somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টুকরা টুকরা আবোল তাবোল স্মৃতি গুলা। -১

১৪ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শুরুর কথাঃ
এই লেখার কারণ হইল এখন আমার আর কোন কাজ কাম নাই স্মৃতিচারণ করা ছাড়া। ভাবলাম স্মৃতিচারণ যখন করতাছিই লেইখাও রাখি, পরে আবার কোন এক সময় এই লেখা দেইখাই আবার স্মৃতিচারণ করমু। মানুষের স্মৃতিশক্তি খুব প্রতারণাময়।

সেই ছোটবেলার কথাঃ

এই বেলার কথা আমার নিজের খুব মনে নাই। ঢাকায় আসার পরের কথা থাইকা আমার ভালই মনে আসে এর আগের কথা সব আমার মায়ের মুখে শুনা।

ছোটকাল থাইকাই আমি ব্যাপক বদ আছিলাম। আমার আব্বা তখন ঢাকায় থাকত। আমি আমার আম্মু আর দাদী থাকতাম গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরে। আব্বা সপ্তাহের বৃহস্পতিবার বাড়ি যাইত। আমি নাকি আব্বারে ব্যাপক ডরাইতাম। আব্বারে নাকি দরজার চিপা থাইকা লুকায়া দেখতাম মাগার কাছে যাইতাম না। আফসোসের কথা হইল আব্বারে আমি এখন এই রকমই ডরাই, যদিও আব্বা আমারে জীবনে একবার মারেও নাই, খালি হাতে গোনা কয়েকবার ধমক দিছে মাত্র।

যাই হউক বদগিরির কথা কইতাছিলাম। আমার স্কুলের প্রতি ভয়ানক বিরাগ আসিল। আম্মা আর দাদী আমার স্কুলে দিয়া আইত। আর আমি তাদের পিছন পিছনই স্কুল থাইকা বাইর হইয়া যাইতাম গা। সারাদিন মাঠে ঘাঠে ঘুইরা বেড়াইতাম। আমার সবচেয়ে প্রিয় যায়গা নাকি আসিল গোরস্থান। আমি নাকি গোরস্থানে যাইয়া বইসা থাকতাম।

সেই সময়ে আমার প্রিয় খেলনা আসিল দাও বটি কাস্তে আর কোদাল !! অই সময়ের একটা খেলার কথা আমার খুব মনে আছে। মেশিন মেশিন খেলা। পুকুর পাশে বইসা একটা গর্ত বানাইতাম, এর পরে সেই গর্তের একটা মুখ এ পেঁপের ডগা কাইটা আইনা পাইপের মত লাগাইতাম। এরপরে অই গর্তে বদনা দিয়া পানি ঢালতাম আর পেঁপের ডগার ভিতর দিয়া অই পানি বাইরে যায়া পড়ত। ওহ মেশিন আমার চলেরে হাওয়ার বেগে উইড়া।

তখন নানার বাড়িতে বেড়াইতে আসা ছিল আমার কাছে ঈদের মত। নানার বাড়িতে হেভী মজা। আমার সাত জন মামা। সবাই আমারে হেভী আদর করত। তাদের ছোট বোনের বড় পোলা। যতদিন থাকতাম খুব মজায় থাকতাম তার কারণ আরো ছিল আমার সমবয়সী কিছু কাজিন।

যখন গ্রামের বাড়িতে আমার কোনভাবেই অক্ষর গ্যান হইতাছিল না, উলটা গরু রাখা, ঘুড়ি উড়ানি, গাছে উঠার কেরামতি বাইরা যাইতাছিল, তখন আব্বা তার মহান সেই সিদ্ধান্তখানা লইয়া বসলেন। আমাদের ঢাকায় নিয়া আসার ব্যবস্থা করলেন। ১৯৯২ সালের কোন একদিন চরম বৃষ্টি মাথায় নিয়া ঢাকার শহর আইসা পড়লাম।গোপীবাগ ছিল এলাকার নাম। আব্বা মাত্র তখন চাকরি বাকরি শুরু করছেন। যেই বাসায় তার চেম্বার খানা ছিল সেইটারই পাঁচ তলায় ছাদের একটা রুমে তিনি থাকতেন, আমার ঢাকার জীবন শুরু হইয়া গেল।

ঢাকায় আসার দিনের কওন কথা আমার মনে নাই, কিন্তু একটা কথা খুব মনে আসে, সেই বৃষ্টি, আকাশ ভাঙ্গা বৃষ্টি। মামা যখন কইল এই যে আমরা আইসা পড়ছি, তখন আমি রিক্সা থাইকা মাথা বাইর কইরা দেখলাম সেই পাঁচতলার ছাদের থাইকা চরম ভাবে বৃষ্টির পানি গড়ায়া পড়তাছে, কিভাবেই না পানি পড়তাছিল। এখনো চোখ বন্ধ করলে সেই দৃশ্যটা স্পষ্ট ভাবে দেখতে পাই। ছাদের কোন রেলিং ছিলনা বিধায় অনেক দিন পর্যন্ত সেই ছাদে যাইতে পারি নাই, যদিও ছাদের পাশেই ছিল আমার বসবাস। ছোট্ট একটা ঘর আর তার ছোট্ট একটা বারান্দা ছিল আমার এলাকা।

বারান্দার ভিতরে আব্বা একটা স্টোর রুম এর মত বানাইছিল। সেই রুম টার প্রতি ছিল আমার ব্যাপক আকর্ষণ। একটা তালা মারা ছিল। সারাদিন সেই তালা হাতাইতাম বইসা বইসা। আব্বারে ভয়ে কিছু কইতেও পারতাম না। এই অবস্থা দেইখা আব্বা একদিন তালাটা খুইলা দিল, আমি তো খুশি মনে ঢুইকা গেলাম। ঢুইকা দেখি বই আর খাতা। অনেক অনেক বই। আমি সব বই উল্টাই আর ছবি দেখি কারণ আমি পড়তে পারি না।আমি আম্মারে সারাদিন জ্বালাইতাম কি লেখা আসে কি লেখা আসে পইড়া শোনাও। শালার তখনই বুঝছিলাম নিজে পড়তে না পারলে যে কেমন লাগে।

এর কয়েকদিন পরে আব্বা আমার লাইগা একটা মাস্টার রাখলেন। নাম আছিল হযরত আলী আর রাখলেন একজন হুজুর। এদের সাথে আমার অনেক কাহিনী আছে। পরের পর্বে সেইগুলাও বলা হবে। হাজার হউক এইটা আমার স্মৃতিচারণ মূলক কথা বার্তা।
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম নেতৃত্বের ক্ষেত্রে আব্বাসীয় কুরাইশ বেশি যোগ্য

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৫




সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জুমার নামাজে এক অভূতপূর্ব ঘটনা

লিখেছেন সাব্বির আহমেদ সাকিল, ১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০



মসজিদের ভেতর জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাহিরে বিছিয়ে দেয়া চটে বসে আছি । রোদের প্রখরতা বেশ কড়া । গা ঘেমে ভিজে ওঠার অবস্থা । মুয়াজ্জিন ইকামাত দিলেন, নামাজ শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। হরিন কিনবেন ??

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৯



শখ করে বন্য প্রাণী পুষতে পছন্দ করেন অনেকেই। সেসকল পশু-পাখি প্রেমী সৌখিন মানুষদের শখ পূরণে বিশেষ আরো এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মাত্র ৫০ হাজার টাকাতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধখানা ভ্রমন গল্প!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৩৯


২০০২ সাল বান্দারবানের রিগ্রিখ্যাং-এর এই রিসোর্ট আজ সকালেই আমরা আবিস্কার করলাম! পাহাড়ের এত উপরে এই মোড়টাতে একেবারে প্রকৃতির মাঝে এমন একটা রিসোর্ট থাকতে পারে তা আমরা সপ্নেও কল্পনা করিনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×