somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রাচ্যের ‘প্লে-বয়’দের গল্প!:P:P:P:P:P:P:P:PB-);););)

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১১ রাত ৯:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হঠাৎ করেই ভারতীয়দের হাতে অনেক টাকা চলে এসেছে। এই টাকা তারা কোথায় খরচ করবে—তা ভেবে পাচ্ছে না। বিশাল অর্থনীতির এই দেশ। ব্যবসা করলেই কোটিপতি। নিজেদের পরিবার-পরিজন সামলিয়েও হাতে থাকে অনেক কাঁচা টাকা। সেই টাকা এখন তারা খরচ করছে জুয়ায়। জুয়া এখনো সামাজিকভাবে ভারতে অগ্রহণযোগ্য ব্যাপার হলেও এই জুয়ায় ভারতীয়রা লগ্নি করছে কোটি কোটি ডলার। বিখ্যাত ভারতীয় ইংরেজি সাময়িকী ইন্ডিয়া টুডের অক্টোবর সংখ্যায় ভারতীয়দের হঠাত্ পেয়ে বসা জুয়ার নেশা নিয়ে ছাপা হয়েছে দারুণ রোমাঞ্চকর এক প্রতিবেদন। এ প্রতিবেদনটি পড়লে অবাক হতে হয়, আশ্চর্য হতে হয়, যে দেশ এখনো তার সব নাগরিকের জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারেনি, যে দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে যেখানে এখনো ক্ষুধা মূল সমস্যা, যারা নিশ্চিত করতে পারেনি নাগরিকের স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন সুবিধা, সে দেশের নাগরিকেরা জুয়া খেলে কোটি কোটি ডলার খরচ করছে—ব্যাপারটি অবাক হওয়ার মতোই।
ভারতে জুয়া আইনসিদ্ধ কেবল দুটি স্থানে। গোয়া ও সিকিম। এ দুই জায়গা ছাড়া পুরো ভারতে জুয়া নিয়ন্ত্রণে রয়েছে মোটামুটি কঠোর আইন। ১৮৬৭ সালের পাবলিক গ্যাম্বলিং অ্যাক্টের অধীনে ভারতে জুয়ার সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছরের কারাদণ্ড। তার পরও অবশ্য জুয়াটা এ দেশে ‘আন্ডারগ্রাউন্ড কার্যক্রম’ হিসেবে বেশ জোরের সঙ্গেই চালু আছে।
ইন্ডিয়া টুডের এই বিশেষ প্রতিবেদনে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যাঁরা ভারতে আমদানি-রপ্তানি ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত। প্রতিবেদনে হয়তো সেসব ব্যবসায়ীর আসল নাম উল্লেখ করা হয়নি, কিন্তু তাঁদের নিয়ে উল্লিখিত ঘটনাগুলো সত্যি। এ প্রতিবেদনে ব্যবসায়ী ছাড়াও করপোরেট পেশায় নিয়োজিত কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। যাঁরা প্রায়ই সিঙ্গাপুর, হংকং কিংবা ম্যাকাওয়ের বিভিন্ন ক্যাসিনোতে নিয়ম করে যান। এবং প্রচুর টাকা উড়িয়ে আসেন। জুয়ার টেবিলে এঁদের যেমন আর্থিক ক্ষতির ব্যাপার আছে, ঠিক তেমনি রয়েছে বিপুল অঙ্কের অর্থপ্রাপ্তির ঘটনা।
বিরন মেহরা এমনই এক ব্যক্তিত্বের নাম। যিনি ভারতের একটি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের বড় পদে কর্মরত। তিনি হংকংয়ের বিভিন্ন ক্যাসিনোতে লগ্নি করেছেন প্রায় ৫০ লাখ রুপির মতো। পাঁচ লাখ রুপি তিনি হেরেছেন। লাভ বাকি ৪৫ লাখ। এটা বর্তমানে ভারতীয় পয়সা ওয়ালাদের জুয়া-বাণিজ্যে নিতান্তই সিন্ধুতে বিন্দু বলা যায়।
দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রতিরাতে অনেক ভারতীয় হংকং, সিঙ্গাপুর কিংবা ম্যাকাওয়ের উদ্দেশে উড়ে যান, এঁরা সবাই জুয়া খেলতে যান। একটা সময় ছিল যখন কোথাও বেড়াতে গিয়ে অনেকেই সখে জুয়ায় মেতে উঠতেন। কিন্তু সময় পাল্টে গেছে। পরিবর্তিত অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে ভারতীয়রা এখন কেবল জুয়ার উদ্দেশ্য নিয়েই বিদেশে যাচ্ছেন। প্রতিনিয়ত পূর্ব এশিয়ার এসব জুয়া স্পটগুলোতে ভারতীয় নাগরিকদের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। গড়ে একেকজন ভারতীয় জুয়াড়ি এসব জায়গায় ১০ হাজার ডলার করে লগ্নি করেন।
ম্যাকাওয়ে ভারতীয় জুয়াড়ি যেখানে ২০০২ সালে ছিল মাত্র পাঁচ হাজার। এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দেড় লাখেরও বেশি। সিঙ্গাপুরে জুয়া খেলতে গিয়ে তো অনেকে পেয়েছেন সিঙ্গাপুর সরকারের কদর আর সমাদর। পাওয়ান বাগরি নামের একজন কলকাতাকেন্দ্রিক ব্যবসায়ীকে সিঙ্গাপুরে গিয়ে খরচ করার জন্য দেওয়া হয়েছে সিঙ্গাপুর সরকারের বিশেষ সম্মাননা। তিনি হয়েছেন, সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে বৃহত্ ‘খরুচে’।
এদিকে জুয়ার প্রতি ভারতীয় নাগরিকদের আগ্রহ বেড়ে যাওয়ায় আশার আলো দেখছে দক্ষিণ এশিয়ার ট্যুরিস্ট স্পট হিসেবে খ্যাত শ্রীলঙ্কা। খুব তাড়াতাড়িই সে দেশের সরকার জুয়াকে আইনি স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, শ্রীলঙ্কা সরকারের এ সিদ্ধান্ত শুধু ভারতীয় জুয়াড়িদের আকৃষ্ট করার জন্য। শ্রীলঙ্কা চাচ্ছে, যদি সিঙ্গাপুর হংকংয়ে গিয়ে অনেক বেশি খরচ করে ভারতীয়রা জুয়া খেলতে যেতে পারেন, তাহলে অপেক্ষাকৃত কম খরচে তাঁরা কেন শ্রীলঙ্কা যাবেন না। ভারতীয় জুয়াড়িরা এ মুহূর্তে শ্রীলঙ্কার মন্দা পর্যটন ব্যবসায়ের সঞ্জীবনী সুধা।
আগেই বলা হয়েছে ভারতে সিকিম ও গোয়ায় জুয়া আইনগতভাবে সিদ্ধ। গোয়ায় রয়েছে ২৪টি ক্যাসিনো। এই ক্যাসিনোগুলোতেও ভারতীয়রা সমানভাবে টাকা লগ্নি করে যাচ্ছে। গত দুই বছরে গোয়ার ক্যাসিনোগুলো ভারত সরকারকে রাজস্ব দিয়েছে ২৫০ কোটি রুপি। সিকিমেও ক্যাসিনো ব্যবসা প্রতিনিয়ত ফুলে-ফেঁপে উঠছে। সিকিম এখন উঠে-পড়ে লেগেছে রাজনৈতিক সমস্যায় জর্জরিত নেপালের পর্যটন ব্যবসায়ে ভাগ বসাতে। খুব তাড়াতাড়িই এখানে একটি বিমানবন্দর তৈরি করছে ভারত সরকার।
গোয়ার ক্যাসিনো ব্যবসার প্রবৃদ্ধি গত তিন বছরে ৫০০ শতাংশ। এটি সেই সিঙ্গাপুর ও ম্যাকাওয়ের চেয়ে কি কোনো অংশে কম!
আয়তনের দিক দিয়ে এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম এ দেশে তাহলে পরিবর্তিত সংস্কৃতির হাওয়া লেগে গেছে!
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রান্ত নিথর দেহে প্রশান্তির আখ্যান..... (উৎসর্গঃ বয়োজ্যেষ্ঠ ব্লগারদের)

লিখেছেন স্বপ্নবাজ সৌরভ, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৪২



কদিন আমিও হাঁপাতে হাঁপাতে
কুকুরের মত জিহবা বের করে বসবো
শুকনো পুকুর ধারের পাতাঝরা জামগাছের নিচে
সুশীতলতা আর পানির আশায়।

একদিন অদ্ভুত নিয়মের ফাঁদে নেতিয়ে পড়বে
আমার শ্রান্ত শরীর , ধীরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাপ, ইদুর ও প্রণোদনার গল্প

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

বৃটিশ আমলের ঘটনা। দিল্লীতে একবার ব্যাপকভাবে গোখরা সাপের উৎপাত বেড়ে যায়। বৃটিশরা বিষধর এই সাপকে খুব ভয় পেতো। তখনকার দিনে চিকিৎসা ছিলনা। কামড়ালেই নির্ঘাৎ মৃত্যূ। বৃটিশ সরকার এই বিষধর সাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×