জীবন যুদ্ধে সবাই জয়ী হয়না যেমন তেমনি কেউ কেউ আবার পরাজয়কে হার মানিয়ে দৃপ্ত পদক্ষেপে সামনে এগিয়ে যায়। যেমন আমার জীবনে ঘটে যাওয়া এমন এক মূহুর্তের কথা আজ আমি আপনাদের সামনে উপস্হাপন করবো।দেশে বেকার অবস্হায় যখন বেসামাল অবস্হা আমার তখন জীবনের মোড় ঘুরানোর জন্য বিদেশে পারি দেয়ার মনস্হির করলাম। পরিবারে বাবা তখন পেনশনে, মা , স্ত্রী ও এক সন্তান........আমি বেকার। পরিবারের ভরন-পোষন সমস্ত আমার দেখতে হয়।বড় দুই ভাই তাদের পরিবার নিয়ে আলাদা থাকেন.....নামকাওস্তে খোঁজ খবর নেন। এক বোন , তার ও বিয়ে হয়ে গেছে। তার জীবনেও বিরাট বিপর্জয়....দুই সণ্তান নিয়ে সে বিধবা।ভাগ্য কিছুটা সহায়, তার একটা চাকরি আছে। তো এই হল আমার পারিবারিক অবস্হা। জানতে পারলাম ট্রেনিং সেন্টার থেকে পাশ করতে পারলে সিংগাপুরে কাজ করা যাবে।
এক খালাত ভাই বিদেশে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে নানান ছল-চাতুরি দেখিয়ে টাকাটা মেরে দিল। চোখে মুখে অন্ধকার দেখার মতো অবস্হা।অবশেষে সিংগাপুরে সেই খালাত ভাই একটা কোম্পানিতে চাকরির ব্যবস্হা করলো। কিন্তু অভাগা যেদিকে যায় সাগরও না কি শুকিয়ে যায়....৬ ( ছয় ) মাস বেতন ছাড়া চাকরি করার পর সিংগাপুরের এম.ও.এম - এ অভিযোগ করে টিকেটের ব্যবস্হা করে দেশে আসলাম। আবার বেকার এবং বিরাট অংকের দেনা মাথায় নিয়ে। এভাবেই চলছিল আরও কিছু মাস। বন্ধুরা কয়েকজন মিলে একটা এন.জি.ও খুলেছিল দেশে। আমার এই বিপদের দিনে তারা পাশে এসে দাড়ালো। একটা চাকরি পেলাম আপাতত: কিছুটা হলেও আর্থিক সাহায্য হবে এই ভেবে। কয়েক মাস করার পর আরেক খালাত ভাই ( রবি ভাই তোমার কাছে আমার কৃতঙ্গতার সীমা নাই ) একদিন সিংগাপুর থেকে ফোন করে জানতে চাইলো আমি সিংগাপুর কাজ করবো কি না.....আমি আকাশের চাঁদ হাতে পেলাম। আবার এলাম সিংগাপুর এবং আমার জীবনের মোর ঘুরে গেল।ভাল কোম্পানি পেয়ে সুবিধা হল তারা আমার কাজের মূল্যায়ন করল এবং সেই সাথে কোম্পানির খরচে নানান ট্রেনিং এর ব্যবস্হা করলো। আজ সিংগাপুরে আমার ভাল অবস্হানের পিছনে আমি রবি ভাইকে ধন্যবাদ জানাই।
বর্তমানে আমি এক কোম্পানিতে সেফটি কোরডিনেটোর হিসেবে কাজ করছি। এই দেশে নির্মান শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে এসে অনেক মায়ের বুক খালি হয়েছে। স্ত্রী হেয়েছে স্বামী হারা, সন্তান হারিয়েছে তার বাবাকে। এখানে যে কোনো কাজ করার আগে তার নিরাপত্তার দিকটা ভাবা হয় আগে। আছে আইন যা অমান্য করলে আছে শাস্তির বিধান সাথে জরিমানা।আর তাই এদেশে শ্রম ও শ্রমিকের মূল্য আছে। যদি কেউ আগ্রহী হন তবে ট্রেনিং সেন্টার গুলোতে যোগাযোগ করতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০১১ দুপুর ১:২৭