somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সানির অন্তর্ধান

৩০ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ১১:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের দিন যিনি নেটে দিব্যি বোলিং করে গেলেন, সন্ধ্যার পর টিম মিটিংয়েও ছিলেন, হঠাৎ কী এমন হলো যে, একাদশের বাইরেই চলে গেলেন চট্টগ্রাম টেস্টের নায়ক ইলিয়াস সানি। 'পেটের পীড়ায় শরীর ভালো নেই এই স্পিনারের।' টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে হঠাৎ দেওয়া এ যুক্তি শুরু থেকেই ছিল বড্ড নড়বড়ে। সে কারণেই অনুসন্ধানে বেরিয়ে এলো সানির অন্তর্ধানের নেপথ্যের কারণ। পেটের পীড়া নয়, বৃহস্পতিবার রাতে পারিবারিক বিবাদে জড়িয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন সানি, শুক্রবারও আরেক দফা হোটেল থেকে বাড়িতে গিয়ে ভুল করেন তিনি। শনিবার সকালে দেখা বিধ্বস্ত সানিকে তাই আর শেষ মুহূর্তে ঢাকা টেস্টের একাদশে রাখেননি কোচ স্টুয়ার্ট ল।
শুক্রবার রাতে বাড়ি থেকে একটি জরুরি ফোন আসে সনির মোবাইলে। ছেলে এখন বড় ক্রিকেটার হয়েছে, পাওনা টাকা দিয়ে দাও_ এ দাবিতে সানির এক নিকটাত্মীয় রাতে সানিদের বাড়িতে সদলবলে চড়ও হয়। ঘটনাটা এতটাই বাজে মোড় নিয়েছিল যে, সানিকে বাধ্য হয়েই হোটেল থেকে তার লালবাগের বাড়িতে ছুটে যেতে হয়। গভীর রাত পর্যন্ত সেখানেই পাওনাদারদের সঙ্গে দেনদরবার করতে হয়। এলাকার মুরবি্বদের নিয়েও সালিশি বৈঠকেও সমঝোতা হয়নি। আমার ম্যাচ আছে, আমাকে ছেড়ে দিন_ পাওনাদারদের কাছে সানির এ আর্তি কোনো প্রভাব ফেলেনি।
সুত্র জানায়, এক পর্যায়ে স্থানীয় সাংসদ ডা. মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিনের হস্তক্ষেপে ইলিয়াস সানি টিম হোটেলে ফিরে যান। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সাংসদ সমকালকে বলেন, গতকাল রাতে বিষয়টি নিয়ে একবার কথা হয়েছে। আজ (শনিবার) রাতে দু'পক্ষের বসার কথা রয়েছে। চেষ্টা করব বিষয়টি আজই সমাধান করে দিতে। সকালে দলের সঙ্গে মাঠে এলেও সানির মুখ দেখে কোচ ল' ঝুঁকি নিতে চাননি। আগের রাতে পারিবারিক ঝামেলায় জড়ানো বিধ্বস্ত সানিকে ঢাকা টেস্টের জন্য উপযুক্ত মনে হয়নি কোচের। হোটেলে ফিরে গিয়ে ফোন বন্ধ করে সানিকে বিশ্রাম নিতে বলা হয়।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, 'সানি গতকাল থেকেই মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ছিল। চট্টগ্রাম টেস্টে অমন একটা পারফরম্যান্স করার পরও বাড়ির ঝামেলা থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারেননি। একসময় এমন অবস্থা হয়ে যায় যে, দেশের হয়ে খেলার চেয়ে তার পরিবারকে বাঁচানোটাই সানির কাছে বড় দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায়। নিরুপায় হয়ে সানিকে রাতেই বাড়িতে যেতে হয়।' বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের একজন সানির ওই রাতের অন্তর্ধানের রহস্য উদ্ঘাটন করেন। যদিও দলের ম্যানেজার জাহিদ রাজ্জাক মাসুম ঘটনাটি জানেন না বলে এড়িয়ে যান। 'সত্যি বলছি, এ ধরনের কোনো খবর আমার জানা নেই। তবে এটুকু বলতে পারি, রাতে সানি হোটেলে ফিরে এসেছিল।'
এমন ব্যক্তিগত কারণে একজন সম্ভাবনাময় ক্রিকেটার অনুপস্থিত থাকায় বিসিবি থেকে অসুস্থতার যুক্তি দাঁড় করানো হয়। দলের ম্যানেজার জাহিদ রাজ্জাক মাসুম জানান, দুপুর থেকেই পেট খারাপ হয় সানির। অথচ বিসিবির ডাক্তার আমিন সমকালকে জানান, তিনি ফিজিওর কাছ থেকে সন্ধ্যার পর সানির পেট খারাপের খবর শোনেন। যদিও ওই রাতে সানির বাড়িতে যাওয়ার ব্যাপারটি নিশ্চিত করেন বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন সিরাজ। 'সানি টিম ম্যানেজমেন্টের অনুমতি নিয়েই রাতে বাড়ি গিয়েছিল। সকালে সে দলের সঙ্গে মাঠেও এসেছিল। হয়তো রাতে বাড়িতে গিয়ে কিছু খেয়ে থাকতে পারে, যে কারণে অসুস্থ হতে পারে সে।'
বিসিবি কর্মকর্তার 'পেটের পীড়া'র যুক্তি যদিও মেনে নেওয়া হয়, তাহলেও প্রশ্ন থাকে এমন গুরুত্বপূর্ণ টেস্টের আগে ক্রিকেটারদের কেন বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়? 'আগেও অনেক ক্রিকেটার বাড়িতে গেছেন। অনেক সময় জরুরি কারণ দেখিয়ে কেউ কেউ বাড়িতে যান।' যদি বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি এত সহজেই পাওয়া যায়, তাহলে কেন সবাই মিলে সিরিজের সময় হোটেলে থাকা হয়? বিদেশে সফরে যদি সানি তার বাড়ি থেকে এমন ফোন পেতেন, তাহলে কি বাড়ি যেতে পারতেন? সানির কাছেও জানতে চাওয়া যেতে পারে, তার পরিবার হুমকির মুখে এমন ঝামেলার বিষয়টি কি বোর্ড কর্তাদের জানিয়েছিলেন? টিম ম্যানেজমেন্টের একটি সূত্র জানান, সানি তার সমস্যার কথা কর্মকর্তাদের জানিয়েছিলেন; কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে।
একটা ছোট্ট পারিবারিক কারণে চট্টগ্রাম টেস্টের নায়কের ঢাকা টেস্টে না থাকাটা সত্যিই দুঃখজনক। টিম ম্যানেজমেন্ট সক্রিয় না থাকায় এমনটি হয়েছে, তা বলা যায় নিঃসন্দেহে। শুধু তাই নয়, ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরও তা গোপন রাখার কৌশলেও ব্যর্থ তারা। পেট খারাপের মতো অজুহাত দেখিয়ে সানির অন্তর্ধান রহস্য ধামাচাপা দিতে চেয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। এমন মিথ্যাকে সত্য বানাতে দাঁড় করিয়েছিলেন নানা সব সস্তা যুক্তি। শেষ পর্যন্ত সেসবও ব্যর্থ। সত্য জানতে অপেক্ষায় থাকতে হয়নি বেশিক্ষণ।

আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এইরকম একজন গুরুত্বপূর্ণ প্লেয়ারের উপর দিয়ে একটা ঝড় গেল, বিসিবি কর্তারা বসে বসে কার বিচি টিপছিলেন। সেখানে গিয়ে তারা কি কিছু করতে পারতেন না। পারতেন না সানীকে সাপোর্ট দিতে।



লিনকু হলো--
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ১২:৩০
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সন্ত্রাসবাদের ছায়ায় ইসলামের অনুশীলন: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট

লিখেছেন মি. বিকেল, ১০ ই জুন, ২০২৪ ভোর ৬:১৬



‘সন্ত্রাসবাদ (Terrorism)’ দ্বারা কোন নির্দিষ্ট ধর্ম বা জনগোষ্ঠী বা কোন বিশেষ কমিউনিটি কে বুঝায় না। কিন্তু বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদ এক ধরণের ‘ইসলামিক সন্ত্রাসবাদ’ হিসেবে পরিচিত। ইসলাম ধর্মের নাম করে এখানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্প-একাকীত্বের অন্ধকার

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১০ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১০:০১





ব্রাজিলের পান্তানাল রেইন ফরেস্টে এর নির্জন জায়গায় পাশাপাশি বসে আছে ম্যারিনা ও মুহিব। পৃথিবীর অন্যতম এই বন রোমাঞ্চপ্রিয় পর্যটকদের কাছে অসম্ভব শিহরন জাগানিয়া। অনেক অনেক মানুষের ভীরে ম্যারিনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাদৃশ্য- বড়ই অদ্ভুত এক বৈশিষ্ট্য!

লিখেছেন আহলান, ১০ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৪৯




সাদৃশ্য- বড়ই অদ্ভুত একটি বৈশিষ্ট্য। আল্লাহর রাসুল ( সাঃ) বলেন কাল কেয়ামতে কোন ব্যাক্তির হাসর নাসর তাদের সাথেই হবে, যাদের সাথে তার সাদৃশ্য থাকবে। অর্থাৎ দুনিয়াতে যারা যাকে যেভাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি কল্পকথা

লিখেছেন কালো যাদুকর, ১০ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬

আমি খুঁজে পাবো তোমায়
পুরোনো সব রাস্তায়
এ মন বাধাঁ - যেখানে, যেথায়।

সারাদিন ধরে ঘুরে-
ঐ খেলাঘরে,
ঐ মেলায়,
ঐ পলাশ শিমুল বনে,
ঐ নির্জন গলির কোণে,
ঐ ছোট্ট ড্রইং রুমে,
ঐ জীবন্ত ছবির ফ্রেমে,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কায়া বৃত্তি প্রণয়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১০ ই জুন, ২০২৪ দুপুর ১২:০৪


প্রণয়ের খুনসুটি যখন
রক্তে প্রবাহিত হয়!
কখন নিঃশেষ করা যায় না
কায়া বৃত্তি প্রণয়;
স্মৃতির গুমরে মরা তারাগুলো হাঁসে
মৃত্তিকার তীব্র রসে বালুচর
অথচ প্রণয় কিছু বুঝে না
স্রোত ধারাই চলমান;
এ রকম ভাগ্য কয় জনার জুঠে
তবু... ...বাকিটুকু পড়ুন

×