somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাণিজ্যিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

১৭ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে ভাল সংজ্ঞা কী হতে পারে? হয়তো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে কোনো সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত করা যায়না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানুষ শিখতে আসে। আদর্শের শিক্ষা, সেবার শিক্ষা। এটাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংজ্ঞা। তাহলে বাণিজ্যের কথা কেন আসে? আসবে। বর্তমানে দেশে মানুষের মৌলিক অধিকার সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলির সাথে বাণিজ্য কথাটি খুবই জড়িত। শিক্ষা, সেবা, চিকিৎসা সবকিছুতেই বাণিজ্যের ছড়াছড়ি। এসব বাণিজ্যিক সাফল্যের জোয়ারে মূল সেবা ধামাচাপা থেকে যায়। বাণিজ্য নেই তো সেবা নেই। এ যেন, আমায় আগে বাণিজ্যিক সাফল্য দাও, আমি তোমায় সেবা দেব্।

এরকম একটা সেবামূলক বাণিজ্যিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান "রাণীহাটি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়" (পুরো ঠিকানা গোপনীয়)। প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মোঃ কামাল (বাচ্চু) বাণিজ্যের পুরোটা ইনিই নিয়ন্ত্রণ করেন। অন্যান্য শিক্ষকরা বাণিজ্যিক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। আর বছরের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য শুরু হয়েছে এখন। ২০১২ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরন। চমকে যাওয়ার মত কথা, প্রত্যেকজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে সর্বোচ্চ ৪৭০০ টাকা! বোর্ড নির্ধারিত ফি এর চাইতে সব বিদ্যালয়ই নানান অযুহাতে কিছুটা বেশি ফি নিয়ে থাকে। খোঁজ নিয়ে যানা যায়, অন্যান্য বিদ্যালয়গুলোতে যেটা ১৮৫০ টাকা। সেখানে কিনা ৪৭০০? সামান্য মনুষ্যত্ববোধ, বিবেক, চিন্তা-ভাবনা থাকলে কি এই সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়? আমি জানি, একজন শিক্ষক পিতৃতুল্য, শ্রদ্ধেয়। ওনার মনুষ্যত্বের প্রশ্ন তোলার কোনো অধিকার আমার নেই। কিন্তু একজন স্বার্থসিদ্ধ শিক্ষকের ভিত্তিহীন সিদ্ধান্ত যখন একটা পরিবারের ঘুম হারাম করে দেয় তখন কী করতে পারি?

বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের ৮০ ভাগ বা তার বেশি পরিবার জীবিকার জন্য কৃষি সংশ্লিষ্ট বিষয়ের উপর নির্ভর করে। সন্তানের ১০০ টাকার একটা বই যোগাড় করতে এদের হিমশিম খেতে হয়। ২০০০ টাকায় ফরম পূরণের সময় এদের আকাশ কুসুম চিন্তা মাথায় নেমে আসে। বিবেকের প্রশ্নটা এমনিতেই আসেনি। যাদের কাছে জীবন মানে বিলাসিতা নয়। জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে প্রয়োজনীয় সিদ্ধানের বাস্তব রুপ দেখতে এদের কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। হয়তো এখনও করবেন। টাকার অভাবে হয়তো সন্তানের অবিষ্যৎ এখানেই থতকে থাকবেনা। কিন্তু মানুষের ভালবাসা? যে আসনে অধিষ্ঠিত হওয়ায় মানুষ তাকে ভক্তি ও সম্মানের নজরে দেখতেন তিনি কি তা ধরে রাখতে পারলেন? বাচ্চু স্যারের কথা বলছি। সিদ্ধান্তের বেড়াজালে আরেক অভিনব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। শিক্ষার্থীদের ফরম পূরন করা হবে রাত্রে। তিনি বুঝাতে চেয়েছেন শান্ত পরিবেশে কাজ করার জন্য, আমি বলি মানুষের দৃষ্টি এড়িয়ে চলার জন্য।

বিদ্যালয়ে আমার কোনো ভাই-বোন বা কাছের মানুষ নেই। কিন্তু ওরা আমার প্রতিবেশী। আমি ওদের সমস্যার বিষয়গুলো ভাবতে বা কারো সাথে ভাগাভাগি করতেই পারি। তাই সিদ্ধান্ত পূনর্বিবেচনার একটা আবেদন থাকবে স্যারের কাছে। হয়তো এই লেখা স্যারের দৃষ্টিতে আসবেনা। তাই বলে মানুষের প্রতিবাদ থেমে থাকবে কি?

এটা আমার দৃষ্টিতে আসা একটি ঘটনামাত্র। সারাদেশে এরকম অনেক ঘটনা ঘটছে। তবে এটা আমার কাছে খুবই নতুন যেখানে, একজন গরীব মেধাবী ছাত্রের ক্ষেত্রেও কোনো বিবেচনা করা হয় না।

আমার লেখাটা কোনো শিক্ষকের কাছ ভাল না লাগলে আমি দুঃখিত। আমাকে ক্ষমা করবেন। লেখাটা আমি আপনাকে নিয়ে লিখিনি। এটা হল সেই জাতীয় শিক্ষকদের নিয়ে যারা শিক্ষকতার মত মহান পেশাকে বাণিজ্যে রুপান্তর করে। শিক্ষকতা একটা মহান পেশা। বাণিজ্যের আড়ালে এটাকে কলূষিত করবেন না।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×