somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আবাসন শিল্প : সংকট নাকি সম্ভাবনা?

৩০ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ৮:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

“প্রত্যেকের কাছেই তার নিজ বাড়ি যেমন একটা বিশ্রামের স্থল ঠিক তেমনি সেটা তার একটা প্রাসাদ, একটা দূর্গ আর সেই সাথে ক্ষয়, ক্ষতি ও সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা”-
.....স্যার এডর্ওয়াড কোক।
উক্তিটির মধ্যে দিয়ে আমরা যেমন আবাসনের গুরুত্ব উপলব্ধি করি ঠিক তেমনি সম্ভাবনার কিংবা সংকটের মাত্রাকেও এড়িয়ে যেতে পারি না। আবাসন এটি যেমন সম্ভবনাময় শিল্প, আবার এটিই হতে পারে পতনের কেন্দ্রবিন্দু। এটি মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা, যাকে কেন্দ্র করে মানুষের সংগ্রামের যাত্রা শুরু, সেই হাজার বছর আগ থেকেই। দিন থেকে দিন এটি মানুষকে দিয়ে যাচ্ছে সম্ভাবনার নতুন মাত্রা। আবার চলতি শতাব্দীতে মানুষের অন্যতম প্রধান আশঙ্কার কারণও বটে এটি! আর এর বিকাশ ও বিনাশ দুটোই আবার মানুষের জন্য মানুষকে কেন্দ্র করেই। আমাদের দেশে নদী ভাঙ্গন, সড়ক নির্মাণ, অপরিকল্পিতভাবে শহরের বিস্তৃতি, উঠান, পুকুর, বাগান প্রভৃতি সহকারে অপ্রয়োজনীয়ভাবে গৃহ নির্মাণ, শিল্পায়ন প্রভৃতির কারণে ১.৬% করে প্রতিবৎসর আমরা হারায় আবাদি জমি। যা কঠিন থেকে কঠিনতর সমস্যার কথা আমাদেরকে স্মরণ করে দেয়। আর এই সমস্যার সমাধানে পরিকল্পিত নগরায়ন ও শিল্পায়নের নিশ্চয়তাই হতে পারে মুক্তি বা সময়ের চাহিদা। আরেকটা দিক লক্ষ্য করা যায, বাংলাদেশের বড় বড় শহরে এখন মাথাপিছু ফ্লোর স্পেস পৃথিবীর অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় সর্বনিম্ন পর্যায়ে যা অবসান হলে আমরা অনেকাংশে ভূমি রক্ষা করতে পারবো, আবাসন যেহেতু একটি শিল্প তাই ইহাকে কেন্দ্র করে সম্ভাবনা ও সমস্যা থাকবে এইটাই স্বাভাবিক। তাই সমস্যার কথা বলে ইহার অগ্রযাত্রা ব্যাহত করা যেমন কাম্য হতে পারে না, তদরূপ ভূমিদস্যু, ফটকাবাজ, ঋণখেলাপীদের এই শিল্পে আগমন কাম্য নয়। এক্ষেত্রে নীতি নির্ধারকদের পাশাপাশি আবাসন শিল্পের ধারকদের ও মাথা ঘামাতে হবে। পরিকল্পনা, সমস্যা সমাধানের উপায় প্রভৃতি নিয়ে তাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে। অন্যদিক সরকারের উদাসীনতাকেও এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। অন্যান্য শিল্পের মত ইহার জন্যও মনিটরিং এর পাশাপাশি সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার দাবি রাখে। গৃহনির্মাণে ঋণ সুবিধা, কর অবকাশ সুবিধা প্রভৃতি নিশ্চিত করতে হবে। গৃহ নির্মাণ যাতে সুদের হার ব্যাংক রেটের চেয়ে ২১২ % যে বেশী নেওয়া হচ্ছে তা বাতিল করতে হবে। অন্যদিক থেকে আমরা দেখতে পাই, আবাসন শিল্পের সবচেয়ে বাধা হচ্ছে তাদের নিজেদেরই সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য এক শ্রেণীর মুনুফালোভী, অনভিজ্ঞ অপরিকল্পিতভাবে প্রকল্প হাতে নেয়া এক্ষেত্রে ঢাকা মহানগরীর দিকে লক্ষ্য যাক, সেখানে ভূমি কিভাবে ব্যহৃত হচ্ছে।

ঢাকা মহানগরীর ভূমি প্রকল্পের প্রধানত নিম্নরূপ ঃ
ভূমি ব্যবহারের ধরণ শতকরা হার
আবাসিক এলাকা ৩৫
প্রশাসনিক এলাকা ১৭
বাণিজ্যিক এলাকা ৩০
শিল্প এলাকা ৫
বিনোদন এলাকা ৫
পরিবহন এলাকা ৩
অব্যবহৃত জলাশয় ২
অন্যান্য ৩
মোট ১০০


উল্লেখিত পরিসংখ্যানে আমরা থেকে পাই, আবাসিক খাত এক-তৃতীংশ জায়গা ব্যবহার করে। যার অধিকাংশই অপরিকল্পিত ও যেনতেন ভাবে। এই ক্ষেত্র যদি সঠিক ভূমি ব্যবহার নিশ্চিত করা যেত যা পরিকল্পিত নগরায়ন সম্ভব হত তাহলে ২০% এবং মধ্যে ইহা নিশ্চিত করা সম্ভবপর ছিল। পৃথিবীর উন্নত নগরী হংকং টোকিও প্রভৃতিতে জনসংখ্যার ঘনত্ব আমাদের ঢাকা শহরের তুলনায় বেশী এবং ভূমিও তারা কম ব্যবহার করতেছে। অন্যদিকে শহর বিকেন্দ্রীকরণের যে কথা উঠছে, তাও নিশ্চিত করা সম্ভব সঠিক আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার মাধ্যমে। শিক্ষা, চিকিৎসা, অন্ন, বস্ত্র যেমন আমাদের মৌলিক অধিকার, এগুলো যেমন নিশ্চিত করতে হয়। ঠিক তেমনি আবাসনত আমাদের অধিকার। এই ক্ষেত্রে উদাসীনতা কিংবা ইহাকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা চলতে পারে না, চলতে দেওয়া যাবে না।


মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ
শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৫৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাকা ভাংতি করার মেশিন দরকার

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:১০

চলুন আজকে একটা সমস্যার কথা বলি৷ একটা সময় মানুষের মধ্যে আন্তরিকতা ছিল৷ চাইলেই টাকা ভাংতি পাওয়া যেতো৷ এখন কেউ টাকা ভাংতি দিতে চায়না৷ কারো হাতে অনেক খুচরা টাকা দেখছেন৷ তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেলা ব‌য়ে যায়

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩০


সূর্যটা বল‌ছে সকাল
অথছ আমার সন্ধ্যা
টের পেলামনা ক‌বে কখন
ফু‌টে‌ছে রজনীগন্ধ্যা।

বাতা‌সে ক‌বে মি‌লি‌য়ে গে‌ছে
গোলাপ গোলাপ গন্ধ
ছু‌টে‌ছি কেবল ছু‌টে‌ছি কোথায়?
পথ হা‌রি‌য়ে অন্ধ।

সূর্যটা কাল উঠ‌বে আবার
আবা‌রো হ‌বে সকাল
পাকা চু‌ল ধবল সকলি
দেখ‌ছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:১৪


কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়
আমার বাবা-কাকারা সর্বমোট সাত ভাই, আর ফুফু দুইজন। সবমিলিয়ে নয়জন। একজন নাকি জন্মের পর মারা গিয়েছেন। এ কথা বলাই বাহুল্য যে, আমার পিতামহ কামেল লোক ছিলেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×