somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লেবার পার্টি : আন্ত:দলীয় গনতন্ত্র চর্চ্চা (বিএনপি ও আওয়ামীলীগের শুভবুদ্ধি উদয়ের প্রত্যাশায়)

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


লেবার পার্টি, হারলো নির্বাচনী এলাকা

না আমি এখনো লেবার পার্টিতে জয়েন করিনি। সম্ভবত শেখ মুজিবের নাতনি হওয়ার মতো যোগ্যতা বা অভিলাষ নাই বলে সে সাহস এখনো করিনি। সূদুর পরবাসে থেকেও যেহেতু দেশের জন্য, দেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য দিবিনিশি স্বপ্ন দেখি তাই প্রথম থেকেই আমার একটা উৎসাহ ছিলো উন্নত দেশগুলোতে দলের ভেতরে কিভাবে ডেমক্রেসী প্র‌্যাকটিস করে তা দেখার জন্য। যাতে করে কখনো সুযোগ হলে নিজ দেশে যেন এসব দেশের ভালো জিনিসগুলো ব্যবহার করতে পারি বা চেস্টা করি। গত সাতাশ নভেম্বর বন্ধু সামুর ডাকে সকাল ৮টায় বেরিয়ে পরলাম হারলোর উদ্দেশ্যে।

সামান্য ভূমিকা
হারলো'র বর্তমান এমপি কনজার্ভেটিভ পার্টি থেকে নির্বাচিত। তিনি পরিশ্রমী, মেধাবী ও ধনবান হিসেবে সুপরিচিত। তার আরো একটি বিশেষ পরিচয় আছে তিনি একজন ইহূদী, সে হিসেবে তিনি যে পরিশ্রমী হবেন সেটা খুবই স্বাভাবিক। তের বছরের এমপি ও সাবেক মন্ত্রী বিল রামেল কে হারিয়ে তিনি এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। তাই লেবার পার্টি ২০১৫ সালের পরবর্তী নির্বাচনের জন্য এখনই প্রার্থী ঠিক করে ফেলতে চাচ্ছে। যাতে করে তাদের প্রার্থী গনমানুষের সাথে মিশে যেতে পারেন এই সময়ের মধ্যে। তাই লেবার পার্টি প্রায় তিন বছর পূর্বেই তাদের প্রার্থী ঠিক করছে।

প্রার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়া

বন্ধু সামু শর্টলিস্টেড চার জন প্রার্থীর মধ্যে একজনের কনসাল্টেন্ট হিসেবে হাস্টিংস** সভায় যোগ দিচ্ছে। আর আমি একজন পর্যবেক্ষক হিসেবে তার সংগী। ঠিক সাড়ে দশটার সময় সভা শুরু হলো। সভার সার্বিক বিষয় দেখাশোনার জন্য রিজিওনাল ডিরেক্টর এসেছেন যিনি তার রিজিওনের হাস্টিং গুলো পরিচালনা করেথাকেন। যাকে আরো কয়েকজন সহকর্মী সহযোগীতা করছেন। লেবার পার্টির মেম্বার রা নিজেদের মেম্বারশীপ কার্ড নিয়ে হাজির হয়েছেন। মেম্বারশীপ নম্বর দেখে দেখে ভেতরে ঢোকানো হচ্ছে। আনুষ্ঠানিকতা শেষে হাস্টিংস শুরু হলো।

প্রার্থীরা অন্য একটা ঘরে বসে আছেন যেখান থেকে সভাকক্ষের কোন কথা বার্তা ঐঘর থেকে শোনা যায়না। সভাকক্ষে প্রার্থীরা কি বক্তব্য রাখছেন বা প্রশ্নত্তোরে কি বলছেন তার কোন কিছুই অন্য প্রার্থীরা জানতে পারবেন না। একে একে প্রার্থীরা আসলেন এবং প্রথম ৫ মিনিট হারলো নির্বাচনী এলাকা নিয়ে তাদের কি প্লান ও স্বপ্নের কথা গুলো জানালেন। তারপর নির্ধারিত আধাঘন্টার প্রশ্নোত্তর পর্ব। এ পর্যায়ে আগে থেকে ভোটাররা প্রশ্ন পাঠিয়ে দেন কমিটির কাছে কমিটি সেখান থেকে গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলোর একটা সেট তৈরি করেন এবং সভার দিন পর্যন্ত এটি গোপন রাখেন। একই প্রশ্ন সবার জন্য। তাদের উত্তরের উপর নির্ভর করবে ভোটার রা কাকে সিলেক্ট করবেন পরবর্তী নির্বাচনের জন্য তাদের পছন্দের প্রার্থী।

তুমুল আলোচনা ও প্রশ্নত্তোরের মধ্য দিয়ে এভাবে সভা চললো সাড়ে বারোটা পর্যন্ত। সকল প্রার্থীর বক্তব্য ও প্রশ্নত্তোর শেষ হবার পরে এবার ভোটাভোটির পালা। ভোটারদেরকে সভাকক্ষে ঢোকার সময় তাদের মেম্বারশীপ নম্বর দেখে দেখে একটা আলাদা কার্ড দেয়া হয়েছিলো। এবার সে কার্ড কালেক্ট করে একটা করে ব্যালট পেপার দেয়া হলো। ব্যালট পেপারে চারজন প্রার্থীরই নাম দেয়া আছে ভোটারদেরকে যেটা করতে হবে সেটা হচ্ছে নামগুলোর পাশের খালি বক্সে ১,২,৩,৪ করে সিরিয়াল দিতে হবে যাতে করে বুঝা যায় তার প্রথম, দ্বিতীয় পছন্দগুলো। তাৎক্ষনিক ভোটাভুটি শেষ হলো সবার সামনেই ফলাফল ঘোষনা করা হলো। শুধু কে নির্বাচিত হয়েছেন তাই বলা হলো দ্বিতীয়, তৃতীয় কে এগুলো বলা হলোনা। পারজিত প্রার্থীরা বিজয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন জানালেন।

ছোট্ট ঘোষনা

সভার চেয়ার হঠাৎ করে মাইকে এসে একটু রসিকতা করলেন এবং বললেন এক্জিট দরজার পাশে একটা বাক্স রাখা হবে দয়া করে যেনো সবাই এক পাউন্ড করে দিয়ে যান টাহলে এই হল ভারাটা খুব সহজেই পরিশোধ করা সম্ভব হবে, পার্টি ফান্ডে হাত ডেওয়া লাগবেনা। আর কেউ দান না দিলেও কোন অসুবিধা নেই এটাও জানালেন।

গনতন্ত্র বাংলাদেশ ভাবনা

এমন চমৎকার ও শান্তিপূর্ন একটা পরিবেশে নির্বাচনী প্রার্থী সিলেক্ট করার প্রক্রিয়া দেখে খুব ভালো লাগলো। আর ভাবলাম আমাদের দেশে প্রার্থী হবার জন্য গুলশান অফিস ও সুধাসদনে ২০০৮ সালে যে দীর্ঘ লাইন দেখেছি তা থেকে কবে যে বেরিয়ে আসবো আমরা?

শুরুতেই বলছিলাম শেখ মুজিবের নাতনির ব্যাপারটা। অনেকে মনে করতে পারেন আওয়ামীলীগের ব্যাপারে আমার যে নাক সিঁটাকানো ভাব আছে সে জন্য। না তা নয়, এটা আসলে ইচ্ছা করেই টেনে এনেছিলাম। আপনার অনেকেই অবগত আছেন যে শেখ মুজিবের নাতনি টিউলিপ সিদ্দিকি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ না করে তিনি লেবার পার্টি করেন এবং তিনি একজন বিদেশী নাগরিকও বটে। এবং এটা নিশ্চয় সবাই জানেন তার মাতা শেখ রেহানা বাংলাদেশের রাজনীতিতে বেশ ভালো দাপট ও আধিপত্য বিস্তার করে চলছেন ইদানিং। যে কারনে বড় বর রথী মহারথীরা লন্ডন আসলে দেশ থেকে তেল, ঘি, ডালডার টিন নিয়ে আসেন। তাই বলছিলাম আপনার মেয়ে যে গনতন্ত্র চর্চ্চা করছে বিদেশে সেই গনতন্ত্রের কিছু ছিটেফোঁটা যদি বাংলাদেশে চর্চ্চা করতেন তাহলে দেসবাসী কিছুটা উপকৃত হতো আপনাদের এই ঘি, ডালডার রাজনীতিতে।

আমার বিশ্বাস যেহেতু তারেক রহমান দীর্ঘ দিন ধরে লন্ডনে তার চিকিৎসা নিচ্ছেন সে হিসেবে তিনিও আমার মতো করে এদেশের গনতন্ত্র চর্চ্চা পর্যবেক্ষন করছেন। আশা করি দেশে ফেরার সময় এ বিষয়গুলোর উপরে তিনি বিশেষ নজর দিবেন এবং বিএনপির বিভিন্ন কমিটি ও নির্বাচনী প্রার্থী মনোনয়নে বাস্তবায়ন করবেন।


***হাস্টিংস (Hustings): নির্বাচনের পূর্বে সম্ভাব্য প্রার্থী কতৃক প্রচারাভিজান ও বক্তব্য।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ৭:২২
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কথাটা খুব দরকারী

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ৩১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৩৪

কথাটা খুব দরকারী
কিনতে গিয়ে তরকারি
লোকটা ছিল সরকারি
বলল থাক দর ভারী।

টাকায় কিনে ডলার
ধরলে চেপে কলার
থাকে কিছু বলার?
স্বর থাকেনা গলার।

ধলা কালা দু'ভাই
ছিল তারা দুবাই
বলল চল ঘানা যাই
চাইলে মন, মানা নাই।

যে কথাটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×