somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা) শেষ নবী ও রাসূল

২৪ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ৯:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বর্তমান যুগে ইসলামের বিরুদ্ধে যে সকল ফেতনার উদ্ভব হয়েছে তার মধ্যে নবুওয়াতের দাবী অতি মারাত্মক। এই নতুন নবুওয়াতের দাবী মুসলিম জাতির মধ্যে বিরাট গোমরাহীর সৃষ্টি করে চলেছে। সুতরাং এ সংক্রান্ত পরিষ্কার জ্ঞান থাকা আমাদের জরুরী। নিম্নে এ বিষয়ে আলোকপাত করা হলো-

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা) যে শেষ নবী এবং তার পরে আর কোন নবী পৃথিবীতে আসবেন না তা পবিত্র কুরআন-হাদীস, সাহাবাগণের ইজমা ও যুক্তি দ্বারা প্রমাণিত। সুতরাং নতুন নবী হওয়ার দাবী করা এবং উক্ত দাবীদারের অনুসরণ করা কুফরী এ কাজ করা তবে তারা কাফির হয়ে যাবে। এ সংক্রান্ত প্রমাণাদি পেশ করা হলঃ

কুরআনঃ পবিত্র কুরআনের সূরা আহযাবের পঞ্চম রুকুতে উদ্ধৃত হয়েছে “মুহাম্মদ (সা) তোমাদের পুরুষদের কারো পিতা নন, বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী এবং আল্লাহ সব জিনিষের ইলম রাখেন।”
আলোচ্য আয়াতে রাসূল (সা) সম্পর্কে বলা হয়েছে তিনি খাতামুন নাবীয়্যীন বা শেষ নবী। আরবী অভিধানে ‘খাতাম’ শব্দ বেশ কয়েকটি অর্থে ব্যবহৃত হয়। যেমন-
খাতামাল আমালা অর্থ সে কাজ শেষ করে ফেলেছে।
খাতামাল এনায়া অর্থ পাত্রের মুখ বন্ধ করে দিয়েছে এবং তাতে মোহর লাগিয়ে দিয়েছে যাতে বাইরে থেকে কিছু প্রবেশ না করতে পারে এবং ভিতর থেকেও কিছু বের হতে না পারে।
খাতামাল কিতাব অর্থ পত্র বন্ধ করে তার উপর মোহর লাগিয়ে দিয়েছে ফলে পত্রটি সংরক্ষিত হবে।

আভিধানিক অর্থের দিকে লক্ষ্য করে দেখা যায়, রাসূল (সা)-এর আগমনের মাধ্যমে নবী রাসূল আগমনের ধারাবাহিকতা শেষ হয়েছে।

হাদীসের প্রমাণঃ
১. রাসূল (সা) বলেনঃ বনী ইসরাঈলদের নেতৃত্ব করতেন আল্লাহর রাসূল নবীগণ, যখন কোন নবী ইন্তেকাল করতেন, তখন অন্য কোন নবী তাঁর স্থলাভিষিক্ত হতেন, কিন্তু আমার পরে কোন নবী হবে না, হবে শুধু খলিফা। (বুখারী, কিতাবুল মানাক্বি)
২. বুখারী শরীফের কিতাবুল মানাকিরের অন্তর্ভুক্ত বাবু খাতামিন নাবিয়ীন এ উদ্ধৃত হাদীস রাসূল (সা) বলেন, “আমি এবং আমার পূনবর্গ নবীদের দৃষ্টান্ত হলো এই যে, এক ব্যক্তি একটি দালান তৈরি করল এবং খুব সুন্দর ও সুলাভনীয় করে যেটি সজ্জিত করলো। কিন্তু তার এক কোণে একটি ইটের স্থান শূন্য ছিল। দালানটি চতুর্দিকে মানুষ ঘুরে ঘুরে তার সৌন্দর্য দেখে বিস্ময় প্রকাশ করছিল এবং বলছিল, এ স্থানে একটি ইট রাখা হয়নি কেন? কাজেই আমি সেই ইট এবং আমিই শেষ নবী।”।
অর্থাৎ আমার আসার পর নবুওয়্যাতের দালান পূর্ণতা লাভ করেছে। এখন এর মধ্যে এমন কোন শূন্যস্থান নেই যাকে পূর্ণ করার জন্য আবার কোন নবীর প্রয়োজন হবে।
৩. তিরমিযী শরীফে উদ্ধৃত হাদীসঃ রাসূল (সা) বলেন রিসালাত ও নবুওয়াতের ধারাবাহিকতা খতম করে দেয়া হয়েছে। আমার পর আর কোন নবী ও রাসূল আসবে না।
৪. আবু দাউদ শরীফের কিতাবুল ফিতান এ উদ্ধৃত হাদীসঃ হযরত সাওবান (রহ) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন আর কথা হচ্ছে এই যে, আমার উম্মতের মধ্যে ত্রিশ জন মিথ্যাবাদী হবে। তাদের প্রত্যেকেই নিজেকে নবী বলে দাবী করবে। অথচ আমার পর আর কোন নবী নেই।

সাহাবাগণের ইজমার প্রমাণঃ
কুরআন ও সুন্নাহের পর সাহাবায়ে কেরামের ইজমা বা মতৈক্য হলো তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সমাজ নির্ভরযোগ্য বর্ণনা হতে জানা যায়। রাসূল (সাঃ)-এর ইনে-কালের অব্যাহিতর পরই যে সমস্ত লোক নবুওয়াতের দাবী করেছিল এবং যারা তাদের নবুওয়্যাত স্বীকার করে নেয়, তাদের সবার বিরুদ্ধে সাহাবায়ে কেরাম (রা.) সম্মিলিতভাবে যুদ্ধ করেছিলেন।
এ সম্পর্কে মুসাইলামা কায়সারের ব্যাপারটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। যে রাসূল (সাঃ)-এর ইন্তেকালের পূর্বেই রাসূলের (সা) নবুওয়্যাতকে স্বীকার করা সত্বেও শুধুমাত্র তার নবুওয়্যাতে অংশীদার হওয়ার দাবী করে চিঠি লেখেঃ
“আল্লাহর রাসূল মুয়ালামার তরফ হতে আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদের নিকট। আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আপনি জেনে রাখূন, আমাকে আপনার সাথে নবুওয়্যাতের কাজে শরীক করা হয়েছে। (তাবারী ২য় খন্ড ২৯৯ পৃঃ)

এভাবে মুহাম্মদ (সা) কে স্পষ্টভাবে নবী বলে স্বীকার করে নেয়ার পরও তাকে ইসলাম বহির্ভূত বলে ঘোষণা করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হয়েছে। সাহাবা (রা) গণ তাকে মুসলমান বলে স্বীকার করেননি এবং সাহাবা (রা)গণ তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। এ যুদ্ধের নেতৃত্বে ছিলেন হযরত আবু বকর (রা)। এ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, শেষ নবী মুহাম্মদ (সা) এ ব্যাপারে সাহাবাগণের ইজমা হয়ে গিয়েছে।

আলেম সমাজের ইজমাঃ
সাহাবাগণের পরবর্তীকালের আলেম সমাজ তথা হিজরী শতাব্দী হতে আজ পর্যন্ত মুসলিম জাহানের প্রত্যেক এলাকার আলেম সমাজ সর্বদা একমত যে, মুহাম্মদ (সা)-এর পরে কোন ব্যক্তি নবী হতে পারেনা। তারপর যে ব্যক্তি নবুওয্যাতের দাবী করবে এবং যে ব্যক্তি এই মিথ্যা দাবীকে মেনে নেবে সে কাফের এবং মিল্লাতে ইসলামের মধ্যে তার স্থান নেই।
শেষ কথা এই, মুহাম্মদ (সা)-এর পর আর কোন নবি আসবেনা এটাই স্বতঃসিদ্ধ ও প্রমাণিত।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×