somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফোন (চতুর্থ পর্ব)

০৬ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফোন (প্রথম পর্ব)
ফোন (দ্বিতীয় পর্ব)
ফোন (তৃতীয় পর্ব)
মতিন: কি করছিস?
সুমন: ভাবছি চুমকি ও জেরিনের কথা।
মতিন: ভাবনা-চিন্তা বাদ দে।
সুমন: বাদ দিতে পারছি না। ভাবছি চুমকিকে বলে দিব আমার ভুল হয়েছে। জেরিনকে ভাললাগে বলে তার কথায় রাজি হয়নি। আর যদি সে প্রথম বার ভাললাগার ভাব দেখাত তবে রাজি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কারন তখন কেউ ছিল না। তুই তো জানিস- জেরিন আমার সব কিছু বুঝে এবং আমার জন্য অনেক কিছু করে। তাকে ছাড়া অন্য কাউকে ভালবাসা সম্ভব না। সুন্দরী বা প্রচুর অর্থের মালিক হলেও তার মত কেউ হতে পারে না। সে আমার জগৎ আলোকিত করেছে। তার কাছে অনেক কিছু শিখেছি। আমাকে অনেক বিষয়ে সাহায্য করেছে এবং এখনও করছে।
মতিন: তবে ভালবাসি কথাটা বলে না কেন?
সুমন: আমি বুঝতে পারছিনা। এত কিছু বুঝতে পারে। কিন্তু সহজ কথাটা কেন বুঝতে পারে না। তুই যা ই বলিস চুমকির সাথে দেখা করব।
মতিন: তুই দেখি সত্যিই পাগল হয়েছিস। চুমকির সাথে তোর দেখা করা বা কথা বলা ঠিক হবেনা। যদি সে আবার তোর কাছে আসতে চায়। এমনি অনেক কষ্ট করে বাবা-মা বিয়ে দিতে রাজি করিয়েছে। তুই যদি আবার কথা বলতে চাস গোলমাল লেগে যেতে পারে।
সুমন: তবে কি করতে পারি?
মতিন: কিছু করার দরকার নাই। যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। যা হয়েছে তা ভালর জন্যই হয়েছে। পিছনের সব কিছু বাদ দে। পিছনের কথা টেনে কোন লাভ নেই। পিছনের দিকে তাকালে কাজের ঝটের মধ্যে পড়বি। সামনের দিকে তাকানোর সময় পাবি না। মনে করবি প্রত্যেকটি সময়ের মূল্য অনেক বেশি। যা করতে পারিসনি তা বাদ দে। সময়ের কাজ সময়ে কর। যা হয় তা ভালর জন্য হয় ভেবে সামনের দিকে এগিয়ে যা। দেখবে সব কিছুর সমাধান হয়েছে। আর যদি এভাবে থাকিস ভবিষ্যতে নিশ্চিত বিপদ আছে।
সুমন: চুমকি, জেরিন বা নিপা কারও দারকার নেই। একলা চলব।
মতিন: একলা চলা যায় না। তোকে বলছি এখন যা করার তা করতে।
সুমন: আমি তাই করছি। তোর কল করার জন্য পড়তে পারছি না। মোবাইল রাখ পরে কথা হবে।
মতিন: ভাল থাকিস। বাই।
সুমন: বাই।
মোবাইল রেখে দেওয়ার পর আবার ভাবতে শুরু করে। আমি কি ভুল করছি? না। ভুল করিনি। চুমকির সাথে প্রেম হলে এত দূর আসতে পারতাম না। চুমকির বয়স আর আমার বয়সের মধ্যে পার্থক্য মাত্র এক বছরের। তার সাথে প্রেম করলে এত দিনে বিয়ে করতে হত। কাস করার বদলে শ্বশুর বাড়িতে আপ ডাউন করতে হত। আর বিয়ে না করলে দেখা করার ঝামেলায় অস্থির হতে হত। কারন পুরো দুইটা জেলা পার হয়ে তাদের বাড়ি। বাসের সংখ্যা কম। সময় নিয়ে ট্রেন ধরতে হয়। রিক্সা করে শেষ রাস্তাটুকু যেতে হয়। প্রেম ভালবাসায় সময় এর হিসাব করে চলে না। এত দিনে কি অবস্থা হত এক মাত্র সৃষ্টিকর্তাই জানেন। যা হয়নি তা ভালর জন্যই হয়নি।
চুমকির সাথে প্রেম হয়ে যেত যদি প্রথম দুই বছরের মধ্যে ভাললাগার কথা বলত। কারন ভালবাসার টান তখন সামান্য হলেও হৃদয়ে ছিল। এখনও মনে পড়ে সে যখন পাশে এসে বসছিল- তার হাত-মুখ কেমন ছিল। অথচ আত্মীয় থাকায় প্রেম ভালবাসার অনুভুতি জাগেনি। জেরিনকে দেখেও প্রেম ভালবাসার অনুভুতি জাগেনি। কিন্তু তাকে দেখলে কেন ভাল লাগে? তখন সেই উত্তর জানতাম না। বয়স বাড়ার সাথে সাথে ভাল লাগার মাত্রা বাড়তে থাকে। তার কাছে গেলে ভাল লাগে। তার দলে খেলতে না পারলে কষ্ট লাগে। প্রতিদিন দেখতে না পারলেও অন্তত সপ্তাহে এক দিন না দেখলে অনেক কষ্ট হত। এমন ভাল লাগা থেকে বুঝতে পারি তাকে আমার খুবই প্রয়োজন। সে আমার প্রয়োজন এবং চাওয়া বুঝতে পারে। সহানুভুতির দিক থেকেও যথেষ্ট বুঝে। তাকে ছেড়ে চুমকির সাথে প্রেম করা সম্ভব ছিল না। তার এবং চুমকির মাঝে একটি বিষয়ে বিরাট পাথক্য হল- সে চাওয়ার েেত্র যথেষ্ট সংযম এবং চুমকি সব কিছু মুহূর্তের মধ্যে চায়। বুঝিনা চুমকি আর জেরিনের মধ্যে ভালবাসার পার্থক্য। অবশ্য চুমকির অধ্যায় শেষ। যে আছে তাকেই চাই।
না, আর ভাবলে চলবেনা। মাথাটা বিষন ঘুরাচ্ছে। টেবিলের উপর থেকে বইটা নিয়ে কাত হয়ে শুয়ে পড়ে। আমার ল্েয পৌছতে হবে। যে কোন প্রকারে হোক। বই নিয়ে পড়তে পড়তে কখন যে ঘুমিয়ে যায় টের পায় নি।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=নিছক স্বপ্ন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৮



©কাজী ফাতেমা ছবি
তারপর তুমি আমি ঘুম থেকে জেগে উঠব
চোখ খুলে স্মিত হাসি তোমার ঠোঁটে
তুমি ভুলেই যাবে পিছনে ফেলে আসা সব গল্প,
সাদা পথে হেঁটে যাব আমরা কত সভ্যতা পিছনে ফেলে
কত সহজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একদম চুপ. দেশে আওয়ামী উন্নয়ন হচ্ছে তো?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৯



টাকার দাম কমবে যতো ততোই এটিএম বুথে গ্রাহকরা বেশি টাকা তোলার লিমিট পাবে।
এরপর দেখা যাবে দু তিন জন গ্রাহক‍কেই চাহিদা মতো টাকা দিতে গেলে এটিএম খালি। সকলেই লাখ টাকা তুলবে।
তখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×