somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বপ্ন দেখি তোমায় নিয়ে

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ১১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হাতে কলম নিয়ে কতদিন ভেবেছি তোমায় নিয়ে কিছু লিখব । কিন্তু লেখা হয়নি । না গল্প, না কবিতা, না একটি ছোট্ট অনুকাব্য । তুমি রয়ে গেছো হৃদয়েই, কখনো ভাষায় প্রকাশ করা হয়নি । কখনো বলতে পারি নি, কতটা ভালোবাসি তোমাকে । তবুও কেন যেন বড্ডো বেশি ইচ্ছে করে বিশ্বাস করতে যে, তুমি জানো আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি । তুমি জানো তোমার ছোঁয়ায়, তোমার স্বপনে, তোমার ভাবনায় আমি কতটা আলোড়িত হই । কতটা অনুপ্রাণিত হই যখন তোমায় স্বপ্ন দেখি । আর তাই হৃদয়ের বদ্ধশিকল ভেঙ্গে ঠিক করেছি তোমায় নিয়ে লিখবই আর চিৎকার করে বলবই, “হে বঙ্গজননী, আমি তোমাকে ভালোবাসি, অনেক অনেক ভালোবাসি ।”

নবীন বাংলার স্বাধীনতা-উত্তর সময়ের এক তরুণ, সে একুশ শতকের বাসিন্দা । সে মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি, শুধু তার গল্প শুনে গন্ধ শোঁকার চেষ্টা করেছে এই সোঁদা-মাটির । কিন্তু নবীন সে গন্ধ অনুভব করতে পারে না । হয়তো তার অত্যাধুনিক পারফিউমের কাছে হেরে গেছে আবহমান বাংলার সোঁদা-মাটির গন্ধ !

সে তার জ্ঞানপিপাসু চোখ দিয়ে দেখতে চায় অদেখা মুক্তিসংগ্রামকে । কিন্তু তার সেই চোখ ইতিহাস বিকৃতির ঘেরাটোপে পড়ে কেবলই হাতড়ে মরে, সত্যের খোঁজ আর পায় না । আর তাই সম্মুখসমরে জীবন-বাজি রেখে যুদ্ধ করা মুক্তিযোদ্ধার মুখটি যেন সেই চোখে বড়ই অস্পষ্ট ঠেকে !

নবীনের প্রেমিকমন দেশপ্রেমের মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে কিছু করতে চায় । সে স্বাধীনতার চেতনাকে বুকে জড়িয়ে বাংলাদেশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে চায় । সে স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশকে জগতশৃঙ্গের চূড়ায় দেখার, সে অনুপ্রেরণা খোঁজে মুক্তিসংগ্রামের রক্তাক্তদিনের সাহসী যোদ্ধাদের কাছে । কিন্তু হায় ! মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় শুধু চেতনা-সংগ্রামের উদ্দীপনায় আর যুদ্ধদিনের গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিচারণেই নয়, মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় সার্টিফিকেটে নির্ধারিত হয় । আজ রাজাকারও মুক্তিযোদ্ধা সাজে । আর প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা বিনা চিকিৎসায়, অনাহারে মরে ।

বিভ্রান্ত হয়ে খুঁজে ফিরতে ফিরতেই হয়তো সে একদিন সন্ধান পায় ’৭১ এর কোনো দামাল জোয়ানের । কিন্তু কোথায় সেই দেশপ্রেমের চেতনা, কোথায় সেই জীবনবাজি রেখে দেশের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ার শপথ ? কেন সে আজ অট্টালিকা-বিলাসে মগ্ন ? কেন সে আজ ভুলে গেছে তার গৌরবোজ্জ্বল দিনের কথা ? কেন সে একটিবারও ভাবে না তার এই দেশের কথা, তার সেই সহযোদ্ধাদের কথা, যাদের অনেকে আজও জীবন সংগ্রামে মরণপণ লড়ছে ? এই অবক্ষয়ের দায় কি শুধুই তার একার ?

তরুণ যুবার রক্তে আগুন জ্বলে, সে কিছু করতে চায়; সে পথ খোঁজে কিছু করার, দেশের জন্য কিছু করার । দিনবদলের ডাক, দেশ ও দশ বাঁচানোর হাঁক আর সমাজবদলের বিপ্লবী আহ্বান চারপাশ থেকে তাকে হাতছানি দেয় । তার তপ্ত হৃদয় সে স্লোগানদীপ্ত আহ্বানে সাড়া না দিয়ে পারে না । সে এই স্লোগান, পোস্টার আর ফেস্টুনে তার বুকের ক্ষুধা মেটানোর উপাদান খোঁজে !

সে আবারো বিভ্রান্ত হয় । পদে পদে বিভ্রান্তি তাকে হতাশ করে তোলে । সে বুঝতে পারে ক্ষমতালিপ্সু আর দূর্নীতিবাজ রাজনীতিকদের হাতের পুতুল হয়ে যাওয়া ছাত্ররাজনীতি তাকে শান্তি দিতে পারবে না । সে বেরিয়ে আসার পথ খোঁজে এই ভয়ঙ্কর মায়াজাল থেকে । আবার স্বপ্ন সাজাতে চায় তার প্রিয় জন্মভূমিকে নিয়ে ।

কিন্তু সে কি বেরিয়ে আসতে পারবে ? যদি পারেও, সে কি খুঁজে পাবে তার কাঙ্খিত পথের সন্ধান ? পারবে কি চিরদূঃখী বাংলামায়ের মুখে হাসি ফোটানোর সংগ্রামে জয়ী হতে ? আর কারাই বা হবে তার সেই সংগ্রামের সহযাত্রী ?
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×