ করে দেবার জন্য।

লেখকের জন্য কাজ করেছি তা জাহির করার কোনো কারণ নেই। এটার পেছনে অক্লান্ত কাজ করেছেন অন্য এক ব্যক্তি, এ-কথা শুনেও আমার কষ্ট খুব বেশি হয় নি। অনেক পরে কথাচ্ছলে লেখককে যখন বললাম তাঁর বই ছাপা হবার পেছনে আমার ভূমিকার কথা, তিনি একেবারে উড়িয়ে দিলেন- এ হতেই পারে না। সমস্ত কাজ করেছে ঐ ছেলেটা (একজনের নাম বললেন)। কষ্ট পাওয়া উচিৎ হয় নি আমার, কিন্তু তবুও খুব কষ্ট পেয়েছিলাম সেদিন।


কীভাবে কখন ভুল ভাঙলো

ভুলটা ভাঙলো না তো। দুজন লেখক বা প্রকাশক কোনোদিন জানবেনও না এরকম একটা ভুল বোঝাবুঝির ঘটনা ঘটে গেছে।

যে আমাকে ভুল করে ভুল বুঝলো, তার ভুল ভাঙাবার সব পথই আজ ভুল পথ মনে হয়।


পুরোনো
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:০৬
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×