somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাঁচা মসজিদ নাকি পাকা মসজিদ? কোনটায় পূণ্য বেশি?

১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বছর খানেক আগে একবার রাবার বাগান দেখতে গিয়েছিলাম।ভৈরব বাজারে( মৌলভীবাজা)।বাগানের ভিতর দিয়ে হাঁটছি।ছোট ছোট পাহার, কিছু দূর পরপরই বাড়ি ঘর দেখা যায়। প্রায় সকল বাড়িই মাটির দেয়াল টিনের অথবা ধানগাছ বা ছনের ছাওনি। ঘর গুলো আকারেও খুব ছোট। মাটির ঘরের দেয়াল অনেক পূরু হওয়ায়। বাহিরে যতটুকো দেখায় ভেতরের ফাঁকা জায়গা থাকে অনেক কম। সেই তুলনা করলে ঘর গুলো বেশ ছোট ছোট।
বিকালের আলো আঁধারিরে আমরা চারদিক দেখতে দেখতে হাঁটি উদ্দেশ্যহীন ভাবে। কাজ নেই বলেই এভাবে ঘুরতে যাওয়া।এই উঁচু নিচু পথের পাশেই দেখি এটা ইটের ঘর।এখানের বাড়ির ঘর গুলো থেকে কিছুটা বড়। লাল মাটির রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে আমরা কথা বলছিলাম বৃষ্টি হলে এই পথের কি অবস্থা হবে এই নিয়ে। নিশ্চয় ভয়াবহ অবস্থা হয়। পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনা করে বলা যায়, এই রাস্তা পাকা হওয়ার আপাদত কোন সম্ভাবনা নেই।
এই পাহাড়ি রাস্তায় (পায়ে হাঁটা পথ)বাগানের বাইরে থেকে বয়ে ইট নিয়ে আসা হয়েছে ঘর করার জন্য। এই ঘরের মালিক নিশ্চয় প্রতিবেশীর তুলনায় ধনী মানুষ? আমার কৌতুহল হলো। আরো কাছে গেলাম। ঘরটি ইটের তৈরি হলেও খুবই করুন অবস্থা,দেয়ালে প্লাস্টার করা হয়নি, দরজা, জানালায় চাটাই দিয়ে ঢেকে রাখা। দেখে বোঝা যায়, ইট বালি সিমেন্ট যত কম পারা যায় তার চেয়ে কম ব্যবহার করা হয়েছে। বাঁশের খুটির উপরই টিনের চালা দেয়া আছে, বাইরে বেড়া দেয়া হয়েছে ইট দিয়ে।
চার দিকে ঘোরে বুঝতে পারলাম এটা একটা মসজিদ।এই বাগানের যারা বাস করে তাদের কোন ইটের ঘর নেই। তাদের হয়তো ঘর করারই সঙ্গতি নেই। কিন্তু মসজিদটা ইটের করার কারনটা কি?

রাস্তায় চলতে আমরা প্রায়ই দেখি, মসজিদের সামনে মাইক লাগিয়ে পরকালের কথা বলে গান গেয়ে পয়সা চাওয়া হচ্ছে। "কত দিলে কত পাবেন" এই লোভনীয় অফারটা সব সময় জোরে জোরে উচ্চারণ করা হয়। গাড়িতে মসজিদের নির্মাণ কাজের জন্য টাকা তোলা তো খুবই সাধারণ ঘটনা। মসজিদ কমিটিন তাদের মসজিদকে উন্নত থেকে উন্নত করার জন্য কত কিছু করে। জুমার নামাজের দিন, কোথাও কোথাও বাক্স চালান করা হয়( মসজিদের প্রতিটা লাইনে এক মাথা থেকে ছোট ছোট কাঠের বাক্স ছেড়ে দেয়া হয়, লোক জন তাতে টাকা পয়সা দিয়ে পরের জনের কাছে দেয়। এভাবে সবার কাছেই টাকার জন্য বাক্স গুলো যায়)। শীত মৌসুমে বড় বড় আলেম এনে ওয়াজ করানো হয় তারা মসজিদের জন্য ওয়াজ করার মাঝে বড় বড় ডোনেশন কালেক্ট করে দেন।

আমার অভিজ্ঞতায় আমি কখনো দেখিনি মসজিদ কমিটির উদ্দ্যোগে, শীত বস্ত্র সংগ্রহ,বন্যাত্রদের জন্য ত্রান সংগ্রহ, দুস্তদের জন্য সাহায্য করা অসুস্থ মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।( ব্যতিক্রম থাকলেও থাকতে পারে)।
কিন্তু মাসজিদ নির্মাণের টাকার জন্য যায় নাই এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবেনা।

আজ তিনটার দিকে একটি বড় মসজিদের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম। চোখে পড়লো কয়েজ জন মুসল্লি তাদের সবারই মাথায় সবুজ পাগড়ি। এবং এদের আয়োজন দেখে বুঝতে পারলাম এরা তাবলিগে আসছে।
কিন্তু সবুজ পাগড়ি কেন?
এরও একটা উত্তর আমার জানা ছিল। বাজারে নবী মুহাম্মদের লাঠি ও পাগড়ির ছবির পোষ্টার কিনতে পাওয়া যায়। সেখানে দেখেছি নবী সবুজ পাগড়ি পড়তেন। নবী প্রথম যে মসজীদ নির্মাণ করেছিলেন তার গম্ভুজ নাকি ছিল সবুজ। সেই ট্রেডিশানের জন্য তারা আজো সবুজ পাগড়ি ব্যবহার করতে ভালবাসেন।
নবী যা করতেন তা করা মুসলমানের জন্য সুন্নত। কিন্তু নবী তো মাটির মসজিদে নামাজ আদায় করতেন, খেজুরের পাটিতে বসতেন। (এমন অনেক উদাহরণ দেয়া যাবে যেখানে মুসলমানরা নবীর সুন্নত মানতে রাজি নয়)
মাটির মসজিদে নামাজ আদায় করা নিশ্চয় সুন্নত?
খেজুর পাতার পাটিতে বসা নিশ্চয় সুন্নত?
কিন্তু আধুনিক ঈমানদাররা কেন, মাটির মসজিদকে ভেঙ্গে পাকা দালাল করতে এত উঠেপরে লেগেছেন?
কেন খেজুর পাতার পাটি না বিছিয়ে দামি দামি টাইলস লাগাচ্ছেন?

আমাদের মসজিদের সংখ্যা প্রতি বছরই বাড়ছে। হয়তো মুসল্লিদের স্থান সঙ্কুলনের সমস্যার কারনেই নতুন মসজিদ করতে হচ্ছে। বুঝলাম মুসল্লিও বারছে। এখন আর কাঁচা ঘরের মসজিদ খুব একটা চোখে পড়েনা। সবই পাকা দালান,টাইলস, এসি কি নেই। মাঝে মাঝেই দেখি দাবি করা হয় ৮০-৯০% মুসলামানদের দেশ এই বাংলাদেশ। আমরা আশা করতেই পারি সবাই কম বেশি মসজিদে যায়, না গেলে এত মসজিদের হয়তো দরকার হতোনা।এত এবাদবন্দিগি এতো পার্থনা করার পরেও আমাদের দেশ কি করে দুর্নিতিতে চ্যাম্পিয়ান হয়?
১৭টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×