somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিমান বাহিনীর পরীক্ষা! হাহ!

১১ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১১ জুলাই ২০১৩ বৃহস্পতিবার রাত্র ১০:২৫ ময়ূর ভিলা মোহাম্মদপুর ঢাকা-১২০৭

প্রিয় মৃন্ময়ী,

আজ থেকে রমজান মাস শুরু হল। গতকাল রাত্রে সেহরি খেয়ে দ্রুত ঘুম দিলাম। কারণ, সকাল ৮টার মধ্যে বিমান বাহিনীর তেজগাঁও অফিসে থাকতে হবে। গতপরশু রাত্রে আবেদন করেছি। গতকাল সকল কাগজপত্র গুছিয়ে আজ পরীক্ষা দিতে গেলাম। এখানে একটু ছোট্ট পটভূমি আছে। বিস্তারিত বলার আগে সেটি উল্লেখ করা প্রয়োজন।

গত জানুয়ারি মাসে আমি বিমান বাহিনীর লিগ্যাল কোরে আবেদন করেছিলাম এবং ৪টি ধাপ পেরিয়ে আইএসএসবি'র জন্য মনোনীত হয়েছিলাম। আইএসএসবি বেশ কঠিন একটা ধাপ এবং নিয়মিত অনুশীলন, পড়াশুনা ও প্রস্তুতি ছাড়া এখানে টিকে থাকা বেশ কষ্টসাধ্য এবং দু:সাধ্য। আর নিয়মিত অনুশীলনের জন্য দরকার ছিল কোচিং-এ ভর্তি হয়ে নিয়মিত ক্লাশ করা। আমি কোচিং-এ ভর্তি হতেও গিয়েছিলাম। কিন্তু লোরেন আপু কোচিং করতে নিষেধ করায় আমি ফার্মগেট থেকে ফিরে আসি। সেটাই ছিল আমার মস্ত বড় ভুল। আমার কোচিং করা উচিত ছিল। কোচিং করলে নিশ্চিতভাবেই আমি আইএসএসবি'র প্রথম দিনেই বাদ পড়তাম না।

আরেকটি ব্যাপার হল ২৪ মে ছিল বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আর ২৬ মে ছিল আইএসসিবি'র প্রথম দিন। যার কারণে এক ধরনের দ্বন্দ্বে পরে যাই যে, কোনটাকে বেশি গুরুত্ব দিবো! শেষ পর্যন্ত কোনোটিকেই গুরুত্ব দেয়া হয়নি; তবে বিসিএস'এর জন্য কিছুটা পড়াশুনা করেছি; কিন্তু আইএসএসবি'র জন্য মোটেই নয় বলা চলে। শুধু কয়েকটি মডেল টেস্ট দিয়েছিলাম--- এটুকুই।

যাই হোক, স্বাভাবিকভাবেই আইএসএসবি থেকে প্রথম দিনেই ফিরে আসায় পরিবারের সবাই বিশেষ করে আম্মু প্রচন্ড মন:ক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন! কারণ, সবার একটাই ভাবনার বিষয় ছিল যে, লোরেন আপুর হলে আমার কেন হবে না! অথচ তারা জানেই না যে, লোরেন আপু দীর্ঘদিন কোচিং করেছে যেটা সে রীতিমত আমার কাছে অস্বীকার করেছে কিংবা লুকিয়েছে। বরং সে আমাকে কোচিং করতে অনুৎসাহিত করেছে। আর লোরেন আপু যে দুষ্টু, সে খুব ভালো করেই জানে কোন্ অফিসারকে কিভাবে পটাতে হয়! এসব কৌশল তার খুব ভালো জানা! যাই হোক, এসব নিয়ে আমার মন্তব্য করা সমীচীন নয়। লোরেন আপুর উপর দোষ দেয়াটাও ঠিক না। আমারই অনুধাবন করা উচিত ছিল। বয়স তো কম হল না; এখনো অপরিপক্ব আচরণ করলে কিভাবে হবে!

এই ধাক্কার পর বিমান বাহিনীর কোনো খোঁজই রাখিনি। গত ৯ জুলাই অকস্মাৎ একটা ফোন আসে। কথাচ্ছলে জানতে পারি যে, ফোনটি করেছেন স্কয়াড্রন লিডার হারুন ভাই; তিনি আমাদের ঢাবির ২০তম ব্যাচের; বর্তমানে বিমান বাহিনীর লিগ্যাল কোরে কর্মরত আছেন। আরো জানতে পারি যে, নাইম ইতোমধ্যে অংশগ্রহণ করেছে এবং আইএসএসবি'র জন্য সেলেক্টেড হয়েছে। আমি খুবই অবাক হলাম যে, নাইম (ভার্সিটি ক্লাসমেট) তথ্যটি আমাকে জানালো না! যাই হোক, হারুণ ভাই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে বললেন এবং সকল সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন। নাইমের কাছ থেকে নাম্বার সংগ্রহ করতে বললেন। নাইমকে ফোন দিয়ে নাম্বার চাইলাম; নাইম আজ পর্যন্ত নাম্বারটি পাঠায়নি!

এদিকে ১১ জুলাই পরীক্ষার শেষ দিন। ইন্টারনেটে মোহনা ফর্ম ফিলাপ করে দিলো ৯ জুলাই রাত্রে। আজ সকালে পরীক্ষা দিতে গেলাম। আজ শেষ দিন হওয়ায় প্রচুর অংশগ্রহণকারী ছিল। হাজারখানেকের উপরে সম্ভবত। পরীক্ষা দিলাম সকাল ৯টায়। বেশ ভালো পরীক্ষা দিলাম। ১০০ এর মধ্যে ৮৮টির মত দাগালাম; কম হলেও ৭০/৮০টি হবে। বেশ খুশি মনেই পরীক্ষার ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। ১২টায় ফলাফল দেয়ার কথা।

অপেক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছে না! এদিকে রোজা! ভীষণ বিরক্ত! এভাবে পৌনে চারটা বেজে গেল! আমার সাথে ৩৫তম ব্যাচের গোলাম রাব্বানি ছিল। একত্রে অপেক্ষা করছিলাম। ৪টার দিকে রেজাল্ট দিতে শুরু করল। বেশ ঘুম পাচ্ছিল। সম্ভবত ৩/৪টি রোল নাম্বার মিস করেছি। রেজাল্ট দিচ্ছে; তাদের পরবর্তী পরীক্ষা দিতে ভিতরে ডাকছে! এভাবে করে ৬টা বেজে গেল! হঠাৎ শুনলাম রেজাল্ট দেয়া শেষ!! আমাদের লিগ্যাল কোরের কাউকে ডেকেছে বলে জানতে পারলাম না! মূলত এত বেশি পরীক্ষার্থী ছিল আর সবাই এত চিৎকার-চেঁচামেচি করতে ছিল যে, ওরা একটা পর্যায়ে ফলাফল ঘোষণা বাদ দিয়ে সবাইকে বাতিল করে দিলো!

একরাশ হতাশা নিয়ে বাসায় ফিরে এলাম! ভয়ংকর একটা দিন!! হাহ !!
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জলদস্যুরা কি ফেরেশতা যে ফিরে এসে তাদের এত গুণগান গাওয়া হচ্ছে?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭


জলদস্যুরা নামাজি, তাই তারা মুক্তিপণের টাকা ফেরত দিয়েছে? শিরোনাম দেখে এমনটা মনে হতেই পারে। কিন্তু আসল খবর যে সেটা না, তা ভেতরেই লেখা আছে; যার লিংক নিচে দেওয়া হলো।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×