বাংলায় একটা আঞ্চলিক প্রবাদ আছে, "কুকুরের লেজ ১২ মাস ঘি দিয়ে মালিশ করলেও সোজা হয়না।" এটা নিছক একটা প্রবাদ নয়, বাস্তব সত্য। কুকুরের লেজ সোজা হবার নয়। যেমন পরিবর্তিত হবার নয় আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতি। কুকুরের লেজ আর ক্লিনটন, বুশ, বারাক.......... এরা আসলে এপিঠ-ওপিঠ। মুসলমানদের ওরা কখনো সহ্য করতে পারেনি, পারবেনা।
ছোটোবেলায় বাংলা সিনেমা দেখার খুব ঝোঁক ছিল এবং দেখতাম। তখন সিনেমার কিছু বুঝতাম না। নায়ক-নায়িকা সম্বলিত কোনো কাহিনী টিভি পর্দায় ফুটে উঠলেই দেখতে ভাল লাগতো। এখন বুঝি এবং ভাবি। তখনকার সিনেমার একটা মূল বিষয় ছিল, "অর্থলোভী মহাজনের সম্পত্তি বন্ধক রাখা এবং তা দখল। এই আধুনিক যুগে এসে আরেক মহাজন পেলাম, আমেরিকান প্রশাসন। নানা অজুহাতে খনিজ সম্পদ সমৃদ্ধ দেশগুলোতে হানা অতঃপর দখলবাজী। এটা যুক্তরাষ্ট্রের মূল ধ্যান-ধারনা। অথচ ক্ষমতায় এসে কি হাক-ডাক না দিলেন বারাক ওবামা। কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে মুসলমানদের উদ্দেশ্যে ভাষণে কতনা অমীয় বচন ব্যয় করলেন। মুসলিম বিশ্ব ভেবেছিল, হয়তো মুসলমানদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্বেষ কিছুটা কমেছে। না, কমেনি। ওটা ছিল অর্থলোভী মহাজনের মত একটা কৌশল।
গাদ্দাফির মৃত্যু নিয়ে অনেকে অনেক রকম মন্তব্য করছেন। তবে আমার কাছে মনে হয়ে, গাদ্দাফির মৃত্যু লিবিয়দের জন্য কোনো সুফল বয়ে আনতে পারবেনা। এটা আমেরিকার আরেকটা কৌশলগত জয়। তেলসম্পৃদ্ধ এই দেশেটিতে এখন পূণর্গঠনের নামে হানা এবং দখনবাজী যেটা ওদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
চিরশত্রু লাদেনের অবস্থান বা পরমানু অস্ত্রের অযুহাতে যখন কোনো দেশে আক্রমন চালিয়ে অবাধে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয় তখন এরা অপরাধ করেনা। এদের কাছে অপরাধ সেটা, যখন কোনো রাষ্ট্র নায়ক ৪২ বছর ক্ষমতায় থাকে। একথা ঠিক যে, গাদ্দাফির ৪২ বছর ক্ষমতায় থাকা অবৈধ ছিল এবং সেদেশের জনগন তাকে প্রত্যাক্ষান করেছে। কিন্তু একটা অবৈধ সরকারকে উৎখাত করা যদি এতটাই মানবাধিকার হয়ে থাকে তাহলে ওবামার নজরটা ফিলিস্তিনে যায়না কেন? যেখানে গড়ে ওঠেছে এক অবৈধ রাষ্ট্র "ইসরাইল"। গাদ্দাফির মৃত্যুর পর শির্ত এ দেখা গেছে মানুষের উল্লাস। এটা হতে পারে মুক্তির আনন্দ।কিন্তু গাদ্দাফির সংবাদ পাওয়ামাত্র হিলারী 'ওয়াও' বলল কেন?
গাদ্দাফির পতন এবং মৃত্যু লিবীয়দের যতটা আনন্দ এবং মুক্তি দিয়েছে, ওবামা প্রশাসনকে তৃপ্তি দিয়েছে তার চেয়ে বেশী।ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। গাধা-হাতি বদল হয়েছে। বুশ থেকে ওবামা এসেছে। শুধু বদলায়নি এদের রাক্ষূসে মনোভাব। কারন একটাই, কুকুরের লেজ কোনোদিন সোজা হয়না।