somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রকাশে প্রকাশিত একটি গল্প (পড়তে পারেন, নাও পড়তে পারেন)

০১ লা নভেম্বর, ২০১১ সকাল ১১:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জুনায়েদ যে বছর বৃষ্টিতে ভিজেছিল

কতদিন পর তুমি দেশে ফিরলে মনে আছে তোমার? এতদিন কোন মানুষ বউকে রেখে যায়। বলো? জুনায়েদের বুকের মধ্যে মুখ ঘসতে ঘসতে বললো মিনি। জুনায়েদ তার চিরাচরিত হাসি দিয়ে মুগ্ধ করার চেষ্টা করলো মিনিকে। সে কপট রাগ দেখিয়ে বললো, হাসলে হবে না, উত্তর দিতে হবে। এবার কথা বলে উঠলো জুনায়েদ। কন্ঠটা খানিক জড়ানো। প্রায় পাঁচ বছর দেশের বাইরে থেকে তার প্রতিদিন রাতে বিয়ার খাওয়ার অভ্যাস হয়েছে। একটা অথবা দুইটা। এর বেশি কোন রাতেই খায়না। খাওয়ার পর ৫-১০ মিনিট একটু খানি মাথা ঝিম ধরে থাকে। ঐ ঝিম ধরাটাই মজা জুনায়েদের কাছে। সে এখন এই মজার মধ্যে আছে। জুনায়েদ জানে আর অল্প সময় পরেই এটা কেটে যাবে। তারপর একটা যুদ্ধ হবে মিনির সঙ্গে। বিছানার যুদ্ধ।
জুনায়েদ বলে উঠলো, তোমাকে তো আমি বিয়ে করে রেখে যাইনি। অপেক্ষায় রেখে গেছি। তাইনা। কন্ঠটা জড়ানো তার।
মিনি বুক থেকে মুখ সরালো। গভীরভাবে তাকিয়ে বললো, বিয়ে হওয়ার কি বাকি ছিল আমাদের। বিয়ের পরে সবাই যা করে আমরা তো তা করছি বিয়ের কত আগেই। তাইনা? তারপর তো অপেক্ষার প্রহর শুরু হয়েছে। তুমি দেশের বাইরে চলে গেলে। পাঁচটা বছর আমাকে একা করে রাখলে। এটা কি কম কষ্টের বলো? খানিকটা আবেগি হয়ে বললো মিনি।
একটা ঠান্ডা হাসি হাসলো জুনায়েদ। ঝিম ধরাটা কমার দিকে। মিনিকে খানিকটা বুকের গভীরে নিয়ে, ঠোঁটে আলতো একটা চুমু দিয়ে বললো, তখন থেকেই তো তুমি আমার বউ। আর এই যে দেশের বাইরে চলে যাওয়া, এতদিন থাকা এসব কার জন্য বলো? শুধু তুমি আমি ভাল থাকবো বলেই তো। আমাদের সন্তানরা যাতে ভাল থাকে, এজন্যই তো এত কষ্ট করে এতকিছু করলাম। আমি তো আমার কথা রেখেছি তাই না। এসেই তোমাকে বিয়ে করেছি। ঢাকায় থাকার মতো একটা ফ্ল্যাট কিনেছি। গাড়ি কিনেছি। তোমার যাতে কোন কষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রেখেছি। এসব তো দেশের বাইরে গিয়েছিলাম বলেই করতে পেরেছি। তাইনা? প্রশ্ন করলেও উত্তর জানার কোন আগ্রহ নাই জুনায়েদের।
হুমম, আমাদের রেবা-জেবার যেন কষ্ট না হয় এজন্যই তো এতকিছু। আরও খানিকটা ঘনিষ্ট হয়ে বললো মিনি। কথা শুনে হেসে ফেললো জুনায়েদ। সন্তান দুটো এখন পৃথিবীতে আসেনি অথবা কল্পনায় করা যমজ দুবোন আদৌ আসবে কিনা তার কোন নিশ্চয়তা নেই। তবুও যমজ দু বোনের নাম ঠিক করে ডাকাডাকি শুরু হয়ে গেছে দুজনের। সেই প্রথমবার যখন মিনির সঙ্গে হোটেল প্যালেসে রাত কাটায় জুনায়েদ, সেদিন থেকেই এই অনাগত দুই সন্তানকে নিয়ে কল্পনার সংসার তাদের। বিদেশ যাওয়ার আগে সেই প্যালেসে রাজকীয়ভাবে কতদিন থেকেছে দুজন। একবার তো একটা দূর্ঘটনাই ঘটে গিয়েছিল। ডাক্তার, হাসপাতাল অ্যাবরেশন এসব করেই না রক্ষা। তারপর জুনায়েদের বিদেশ গমন। মিনির অপেক্ষার পালা। পাঁচ বছর পর দেশে ফিরে বিয়ে সংসার করা শুরু করেছে দুজন। যদিও ছয় মাসের ছুটি জুনায়েদের। মজার ব্যাপার হলো, মিনি জুনায়েদের বোনের ননদ হওয়ার সুবাদে অপেক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। এই আতœীয়তার সর্ম্পক না থাকলে কবেই যে মিনির অন্য জায়গায় বিয়ে হয়ে যেত। এখন অবশ্য দুজন স্বামী-স্ত্রী। বিদেশ থেকে ফিরে এক মাসের মধ্যে মিনিকে বিয়ে করেছে জুনায়েদ। নতুন ফ্ল্যাটে উঠেছে। কদিন পরেই হানিমুনে যাবে। দেশের বাইরেই যাওয়ার চিন্তা।

দুই
নিজেদের গাড়িটা নিয়ে প্রায়ই বের হয় মিনি আর জুনায়েদ। মাঝে মাঝে হাইওয়ে রোড ধরে, চিটাগাং রোড পার হয়ে অনেকদূর চলে যায়। পাশে কাছের মানুষটাকে নিয়ে ঘুরতে মজাই লাগে জুনায়েদের। কতকিছু বলে নেয়া যায়। কত গল্প, কত স্বপ্ন বোনা যায় দুজন মিলে। গাড়ি চালাতে চালাতে জুনায়েদের প্রায়ই মনে হয়, জীবন আসলেই খুব সুন্দর।
একদিন তো প্রায় কুমিল্লা পেরিয়ে যাচ্ছিলো। মাঝখানে একটা রেস্টুরেন্টেই দাড়িয়েই না ক্ষ্যান্ত দিল দুজন।
রেস্টুরেন্টের নাম ‘সিমু বিলাস’। একটা রেস্টুরেন্টের নামের সঙ্গে বিলাস কেন দেয়া হয়েছে তা রহস্যময়। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে হাইওয়ের সাথে বেশ উন্নত মানের রেস্টুরেন্ট এটা। ঢোকার সময় নামটা খেয়াল করে না জুনায়েদ। কিন্তু মিনির সঙ্গে কফি খাওয়া শেষ করে যখন গাড়িতে উঠতে যাবে তখনই নামটা চোখে পড়ে জুনায়েদের। লাল রঙে কমলা ইটের উপর বেশ ডিজাইন করেই লেখা হয়েছে নামটা। পাশে আবার লোগো দেয়া হয়েছে। লোগোর মর্মাথ হলো দুটো অক্ষর। এসবি। সবকিছু ছাপিয়ে জুনায়েদের মনের মধ্যে সিমু নামটাই ধাক্কা দেয়। বেশ কয়েক বছর পেছনে নিয়ে যায় ওকে। মিনির কথায় গাড়িতে ওঠে ও। গাড়ি চালাতে চালাতে মাঝে মাঝে অন্যমনস্ক হয়ে যায়। মিনি বেশ কয়েকবার জিজ্ঞেস করে, তোমার কিছু হয়েছে কি?
না, কোথায় কি হবে। আমি তো স্বাভাবিক। নিজের কাছে কিছু একটা লুকাতে লুকাতে বলে জুনায়েদ। গাড়ি ড্রাইভ করতে গিয়ে নিজের স্বাভাবিকতা মিথ্যা প্রমান করতে নেয় বেশ কয়েকবার। একবার তো একটা বোঝাই ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লেগে গিয়েছিল প্রায়। ভাগ্যিস মিনি সর্তক করে দিয়েছে। তা না হলে আজ...।

তিন.
এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। কি অদ্ভুত সব কথা মনে পরছে। কি দরকার ছিল ঐ নাম টা দেখার। কতদিন পর ওকে মনে পরছে। মিনি জীবনে এসে যাকে ভূলিয়ে দিয়েছিল সেই নামটাই এখন এলোমেলো করে দিচ্ছে জুনায়েদকে। সিমু। কলেজ জীবনে যে মেয়েটা তোলপাড় করে দিয়েছিল ওকে। রাস্তার মোড়ে দাড়িয়ে থাকা। সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে মধ্য রাতে দেখা করতে আসা। কতদিন নিজের হাতে বানানো খাবার খাইয়েছে জুনায়েদকে। তারপর...মেঘ না চাইতেই বৃষ্টির মতো মেয়েটা ওকে সব দিয়েছিল। কিছুই পরবর্তী কোন পুরুষের জন্য রাখেনি। জুনায়েদের খুব মনে পরে সেদিনের কথা। সেই ধানগড়া বাজারের স্টুডিও। তারপর সেখানে এলোমেলো হয়ে যাওয়া দুজন। কন্ট্রোলের বাইরেও যা থাকে তারই লেনদেন দুজনের মধ্যে। সেই কৈশোর পার হওয়া সময়টাতে সিমু একটা ঝড় হয়ে এসেছিল তখন। একই গ্রামের হওয়ার ফলে সেই ঝড় মাঝে মাঝেই উঠতো। তখনও জুনায়েদের বড় বোনের বিয়ে হয়নি।

চার.
তারপর অনেকটা সময় কেটে যায়। গ্রামের কলেজ পার হয়ে এসে জুনায়েদ ভর্তি হয় ঢাকায়। দুরত্ব বাড়তে থাকে সিমুর সঙ্গে। এরইমধ্যে বড় বোনের বিয়ে হয়ে যায়। জুনায়েদকে দখল করে নেয় মিনি। নিরবে... অনেকটা পাথরের মতো সবকিছু সয়ে যায় সিমু। তারপর সিমুর মুখোমুখি হয়নি জুনায়েদ। একই গ্রামের হলেও যাতায়াত কম থাকায় হয়তো সুযোগই পায়নি সে। তারপর অনার্স শেষ করে দেশের বাইরে। সেখান থেকে ফিরে এসে মিনির সঙ্গে সংসার যাপন। কিন্তু আজ সিমু নামটা দেখার পর থেকেই পুরনো স্মৃতিগুলো কিলবিল করে উঠছে গুবরে পোকার মতো। কোথায় আছে সিমু?

পাঁচ.
ওরে তো বাবা বিয়া দিছি চৌদ্দগ্রাম। কুমিল্লা। পূর্ব লক্ষীকোলার একমাত্র বাজারের একটা চায়ের দোকানে বসে জুনায়েদের সঙ্গে কথা বলছে সিমুর বাবা।
তবে জামাই বাবা পাইছি একখান। সোনার টুকরা। যেমন আদব কায়দা সেরকম সয়-সম্পত্তি। আমার ম্যাছালডারে যা ভালবাসে বাবা, কি আর কমু। তোমাক একটা আন্দাজ দেই, তাইলি প্যারেই বুঝবায়ানে। বিয়ার দুই বছরের মাথাত জামাই আমার মাইয়ার নামে চৌদ্দগ্রামে বিশ্বরোডের সাথে একটা হোটেল খুলছে। নামও দিছে আমার মাইয়ার নামে। কি জানি নাম...। আমার বাবা ঐ নামই মনেই থাহেনা। শুনত্যাছি এখন নাকি হ্যোট্যালই আমার ম্যাছালডার নামে লেইহ্যা দিব। বাবা তোমাগো দোয়ায় আমার বড় ম্যাছালডা সুখেই আছে। ছোটডার এখনও বিয়া দেই নাই। দোয়া কইরো ওক ও যান ঐরকম ভাল একটা জায়গায় বিয়া দিবার পারি।
সিমুকে কোথায় বিয়া দিছেন? এই প্রশ্নের জবাবে সিমুর বাবা এভাবেই মেয়ের সুখের গল্প জুড়ে দেয় জুনায়েদের সঙ্গে। জুনায়েদ শোনে গভীর মনোযোগের সাথে। শুনতেই শুনতেই সিদ্ধান্ত নেয় সিমু বিলাসে আবার যাবে। সিমুর স্বামীর সঙ্গে কথা বলবে। পারলে সিমুর বাড়িতে যাবে। সিমুকে চমকে দেবে। কি সারপ্রাইজই না হবে। জুনায়েদ সেই সোনার টুকরা ছেলেকে একবার সামনে থেকে দেখবে। কেন জানি এই ইচ্ছেটা ত্্রীব হচ্ছে। সিমুর কি মনে পরবে পুরনো কথাগুলো।
কাকা হোটেলটার নাম কি সিমু বিলাস?
হুম বাবা, ঠিক কইছো। কিন্তু তুমি জানলা কেমনে?
আমি কাকা একদিন ঐ হোটেলে গিয়েছিলাম। কফি খেয়েছিলাম আপনার বউমাকে সাথে নিয়ে। ওরা কফিটা খুব ভাল বানায়।
খালি কপি না বাবা, ওরা সবই ভাল বানায়। তুমি ওহুনু যায়া ম্যানেজাররে খালি একবার আমার নাম কইব্যা, তোমার সব খাওয়া ফ্রি।
আমি আবার যাব কাকা। সিমুর সংসার দেখে আসবো।
যাইয়ো বাবা, ওর একটা ছেলে হইছে। যা দুষ্ট। তোমারে জ্বালায়া খাইবো।
ঠিক আছে কাকা অবশ্যই যাব।

ছয়.
সিমু সুখে আছে জেনে ভাললাগে জুনায়েদের। আচ্ছা কখনো কি সিমুর মনে পরে সেই দিনগুলির কথা। মধ্য রাতে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে কতখানি গভীরে ঢুকতো জুনায়েদের। স্বামীর গভীরে ঢোকার সময় কি একবারও মনে পড়েনা ওর। কি অদ্ভূত জীবন। যে মেয়েকে নিয়ে প্রথম যৌবনে একটা দীর্ঘ উথাল পাথাল সময় পার করে করেছে। সেই মেয়েকে কি করে দিব্যি ভুলে আছে সে। ভালবাসা বুঝি এমনই। বৃষ্টির মতো। একটা আসলে আরেকটাকে ধুয়ে দেয়। যে সিমু জুনায়েদকে ছাড়া আর কাউকে জীবনসঙ্গী করবে না বলে ঘোষনা দিয়েছিল স্টুডিওতে বসে। সেই সিমুই বা কিভাবে এতটা সুখে আছে। সময়ের সাথে কতকিছুই না বদলায়। আচ্ছা সেই স্টুডিওটার এখন কি অবস্থা? আগের মতোই আছে নাকি পরিবর্তন হয়েছে। জীবনের কতটা মধুর সময় সেখানে পার করেছে জুনায়েদ। একটা নারীর শরীর তো সেখানেই চেনা তার। কাল সকালে একবার ধানগড়া বাজারে যাবে। স্টুডিওটা এখনও আছে কিনা দেখতে। এখন নিশ্চয় সেখানে ছবি তোলার সিস্টেম পরিবর্তন হয়েছে। এনালগ ক্যামেরার জায়গায় ডিজিটাল ক্যামেরা চলে এসেছে। সেভাবে সিমুর জায়গায় মিনি চলে এসেছে।

সাত.
জুনায়েদ গ্রাম থেকে ফিরেই খানিকটা ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এরইমধ্যে ছুটির প্রায় সাড়ে চার মাস চলে গেছে। আর মাত্র দেড় মাস বাকী। গ্রাম থেকে ফিরেই সে চিন্তা করে যে করেই হোক সিমুকে একবার দেখে আসবে। সে চিন্তা আরও গাড় হয় যখন পুরনো কিছু কাগজপত্র খুঁজতে গিয়ে একটা মোবাইল সিম পায়। যখন সিমুর সঙ্গে প্রেমটা তুঙ্গে। তারও কিছুদিন আগে মোবাইল কেনে জুনায়েদ। সিমুকেও একটা মোবাইল সিম কিনে দেয়। সেট কিছুদিন পরে দেবে বলে কথাও দেয়।
‘সিম দিয়ে আমি কি করুম?’ রাতে দেখা হওয়ার পর যখন জুনায়েদ সিমটা হাতে দেয় তখন জানতে চেয়েছিল সিমু। তখনই সিমুর ঠোঁট দুটোকে বারকয়েক নিজের দখলে নিয়ে বলে,‘ সেটও কিনা দিমু। এখন আপাদত তোমার বাবার সেটের মধ্যে ঢুকিয়ে আমাকে মাঝে মাঝে ফোন দিও। তোমার আর আমার নম্বরটা পাশাপাশি নম্বর। তাই কিনা রাখলাম।’ জুনায়েদের ভালবাসায় আবারও মুগ্ধ হয় সিমু। পরে আর সেট কিনে দেয়া হয়নি। সিমুরও মোবাইল কেনার অতটা আগ্রহ হয়নি। তারপর কোন একদিন সিমুকে দেয়া সিমটা বন্ধ করে দেয় জুনায়েদ। যেহুতু ওর নামেই করা। তারপর সিমটা নতুন করে তুলে নেয়। ভেবেছিল মিনিকে এটা ব্যবহার করতে দেবে। কিন্তু কি ভেবে পুরনো এসব জিনিষপত্রের সঙ্গেই রেখে দেয়। এসব দেখে সিমুকে দেখতে যাওয়ার আগ্রহ আরও চিড়বিড়িয়ে ওঠে। একদিন যাওয়ার উদ্দেশ্যে সকালে বেরও হয়। কিন্তু কি এক কারণে কুমিল্লাতে রাস্তা অবরোধ। রাস্তা ভয়াবহ জ্যাম। বাদ দিয়ে বাসায় চলে আসে। তারপর মিনি জুনায়েদকে আর চোখের আড়াল হতে দেয়নি। না অন্যকোন কারণে নয়, জাস্ট কদিন পরে চলে যাবে জুনায়েদ সে কারণে যতটুক ভালবাসায় থাকা যায় আর কি!

আট.
বিমানে ওঠার পরই জুনায়েদের মিনির কথা খুব মনে পরে। দুই সপ্তাহ আগে প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী মিনির যা হওয়ার কথা তা বন্ধ হয়ে গেছে। সময় পেরুলে হয়তো একটা সুখবর পাওয়া যবে। আর যদি কল্পনায় করা রেবা-জেবা পৃথিবীতে আসে তাহলে তো কথাই নেই।
‘এক্সকিউজ মি স্যার, টেক ইট? একটা সুন্দরী শাড়ি পড়া বিমানবালা চকলেটের ট্রে সামনে ধরে জুনায়েদকে বলে। জুনায়ের ‘থ্যাংক য়্যু বলে দুটো চকলেট নিয়ে তাকায় তার দিকে। সবুজ প্রিন্টের শাড়িতে মেয়েটাকে এই শূণ্যর উপরে ভালই লাগে। ভাল করে তাকাতে গিয়ে ধাক্কা খায় একটা। কুচি করা শাড়ির সে জায়গাটায় কাধের সঙ্গে মিলেছে সে জায়গায় একটা নেমপ্লেট লাগানো। যার উপরে স্পষ্ট করে ইংরেজিতে লেখা ‘সিমু’।
জুনায়েদের মাথায় সকল ভাবনা সিমুতে গিয়ে আবদ্ধ হয়ে যায়। সঙ্গে কিছু দীর্ঘশ্বাস বাতাসকে হয়তো ভারী করে তোলে। না! শেষ পর্যন্ত দেখাই হলোনা সিমুর সঙ্গে।

য়পূর্ণ রুবেল

[email protected]

গল্পটি কবি, লেখক ও সম্পাদক শফিক হাসান সম্পাদিত লিটল ম্যাগাজিন `প্রকাশ' এ নভেম্বর সংখ্যায় প্রকাশিত।
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×