somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

The Curious Case of Benjamin Button:অদ্ভুত অদ্ভুত অদ্ভুত এক প্রেম উপাখ্যান

১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ সকাল ১০:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাল-১৯১৮
Mr. Gateau, যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অরলিয়েন্স এর এক অন্ধ ঘড়ি নির্মাতা, প্রথম বিশ্ব যুদ্ধে তার ছেলেকে হারান। পুত্রবিয়োগের কষ্ট সইতে না পেরে তিনি বিশাল আকারের একটি ঘড়ি নির্মাণ করেন,এবং ঘড়ীটিকে তিনি এমন ভাবে তৈরি করেন যে, ঘড়ীর কাঁটা উল্টা দিকে ঘুরতে থাকে।এই আশায় যে একদিন হয়ত সময় পিছিয়ে যাবে। এবং তার নিহত ছেলে আবার তার কাছে ফিরে আসবে।।

ফিল্মের ওপেনিং শট টাই এত হৃদয় গ্রাহী।।

The Curious Case of Benjamin Button by F. Scott Fitzgerald এই উপন্যাস অবলম্বনে এই সিনেমাটি তৈরি করেন পরিচালক David Fincher
মূল চরিত্রে অভিনয় করেন ব্রাড পিট এবং ক্যাট ব্লাঞ্চেট।

১১ই নভেম্বর ১৯১৮, যেদিন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়, সেদিন বিকেলে জন্ম নেয় এক অদ্ভুত রোগে আক্রান্ত শিশু।শিশু টি দেখতে অবিকল এক থুড়থুড়ে বুড়ো র মতন। জন্মের সময় তার মা মারা যায়। এইরকম অদ্ভুত শিশু দেখে তার বাবা তাকে এক নার্সিং হোমের দরজায় রেখে আসে। পরবর্তীতে নার্সিং হোমে কাজ করত এক মহিলা শিশু টিকে মায়ের স্নেহে প্রতিপালন করে।

সিনেমার কাহিনী কিছুটা স্লো।কিন্তু অসম্ভব সুন্দর অভিনয় পুষিয়ে দিয়েছে আর সব কিছু।২০০৮ সালে মুক্তি পাওয়া এই ফিল্ম সেরা চলচিত্র, সেরা পরিচালক এবং সেরা অভিনেতা সহ মোট ১৩ টি অস্কার মনোনয়ন লাভ করে। এবং ৩ টা ক্যাটাগরি তে অস্কার জয় করে। কোন ফিল্মের রিভিউ লিখতে গিয়ে কাহিনী বলতে আমার ভালো লাগেনা, কিন্তু এই মুভির স্টোরি এতই সুন্দর যে একটু বলার লোভ সামলাতে পারছি না।

পালক মা এর কাছে বড় হতে থাকে বেঞ্জামিন( ব্রাড পিট) একটি ওল্ড হোমে। সেখানে একদিন থাকতে আসেন এক বৃদ্ধা। সেই বৃদ্ধাকে সপ্তাহে একদিন দেখতে আসে তার নাতনী ডেইজী। ধীরে বন্ধুত্ত গড়ে উঠে বেঞ্জামিন এবং ডেইজীর। বেঞ্জামিন ও বড় হওয়ার সাথে সাথে তার অসুখ ভালো হতে থাকে। সে বৃদ্ধ থেকে ধীরে যুবক হতে শুরু করে।

১৯৪১ সালে সে নাবিকের কাজ নিয়ে চলে যায় সমুদ্রে। সেখানে সে আমেরিকান দের হয়ে ২য় বিশ্বযুদ্ধে অংসগ্রহন করে।১৯৪৫ সালে সে ফিরে আসে তার বাড়ী। এসে সে জানতে পারে তার বান্ধবী এখন বিশ্বখ্যাত ব্যালে ড্যান্সআর।ইতিমধ্যে সে তার বাবার পরিচয় জানতে পারে।

এভাবেই এগিয়ে যায় মুভিটির কাহিনী।সম্পূর্ণ ফিল্মটি দেখানো হয় ফ্ল্যাশব্যাকে। মৃত্যু পথযাত্রী ডেইজী তার মেয়ের কাছে তার জীবনের এই অদ্ভুত প্রেম এবং বেদনার কথা উল্লেখ করেন হাসপাতালের বেড এ শুয়ে।

বিখ্যাত ব্যালে শিল্পী ডেইজীর কাছে ভিড়তে পারে না বেঞ্জামিন। কিন্তু একটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘুরিয়ে দেয় তাদের জীবনের মোড়। সড়ক দুর্ঘটনায় পা ভেঙ্গে
আর নাচতে পারে না ডেইজী। ততদিনে বেঞ্জামিনের বয়স ৪৯ হলেও তার অদ্ভুত রোগের কারনে তাকে ডেইজীর সমবয়সী দেখায়।ডেইজী ফিরে আসে বেঞ্জামিনের কাছে। তাদের একটি কন্যা সন্তান হয়।তার কিছুদিন পরে বেঞ্জামিন তার ভুল বুঝতে পারে।সে ডেইজী কে বলে, এবং এটাই সম্ভবত সবচে মর্মস্পর্শী ডায়লগ, "ডেইজী, আমি পারব না একজন যোগ্য বাবা হতে। আমার রোগ টা আমাকে শেষ করে দিচ্ছে। তুমি পারবে না একা ২ টা শিশুর ভার বহন করতে। আমাকে তুমি ক্ষমা করে দাও।"

কাহিনীটা বলার জন্য যদি কেউ রাগ করে থাকেন, তাইলে ভাই আমি সরি। আর কিছু বলব না। মুভির শেষ দিকে আরও টুইস্ট আছে।তবে এক কথায় যদি বলি, তাহলে বলব, এরকম হৃদয়স্পর্শী এবং অদ্ভুত সিনেমা আমি আর দেখিনি। তবে,তবে, তবেB-)B-)

সিনেমাটির নেগেটিভ রিভিউ আছে অনেক। বিশেষ করে মানব মানবীর সম্পর্কের মাঝে বয়সের যে সীমানা দেখানো(বাহ্যিক ভাবে) হয়েছে তা আমাদের যে কোন সামাজিক মাপকাঠিতেই আপত্তিকর। সিনেমাটিকে যদি সিরিয়াসলি নেন তাহলেই প্রবলেম। এটা একটা ফ্যান্টাসি মুভি হিসাবেই ভাববেন , তাহলে আশা করি সিনেমার মূল এসেন্স টা আপনি ধরতে পারবেন।



সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ সকাল ১০:৪৬
১২টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×