গল্প/ ডায়েরির ছেঁড়া পাতা (অবাস্তব কাহিনী- এমনটা এখন কেউ করে না!!!)
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
- আহারে...
- পোলাডা কত ভাল ছিল!
- ছাত্র হিসেবেও ছিল অসাধারণ। ইন্টারে স্ট্যান্ড করেছিল। আহারে...
- আর কয়টা দিন পরই তো পাশ করত।
- কিন্তু ও ...
বাড়িময় লোকজন। বাতাসে আগরবাতির গন্ধ। উঠোনে এলাকার মুরুব্বিরা চেয়ার পেতে বসে আছে। রাস্তায় পার্ক করা পুলিশের জিপে বসে হাবিলদারটা আপনমনে বিড়ি টানছে। এলাকার মসজিদ থেকে এই মাত্র খাটিয়াটা আনা হয়েছে। কাফনের কাপড় আনতে লোক পাঠানো হয়েছে। বাড়ির ভেতর থেকে উচ্চস্বরে কান্নার শব্দ ভেসে আসছে-বাবারে তুই আমাদের এভাবে ছেড়ে গেলি...আমরা এখন কি নিয়ে বাঁচব সোনা...!
- আপনারা কি শিউর যে এটা সুইসাইড?
- পোস্টমর্টেম করলেই বোঝা যাবে।
- আর পোস্টমর্টেম কইরাই বা কি হইব? ওরে তো আর ফেরত পাওয়া যাইবে না।
ঠিকই তো! শামীমকে তো আমরা আর কখনোই দেখব না। কি লাভ পোস্টমর্টেমে!
// দুই //
শামীম আমার খুব ভাল বন্ধু ছিল। বলতে গেলে সারাক্ষণই আমরা একসাথে থাকতাম। লেখাপড়া, ঘোরাফেরা-কখনো আলাদাভাবে করেছি-এমনটা আমার মনে পড়ে না। আমরা আমাদের ফিলিংসগুলো শেয়ার করতাম। জানতাম ওর সাথে একটা মেয়ের অ্যাফেয়ার আছে। শামীম আমাকে প্রায়ই বলত-'দোস্ত আমার জীবনটা সার্থক! আমি অর্চির ভালবাসা পেয়েছি। আমি ওকে খুব ভালবাসি।' ওর কথা শুনে আমার খুব ভাল লাগত। মাঝে মধ্যে হিংসাও হত-'ইস আমার জীবনে কেন প্রেম আসে না!'
শামীম আমাদের মাঝে নেই আজ প্রায় দু'মাস হতে চলল। এখনো কেউ জানে না কেন সে এমন কাজ করল। কদিন আগে আমিও জানতাম না। কিন্তু এখন জানি। বিচিত্র মানুষের মন। বিচিত্র তার অনুভূতি এবং খুবই বিচিত্র তার প্রকাশ। শামীমের ডায়েরিটা কয়েকদিন আগে হাতে পেয়েছি। মাঝে একটা পৃষ্ঠার অর্ধেকটা ছেঁড়া, তারিখ লেখা নেই-'...ও আমার সাথে কেন এমন করল? আমি তো ওর কোন ক্ষতি করিনি। তবে কেন ও আমাকে এভাবে শেষ করে দিল। কি করিনি আমি ওর জন্য! ওর জন্য আমি আমার মায়ের সাথে মিথ্যা বলেছি পর্যন্ত। বাবার মুখে মুখে তর্কও করেছি। আর ও...। কত বিশ্বাস করেছিলাম ওকে..কত ভালবাসতাম...নিজেকেও বোধহয় আমি এতটা ভালবাসিনি। আমার সাথে ওর সব কথা, সব অনুভূতি-সবই ছিল খেলা। আমি কেন এত বোকা! সততার কি কোন দাম নেই! আমার খুব কষ্ট হচ্ছে-ভীষণ কষ্ট! ও আমাকে ভালবাসে না-এ জন্যে আমার কোন কষ্ট নেই। কেবল কষ্ট লাগে তখনই যখন ভাবি-এমন একটা ফালতু মেয়েকে আমি বলেছিলাম-আমি তোমাকে ভালবাসি। আমি এখন কি করব! বিধাতা তুমি ওকে কোনদিন ক্ষমা কর না..কোনদিনও না। কিন্তু আমি..আমি..।' এরপরও কি যেন লিখেছিল শামীম। হয়ত পরে আবার কি মনে করে নিজেই ছিঁড়ে ফেলেছিল-কে জানে!
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া
একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন
ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই
রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন
কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।
ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন
সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!
~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে
ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন