somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আসুন একটি গল্প,একটি কবিতা,একটি গান কিংবা একটি সিনেমায় স্মরণ করি পূর্বসূরিদের।সম্মান জানাই তাদের আত্মত্যাগ কে।গভীর আবেগে ধারণ করি মুক্তির চেতনা।ইতিহাস জেনে শপথ করি আর কোন হারামি যদি ৩০ লাখ রে ৩ লাখ কইয়া কুতর্ক করে তার যেন দাত ভাঙা জবাব দেবার পারি।

২৬ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গল্প
“অনিল বাগচির এক দিন”

আমার প্রায়ই মনে হোতো আমি এই গল্পের অনিল।ভীতু একদম ভীতু,অন্ধকারের ভয়,মৃত্যু ভয়,ভুতের ভয় সর্বোপরি ভয়ের ভয় এমনি হাজারটা ভয় বাসা গেড়েছিল সেই শৈশবে।মনে আছে প্রথম এ গল্প পড়ি বেশ কম বয়সে।বড় ভাই কলেজ ভর্তির জন্য ঢাকায়।সুযোগ পেয়ে আমি পড়ে ফেললাম বেশ কিছু বড়দের বই (দারুচিনি দ্বীপ,হিমুর দ্বিতীয় প্রহর,মহাকাশের মহাত্রাস ইত্যাদি)।তার সাথেই পড়ে ফেললাম বইটি।আমি আব্বা,আম্মার মুখে মুক্তিযুদ্ধের বীরত্ব আর সাহসিকতা শুনে বড় হওয়া ছেলে।বইটা পড়ে হঠাৎ করে টের পেলাম যুদ্ধের ভয়।বড়ভাই ঢাকায় তাই ঘুমুতে হবে একা প্রায় প্রতি রাতেই আম্মাকে ডাকতে হয়।ভূত প্রেতের ভয়ের সাথে যোগ হয়েছে পাকি সেনাদের গোঁফওয়ালা চেহারা।মাঝরাতে চিৎকার করে আম্মাকে ডাকি,আম্মার কোলে মাথা রেখে বীরের মতো পাকি সেনাদের বুড়ো আঙ্গুল দেখাতে দেখাতে ঘুমিয়ে পরি।যদিও গল্পের অনিল বাগচির মাকে ডাকতে হইনি,সে এমনিতেই জয় করেছিল তার ভয়গুলকে।গল্পের মোক্তার পাগলী মনে করিয়ে দেয় আমাকে গুরুদাশির কথা।যে বিরঙ্গনা পাগলী নগ্ন দেহে ঘুরে বেরিয়েছে পথে পথে।লজ্জা লাগে গোলাম আযমের কার্জন হলে শান্তি কমিটি কে সহযোগিতা করার উদাত্ত আহ্বান কিংবা আওয়ামিলিগার সোলায়মানের কঠিন পাকিপন্থি হোয়ে যাওয়া।এসবের পরও অনিলের দৃরতা আমাকে শান্তি দেয়।দেশ স্বাধীন হলে কান্নার আশা দেয়।

গান
গান ”ও আমার দেশের মাটি”

একবার ভাবুনতো ৪২ বছর আগে কোন এক গভীর রাতে স্বাধীন বাংলা বেতার থেকে ভেসে এলো গানটি।অন্ধকার ফুরে কান পেতে আছে কিছু যোদ্ধা গানটি শুনবে বলে।গানটি হয়ত তাদের গোপন সংকেত কিংবা নিছক অনুপ্রেরণা।বহু দিন ধরে হয়ত ঘুমান হইনি বিছানয়,ঠিকমত খাবার জোটেনি তা নিয়ে অনুযোগ নেই এই গানটিই তাদের হাজার গ্যালন ফুয়েলের শক্তি দিচ্ছে।একটু পরেই অপারেশন,হয়ত এ যাত্রায় আর ফেরা হবে না।লাশের থাকবেনা কোন ঠিকুজী,কবর শ্মশান তো দূরে থাক যেতে হবে কুকুর শেয়ালের পেটে।৪২ বছর আগের আইপড,এমপিথ্রি বিহিন দিনে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গলায় এই গানটি হোতো তাদের অনুপ্রেরণার উৎস।৪২ বছর আগের নিভে যাওয়া জলজলে চোখ গুলোর স্মরণে গানটি শুনি।
লিংকঃ http://soundcloud.com/rahatmithun/mowq0vdmwiqc

কবিতা
বাংলার মুখ আমি
জীবনানন্দ দাশ

বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ
খুঁজিতে যাই না আর : অন্ধকারে জেগে উঠে ডুমুরের গাছে
চেয়ে দেখি ছাতার মতন বড়ো পাতাটির নিচে বসে আছে
ভোরের দোয়েলপাখি — চারিদিকে চেয়ে দেখি পল্লবের স্তূপ
জাম — বট — কাঠালের — হিজলের — অশখের করে আছে চুপ;
ফণীমনসার ঝোপে শটিবনে তাহাদের ছায়া পড়িয়াছে;
মধুকর ডিঙা থেকে না জানি সে কবে চাঁদ চম্পার কাছে
এমনই হিজল — বট — তমালের নীল ছায়া বাংলার অপরূপ রূপ
দেখেছিল; বেহুলার একদিন গাঙুড়ের জলে ভেলা নিয়ে –
কৃষ্ণা দ্বাদশীর জোৎস্না যখন মরিয়া গেছে নদীর চরায় –
সোনালি ধানের পাশে অসংখ্য অশ্বত্থ বট দেখেছিল, হায়,
শ্যামার নরম গান শুনেছিলো — একদিন অমরায় গিয়ে
ছিন্ন খঞ্জনার মতো যখন সে নেচেছিলো ইন্দ্রের সভায়
বাংলার নদী মাঠ ভাঁটফুল ঘুঙুরের মতো তার কেঁদেছিলো পায়।

চলচিত্র
“আগুনের পরশমনি”

মানুষের অমর হওয়ার জন্য হাজারটা সৃষ্টির দরকার নাই একটাই যথেষ্ট।হুমায়নের গুনগান করার কিছু নাই তাই এখানে।পুরো সিনেমাটিতে আয়রনির ছড়াছড়ি।চায়ের দোকানদারের থুথু দিয়ে জিন্নার ছবি মোছা।ভিক্ষারির দেশের অবস্থা নিয়ে সংলাপ কিংবা আবুল হায়াতের জিন্নার ছবিতে রক্ত লেগে যাওয়া,নিজের সন্তানের সামনে লজ্জা পাওয়া আরও কত কি।চাঁদতারা খচিত ব্যাগে যখন কাথা দিয়া মোড়ানো স্টেনগান বের করা হয় তখন আমার মনে পরে যায় আমার এসএলআর ক্যামেরাটার কথা,ঠিক এমনইভাবে যত্ন করে রাখতাম।বদি যখন পাওয়ার হাউস উড়িয়ে দিতে যায় তখন বাঙালি কর্মকর্তা কে চর মারে তাও দ্যাখার মত এক দৃশ্য।দুঃখ হয় যখন দেখি বদির রক্ত কুকুর চেটে খায়।শেষে আমরা সবাই বশে থাকি অপেক্ষায়,ভোরের অপেক্ষায়।ভোর কি আদৌ হয়েছে?

বিঃদ্রঃসিনেমাটিতে একটি ভুল,পাকি অফিসার যে হিন্দি গানের বাঁশি বাজাচ্ছিলেন ওই গান ১৯৯৫ সালের,ভুলটা হয়ত ইচ্ছাকৃত।আর বাস্তবে বদি নামের এক গেরিলা যোদ্ধা ছিলেন,তিনি ছিলেন ক্রাক প্লাটুনের অন্যতম সদস্য।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজত্ব আল্লাহ দিলে রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম আমাদেরকে করতে হবে কেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:০৬



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×