somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঈদ পরবর্তী একটি জরূরী টিভি সমালোচনা

২১ শে নভেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেরী হয়ে গেলেও না লিখে পারলাম না।
ঈদকে কেন্দ্র করে টিভিপাড়া সবসময়ই ব্যাপক সক্রিয় হয়ে ওঠে। অনুষ্ঠানে মুখর হয়ে ওঠে টিভিগুলো, ঈদের দিনগুলো। এবারও যার ব্যতিক্রম হয়নি। এবারও ঈদ পরবর্তী অনেকগুলো দিন সরব ছিল টিভিগুলো।
আমার টিভি দেখা নিয়ে তাই না লিখে পারলাম না।
ঈদের দিন। গরু-টরুর ঝামেলা শেষ করে বসলাম টিভি দেখতে। আমাদের একুশ ইঞ্চি টিভিটার সামনে যেতেই মনটা হু হু করে উঠল কেন জানি। টিভি অনুষ্ঠান নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আলাপ-আলোচনা শুনে টিভি দেখার আগে এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক। আমারও হতে পারে। কিন্তু টের পেলাম ঘটনা সে কারণে নয়। কিন্তু কারণটা কি তা তখনও ঠিক মতো শনাক্ত করতে পারলাম না। যাই হোক আমাদের টিভিটা ছেড়ে আমি গেলাম ঈদে বানানো খাবার-দাবার আনতে। মোটামুটি মিনিট দশেক সময় নিয়ে খাবার-দাবার এনে দেখি তখনও টিভির স্ক্রিন আসেনি।
বলে রাখা ভালো, আমাদের টিভিটা আর অন্য ১০টা টিভির মতো নয়। একটু অন্যরকম। সুইচ চাপলেই যে অন হয়ে যাবে তেমন না। একটা ভালো সময় নিয়ে সে রেডি হয়। তারপর হেলে দুলে অন হয়।
একটা সময় চিক করে শব্দ করে স্ক্রিন আসতে শুরু করল। এটাও বলে রাখা ভালো, আমাদের টিভিটাতে একবারে স্ক্রিন আসে না। মোড়ানো বড় পোস্টার খোলার উদ্দেশ্যে ওপর থেকে ছেড়ে দিলে যেভাবে ঘুরে ঘুরে পড়তে শুরু করে সেভাবে আমাদের টিভিটাও অন হয়।
আমি এ বিষয়টা পুরো উপভোগ করি। প্রথমে নায়িকার মাথা দেখা গেল। আস্তে চোখ, নাক, মুখ, গলা...। আর বর্ণনা এভাবে যাওয়া যাবে না, অশ্লীলতার দায়ে (দায় অথবা দায়ে, যা মনে করেন ) কাটা পড়ে যেতে পারে।
যাই হোক মিনিটে ১৫ কিমি. গতিতে চলতে শুরু করা নাটক পুরোটাই দেখতে শুরু করলাম। অনেকক্ষণ দেখে হঠাৎ উপলব্ধি করলাম না এভাবে হচ্ছে না। আমার টিভি মহোদয় আমার প্রিয় নাট্যশিল্পীদের বাকস্বাধীনতা হরণ করে নিচ্ছে। মানে সাউন্ড নেই।
আমি দৌড়ে গিয়ে টিভির সামনে দাঁড়িয়ে টিভি সাইডে প্রথমে হালকা করে এবং এরপর একটু জোর দিয়ে বাড়ি দিতে থাকলাম। অনেকক্ষণ বাড়ি-টাড়ি দেয়ার পর একবার কী মনে করে সাউন্ড এসে আবার দৌড়ে পালাল। আমি বিরতীহীন চড়, থাপ্পর বাড়ি-টাড়ি মেরেই যাচ্ছি। কোন কাজ হচ্ছে না।
আমি থামছিই না। শালা তোর একদিন কী আমার একদিন।
আকস্মিকভাবে কী হল বুঝলাম না। তবে বুঝলাম একটা জায়গায় আমি জেন্ডার নির্ণয়ে ভুল হয়েছে। টিভি আসলে শালা নয়। কারণ সে চড়-থাপ্পর খেয়ে অবিকল মেয়েদের মতো কান্না শুরু করে দিল। আমার নিজের অলক্ষ্যেই মন খারাপ হয়ে গেল।
আহারে হয়তো জোরে মেরেছি বলে সহ্য করতে পারেনি। কেঁদে দিয়েছে। তবে আমি তখনও খেয়াল করতে পারছি না যে টিভি কান্না করবে কেন?
এটা কী সম্ভব? ভূতের আছর পড়েছে নাকি?
আমি চড়-থাপ্পর মারতে মারতে টিভির পেছনে চলে গিয়েছিলাম, কান্না শুনে দৌড়ে সামনে এলাম। এবং নিশ্চিন্ত হলাম, না, ভৌতিক কিছুই ঘটেনি।
সাউন্ড ফিরে এসেছে, টিভিতে নায়িকা কাঁদছে।
আমি আবার টিভির সামনে বসলাম। কান্না ভালো লাগছে না। চ্যানেল চেঞ্জ করে দিলাম। চ্যানেল চেঞ্জ করতেই আমি মূল ভৌতিক নাটকে চলে এলাম। টিভির এক ঝাঁক পরিচিত মুখকে দেখলাম ভূত সেজে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
মেজাজ খারাপ হল বাংলা নাটকের ম্যাকাপম্যানদের ক্ষমতা দেখে। নায়ক নায়িকাদের ভূত সাজিয়ে দিয়েছে। অথচ সবাইকে চেনা যাচ্ছে। কী বিচ্ছিরি অবস্থা।
আমি দেখতে দেখতে বিরক্ত হয়ে গেলাম। কাহিনী কী। ভৌতিক নাটকে কী সবাই ভূত হয়? মানুষ না থাকলে ভূত ভয় পাবে কে? সবাইকে একই ম্যাকাপ, দূর।
আমি তাও দেখছি। এবং বিরক্ত হচ্ছি। দেখি মানুষ আসে কি না?
দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পরও কারও পায়ের আওয়াজ পেলাম না। আমি নাছোড়বান্দা। আসতেই হবে কাউকে।
অবশেষে পায়ের আওয়াজ পেলাম। কেউ আসছে। আমি কঠিন দৃষ্টি নিয়ে টিভি পর্দার দিকে তাকিয়ে আছি। অবশেষে কাউকে পেলাম না। কিন্তু শব্দ আসছে।
অবশেষে বুঝলাম, টিভিতে না। আমার ঘরে কেউ আসছে।
আমার বোন এলো। সে এসেই ব্যাপক বিরক্তি নিয়ে বলল, কী দেখছ? দূর। টিভির রঙ চলে গেছে। টিভির উপরে ডানদিকে গিয়ে দুয়েকটা বাড়ি দাও। কালার ফিরে আসবে। কদিন ধরে হুট করে কালার চলে যাচ্ছে।
শুনে আমি কী করব বুঝতে পারছিলাম না। তাই রেগে রিমোটে চাপ দিলাম। অফ। শালার টিভি দেখবই না।
ঘটনা এখানে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও শেষ হল না। টিভি বন্ধ হচ্ছে না।
তেরোবারের মাথায় রিমোট চেপে টিভি বন্ধ করতে সক্ষম হলাম।
এবং এখানে সমালোচনাও ষ করতে হল। এ টিভির সমালোচনা আসলে লিখে শেষ করা যাবে না।
৬টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যমদূতের চিঠি তোমার চিঠি!!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:০৮

যমদূতের চিঠি আসে ধাপে ধাপে
চোখের আলো ঝাপসাতে
দাঁতের মাড়ি আলগাতে
মানুষের কী তা বুঝে আসে?
চিরকাল থাকার জায়গা
পৃথিবী নয়,
মৃত্যুর আলামত আসতে থাকে
বয়স বাড়ার সাথে সাথে
স্বাভাবিক মৃত্যু যদি নসিব... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×