somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পিরীতের খ্যাতা দিয়া যইত্তা ধইরা মাইরালা...

১২ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিস্তি ৬৫:


রেওয়াজটা পুরনো। বছরে একবার ডাটস যাবে সীতাকুণ্ড। সেখানকার চন্দ্র পাহাড়ের রূপ যৌবনের ভেতর কাটাবে পুরো একটি দিন। সে মতে, সীতাকুণ্ড ট্যুরের আয়োজন করা হলো। আমরা সবাই সেখানে যাওয়ার জন্য উৎসাহের সাথে জড়ো হলাম টিএসসি চত্বরে। সে সময় আমাদের বেশির ভাগ ট্যুরের বাস নেয়া হতো বাবুল মামার কাছ থেকে। যথা সময়ে টিএসসি চত্বরে বাবুল মামা হাজির। ১১ টার দিকে আমরা রওয়ানা করলাম। বাস ছাড়ার সাথে সাথে আমাদের সিনিয়ররা সবাই হই হুল্লোড় শুরু করলেন। প্রিন্স ভাই, সালেহীন ভাই ও তানিম ভাইয়েরা সেই পুরনেরা গান ধরলেন ... পিরীতের খ্যাতা দিয়া যইত্তা ধইরা মাইরালা...। আমরা সবাই গলা মেলাচ্ছি। সেই সাথে নাচানাচি। বাবুল মামা এ সবের সাথে পরিচিত। বরিশালের বাবুল মামা সব সময় হাসি খুশি। তিনি কখনো বেজার হয়েছেন , এমনটা আমি দেখিনি। শহীদ ভাইয়ের আমল থেকে আমার নিজের আমলেও তার গাড়ি নিয়ে আমরা ঘুরতে গেছি। এত সহযোগি চালক আমার চোখে সাত্তার ও মোখলেস ছাড়া দ্বিতীয়টি চোখে পড়েনি।

সকালে আমরা সীতাকুণ্ড পৌঁছালাম। সেখানকার থানা নির্বাহি কর্মকর্তাকে আগে থেকে ইনফরম করা ছিল। আমাদের ফ্রেশ হওয়ার জন্য দু চারটে কক্ষ খুলে দেয়া হলো। মেয়েদের জন্য পাশের একটি বাসা। সীতাকুণ্ডে সে সময় কোনো হোটেল ছিল না। এখনো সে রকম কোনো হোটেল নেই। ফ্রেশ হয়ে আমরা বের হলাম চন্দ্রনাথ পাহাড়ের পথে। সে সময় বর্ষার শুরু। ভেজা পথ ধরে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। কিছু দূর যাওয়ার পর অন্যদের বিশেষ করে নারী সদস্যদের জন্য সহযোগিতার জন্য হাত বাড়াতে হলো। এই হাত বাড়ানোর জন্য অনেকে প্রস্তুত। কিন্তু সব নারী কিন্তু সবার হাত ধরবেন, এটা হতে পারে না । হয়নি। বয়সে যেহেতু আমি ও বাবু ছোট তাই অনেকে আমাদের ওপর ভরসা করলেন। আমি একাই দুজনওকে টেনে তুলেছিলাম চন্দ্রনাথের চূড়ায়!!!

চন্দ্রনাথে ওঠার জন্য সিঁড়ি পথ আছে। কিন্তু ডাটসের ট্যুরে সেটাকে নামার জন্য ব্যবহার করা হতো। ওঠা হতো এবড়ো থেবড়ো পথ ধরে। ঝর্ণার বাম পাশ ঘেঁষে উঠে যাওয়া ট্রেইলটিই ছিল আমাদের ওঠার রুট। এটা আমরা পরেও ফলো করতাম। ওঠার মাঝ পথে বিরতি দিলাম। কেউ কিছু দূরে, কেউ কাছাকাছি, সবাই আসলে এরকসাথে চন্দ্রনাথ মন্দিরে আমরা যাবো। এর মধ্যে সবাই পানি, চকলেট , পেয়ারা চিবুচ্ছেন। কেউ হাত-পা ছড়িয়ে বসে পড়েছেন। কান্তিতে অনেকের অবস্থা খারাব।

ঘন্টা দুয়েকের মধ্যে আমরা চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায় উঠলাম। সেখানকার মন্দিরে অনেকক্ষণ অপেক্ষা, ছবি তোলা এবং জিরিয়ে নিয়ে এবং পাহাড়ের চূড়া থেকে চট্টগ্রাম পোর্ট দেখে আমরা নামতে শুরু করলাম। নামার পথে ঝর্ণায় ভেজা। পানি দেখলে নিজেকে সামলানো কঠিন। কিন্তু আপুরা যেহেতু ভিজবেন, তাই ভাইয়াদের আগেই ভিজে সরে যেতে হবে। আমরা তাই করলাম। এর মধ্যে এক বজ্জাত গোপনে আপুদের ছবি তোলার চেষ্টা করছিল। আমাদের কারো চোখে পড়েনি। তবে শেষ পর্যন্ত ধরা পড়লো। জানা গেলো উনি একজন গেস্ট হিসাবে আমাদের সাথে অংশ নিয়েছেন!

সীতাকুণ্ড থেকে আমরা ফিরে এলাম। অনেক ভালো লাগা একটা স্মৃতি নিয়ে। আমার প্রথম পাহাড়ে চড়ার অভিজ্ঞতা সেটিই। পাহাড় থেকে নেমে আমরা আবার থানা নির্বাহি কর্মকর্তার কার্যালয়ে। সেখানে মস্ত বড় একটা পুকুর। সেই পুকুরে আমরা অনেকে সাঁতরালাম। সেখান থেকে উঠে দুপুরের খাবার শেষে আমরা ফিরলাম ক্যাম্পাসে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×