somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লিলিপুট...............(১) (চলমান)

১৭ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ২:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-কে? লিলিপুট নাকি?কই যাচ্ছিস?
এত তাড়াতাড়ি হাটছিস?ব্যায়াম করতেছিস নাকি?হাঃ…হাঃ…
রাস্তায় না করে বাড়ির ভিতর গোয়াল ঘরে রশি টানিয়ে ঝুলে ব্যায়াম করেন সেটাই ভালো হবে। কেউ দেখবেনা,হাসবেওনা।রাস্তায় পড়ে থেকে লোক হাসানোর দরকার কি? যান, যান ,তাড়াতাড়ি কেউ দেখার আগে চলে যান।
-কিরে লিলিপুট?মন খারাপ নাকি?আয় বস, এই সিদ্দিক, লিলিপুটকে এক কাপ চা দে।
-কিরে লিলিপুট বাজারে যাচ্ছিস?রিকশা লাগবে?কি যে বলেন সফিক ভাই,লিলিপুট কি রিকশা দিয়ে যায়।এই লিলিপুট তুই হেটে যা।এটাই তোর জন্য ভালো। ব্যয়াম হবে,স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে,পারলে দৌড়াইয়া যা সেটা আর ভালো।

আনোয়ার;
সবখানে হেয়পতিপন্ন হওয়া এই লিলিপুটের নাম।আনোয়ার হোসেন, মা বাবার দেয়া নাম।বাবা ইকবাল হোসেনের সাথে মিল রেখে নাম রাখা হয়ে ছিল।দেখতে একেবারে তার মায়ের মতই।তবে বৈশিষ্ট্য সবই বাবার মতো।হাটা চলা সব খানেই তার বাবার চিহ্ন পাওয়া যায়।তবে ছেলেটির একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল সে লেখা পড়ায় খুব মনযোগী।নিজের মেধাকে কাজে লাগাতে সে প্রস্তুত।ছোটবেলা থেকেই সে অত্যন্ত মনযোগী।এমনকি খেলাধুলাও করত বেশ।খুব ভাল ক্রিকেট খেলত ,শুধু তাই না ভাল ফুটবলও খেলত।স্কুল ফাকি দেয়া সে জানতো না।মা বাবা ও তার ছেলেকে নিয়ে খুব খুশি।তবে এসবের ফাকেও তাকে দুষ্টমি থেকে কেউ বিরত রাখতে পারতনা।সে জন্য সে বেশ কয়েকবার মা বাবার হাতে মার খেছে।
ভালোভাবেই প্রাইমারির গন্ডি পার করলো।সব সময়ই তার রোল পাঁচ এর মধ্যে থাকতো।হাইস্কুলে উঠার পর থেকেই তাকে নিয়ে মা বাবার মধ্যে কেমন চিন্তার ভাঁজ পরে গেল।স্কুলে যেত নিয়মিত,তবে দুষ্টমি,খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকত বেশি।এসব নিয়ে মা বাবার মাথাব্যথা কম।মাথা ব্যথা হচ্ছে তার গাঠনিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে।ইদানিং তার কৌন পরিবর্তন দেখা যাচ্ছেনা।এ বয়সে ছেলেমেয়েদের যেমনটা হওয়া উচিত।তার সাথের সহপাঠিরা তাকে এক ইঞ্চি দু ইঞ্চি করে ছাড়িয়ে যেতে লাগল।সবাই যে এক সময় বাড়বে এমনতো কথা নয়।মানুষের গাঠনিক বেড়ে উঠা যেকোন সময় হতে পারে।
কেউ একটু দেরিতে বেড়ে উঠে।এটা হতে পারে হরমোন বা আবহাওয়া বা নানান কারনে।এসব চিন্তা করে মা বাবাব নিজেদের স্থির রাখার চেষ্টা করে। কিছুদিন পর সে নবম শ্রেনীতে উঠবে,অষ্টম শ্রেনী থাকাকালেই তার সহপাঠিরা তাকে ব্যঙ্গ করতে শুরু করেছে।কেউ তাকে গিট্টু বলে,কেউ তাকে ট্যাবলেট বলে,কেউ বা বলে হাফ টিকেট ইত্যাদি।শুনতে নিজের কাছে খারাপ লাগলেও সে মেনে নেয়’।বন্ধুরা মজা করে ডাকে।মাঝে মাঝে খুব খারাপ লাগে যখন সবার সামনে ডাকে।নিষেধ করলেও তারা ডাকে।আকারে ছোট বলে তার কথায় সবাই তেমন গুরত্ব দেয় না।এক বার সে বলেছিল কেউ যদি তাকে অন্য নামে ডাকে তাহলে সে স্যারের কাছে বলে দিবে।এই ভয়ে কয়েক দিন বলা বন্ধছিল।এই সময়ে আনোয়ার নামটির ভালোয়-ই ব্যবহার হয়ে ছিল।কিন্তু কয়েকদিন পর আবার সেই একই অবস্থা।যে লাউ সে কদু।একদিন স্কুলে বিরতির সময় বন্ধুরা সহ আড্ডা দিচ্ছিল,তাদের পাশে কয়েকটি মেয়ে গল্প করতেছিল।এ সময় একটি ছেলে তাকে গিট্টু বলে ডাক দিলে তার মন খারাপ হয়ে যায়।এই ভাবে সবার সামনে বিশেষ করে মেয়েদের সামনে বলা সে মেনে নিতে পারেনি।তার কোথায় যেন ভয়ংকর ভাবে আঘাত লাগলো।আর সে আঘাতের কারনে স্কুলের সবচেয়ে ভয়ংকর আজমল স্যারকে বলে দিল।আর স্যারতো কি-যে মার!আনোয়ারের ভালোই লেগেছিল তাদের স্যারে মারাতে।মার খাওয়াতে তার বন্ধুরা তাকে স্কুল ছুটির পর নানা কথা বলতে লাগলো । বিভিন্ন ধরনের ছোটো খাটো হুমকি ও দিল।এইভাবে সে হাইস্কুলের গন্ডি পার করলো সেকেন্ড ডিভিশনে পাশ করে।এই পাঁচ বছরে তার অনেক পরিবর্তন হল।হাটাচলা,কথাবলা,মাঝখানে সিতা করা,একটু ভাব নিয়ে চলা,পরিস্কার কাপড় পরা,কখনো আবেগী হওয়া মেয়ে দেখলে নতুন ভঙ্গিতে দাড়ানো ইত্যাদি।তবে একটা জায়গায় সে স্থিরই রয়ে গেলো।সেই প্রাইমারি আনোয়ার আর হাইস্কুল পার করা আনোয়ার গাঠনিক আকার একই রয়ে গেল।আনোয়ারের উচ্চতার তেমন কোন পরিবর্তন ঘটলনা।তবে এই ফাকে সে সাইকেল চালানো শিখেছে।ছোট সাইকেল ভালোভাবেই চালাতে পারে।বড় সাইকেল ও চালেতে পারে তবে কষ্ট হয় প্যডেলে জোরে চাপ দিয়ে পা উপরে ধরে অপেক্ষায় থাকতে হয় কখন প্যডেল আবার নিচ থেকে ঘুরে পায়ে আসবে।তারপর সে আবার চাপ দিবে।এইভাবেই সে বড় সাইকেল চালায়।কারন সে সম্পুর্ন নাগাল পেতনা।।
কলেযে ভর্তি হল আনোয়ার।এলাকার পাশে কলেজে ভর্তি হল আনোয়ার।তবে আনোয়ারের গাঠনিক বেড়ে উঠা নিয়ে পরিবারের দুশ্চিন্তা আরেকটু ঘনীভুত হল।আনোয়রের উপর মোটামুটি একটা চাপ প্রয়োগ শুরু করল তার বাবা মা।তা হচ্ছে ভালো খাবারের পরিমান বাড়িয়ে।তবে আনোয়ারের একটা দোষ হল-দুপুর বেলা খাওয়ার পর কখনো তাকে বিশ্রাম বা ঘুমোতে দেখা যায় না।সে আর ঘরেই থাকেই না।তার বাবা মা এসবের ব্যাপারে তাকে সচেতন হতে চাপ শুরু করল।তবে তারা খুব বেশি হতাশাগ্রস্থ নয়। তাদের মনে ঐ একটাই ভাবনা,-ছেলে বড় হবেই।আজ না হোক কাল।কারো বেড়ে উঠা একট দেরিতে হতে পারে।তাই তারা নিজেদের স্থির রাখার চেষ্টা করে।তবে আনোয়ারের বাবার মনে একটা দুঃখ রয়ে গেল ছেলেটাকে ক্যাডেট কলেজে পড়ানোর ইচ্ছা।পড়ানো তো দুরের কথা ভর্তি পরীক্ষাটা পর্যন্ত দেয়ার সুযোগ হয়নি।একমাত্র উচ্চতার অভাবে(কম বলে)।ষষ্ঠ শ্রেনীতে থাকাকালে ছেলেকে বকাঝকা দিয়ে,সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠিয়ে কয়েকদিন দৌড়াতে,গাছের সাথে দড়ি বেধে ঝুলতে বা ডাল ধরে ঝুলানোর চেষ্টা করেছেন।কিন্তু লাভ হয়নি।আনোয়ার প্রতিদিন করত না।একদিন করে চারদিন বাদ।কি আর করা।আনোয়ার তো রাবার নয় টেনে লম্বা করবেন , নাহলে দুইজন লোক ভাড়া করে হাত ধরে টানাতেন। যদিও এটা বেশ বাড়াবাড়ি হয়ে যেত।সবার চোখে আনোয়ার হত রাবার নামে খেলনা।বাবা কিংবা আনোয়ার উভয়ই হত চরম হাসির পাত্র।আনোয়ার কলেজের নিয়মিত ছাত্র।তাই সবার সাথেই সে মোটামুটি পরিচিত।তবে ভালো ভাবে পরিচিত বন্ধুর সংখা খুব বেশি নয়।তারপরও তার রেহাই হয়না মানসিক আঘাত থেকে।স্কুলের মত এই খানেও একই অবস্থা।আকারে খাটো বলে বন্ধুরা তাকে গিট্টু,ট্যাবলেট,পল্টু বলে ডাকে।কিন্তু এখন তো আর সে স্কুলে নয়।এখন সে কলেজে।আকারে নাহোক বয়সে কিংবা বুদ্ধিতে সে এখন একটু বড় হয়েছে।মনের মধ্যনানা ধরনের চিন্তা ঠাই পেয়েছে।সে এখন অনুভব করতে শিখেছে।মেয়েদের দেখলে বুকের মধ্যে এখন কেমন করে উঠে।তাই সে পরিচিত বন্ধুদের নিষেধ করে দিয়েছে, কলেজের ভিতরে তাকে যেন কেউ অন্য নামে না ডাকে।আনোয়ার কলেজের নিয়মিত ছাত্র বলে সবাই তার কাছে পড়ার ব্যপারে সাহায্য নিতে আসে।অনেক মেয়েও আসে।আনোয়ারের খুব ভাল লাগে।তবে বেশি ভালো লাগে যখন কোন মেয়ে তার কাছে আসে।ভাল তো লাগবেই এখন যে ভালো লাগার বয়স।মনের মধ্য শুধু ভালো লাগার মুহুর্ত গুলো জেগে উঠে।মন যেন উড়ু ঊড়ু।শুধু তাই নয় কখন কখন বাতাসের আগেও ছুটে চলে কোন নতুন ঠিকানার খোজে।আজ যদি একে ভালো লাগে কাল আরেকজনকে দেখলে তাকে ও ভালো লাগে।আনোয়ারের মধ্যেও তেমন অবস্থ চলতে লাগলো।একটা বছর পার করে ফেলেছে আনোয়ার।কলেজে ২য় বর্ষের ছাত্র।নিজের কাছে আরেকটু ভাল লাগতে শুরু করেছে কলেজের বড় ভাই হতে চলেছে।নতুন ছাত্ররা বড় ভাই বলে ডাকবে।
আজ নতুন ছাত্রদের প্রথম ক্লাস।আনোয়ার খুব সেজে ভালো জামা কাপড় পরে চুল মাঝখানা সিতা করে একটু ভাব নিয়ে কলেজে গেল।এতসব আয়োজনের পিছনে মুল কারন হল নতুন বর্ষের মেয়েদের দেখা।নতুন ছাত্রী আসবে,দেখবে ইত্যাদি।
কলেজে গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকল। তার সাথের বন্ধুদের কাউকে না দেখে একটু অপেক্ষা করতে লাগল।অনেক নতুন মুখ দেখা যাচ্ছে।নিজেকে আড়াল করে রেখে মেয়েদের দিকে তাকিয়ে চলছে।খুজে চলছে সুন্দর মুখখানি।কিছুক্ষন ধরে একটা মেয়ে তার পাশে দাড়িয়ে।মেয়েটি দেখতে মন্দ নয়।আনোয়ারের মনে ধরেছে।আনোয়ার কেমন যেন করতে লাগল।আনোয়ার খুব এলোমেলো হয়ে গেলো।নিজেকে ঠিক করতে পারছেনা কি করবে।মেয়েটির সাথে পরিচিত হবে না হবেনা এ নিয়ে দ্বন্দ্বে পড়ে গেল।তার ধৈর্যের ফল সে পেল।মেয়েটি নিজে নিজেই তার সাথেই কথা বলল।তবে সে যেমনটা ভেবেছিল তেমনটা হয়নি।বরঞ্চ এক গাধা কষ্টের বোঝা বুকে নিয়ে সে স্থান ত্যাগ করল।মেয়েটি মনে করল আনোয়ারও তার মত নতুন ।দেখতেও ছোটখাট আকৃতির।মেয়েটি আনোয়ারকে জিজ্ঞেস করল তুমি কোন স্কুল থেকে আসছো?সাথে সাথে তার মন খারাপ হয়ে গেল।তারপরেও সে নিজেকে স্থির রাখলো।কারন তার ঘাবড়ে যাওয়া ঠিক হবেনা।আনোয়ার নিজের স্কুলের নাম বলল।এর বেশি তাদের মধ্যে আর কথা হয়নি।মেয়েটি তার পরিচিত আরেকটি মেয়ে দেখে কেটে পড়ল।আর আনোয়ার হা করে তাকিয়েই থাকলো।আনোয়ারও কেটে পড়লো। বন্ধুদের কাছে ফিরে আসল।তবে তাদের কাউকে এ বিষয়টা বলেনি।বললে হয়ত নিজে আরেকটু অপমানিত হত। …………
আনোয়ার কলেজের গন্ডি ও পার করল।কৃতকার্য হল।এর মধ্যে আনোয়ারের আরো পরিবর্তন ঘটল।বয়স বাড়ার সাথে সাথে যে ধরনের পরিবর্তন গুলো ঘটে তেমনটাই।তবে সামান্য পরিবর্তন ঘটল তার গাঠনিক দিক থেকে।আগের আনোয়ার আর এখনকার আনোয়ারের মধ্যে পার্থক্য সামান্য।ইতমধ্যে তার লক্ষনগুলো সবার চোখে ধরা পড়তে শুরু করেছে।এমনকি নিজেও উপলব্দি করতে শুরু করেছে।আকারে ছোট বলে সবাই তার গায়ে হাত দিয়ে কথা বলে।কখনো কেউ কেউ ইচ্ছে করেই একটা কিল মেরে বসে।অনেকটা খেলনার জিনিসের মত সবাই যেন তাকে নিয়ে খেলায় মেতে উঠে।আনোয়ার খুব সহজ সরল সাধাসিধে এক কিশোর।বন্ধুবান্ধবের এমন আচরনে কখনো কখনো আনোয়ারের খুব মন খারাপ হয়।নিজেকে খুব তুচ্ছ মনে করে।সবার আড়ালে কেঁদে ফেলে।চোখে কেউ পানি না দেখলেও তার অন্তর জুড়ে পানির বন্যা বয়ে যায়।যা কেউ দেখেনা।মাঝে মাঝে এতে সে কিছু মনে করেনা।যদি একান্ত কাছের কোন বন্ধু এমন করে,তখন সে মনে করে বন্ধু হয়ত তার সাথে মজা করছে।আসলেই কি এতে মজা পাওয়া যায়।একজনের মনে কষ্ট দিয়ে আরেকজন মজা লুটবে।দুষ্টোমি,মজা যাই বলিনা কেন আমার মতে তা হবে এমন যাতে কারো মনে কোন কষ্ট না থাকে।একজনকে কাঁদিয়ে চারজন হাসলাম এ আবার কেমন দুষ্টমি?নানা মানসিক প্রতিবন্ধকতা আর অপমান ভেদ করে শেষ পর্যন্ত সফলভাবে পাস করে কলেজ থেকে বের হল।(বিবাগী) মন মানেনা কিছুই।রেজাল্ট খুভ ভালো হয়ন আবার খুব খারাপ ও বলা যাবেনা।তাতে তার যতটা না মাথাব্যথা তার চেয়ে বেধি মাথাব্যাথা নিজেকে নিয়ে,নিজের শারিরিক গঠন নিয়ে।যত ভালো রেজাল্ট ই করি না কেন কি লাভ?নিজেকে দেখতে সাত বছরের বালকের মত।পরিবার,সমাজ,জলসায় নিজের কোন ব্যক্তিত্ব থাকেনা।হয়ে উঠে হাসির পাত্র।কৈশোর থেকে যৌবনে পদার্পন করতে যাচ্ছেন।ইতমধ্যে যৌবনের বাতাস তার মনের মধ্যে বইতে শুরু করেছে।মানুষটা ছোট হতে পারে,তার মন তো ছোট না।একটি স্বাভাবিক মানুষের মত তার ও হাত,পা,চোখ ,কান,জননাংগ।মুখ সবই রয়েছে।তারও মনে অনুভুতি জাগে।ভালোবাসতে চায়।কারো বা ভালোবাসা পেতে চায়।কিন্তু তার মনে হয় সে সব থেকে বঞ্চিত।পারছেনা কোন মেয়েকে মুখ ফুটে বলতে।আর অন্যের কাছ থেকে সে তো কোন দিনই আশা করতে পারেনা।সব ক্ষেত্রেই একটা বাধা তার শারিরিক গঠন।কিন্তু আনোয়ার এটা মানতে রাজি নন।অন্য দশজনের মত তার ও মন চায় প্রিয়জনের সান্নিধ্য।অন্য দশটা ছেলের মত যৌবনের তাড়না তাকেও তাড়া করে বেড়ায়।কিন্তু আনোয়ার তার মনের ব্যথা কাউকে বুঝাতে পারছেনা বা কেউ বুঝতে চায় না।আনোয়ার পড়েছে মহা যন্ত্রনায়।বারবার শুধু এসব মনে করে আর নির্জনে জল ঝরায়।সৃষ্টিকর্তার সুন্দর সৃষ্টির দিকে চোখ মেলে তাকায় আর নিজের জন্য দুঃখ করে।মনে মনে অভিযোগ আনে প্রভু কি এমন পাপ ছিলো আমার কিংবা বাবা মায়ের?জীবনের স্বাদ যদি নাইবা পেলাম তবে কেন আমায় জীবন দিলেন?হিংসা পরায়ন সমাজে আমায় কেন পাঠালেন?মায়ের গর্ভে বা তোমার কাছে রেখে দিলেই পারতে।কিছুক্ষন পর নিজেই আবার নিজেকে সান্তনা দিতে শুরু করেন।সামনে নিয়ে আসেন কোন অন্ধ কিংবা বধির কিংবা বোবা ছেলেকে।তাদের সাথে নিজের তুলনা করে মনে শান্তি আনেন,সৃষ্টকর্তাকে ধন্যবাদ জানান।আর বলেন আমি তো ভালোই আছি।আমার হাত পা চোখ সবই আছে অন্য দশজনের মত।আমি অন্য দশজনের মত কথা বলতে পারি।সবার সাথে যোগাযোগ করতে পারি।নিজের অনুভুতি মুখে প্রকাশ করতে পারি।আমি তো কানে শুনি।সৃষ্টির সব সুর আমার কানে বাজে।আমি রবীন্দ্রের সুর কানে জড়িয়ে মনের অজান্তে কোথাও ঘুরে আসতে পারি।আমি শুনতে পারি ছোট শিশুর মধুর কন্ঠে মা কিংবা বাবা ডাক।সৃষ্টিকর্তার অপুর্ব সৃষ্টি আমি নিজের চোখে দেখতে পাচ্ছি।বাদল দিনের ঘনঘাটা আমি নিজের চোখে দেখতে পাচ্ছি।ছোট্ট শিশু বৃষ্টিতে খেলা করছে বা ছাতা মাথায় হাটছে সবই আমি দেখতে পাচ্ছি।আমার জন্মদাতা বাবা,আমার গর্ভধারিনী মায়ের কোমল মুখখানি আমি দেখেছি এখনো দেখে সুখ কুড়াই।আমি দেখেছি আমার মায়ের হাসি মাখা মুখ…………………………আর অই কাশেম যে জন্ম থেকেই অন্ধ।সেই একমাত্র বুঝে চোখে না দেখার কষ্ট কতখানি?কতখানি ব্যকুলতা তার মাঝে বিরাজ করছে আপন মায়ের মুখখানি দেখার জন্য।কতটা প্রবল ইচ্ছা তার মনে সুন্দর পৃথিবিটাকে একটিবার দেখার জন্য,তার গর্ভধারিনী মাকে একটিবার দেখার জন্য……।জামাল যে বোবা।কথা বলতে পারেনা। কতটা কষ্ট তার বুকে সেই জানে।তার সারাজীবনের স্বপ্ন একটাই মুখফুটে একটিবার কথা বলবে।নিজের মাকে,প্রিয়জনকে বলবে আমি তোমাকে ভালোবাসি………………।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×