থাইল্যান্ডের ফুকেট উপকূলে দুর্ঘটনাকবলিত এমভি হোপের উদ্ধার হওয়া পাঁচ নাবিক দেশে ফিরে অশ্রুসজল চোখে বললেন উত্তাল সাগরে মৃত্যুর হাত থেকে তাদের বেঁচে ফিরে আসার গল্প।
Published : 08 Jul 2013, 08:34 AM
এমভি বাক্সমুন নামের একটি জার্মান জাহাজে করে রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে পৌঁছান হোপের ডেক ক্যাডেট মোখলেছুর রহমান, চতুর্থ ইঞ্জিনিয়ার আবদুল হাকিম, মোহাম্মদ রুবেল, মোহাম্মদ ওসমান ও সাইফুল ইসলাম।
জাহাজেই রাত কাটিয়ে সকালে একটি লাইটার জাহাজে করে পতেঙ্গার ১৫ নম্বর ঘাটে পৌঁছান তারা।
চট্টগ্রামে জাহাজ মালিকদের পিঅ্যান্ডআই ক্লাবের প্রতিনিধি ইন্টারপোর্ট মেরিটাইম লিমিটেডের মহিউদ্দিন আবদুল কাদের, জাহাজ কোম্পানির প্রতিনিধি এবং সাংবাদিকরা সকাল থেকেই সেখানে অপেক্ষায় ছিলেন।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঘাটে পৌঁছেই স্বজনদের জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন দুই নাবিক। বাকি তিনজনকেও কথা বলতে বলতে আবেগ আপ্লুত হতে দেখা যায়।
মোখলেছুর রহমান ও মোহাম্মদ রুবেল সাংবাদিকদের সেই রাতের ঘটনা বলেন।
গত বুধবার রাতে প্রচণ্ড ঝড়ের কবলে পড়ে জাহাজের নিয়ন্ত্রণ হারান হোপের ক্যাপ্টেন। তিনি আপ্রাণ চেষ্টা চালালেও জাহাজ এক দিকে কাত হয়ে যায়; জাহাজ ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয় নাবিকদের মধ্যে। প্রাণে বাঁচতে সে সময় শুধু লাইফ জ্যাকেট নিয়েই সাগরে ঝাঁপ দেন কয়েকজন।
উদ্ধার অভিযানের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার হোপের দ্বিতীয় কর্মকর্তা মোবারক হোসাইন, ডেক ক্যাডেট রায়েক ফাইরুজ, ইঞ্জিন ক্যাডেট মুশফিকুর রহমানকেও জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আর জাহাজের প্রধান কর্মকর্তা মাহবুব মোর্শেদ ও প্রধান প্রকৌশলী কাজী সাইফুদ্দিনের মরদেহ পাওয়া যায় আন্দামান সাগরে।
পিঅ্যান্ডআই ক্লাবের প্রতিনিধি মহিউদ্দিন আবদুল কাদের জানান, নিখোঁজ বাকি ছয় নাবিকের খোঁজে স্বজনদের অনুরোধে রোববারও উদ্ধার অভিযান চালায় থাই নৌবাহিনী। তবে নতুন করে কাউকে উদ্ধারের খবর দিতে পারেননি তারা।
দেশে ফেরা পাঁচজনকে পতেঙ্গা থেকে নিয়ে যাওয়া হয় মেহেদীবাগে ন্যাশনাল হাসপাতাল নামের একটি বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে। সেখানে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে বলে আবদুল কাদের জানান।