:!>
:!>
পিচ্চি আমি
দুষ্টু গরুর,
হাম্বা ডাকে
ভয় পেয়ে যাই!
বিড়াল বলে
মিউ মিউ,
বিড়ালের চেয়ে
আছে কি আপন কেউ?
ওতো গরু
তাইতে এতো
ক্ষনে ক্ষনে
হাম্বা ডাকে!
ছাগল বলে
ম্যা ম্যা করা,
স্বাস্থের জন্যে নাকি
বড়ই উপকারী!
আমার দাদার বাড়িতে গরু পালা হতো, আর সেই গরুগুলোর শিং দেখে আমি যে কতদিন ভয়ে ভয়ে কাটিয়েছি।যেদিকে গরু থাকতো, সেদিকে আমি ভুলেও যেতাম না।একদিন আমি একা একা পুকুর পারে গিয়ে দেখি একটা গরু ঘাস খাচ্ছে, আর গরুটার গলায় কোনো রশি নেই!আমার গায়ে লাল জামা তার উপর।আমি আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ দৌড় দিতে গেলাম, কিন্তু আমার কপাল খারাপ।পড়ে গেলাম, আর সাথে সাথে দেখলাম গরুটা আমার দিকে আসছে। আমি পায়ে ব্যাথা পেলাম, তাই উঠতে পারছিলাম না।আশে পাশেও কেউ ছিলনা, আর তখন সবাই কাজে ব্যস্ত, না হয় ঘুমাচ্ছে।
আমি চিৎকারও দিতে পারলাম না, আমার কন্ঠ অবশ হয়ে গিয়েছিলো।
কিন্তু না, গরুটা আমাকে কিছুই করল না, আমি সবসময় ভাবতাম গরুরা লাল জামা দেখলে রেগে যায়।কিন্তু সেটা ভুল।গরুটা ঠিক গরু ছিলনা, ওটা একটা বাচ্চা গরু ছিল।আর ওটাই আমাদের সবচেয়ে শান্ত বাছুর ছিল।আর গরুটা আমার পাশে এসে ঘাস খাচ্ছিল, তার পরপরই আমার চাচাতো ভাই এসে আমাকে এভাবে দেখতে পায়।ও প্রথমে ভয় পেয়েগিয়েছিল, ওরা সবাই জানত আমি গরু ভয় পাই, কিন্তু অবাক হয়েছিলো আমার কোন চিৎকার শুনা যায়নি কেন।আমি একটু জোরেই চিৎকার দেই, সেটা বাড়ির ঐপ্রান্ত থেকেও শোনা যেত দিলে।
এরপর থেকে আমি আর তেমন গরু ভয় পাই না, কিন্তু তার বদলে ঐ বাছুরটার উপর চড়ে, অনেকটা ঘোড়ায় চড়ার মত চড়তাম।আর বাছুরটাও ভালোই ছিল, ওটা আমি আসলে অন্যদের ফেলেদিত(অন্যরাও বাছুরটার উপর চড়া শুরু করেছিল, বেচারা বাছুর)।
ছাগল কিছুটা অদ্ভুত প্রানী, আমার মতে।ছোটবেলায় অনেকের ছাগল পালা দেখে আমিও চাইতাম ছাগল পালতে।কিন্তু আমিতো গ্রামে যেতাম কিছুদিনের জন্য, তাই সেটা কখনই হয়নি।একবার আমাদের এক আত্বীয় ছাগল এনে দিয়েছিল।কত খুশিযে হয়েছিলাম।কিন্তু পরে জানলাম ওটাকে কোরবানী করা হবে।আমি অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম।আমার এলার্জি আছে বলে আমাকে গরুর মাংস খাওয়াতো না।আমার এলার্জি কিছুটা আজব ধরনের, এমনিতে কোন সমস্যা করে না, কিন্তু জ্বর আসলেই হয়েছে, আর বলা লাগবে না।আর সেবার আমার জ্বর ছিল, তাই একটা ছাগলও কোরবানী দেয়া হয়েছিল গরুর পাশাপাশি।আমি ছাগলাটাকে এত পাতা খাইয়েছিলাম যে ওটা একদিনে এক বছর বেশি বড় হয়েগিয়েছিলো মনে হচ্ছিল।যাইহোক, আমি কিন্তু আবার ছাগল পেয়েছিলাম পালতে, তাই আমি খুশি ছিলাম।
বিড়াল কখনো পালিনি, পালার ইচ্ছাও কোনকালে ছিল না।কিন্তু বাংলাদেশ থেকে আসার আগে দেখলাম একটা বাচ্চা বিড়াল গ্রামের বাড়ির আশে পাশে ঘুরছে।বিড়ালরা এক দিকে বেশি ডিমান্ড দেখানো প্রানী।বিড়ালটাকে কয়েকদিন পালতে চাইলাম, পাললাম।প্রথম দিকে বাচ্চা বিড়ালটাকে কি খেতে দেব বুঝলাম না, আমার মা পরে দিত খেতে।একদিন চিপস খেতে গিয়ে দেখি বিড়ালটা পাশে দাড়িয়ে আছে, আমিও দিলাম বিড়ালটাকে কিছু চিপস।বেশ পছন্দ করেছে দেখলাম চিপস বিড়ালটা।এর পর চকলেট থেকে শুরু করে কোকও দিয়েছিলাম বিড়ালটাকে খেতে, বিড়ালটা দেখলাম এসবই বেশি পছন্দ করে!আর বিড়ালটা যদি আমরা চেয়ার থেকে সরে যেতাম, বসে যেত চেয়ারে।
যাই হোক, এর পর দেশ ছেড়ে আসলাম, এক অজানা পৃথিবীতে!
ছোটবেলায় মাকে ছেড়ে থাকতাম না, একবার থেকেছিলাম, মা খুব অসুস্থ ছিল বলে ঢাকায় থেকে গিয়েছিল, তবুও আমি গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম, কেনোনা গ্রামের বাড়ির ঈদ ছাড়া হয়না আমার, মনে হয় কি যেনো নেই আমার চারপাশে।ঐ সময়গুলোকে ভেবে খুব কষ্ট হচ্ছে, আবার যদি পারতাম আমার বাড়িতে ফিরে যেতে।আমার বাড়ি, আমার পুকুর, আমার চেনা মানুষগুলোর ঘেরা এক ঈদ।
কাল আমাদের এখানে ঈদ।রবিবার ঈদ, তাই এবার ঈদের জন্য আর ক্লাস মিস করতে হলনা। ঈদের দিনে কার ভালো লাগে পড়ালেখা? আর ফাকি দেয়ার সুযোগ হাতছাড়া করাতো আর যায়না!
ঈদের দিন একটু হাসি ফুটান কারো মুখে!
সবাইকে ''ঈদ মোবারক''
''ভালো থাকুন''
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৩৪