somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফার্ষ্ট ডেট উইথ এ হিসু কাহিনী! (কিছু লাইনের জন্য ছোটদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনাপূর্বক)

১৬ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১২:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কত্ত ইচ্ছে ছিল প্রথম ডেট স্মরনীয় করে রাখব! মনে রাখার মতো একটা দিন হবে। কিন্তু কিসের কি। আমার মতো আনলাকি যে আর সুখ করতে পারবে না তা আর আমার মনে ছিল না! ডেটের আগের রাতে জানের সাথে ম্যাসেজ বিনিময় করছিলাম আর প্ল্যান করছিলাম যে কিভাবে কি করবো।

-জান, আজকে আমাদের রিলেশনের ৪ সপ্তাহ পূর্ণ হয়েছে! আমাদের এখনো দেখা হয়নি। তোমাকে এই মুহুর্তে অনেক মিস করছি। কাল আমার অপেক্ষার অবসান হবে। তোমাকে দেখব। অনেক এক্সাইটেড আমি! এতোদিন যাকে কল্পনা করছি তাকে কাল দেখবো ভাবতেই জানি কেমন লাগছে। তুমি কি কর?

- আমারো জানি কেমন লাগছে? আমি টিভি দেখি। আচ্ছা কাল যদি দেখ যে আমি তোমার মনের মত না তাহলে কি হবে?

- মানে কি? মনের মতো না মানে কি? আমি জানি তুমি হবে পরীর থেকেও সুন্দর। শোন, আমি সকালে বেইলী রোডের মোড়ে থাকবো। তুমি ক্লাশ শেষ করে এসো। বুঝেছ জান? লাভ ইউ!

- ওকে জান।তুমি কোন টেনশন করো না। আমি ঠিক সময়ই থাকবো। আমিও তোমাকে অনেক মিস করছি। বাবু, শোন আমার এখন ঘুমাতে হবে। কাল সকাল সকাল উঠতে হবে তো। সকালে তোমাকে ফোন দিবনে। কেমন? গুড নাইট জানু পাখি! লাভ ইউ টু!

ওর ম্যাসেজ পেয়ে আমার শরীরে জানি কি অনুভূত হতে লাগলো। রাত কেমন করে যাবে এই চিন্তায় ঘুম আসতেছে না। ৪ মাসের ফ্রেন্ডশিপ, তারপর প্রপোজ করা। তারপর রিলেশনের ৪ সপ্তাহ পার করা। এতো প্রতীক্ষার পর কাল আমি তাকে দেখবো। মনের ভিতর কেমন উড়ু উড়ু করছিল। এইসব ভাবতে ভাবতে কখন জানি ঘুমিয়ে পরলাম।

সকালে চড়ুই পাখি ডাকার আগে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। উঠেই শার্ট প্যান্ট ইস্ত্রী করলাম, সেভ করলাম। গোসল করলাম। কেমন জানি লাগছে! আজ ওকে দেখব। আমার জানু কে দেখব। ভাবতেই শরীর ও মন শিহরিত হচ্ছে।

বাই দা ওয়ে, মাঞ্জা টাঞ্জা মেরে সকাল সাড়ে আটটার দিকে বাসা থেকে বের হলাম। রিকশা করে বেইলী রোড যাব। রিকশা করে কিছুদুর যাওয়ার পর অনুভব করলাম ছোট প্রকৃতি আমাকে ডাকছে! শালা, আর ডাকার সময় পেল না। বাসায় থাকতে কত চেষ্টা করলাম। তখন তো আসলা না! এখন এতো ফাল পারতেছে কেন? আমিও কম যাই না। আমার সহ্য শক্তিও চরম! ঘন্টা পাঁচেক তো এমনিতেই কাটাইয়া দিতে পারবো! কিন্তু রিকশা যত এগুচ্ছে ততই আমি কেমন জানি এলোমেলো হয়ে যাচ্ছি। অবশেষে বেইলী রোডে এসে ভাড়া দিয়ে রিকশা বিদায় করলাম। মাঝখানে জান আমাকে ফোন দিয়ে বলল যে ওর ক্লাশ শেষ, আসতেছে। খুশী হবার বদলে মুখ কেমন জানি ফ্যাকাশে হয়ে যেতে লাগলো! সহ্য শক্তির কথা চিন্তা করে এগুলো মন থেকে ঝেড়ে ফেললাম। ওর জন্য চকোলেট কিনলাম। ঘুরতেই দেখি রাস্তার ওপারে ও এসে পরেছে। মনে হচ্ছে যেন পরী দেখছি। আমার জান এতো সুন্দর! মন চাইছিল দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরি। যেই রাস্তা ক্রস করার জন্য দৌড় দিলাম তখনই আবার ডাক দিলো। শরীরটা পুরা বাকিয়ে গেল। খুব কষ্ট করে ওর কাছে গেলাম। একবার ভাবলাম রাস্তার কাছেই বা পাশের কোন মার্কেটে কাজটা সেরে ফেলি। কি জানি লজ্জার কথা চিন্তা করে আর যাওয়া হলো না। ভাবলাম ধানমন্ডি গিয়ে কাজ সারবো। এখন আর ওর সামনে শরমিন্দা হতে চাইনা। কিন্তু তখন যে কত বড় ভুল করলাম তা ঘুনাক্ষরেও টের পেলাম না। ওকে বললাম ধানমন্ডি চলো। কাজ আছে। ওইখানে গিয়ে আড্ডা দেই। ও প্রথমে যেতে চাইলো না। পরে নিমরাজি হলো। সিএনজি নিয়ে ধানমন্ডির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। ঢাকার গলির যা অবস্থা। রাস্তার এক একটা ঝাকুনিকে আমার যমের মতো মনে হলো। এই বুঝি কিছু একটা হয়ে গেল। সিএনজি’র নরম সিটে আমি কেমন যেন হারিয়ে যেতে লাগলাম! আসলে তখন আমি সহ্য করতে না পেরে তন্দ্রায় চলে যাচ্ছিলাম। তখন মনে হলো কেউ যেন আমার কানের কাছে বলছে “শি” “শি” “শি” (আমরা বাচ্চাদেরকে যেভাবে বলি!) আমি তখন দেখছি যে আমি ওয়াশরুমের দিকে যাচ্ছি। পৌছে দেখলাম কোন কমোড নাই! আজব! এইরকম তো হবার কথা নয়। আবারো আমি সেই শব্দ শুনতে পেলাম “শি” “শি” “শি”এখন শব্দ শুনার সাথে ধাক্কাও অনুভব করতে লাগলাম। কিন্তু ধাক্কার দিকে আমার কোন কান নাই। আমি এখন ফ্রি হতে যাব। অন্য দিকে কান পরে দেয়া যাবে। আরে আজিব, চেইন খুলছে না কেন। হচ্ছেটা কি এইসব। আমার সাথে এইগুলা কি! আমাকে কেউ ফ্রি হতে দেবে না? ওহ! চেইন খুলেছে! এইবার শান্তির দিকে পা বাড়াবো। যেই না পা বাড়াতে যাবো তখনই বড় একটা ঝাঁকুনি। মাম্মিইইইইইইইই!!! আমি তখন নিজেকে আবিষ্কার করলাম সিএনজি’র ভিতরে। ভাবলাম যে এতোক্ষন আমি সপ্ন দেখেছি? মানে এতোক্ষন আমি ঘুমিয়ে ছিলাম! আজিব, আমার জান কই? ও পাশে নেই কেন? ওকে নিয়ে তো আমি ধানমন্ডি যাচ্ছিলাম। সিএনজিওয়ালাকে জিজ্ঞেশ করলাম

- ভাই, আমার পাশে যে মেয়েটা ছিল ও কই?

- ভাই, উনি তো অনেক আগে নেমে গেছেন! আপনাকে অনেক ডাকাডাকি করছিলেন। কিন্তু আপনি তো ঘুমে নাক ডাকছিলেন তাই উনি নেমে গেছেন।

- হায় আল্লাহ কি বলেন? কখন গেল ও?

- ১৫, ২০ মিনিট তো হবে ই।

- এতো সময়য়য়! বলেন কি? তাহলে ওই সময় আমি আমার নামের বদলে শি” “শি” “শি শুনছিলাম। আর ধাক্কাটা আসলে আমার জানই দিয়েছিল। হে আল্লাহ এ কি হলো আমার সাথে? আচ্ছা, ভাই, আপনি একটু দাড়ান, আমি আসছি।

এই কথা বলেই আমি নেমে দৌড়াতে শুরু করলাম। ওর মোবাইলে ফোন দিচ্ছি। মোবাইল বন্ধ! আমার তো টেনশনে ঘাম বের হয়ে গেছে। হঠাৎ করে উপলব্ধি করলাম নিজেকে কেন জানি পাতলা পাতলা লাগছে। নিচের দিকে তাকালাম। যা দেখলাম আমি নিজেই ভয় পেয়ে গেলাম! পাশে কয়েকটি পিচ্ছি বাচ্চা আমার দিকে তাকাইয়া আছে! (আল্লাহ জানেন কোনদিকে তাকাইয়া ছিল!)

হে আল্লাহ, এ কি হল? প্রথম দিনেই এমন হবে আমি তো কল্পনাও করি নি। এখন আমি ওকে কেমনে সামলাব। কেমনে বুঝাব সবকিছু। আল্লাহ আমাকে সহ্য শক্তি দেন! এই বলতে বলতে সিএনিজি যোগে নিজ বাসা উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম।


ইচ্ছে ছিলো এ ছবির মতো আমার সপ্নের ফার্ষ্ট ডেট হবে! কিন্তু...........


এটা একটা ফিকশন এবং ফান পোষ্ট। ভালো না লাগলে প্লীজ বকা দিবেন না।

সবাই ভালো থাকবেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই নভেম্বর, ২০১১ দুপুর ২:২৫
২১টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

উপকূলের ভাই-বোনদের প্রতি গভীর সমবেদনা

লিখেছেন বিষাদ সময়, ২৭ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৭




আমরা ঢাকার পাকা দালানে বসে যখন আয়েস করে চায়ে চুমুক দিয়ে বৃষ্টি বিলাসে বিভোর, ঠিক সেই সময় আমাদের উপকূেলের ভাই-বোনেরা হয়তো কেউ স্বজন, কেউ ঘর, কেউ ফসল, কেউবা গবাদী... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা: অশ্লীলতা কি পোশাক দিয়ে নির্ধারণ করা উচিৎ নাকি মানসিকতা ও চরিত্র দিয়ে?

লিখেছেন লেখার খাতা, ২৭ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫২


ছবিটি -ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।

কহিনুরের, ফ্লোরা ওরিয়েন্টাল বিউটি সোপ।১৯৭৮ সালের বিজ্ঞাপন। ছবিটি ফেসবুকে পেয়েছি। ব্লগার সোনাগাজী, ব্লগার কামাল ১৮ সহ যারা মুরুব্বি ব্লগার রয়েছেন তারা হয়তো এই বিজ্ঞাপনটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

রেমাল ঘূর্ণিঝড়ে

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২৭ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৪



কতোজনে ভাসছে জলে
পথ ঘাট সব যে পানির তলে
রেমালের কবলে পড়ে।
কতোজনে আজ দূর্বিপাকে
ভাবছি বসে তাদের কথা
কতৈনা দূর্গতি, বাড়িঘর
ফসলী জমি গৃহস্থালি;
ভাসছে আজ জোয়ার জলে
প্রকৃতির বিষম খেয়ালে।
জেলেরা আজ ধরছে না মাছ,
স্কুল কলেজে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন বেনজীর আহমেদ ও আমাদের পুলিশ প্রশাসন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৭ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৪২



বৃষ্টিস্নাত এই সন্ধ্যায় ব্লগে যদি একবার লগইন না করি তাহলে তা যেন এক অপরাধের পর্যায়েই পরবে, যেহেতু দীর্ঘদিন পর এই স্বস্তির বৃষ্টির কারণে আমার আজ সারাদিন মাটি হয়েছে তাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

গাজার যুদ্ধ কতদিন চলবে?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৮ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার আগে মহাবিপদে ছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু৷ এক বছর ধরে ইসরায়েলিরা তার পদত্যাগের দাবিতে তীব্র বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন৷ আন্দোলনে তার সরকারের অবস্থা টালমাটাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×