somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শীঘ্রই আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে ইরান-

০৯ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ৯:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশ নেবে না। স্ট্রাইকারের ভূমিকায় থাকবে ইসরাইল। ইরাকের পারমানবিক প্রকল্প ধ্বংস করতে ইসরাইল কাল বিলম্ব না করলেও, ইরানের ক্ষেত্রে বেশ হিসাব নিকাশ করেই এগুতে হচ্ছে। বারাক ওবামার কাছে থেকে সবুজ সংকেত না পেলেও অন্তত নিষেধাজ্ঞা পায়নি। ওবামাও বুঝে গেছেন ইসরাইলের মাধ্যমে ইরান আক্রমনে তার লাভ অনেক। প্রস্তুতি প্রায় শেষ করে এনেছে উভয় রাষ্ট্রই।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরানের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ইরাক ও আফগানিস্তান থেকে হাত গুটিয়ে নিচ্ছে। ইরান নিয়ে তাদের মাথাব্যথা এখন আগের যে কোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর একজন সাবেক কর্মকর্তা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র কোনোভাবে ইরানকে পরমাণু শক্তিধর দেশ হতে দেবে না। এ জন্য ইসরাইলকে দিয়ে তারা ইরানে হামলা চালাতে পারে। (রয়টার্স-এর সংবাদ)।
মধ্যপ্রাচ্যে গণতন্ত্রের ঢেউ বয়ে গেলেও, তা যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের জন্যে কোন সুফল বয়ে আনেনি। মিশরের মোবারক সরকারের পতন ইসরাইলের জন্যে এক বিরাট আঘাত হিসাবেই বিবেচিত হচ্ছে।

নানা কারনেই যুক্তরাষ্ট্র এবার মনোযোগ দিয়েছে চিরশত্রু ইরানের দিকে। এরই মধ্যে মার্কিন শীর্ষস্থানীয় একজন কর্মকর্তা ইরানে সামরিক অভিযানের ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, ইরান এখন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে ইসরাইল বলেছে, 'পরমাণু অস্ত্র তৈরির আগেই ইরানকে থামাতে হবে।'
ইরান আক্রমনের প্রায় সব আয়োজনই ইতিমধ্যে সেরে ফেলা হয়েছে।
জাতিসংঘ পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে নতুন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করবে ইরানের বিরুদ্ধে। ইরানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রের মজুদ আছে— জাতিসংঘের নতুন প্রতিবেদনে তেমনটিই উল্লেখ করা হচ্ছে। আর ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর ইরানে অভিযানের ব্যাপারে জোর পাবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল। সহেযোগিতার হাত বাড়াবে বৃটেন, ফ্রান্স এবং উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ। সৌদি আরব তার আকাশ ব্যবহার করতে দেবে। মুসলিম বিশ্বে যাতে সৌদির ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন না হয় সে জন্যে যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি রাষ্ট্রদুতকে হত্যা প্রচেষ্টার অভিযোগ ইতিমধ্যেই আনা হয়েছে ইরানের বিরুদ্ধে। এটাকেই কাজে লাগাবে সৌদি আরবসহ উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ। ওয়াশিংটনে এক অনুষ্ঠানে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও আমাদের স্বার্থে এবং আমাদের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রের জন্য এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় হুমকি ইরান।' তিনি আক্রমনের ইংগিতও দেন। রয়টার্স জানায়, ওই অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে শর্ত ছিল মার্কিন ওই কর্মকর্তার নাম তাঁরা প্রকাশ করতে পারবেন না।
এদিকে ‘চ্যানেল টু নিউজ’ ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট শিমন পেরেজের কাছে জানতে চেয়েছিল, কূটনৈতিক তৎপরতার চেয়ে ইরানে সামরিক অভিযান চালানোর ব্যাপারে ঘটনাপ্রবাহ মোড় নিচ্ছে কি না? জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি তাই মনে করি এবং ইরানের হাতে খুব বেশি সময় নেই।’
এদিকে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনেও বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে ভাষণের সময় ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজি বলেন, ‘ইরানের সাম্প্রতিক আচরণ এবং তাদের পরমাণু অস্ত্র তৈরির অভিলাষ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। ইরান ইসরাইলের জন্য হুমকি হলে আমরা হাত-পা গুটিয়ে চুপচাপ বসে থাকব না।’

ইরান যদিও যে কোন ধরনের আগ্রাসনের জবাব দেয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে। কিন্তু ইরানের এ হুমকিতে কান না দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং মধ্যপ্রাচ্যে তাদের মিত্র ইসরাইল বারবারই বলছে, ইরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরি ঠেকাতে সামরিক অভিযানসহ সব ধরনের হামলার কথাই তারা মাথায় রেখেছে। দুয়েকটা ক্ষেপনাস্ত্র ছোড়া ব্যতীত ইরান সৌদি সীমান্ত পেরিয়ে ইসরাইলে কোন আক্রমন চালাতে সক্ষম হবে বলে মনে করেন না ইসরাইলী বিশেষজ্ঞরা।
এ আক্রমনে যুক্তরাষ্ট্রে ওবামার জনপ্রিয়তা অনেক তুঙ্গে উঠে যাবে। যুদ্ধ ব্যয়ের তেমন কোন বড় ঝুঁকি নেই। উপরন্তু আরব দেশগুলোর আকুন্ঠ সমর্থন পাওয়া যাবে। নিরাপদ হবে ইসরাইল। নিরাপদ হবে হরমুজ প্রণালী। পেন্টাগনের মুখপাত্র জর্জ লিটল বলেন, ‘আমরা অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে ইরানকে চাপে রাখার চেষ্টা করছি।’ তবে চীন ও রাশিয়া জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে ইরানে অবরোধ আরোপের বিপক্ষে। তারা বলেছে, ইরান যে পশ্চিমাদের ওপর হুমকি, তারা তা মনে করে না। তবে পরমাণু কর্মসূচির ব্যাপারে জাতিসংঘের সঙ্গে সহযোগিতার হাত বাড়াতে ইরানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরান বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম বড় তেল রপ্তানিকারক দেশ। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল হামলা চালালে হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দিতে পারে ইরান। আর তা যাতে না হয় সেজন্যে উপসাগরিয় সহযোগিতা পরিষদ কাজ করে যাবে বলে যুক্তরাষ্ট্রকে আশ্বস্ত করেছে।
পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, খুব শীঘ্রই আগ্রাসনের শিকার হতে যাচ্ছে ইরান।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×