somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি বুঝিনা ।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১১ দুপুর ১২:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি বুঝিনা।

আমি বুঝিনা, অনেক কিছুই বুঝিনা। যা একেবারে বুঝিনা তা হল রাজনীতি ।এই দূর্নীতিটার প্রতি আমার সীমাহীন ঘৃনা আছে, আছে অনিহা, আছে কৌতুহল ও । তাই পড়তে চাই, বুঝতে চাই। অথচ বুঝে আসেনা কিছুই। গত চার দশক রাজনীতির অত্যচার,সন্ত্রাস,দূর্বৃত্তায়ন দেখে দেখে এর প্রতি, এর সাথে জড়িতদের প্রতি মানুষের ঘৃনা হয় কিনা জানিনা। মনে হয় হয়না। হলে দেশের এত এত মানুষ,বিশেষ করে কিশোর/তরুণরা লেখা-পড়া ছূঁড়ে ফেলে রাজনীতির অগ্নিকুণ্ডে বেধড়ক ঝাঁপিয়ে পড়ছে কেন ? অতীতে যুগান্তকারী ইতিহাস-স্রষ্টা আমাদের বিচার বিভাগ/আদালতই বা রাজনীতির ‘গু’ এর ডোবায় নাক না শুধু মাথা ও গলাচ্ছে । কেন ? বুঝিনা, মাথায় আসেনা।
‘৬০ এর দশকের গোড়ার দিকে আমি হাই স্কুলেরর ছাত্র। তখনো শিক্ষাঙ্গন ছাত্র ইউনিয়নের নিয়ত্রণে। অগ্নিকন্যা মতিয়া চৌধুরী, রাশেদ খান মেননরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন পূর্ব পাকিস্তান শিক্ষাঙ্গন। চট্টগ্রামে এসেছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের সম্মেলনে অংশ নিতে। স্কুল ফাঁকি দিয়ে আমিও চলে এলাম সভায়। “সের এক আনা মাত্র”র বিখ্যাত লেখক শ্রদ্ধ্যেয় অদ্যাপক আহছাব ঊদ্দীন সাহেবও এসেছিলেন। কিযে ষাদু করলেন ওনারা! মন্ত্র্র দিলেন! আমার মতো হাজার হাজার কিশোর/তরুণ স্কুল কলেজের অগণিত ছাত্র-ছাত্রীর মগজের খুপরিতে বাম আদর্শ, বাম চিন্তা, মাও/লেলিন গ্যাঁট হয়ে বসে গেল। আজ এতদিন পরেও ঘিলুতে তাদের উপস্থিতি এতটুকুও মলিন হয়নি। বিশ্বময় চরম বাম-বিপর্যয়ের পরও মনে হয় গণমানুষের জন্য এখনো এটিই সঠিক পথ। অথচ সেদিনের অগ্নিকন্যা, স্বাধীনতার পরবর্তীকালে যার খায়েশ হয়েছিল জনকের চামড়া দিয়ে পাদুকা বানানোর, তার নিজের মগজে কিন্তু বাম আদর্শের ছিঁটেফোটাও অবশিষ্ট নাই। নিজে এখন জনক-অন্ত প্রাণ। মেনন এখনো পুরোপুরি এবাউট টার্ন না নিলেও আছেন মহাজোট তথা আপার ছায়ায়। কি করে হয়! বুঝিনা।
রাজনীতির আরো অনেক কিছু আমার বোধের অগম্য। মানুষের ভোটাধিকারের নামে ‘৯৪, ’৯৫, ’৯৬ এ যারা দিনের পর দিন হরতাল, ভাঙ্চূড়, অগ্নি সংযোগ করে,নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি প্রতিষ্টা করতে তখনকার সরকারকে বাধ্য করেছিলেন, এখন সেই্ তেনারাই তত্ত্বাবধায়ক বিলুপ্ত করেছেন। অন্যদিকে যারা কঠোর বিরধিতা করে বলেছিলেন ‘পাগল আর শিশু ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ হয়না’,তারা জোট বেধে নেমে গেছেন ‘৯৬ র রাজপথে । হরতাল,ভাঙ্চূড়,নাশকতার পরম্পরা আর কত দিন! দেশ আর জনগণের সম্পদের আর কত ক্ষতি করবেন রাজনীতিবাজরা! বেহায়াপনারওতো একটা সীমা থাকা আবশ্যক।
বলছিলাম বিচার ব্যবস্থা/আদালতের কথা । এই একটি মাত্র শেষ আশ্রয়স্থল মানুষের। অত্যন্ত গৌরবময় ঐতিহ্য ছিল বিভাগটির। ’৬০ র দশকের বিখ্যাত ‘তমিজ ঊদ্দীন খাঁ বনাম রাষ্ট্র’ মামলার রায়টি ন্যায়বিচার ও নিরপেক্ষতার অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে হাজার বছর। আয়ুব খাঁর রক্তচক্ষু নমনীয় করতে পারেনি তখনকার শ্রদ্ধ্যেয় বিচারপতিদের ইস্পাৎকঠিণ দৃড়তা। ইচ্ছেমত রায়ও বের করে নেওয়া যায়নি। বাংলাদেশে দুই মেয়াদের সামরিক আমলেও বিচার বিভাগের এই নিষ্কলুষ ভাবমূর্তিটি অক্ষুন্ন ছিল প্রায়। কিন্তু এখন সত্য ও ন্যায়ের রক্ষক এই প্রতিষ্টানটিকে ন্যাক্কারজনকভাবে কলঙ্কিত করা হয়েছে। একজন বিচারপতি এমন কিছু রায় দিয়ে গেছেন যা পুরো বিচার বিভাগ, রাষ্ট্রব্যবস্থা, জনজীবন সর্বত্রই হুলুস্থুল বাধিয়ে গেছে।
মেঘ না চাইতে জল। দীর্ঘ তিন দশক পঞ্চম সংশোধনী সংবিধানে ছিল। কেউ মামলা করেনি,নূন্যতম বিরোধিতাওনা। না কোন ব্যক্তি, না কোন রাজনীতিক, না কোন দল, না বুদ্ধির ঢেঁকিরা। ২০০৫ সালে হঠাৎ করে বিচারপতি খায়রুল হক সংশোধনীটি অবৈধ ঘোষণা করলেন অত্যন্ত আবেগমথিত ভাষায়। তাও অন্য একটি মামলায় জড়িয়ে যেটির সাথে লতায়পাতায় পঞ্চম সংশোধনীর একটি ক্ষীণ সম্পর্ক্ষ। অবাঙ্গালী মালিকানার ‘মুন’ সিনেমা হলটি শত্রু-সম্পত্তি হিসাবে অধিগৃহিত হয়েছিল মুজিব আমলে। ফিরে পাওয়ার জন্য মামলা করেছিলেন মালিক । দীর্ঘদিন পর বিচারপতি খায়রুল হক অবাঙ্গালীর সম্পদ ফিরিয়ে দিতে দেশবাসী না চাইলেও জনহিতকর সংশোধনীটি অবৈধ করে দেন যে সংশোধনীবলে আওয়ামী লীগ সহ বাকশাল আমলে নিষিদ্ধ তাবৎ রাজনৈতিক দলের পূণঃজন্ম হয়, বন্ধ হওয়া সংবাদ পত্রগুলোর পূণঃপ্রকাশ ঘটে এবং লুন্ঠিত বাকস্বাধীনতা/মানবাধিকার পূণঃপ্রতিষ্টিত হয়। আজ যারা এ রায়/পর্যবেক্ষণের প্রশস্তি গাচ্ছেন সে সুশীল বুদ্ধিকুলদের কলমেত কিন্তু ঘুন ধরেছিল ৪র্থ সংশোধনীর পর। যে সকল রাজনৈতিক দলের পূণঃজন্ম হয়েছিল ৫ম সংশোধনীবলে, এটি অবৈধ ঘোষিত হওয়ার পর সে গুলির বৈধতা কি আর আছে ? কি করে থাকে ? বিচারপতি খায়রুল হকতো তার ভাষ্য মতে ‘৭৫ এর আগের কোন কিছুতে হাত দেননি। তাহলে ৪র্থ সংশোধনীতো বহাল তবিয়তে থাকার কথা। গেল কোথায়? সরকার কিসের বলে এক লাফে ‘৭২ এ চলে যচ্ছে ?
৭ম সংশোধনীও এই বিচারপতি বাতিল করেছেন। অবশ্য এটির বিরুদ্ধে একজন হত্যা মামলার আসামী মামলা করেছিলন। কিন্তু ঘাপলাটা অন্যখানে। ৫ম সংশোধনীর রায় কার্যকর করা ফরজ ধরে নিয়ে সরকার সংবিধান সংশোধন করেছে। অন্যদিকে ৭ম সংশোধনীর রায়ে অভিযুক্ত মহাজোটের শরীক বিশ্ববেহায়া এরশাদের বিচারের কোন উদ্ব্যোগ সরকার এখনো নেয়নি। এখানে স্মরণীয় যে বিভিন্ন মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে এরশাদ জেলে ছিলেন ৯৬ সালে শেখ হাছিনার ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত। ক্ষমতায় এসে সরকার গঠণে সমরথন দেওয়ার পুরস্কার স্বরুপ তিনি এরশাদকে মুক্তি দেন, তারই সহায়তায় এরশাদ তার বিরোদ্ধে করা মামলা গুলো থেকে একের পর এক জামিন পেতে থাকে । আরো মজার ব্যপার হলো যার মামলার কারণে ৭ম সংশোধনী বাতিল হলো সে কিন্তু এখনো জেলে । তার উকিল মাস দুই আগে পত্রিকায় লিখে দেশবাসীকে জানিয়েছেন ।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার-পদ্ধতিও বাতিল করেছেন এই বিচারক : মামলা চলাকালে নয়জন এমিকাস কিউরির মতামত নেন আদালত । এদের মধ্যে আটজন তত্ত্বাব্ধায়কের পক্ষে এবং একজন বিপক্ষে মতদান করেন । বিচারপতি খা হক ওই একজনের মতকে সঠিক ধরে নিয়ে রায় দিয়েছেন—অবশ্য একটু গোঁজামিল দিয়ে যাতে গোঁজামিলের বাধাটুকু চিমটি দিয়ে তুলে ফেলে দিতে সংসদ নেত্রীর কোন অসুবিধা না হয় । হয়ওনি । সংসদ নেত্রী রায়ের ওই অংশটুকু আমলেই নেননি ।
পত্রিকায় এসেছে বিচারপতি হক স্ত্রীর চিকিৎসা জন্য প্রধান মন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে দশ লাখ অনুদান নিয়েছেন । রায়ের সাথে এই অনুদানের কোন সমপর্‌ক কেউ যদি খুঁজতে যান অন্যায় হবে কি !










সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৫:১৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×