somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সিএনজি(পুলক হাসান-২৬।০৩।১৩)

২৬ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পড়ন্ত বিকেল।ক্যাফেটেরিয়া থেকে বের হয়ে বাসার পথে রওনা হল শুভ।

এই যে সিএনজি যাবেন?
কই যাবেন মামা?
মিরপুর।
চলেন।১৫০ টাকা লাগবে।
ক্যান মামা?১০০ টাকার ভাড়া ক্যান তুমি ১৫০ টাকা নিবা?
গ্যালে চলেন নাইলে খাড়ায়ে থাকেন।
আচ্ছা চলেন।
মামা গেট টা লাগায়ে দিয়েন।
আচ্ছা মামা এই গেট টা ক্যান?
এই গেট নিরাপত্তার জন্য।কেউ যেন কিছু না নিবার পারে।
ও।

বাসায় সামনে নেমে ভাড়া দিয়ে শুভ বাসায় চলে গেল।হাত মুখ ধুয়ে বসার ঘরে বসল।শুভর মা শুভ কে জিজ্ঞেস করল,কিরে তোর এত দেরী হল ক্যান?
আচ্ছা মা ভার্সিটি থেকে আসতে কি দেরী হতে পারে না?ক্যান তুমি প্রতিদিন জানতে চাও?
দেরী হতে পারে বাট তার জন্য কারণ থাকে।কারণটা বল।
খিদা লাগছিল অনেক।খাইতে খাইতে লেইট হয়ে গ্যাছে।

১০টার দিকে আসিফ ফোন দিল শুভ কে।
কিরে শুভ কই তুই?যাবি না?
কই যামু?
ক্যান সাইদের বাসায়।আজকে ওর বার্থ ডে ব্যাটা।সারা রাত পার্টি হবে।
দোস্ত বাসায় প্রবলেম,যাইতে পারুম না।
কি কইলি তুই এইটা!
কি করুম?রাতে বাইরে থাকার পার্মিশন নাই।
আরে ম্যানেজ কর।তুই বলে তো দেখবি নাকি?
ওকে গিভ মি টেন মিনিটস।
শুভ জানে ওকে পার্মিশন দেয়া হবে না।কারণ রাতে খারাপ ছেলেরা বাইরে থাকে।তাই মিথ্যার আশ্রয় নিল।বাবা কে বলল,ওর এক ফ্রেন্ডের বড় বোনের বিয়ে।অবশেষে রাজি করানো গেল। সারা রাত অনেক মজা করল বন্ধুরা মিলে।সকালে ঘুম থেকে
উঠে সবাই নাস্তা করছে।হঠাৎ আসিফ বলল,
ওই দোস্ত ২৬ মার্চ তো সরকারি বন্ধ।ওইদিন কি করবি?
শুভ বলল,মুভি দেখা যায়।চল মুভি দেখি।
হুম সেইটাই ভালো হয়।তিইলে এইটাই ফাইনাল।অবশেষে সাইদ বলল।

দেখতে দেখতে ২৬ তারিখ চলে আসল।শুভরা সবাই মিলে একটা সিএনজি নিয়ে রওনা দিল মিরপুর থেকে।গন্তব্য পান্থপথ।সিএনজি তে ওঠার পরে বয়স্ক ড্রাইভার বললো,গেট টা লাগিয়ে দিয়েন।

শুভ ওর বন্ধুদের জিজ্ঞেস করল,''বলতো এই গেট টা ক্যান?"
আসিফ বলল,"ক্যান আবার!গাড়ির গেট আছে তাই সিএনজির ও গেট আছে।
"বেকুব!এইটা ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে সেফটির জন্য।" শুভ বলল।

বিজয় স্মরণীতে জ্যাম।সিএনজি ড্রাইভার বিরক্ত।আসিফ বলল,"এত বিরক্ত ক্যান?আজকে স্বাধীনতা দিবস।একটু কষ্ট করেন।প্যারেডের জন্য জ্যাম।ড্রাইভার একটু হাসল।
পান্থপথ নেমে ভাড়া দিয়ে শুভরা চলে যাচ্ছিল এমন সময় সিএনজি ড্রাইভার ডাক দিল,
"বাবারা তোমাদের একটা প্রশ্ন করি,তোমরা যে বললা প্যারেডের জন্য জ্যাম এই প্যারেড ক্যানো হয়?"
শুভ বলল,"এটা তো স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করার জন্য।বাংলাদেশের জন্মদিন।মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা ও জানানো হয়।"
"শোন বাবা,আমি মূর্খ মানুষ,দুইটা কথা বলি।তোমরা যে সিএনজি তে চড়,ভয়ে গেট লাগিয়ে চড়।তোমরা যখন বাসা থেকে বের হয় তোমাদের বাবা মারা টেনশন করে হার্টের রোগী হয়ে যান।তোমাদের বাসা থেকে বের হতে দিতে চান না।আমার এক ভাই,মুক্তিযোদ্ধা,রাতে ঘুমান না,জানের ভয়ে।তোমাদের মত ছাত্ররা ঘর থেকে বের হলে সে জীবিত ফিরতে পারবে নাকি নিশ্চয়তা নেই।দেশের ১৪% মানুষ জানে না,তারা একবেলা খাবার পর অন্য বেলা কিভাবে খাবেন।বিজয় স্মরণীতে যাও,মিরপুর ১০ এ যাও,ছোট ছোট বাচ্চারা তোমার কাছে টাকার জন্য হাত পাতবে।কেন জান?কারণ এই টাকা দিয়ে চাল কিনবে আর ছোটো ভাইবোনদের পড়াবে।
আচ্ছা আমাকে বল তো,এই স্বাধীনতা উদযাপন ক্যান?তোমরা নতুন প্রজন্ম,তোমাদের একটা কথা বলি,মনের দিক থেকে স্বাধীন না হলে তোমার এই উদযাপনের কোনো দাম নাই।"

সিএনজি টান দিয়ে চলে গেল।শুভ,আসিফ আর সাইদ নিস্তব্ধ হয়ে রইল কিছুক্ষন।একজন সিএনজি ড্রাইভার এত কিছু বলল!

আসিফ,সাইদ ঘুরে চলে যাচ্ছিল।বিকট শব্দ।হঠাৎ শুভর চিৎকার,
"শিট ম্যান!এইটা কি হইল?"

ড্রাইভার স্পটডেড।আসিফ,শুভ,সাইদ রাস্তার পাশে দুমড়ে মুচড়ে পড়ে থাকা সিএনজির পেছন দিকে তাকিয়ে আছে,সবুজ সিএনজি তে লাল রং দিয়ে লেখা,

"মুক্তিযোদ্ধা চালিত সিএনজি।"
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:৫৩
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৭



আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×