somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাশাপাশি- ৪

২৮ শে অক্টোবর, ২০১১ সকাল ৯:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বাবু বাস থেকে নেমেই টুকটুকে লাল রংয়ের মাইক্রবাসটি দেখতে পেল। বুঝতে তার বাকি রইলো না গাড়িটি কাদের। আমবাগানের বিশাল এক ফজলি গাছের ছায়ায় পার্ক করা গাড়িটি দেখে বাবু মনে মনে ভাবল ইস্‌ এরকম একটি গাড়ি যদি আমাদের থাকতো।

ইচ্ছার বিরুদ্ধে বাবুকে বাবা-মার সাথে বিয়ে বাড়িতে ঢুকতে হল। বাবুর ইচ্ছা ছিল নীলুকে খুঁজে দেখা। তবু মনে মনে সান্ত্বনা দিল, যদি সে বাড়ির মধ্যেই থাকে। বাড়িতে প্রবেশ করেই তাদের রায়হান সাহেবের সাথে দেখা।

আরে করিম ভাই, তা এত দেরী হলো কেন ?

আর বলবেন না ভাই, লোকাল বাসে ধুকুর ধুকুর করে আসতে একটু দেরী হয়ে গেল। বাবু ইনি হচ্ছেন তোমার খালু।

আসস­ামালেকুম খালু।

অলাইকুম আস সালাম।

তা বাবা খবর ভাল ?

জ্বী।

কোন ক্লাসে এবার ?

ক্লাস টেনে।

অনেকদুরে এগিযে গেছো, ভাল ভাবে পড়ালেখা কর, পড়া ছাড়া কেউ বড় হতে পারে না।

বাবু মনে মনে বলল, পড়ালেখা শিখে কোন শালা বড়লোক হয়েছে। নীলুর বাবা হলো ফাইভ পাশ।

সেখান থেকে কোন রকমে পাশ কাটিয়ে বাবু সারা বাড়ি তন্ন তন্ন করে নীলুকে খুঁজল। ইমতিয়াজ সাহেব, মিসেস ইমতিয়াজ সবাইকে চোখে পড়ল। কিন্তু নীলু কোথায়। বাবু ছুটে বাইরে গেল। চারদিক ভালভাবে খুঁজে দেখল, কিন্তু নীলু কোথাও নেই। তবে কি নীলু আসেনি। কথাটি মনে আসতেই বাবুর বুকটি হাহাকার করে উঠলো। চলার শক্তি তার যেন ক্ষয় হয়ে গেছে। কোন রকমে পুকুর পাড়ে তাল গাছটির তলায় গিয়ে হাটু মুড়ে বসে পড়ল। খুব আনমোনা হয়ে ঢিল ছুড়তে লাগল পানিতে আর পুরোন দিনের স্মৃতি ভাবতে লাগল। বন্ধুদের কথা কামাল, ইকবাল, মৃদুল, আকতার, রুপা, নিপা সবার কথা মনে পড়ল। নিপা, রুপার সাথে বাবুর পরিচয়টা খুব মজার।

একদিন বিকালে তার পাঁচ বন্ধু বেড়াতে বের হয়েছিল। বাবুদের পাশ দিয়ে দুজন মেয়ে হেটে যাওয়ার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা চার-পাঁচজন ছেলে মেয়েগুলিকে উদ্দেশ্য করে বলল

‘জব্বর মাল’। মেয়েগুলি মাথা নিচু করে হেটে চলে গেল। বাবুর প্রচন্ড খারাপ লাগল। সাথে সাথে সাইকেলে ব্রেক কষে পিছনে ফিরে বলল, হ্যালো ভাইজান একটু শুনবেন, এরা যদি আপনাদের বোন হতো আর আমরা যদি এ কথা গুলো বলতাম কেমন লাগতো তখন ?

কেনরে এরা কি তোর বোন হয় ?

হ্যা, আমার বোন

ও আমরা যে তোর দুলাভাই চিনছিস না ?

দাড়া শালার দুলাভাই গিরি দেখাচ্ছি

বাবু সাইকেল ঘুরিয়ে ছেলেগুলির গতিরোধ করল। সাইকেল থেকে নেমে প্রচন্ড একটা পাঞ্চ কষিয়ে দিল ছেলেটির গালে। এবং ঠিক ততক্ষনে ডান পায়ে মাওসোগিরি যোতান মুহুর্তে একই স্থানে আঘাত করল। ছেলেটির সাথীরা বাবুর উপর ঝাপিয়ে পড়ল।

মেয়েগুলি হতবাক। বাবু গত ছ’মাস যাবত কারাটি প্রশিক্ষন নিচ্ছে। সুতরাং সে এই কাজটি ভাল পারে। তার হাত-পা ছোড়া কারাটি ন্যাক দেখে ছেলেগুলি প্রচন্ড ঘাবড়ে গিয়ে রন ত্যাগ করল।

মেয়েগুলি এগিয়ে গেল বাবুর দিকে। সুন্দরমত মেয়েটি বাবুকে বলল, আপনিতো দারুন হিরো। যা দিলেন একখানি।

প্রশংসায় বাবু লাল হয়ে গেল।এভাবে বাবুর সাথে নিপা, রুপার পরিচয় এবং তার পরে বন্ধুত্ব। তাদের সাথে এখন এমন এক বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক যা বলার নয়।

বাবু বাস্তবে ফিরে এল। উঠে দাড়িয়ে হাটলে লাগল বিয়ে বাড়ির দিকে।

লাল গাড়িটার পাশ দিয়ে যাবার সময় শুনতে পেল প্রচন্ড জোরে গান বাজছে। এবং সেই সাথে কে যেন চিৎকার করে তাকে ডাকছে। চমকে পিছনে ফিরল বাবু। ফিরেই চোক ছানাবড়া, স্বপ্ন দেখছি নাতো।

সে দেখল বাড়ির মাঝের সিটে তিনজন কিশোরী বসা। একজন নিপা,তারপর নীলু, তারপাশে রুপা। নিপা রুপা বাবুকে দেখে অবাক। এগিয়ে গেল বাবু, একঝলক দেখল ও নীলুকে। গোলাপী রংঙের ল্যাহেঙ্গা পরিহিতা নীলু দিন দিন যেন আরো সুন্দরী হচ্ছে। হালকা প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে ফর্সা মুখটা আরো উজ্জ্বল দেখাচ্ছে। বাবু নীলুর মুখের দিকে চেয়ে চোখ সরাতে পারল না।

কিরে কি দেখছিস এমন ড্যাব ড্যাব করে ? নিপার কথায় চমকে উঠে বাবু।

এমনি। তা তোরা কোন দিক থেকে।

আমিও তো তোকে একই প্রশ্ন করব বলে মনে করছি। গাড়ীর সামনের দরজাটি খুলে দেয় রুপা।

বাবু তবুও দাড়িয়ে থাকে।

কিরে ঢোক।

গাড়ি গল্প করার একটা জায়গা হলো নাকি। বাইরে আয়,

চল। নিপা ও রুপা বেড়িয়ে আসে।

নীলু বুঝতে পারে না কি করবে।

কিরে নীলু বেড়িয়ে আয়।

তোরা যা।

আরে আয় না।

অবশেষে নীলু বেরিয়ে আসে। বাবু যে পুকুর পাড়ে গিয়ে বসে ছিল সবাই গিয়ে সেখানে বসে।

পরিচয় করিয়ে দেয়, আমাদের বন্ধু বাবু, আর বাবু এ হচ্ছে আমাদের বান্ধবী নীলু।

বাবু ও নীলু এক অপরের চোখের দিকে তাকায়।

নিপা বাবুকে প্রশ্ন করে, তুই এখানে কেমন করে।

যার বিয়ে রেবা আপা, তিনি আমার খালাতো বোন।

আকাশ থেকে পড়ল নীপা ও রুপা। তার মানে নীলুও তোর খালাতো বোন ?

হ্যা, বাবুর ছোট উত্তর।

নিপা খুব গর্ভবোধ করছিল নীলুর মত একজন স্মার্ট মেয়ের সাথে বাবুর পরিচয় করিয়ে দিতে পেরে, কিন্তু যখন বুঝল নীলু তার খালাতো বোন এবং তাদের পরিচয় আছে, তন সে বেশ লজ্জা পেল।

তা তোরা কোন দিক থেকে, কন্যা না বরপক্ষ ?

কন্যাপক্ষ। নীলুর বান্ধবী হিসাবে।

হেসে উঠলো সবাই। নীলুও প্রচন্ড ধাক্কা খেয়েছে নিপা, রুপার সাথে এরকম সম্পর্ক দেখে।

বাবু একটা হাসির গল্প বলতো।

সবখানে সবজিনিস মানায় না।

তাহলে একটা প্রেমের গল্প বল। নীপার এধরনের কথায বাবু একটু লজ্জা পেলেও সাথে সাথে বলে

কার সাথে তোদের সাথে ?

না তো কি নীরুর সাথে বলবি ? নীপার কথায় বাবু এবার প্রচন্ড লজ্জা পায়। নীলুর চোখের দিকে চেয়ে দেখে সেও প্রচন্ড লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলেছে। কথা প্রসঙ্গে নীপা বলে কিরে নীলু তোর খালাতো বোন, পরিচয় আছে অথচ কথা বলছিস না কেন।

আলাপ নেই। উত্তর দেয় নীলু।

আলাপটা সেরে ফেল।

বাবু বলে আলাপটা দুতরফা হলে ভালো নয় কি ?

নীলু তুই বাবুকে কিছু বল।

আহা নীপা তুই বড় বেশি বাড়াবাড়ী করিস।

ঠিক আছে বাবু তুই কিছু বল।

আপনি খুব সুন্দর, কথাটি বলেই বাবু খুব লজ্জায় পড়ে যায়।

নীপা ও রুপা হো হো করে হেসে উঠে। এরকম পরিস্থিতিতে পড়ে নীলু ঘামতে শুরু করেছে। উঠে দাড়ায় সে।

কিরে কোথায় যাচ্ছিস ? মহব্বতের কথা সবে জমে উঠেছে, বলে রুপা।

নীলু ততক্ষনে হাটতে শুরু করেছে। নিপা ও রুপা দেখা হবে বলে নীলুর পিছু নেয়

বাবু কিছুক্ষন পুকুর পাড়ে বসে চিন্তা করল কথাটা বলা কি তার ঠিক হয়েছে। অবশ্যয় ঠিক হয়েছে, সুন্দরকে সুন্দর না বললে সুন্দরের জন্ম কেন !



খেতে দেওয়া হয়েছে। বাবুর ঠিক উল্টো দিকের টেবিলে খেতে বসেছে নীলু। বাবু ও নীলু প্রথমে কেউ কাউকে দেখেনি। খেতে খেতে যখন তাদের দেখা হল বাবুর অবস্থা শোচনীয়। সে আর কিছুতেই ভাত গিলতে পারছে না। যত গেলার চেষ্টা করছে ততই বেড়িয়ে চলে আসছে। সমানে পানি খেযে যাচ্ছে। নীলু বাবুর চেয়ে এ ব্যাপারে কম নার্ভাস। বাবুর অবস্থা দেখে সে মনে মনে হাসছে। ভাল যেন ব্যাপারটি নিপা বা রুপার চোখে পড়েনি।

কোন অনুষ্ঠানে খাবার শেষে পান দেওয়া এটা গ্রামের একটি ঐতিহ্য। পানের সামনে প্রচন্ড ভীড়, তবুও বাবু সব সামনে আছে। সে পান নিতে যাবে তখন একটি ফর্সা হাত তার পাশে এগিয়ে আসে এবং সে সাথে পেছন থেকে মেয়ে কন্ঠে আওয়াজ

এই যে ভাই তিনটা পান দিন তো।

বাবু তিনটি পান নিয়ে পিছন ফিরে দেখে নীলু। নীলু বাবুকে দেখে দে ছুট। বাবু মনে মনে বলে যা শালা, না নিয়েই গেল।

খেয়েদেয়ে স্থানীয় মেহমানরা সবাই বিদায় নেয়। দুরের মেহমানগন যে যেদিকে পারে ছড়িয়ে পড়ে। কেউ ঘুরতে গেল, কেউবা গাছের ছায়ায় বসে গল্পে মেতে উঠল। বাবু অনেক খোজার পরেও নীলুদের পেল না। আনমোনে হাটতে লাগল নদীর দিকে। নদীর কাছে গিয়ে তার চক্ষু স্থির। নীলু, নিপা ও রুপা তিনজনেই পানি দিয়ে ভেজাভেজি খেলছে। বাবু একটা ঢিল নিয়ে নিপাকে লক্ষ করে ছুড়ল। লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে ঢিলটি গিয়ে পড়ল নীলুর পাশে। নীলু অনেকটা ভিজে গেল। তিনজনে চমকে পিছন ফিরে দেখে তীরে বাবু দাড়িয়ে।

ইয়ে মানে আমি দুঃখিত। নিপাকে মারতে চেয়েছিলাম।

দুঃখিত হয়ে আর কি করবি। ছুরেছিলি মহব্বতের সাথে যাকে লাগবার তাকেই লেগেছে, বলল রুপা।

রাগে, লজ্জায় বাবুর মুখ বিকৃত হয়ে গেল। নীলুর খুব ভাল লাগল বাবুর এই হাবা রুপ দেখে।

মাফ করে দিলাম ইচ্ছে করেতো আর মারেননি।

বাবু আস্তে করে বলল ধন্যবাদ।

নিপা, রুপা পানি থেকে উঠে এল। তাদের পিছু পিছু নীলুও। তারা বিশাল এক বটগাছের নিচে গিয়ে বসল। প্রচন্ড ক্ষরা হওয়া সত্ত্বেও নদীর তীরের শীতল বাতাস ও বটগাছের ছায়ায় তাদের মন ভরিয়ে দিল।

হঠাৎ নিপা বলল নীলু তোকে একটা কথা বলতে ভুলেই গেছি। তোকে বলিনি ঐ যে আমাদের এক বিপদের সময় এক নায়ক এসে আমাদের সম্মান রক্ষা করেছিল। তার সম্পূর্ন কথাটি নীলু শেষ করতে দিল না,

হ্যাঁ নায়ক তো নায়িকার সম্মান রক্ষা করবেই।

কেন নায়ক শুধু নায়িকাকেই উদ্ধার করে ? সে চোখের সামনে যার যারই বিপদ দেখে, এগিয়ে যায়, তাই নয় কি ?

হ্যাঁ তা ঠিক। তবে এতদিন পরে আবার সেই নায়কের কথা কেন বলছিস ?

কারন সেই নায়কের সাথে তোর পরিচয় করিয়ে দিব।

ঠিক আছে সে রকম কোন শক্তিশালী সাহসী ছেলের সাথে পরিচয় কেন আমি প্রেম করতেও রাজি আছি, বলেই বাবুর উপস্থিতি টের পেয়ে সে লজ্জা পেয়ে যায়।

তালি দিয়ে উঠে নীপা ও রুপা। ঠিক বলেছিস তো।

হ্যাঁ একশ ভাগ ঠিক। আস্তে করে বলে সে।

নায়ক এখন তোর পাশেই বসা।

মানে ?

মানে এই বাবুই সে নায়ক। কি ?

লজ্জায় নীলু মাথা নিচু করে ফেলে। প্রচন্ড লজ্জা ও অপমান নীলুর সারা মুখ দখল করে ফেলে। কি করবে সে ঠিক বুঝে উঠতে পারে না। বাবু প্রচন্ড মজা পায় নীলুর এ অবস্থা দেখে। মনে মনে সে নিপাকে ধন্যবাদ দেয়। আরো ধন্যবাদ দেয় আকরাম ভাইকে কারন তিনি তাকে কারাটি প্রশিক্ষন নেওয়ার জন্য উঃসাহিত করেছিলেন। বাবুর শরীর খুব একটা মোটাও নয় আবার পাতলাও নয়। এক কথায় স্যলিড স্বাস্থ | উচ্চতায় প্রায় ৫ ফিট ১০ ইঞ্চি। তার এই শরীর দেখে আকরাম ভাই বলেছিলেন,

বাবু তোমার এই সুন্দর শরীর কাজে লাগাও, নিয়মিত ব্যায়াম কর, কারাটি প্রমিক্ষন নেও, আজকালকার যুগে আত্মরক্ষার কলা কৌশল শিখে রাখা খুব প্রয়োজন। কাল থেকেই আমার স্কুলে এস।

সেই থেকে বাবু কারাটি প্রশিক্ষন নেয়। আজকের এই দিনটি তাকে প্রমান করে দি কারাটি শুধু আত্মরক্ষার কলা কৌশল নয় এটি মেয়েদের মন রক্ষাও সহায়ক।

রুপা বলল আমার একটি কথা আছে। তোরা প্রায় সমবয়সি একই ক্লাসে পড়িস। সবচেয়ে বড়কথা তোরা খালাতো ভাই বোন। কাজেই এখন থেকে নো আপনি, কি বলিস নিপা ?

একদম ঠিক বলেছিস। আমিও এটা বলবো বলে মনে করেছিলাম। তারা বাবুকে চেপে ধরে নীলুকে তুমি করে বল।

কি বলবো ?

তোর যা ইচ্ছে।

তুমি খুব সুন্দর !

এটাতো পুরোনো কথা,

আগে একবার বলেছিস নতুন কিছু বল।

এবার বাবু যে কথাটি বলে তার জন্য কেই প্রস্তুত ছিল না।

আমি তোমাকে ভালবাসি।

সাথে সাথে নিলু উঠে দাঁড়ায় এবং দে ছুট। পরিস্থিতি দেখে নিলা রুপা স্তব্ধ হয়ে যায়। তারা বাবুর দিকে বোকার মত চেয়ে থাকে।

দিলিতো সব নড়বড় করে। কোন রকমে কথাটি বের হয় রুপার মুখ থেকে।

বিশ্বাস কর তোরা নিলুকে আমি যখন প্রথম দেখি তখন থেকেই আমার পছন্দ। আমি শুধু আমার মনের কথাটি বলেছি। এটি কি খুব অন্যায়?

নানা তুই সরাসরি বলে ভালই করেছিস। তবে তোর আরো ভাবা দরকার ছিল।

আর কত ভাববো কত রাত যে না ঘুমিয়ে কেটেছে, তোরাতো কিছুই জানিসনা। আমি কি সারা জীবন ভেবেই যাব?

না বাবু তুই ভালই করেছিস। আমি জীবনে তোর মত সাহসী ছেলে দেখিনি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস নিলু তোর মাঝে সাড়া দিবেই।

আচ্ছা নিপা ভালোবাসা মানেই কি বিয়ে প্রশ্ন করে রুপা।

অবশ্যই তবে ভালবাসার অনেক প্রকার ভেদ আছে। এই যেমন ধর বাবু নিলাকে ভালবাসে, আবার আমাকে ও তোকেও ভালবাসে। এবং খালু খালাম্মাকেতো বাসেই। তবে কথা হচ্ছে, খালা খালুকে ভালবাসে পিতামাতা হিসেবে। আমাকে তোকে ভালবাসে বন্ধু হিসেবে। আর নিলুকে প্রেমিকা হিসেবে। আর একজন প্রেমিক তার প্রেমিকাকে আরো বেশি করে কাছে পেতে চাই। কিন ্তুসমাজ এতে বাধা দেয়। তাছাড়া ধর্ম বলেওতো একটা কথা আছে। তাই প্রেমিক প্রেমিকার মিলনের উদ্দেশ্যই বিয়ে। এবার বুঝলিতো?

অবশ্যই। আমাদের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবি কবি নিপা হায়দার যখন বুঝিয়েছেন তখন না বুঝে পারি?

তাইতো খুব পেকেছিস নিপা। বাবুর কথাতে নিপা হেসে বলে ,

সবার মাঝে কাউকে না কাউকে পাকা থাকতেই হয়।

তারা উঠতে যাবে এমন সময় নিলুদের গাড়ির ড্রাইভার মানিক হাজির।

এইযে আসো তোমরা, আমরা এক্ষুনি রওনা হচ্ছি। আপনাদের ডাকতে এলাম।

মানিক ভাই কি ব্যাপার এত জ্বলদি?

স্যারের চেম্বার অব কমার্সে একটা মিটিং আছে।

ঠিক আছে চলুন।

বিয়ে বাড়ি তখন অনেকটা ফাঁক হয়ে এসেছে। খাওয়া দাওয়া অনেক আগেই শেষ হয়েছে। বরপক্ষ কনে নিয়ে চলে গেছে কিছুক্ষন আগে। নিপা, রুপা ও বাবু একসাথে বাড়িতে ঢুকে দেখল সবাই একসাথে বসে মিষ্টি মূখ করছে। করিম সাহেব ইমতিয়াজ সাহেব ও রাইহান সাহেব পাশাপাশি বসা। তাদের সকলের পে­টে মিষ্টি। নিলু বসে আছে, তার মা ও বাবুর মার মাঝে। বাবু, রুপা ও নিপা পে­টে মিষ্টি উঠিয়ে নিল। করিম সাহেব ইমতিয়াজ সাহেবকে উদ্দেশ্য করে বললেন,

কি ভাই, রায়হান ভায়েরতো খেয়ে নিলাম, আপনারটা কবে খাব ?

নিপা খিক কলে হেসে উঠে। নিলু যেন লজ্জায় মরে যায়।

আরে খাবেন এত ব্যস্ত কেন?

ইমতিয়াজ সাহেব উঠে দাঁড়ান এবার আসি, আপনারা সবাই সময় করে যাবেন একবার।

তাদের বিদায় দিতে সবায় গাড়ির কাছে এগিয়ে যায়। সুধু মাত্র বাবু ছাড়া

সেএকটি চেয়ারে মন খারাপ করে বসে থাকে। এমন সময় দেখে নিলু এগিয়ে আসছে। বাবু তাকে দেখেই উঠে দাঁড়াই। নিলু সোজা বাবুর চোখের দিকে তাকিয়ে, বলে তুমিও খুব সুন্দর ।

কথাটি শেষ করেই পিছনে ফিরে দে ছুট। বাবুর প্রচন্ড খুশি হবার কথা, কিন্তু সে খুশি হতে পারলনা। কি একটা অপরাধ বোধ তাকে গ্রাস করেছে। এর পর এক সময় বাবুরাও চলে আসে । রাতে শুয়ে বাবু সারাদিনের স্মৃতিগুলো ভাবছে। একি করলাম আমি নিলুর কাছে ছোট হয়ে গেলাম। আবার নিজ মনে শান্তনা দিল প্রেমের কাছে ছোটই কি, বড়ই কি?

চলবে___________________________________________
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×