Click This Link
র্যাবের করা সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার মামলায় ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামের কলেজছাত্র লিমন হোসেন এই প্রথম কৃত্রিম পায়ে ভর করে আদালতে হাজিরা দিয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টায় সে ঝালকাঠির জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির হয়। হাকিম নুসরাত জাহান আগামী ১৬ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।
লিমনের সঙ্গে আদালতে যান তার মা হেনোয়ারা বেগম, ভাই হেমায়েত হোসেন, আইনজীবী নাসিমুল হাসান ও মানিক আচার্য্য।
ঢাকায় চিকিৎসাধীন থাকায় লিমন এর আগে চারটি ধার্য তারিখে আদালতে উপস্থিত হতে পারেনি। এই আদালত গত ১ মে লিমনের জামিন মঞ্জুর করেন। মামলায় গতকালই প্রথম লিমন আদালতে হাজিরা দেয়।
গত ২৩ মার্চ রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে বাড়ির কাছে মাঠে গরু আনতে গিয়ে র্যাবের গুলিতে পা হারায় কলেজছাত্র লিমন। এ ঘটনায় র্যাবের উপসহকারী পরিচালক মো. লুৎফর রহমান বাদী হয়ে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে লিমনসহ আটজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। এজাহারে তিনি (ডিএডি লুৎফর) দাবি করেন, আহত অবস্থায় ধৃত আসামি লিমন ও অন্য আসামিরা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করে সরকারি কাজে বাধা দিয়েছে।
গতকাল আদালতে লিমন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সারা দেশের মানুষ জানে র্যাব আমাকে ধরেই গুলি করেছে। আমাকে আহত অবস্থায় দুই ঘণ্টা কাঁথা চাপা দিয়ে ফেলে রেখেছিল। আমি সরকারি কাজে বাধা দিলাম কীভাবে?’
লিমন আরও বলে, ‘আমি এখনো অসুস্থ। কৃত্রিম পায়ে ভর করে আদালতে হাজিরা দিতে এসেছি। এর চেয়ে বড়-বড় মামলায় পুলিশ এক সপ্তাহ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়। অথচ এ মামলায় প্রায় আট মাস অতিবাহিত হলেও কোনো প্রতিবেদন দিচ্ছে না।’
লিমন সাংবাদিকদের বলে, ‘আমার বিরুদ্ধে র্যাব দুটি মিথ্যা মামলা করেছে। আমি এখন লেখাপড়া করছি, নিয়মিত কলেজেও যাচ্ছি। কৃত্রিম পায়ে ভর করে আমার আদালতে হাজিরা দিতে কষ্ট হচ্ছে। আমি র্যাবের মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি চাই।’
লিমনের আইনজীবী মানিক আচার্য্য বলেন, লিমনের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন আজও (বুধবার) আদালতে দাখিল করা হয়নি। র্যাবের ছয় সদস্যের বিরুদ্ধে লিমনের মায়ের করা হত্যাচেষ্টা মামলার কোনো আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করছে না।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজাপুর থানার উপপরিদর্শক আরিফুর রহমান বলেন, ‘মামলাটি তদন্তাধীন, ঠিক এই মুহূর্তে আমি আর কিছু বলতে চাইছি না।’