somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তুমি পারো সোনা (পারসোনা!)

২৪ শে অক্টোবর, ২০১১ বিকাল ৩:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিদিশাকে খুব ছোটবেলা থেকেই অনেকে জিনিয়াস বলেই জানতো ৤ এখনো কম না৤ কাজে কর্মে সবকিছুতেই একটা জিনিয়াস ভাব থাকবেই৤ আর ভদ্রতা করে বিদিশা বলত-কি যে বলিস তোরা! আমি আবার জিনিয়াস কিসের? যাক্ সে কথা, আসল কথায় আসি৤ স্কুলে পড়ার সময় অনর্গল কথা বলতে পারতো সে৤ এখনো বলে, তবে রয়ে সয়ে, জায়গা বুঝে৤ স্কুলে বিজ্ঞানমেলা হচ্ছিল৤ দুইপক্ষ৤ দুইপক্ষের দু’টি দলে দু’জন শিক্ষক নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন৤ ছাত্র-ছাত্রীরা অপর পক্ষের ছুঁড়ে দেয়া উত্তর না পারলে সর্বশেষে দলের শিক্ষক উত্তর দেবার কথা৤ হঠাৎ বিপত্তি হলো৤ একটি প্রশ্নের উত্তর বিদিশা ঠিকমতো বুঝতে না পেরে তার দলের শিক্ষককে পাস করে দিল৤ শিক্ষকও পারলেন না৤ তিনি ছিলেন অবশ্যই অংকের শিক্ষক৤ কিন্তু পারলেন না৤ প্রশ্ন ঘুরে বোনাস হিসেবে চলে গেলো প্রতিপক্ষের কাছে৤ প্রতিপক্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে উত্তর মিলল না৤ সেই পক্ষের শিক্ষকের উত্তর দেবার পালা৤ না উনিও পারলেন না৤

আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতা৤ বুঝুন অবস্থা! বিচারক হিসেবে ঢাকা থেকে বাঘা বাঘা স্কুলের শিক্ষকগণ এসেছেন৤ এবার বুঝি স্কুলের শিক্ষার মান নিয়েই টানাটানি অবস্থা৤ এতক্ষণে বিদিশা অংকটির উত্তর কষে ফেলেছে৤ উঠে দাঁড়িয়ে মডারেটরকে বলল- উত্তরটা কি আমি দিতে পারি? নিয়মের কিছু এদিক সেদিক করে উত্তরটি গ্রহণ করার জন্য অডিয়েন্স থেকে রিকোয়েস্ট আসলে মডারেটর তা গ্রহণ করলেন৤ উত্তর শুনে বিচারকগণ যারপর নাই প্রশংসা শুরু করলেন৤ বিদিশাও কথার ফাঁকে বলে দিলেন এটা শুধু তার কৃতিত্ব নয় শিক্ষকের অবদানই মূখ্য৤ প্রতিযোগিতা শেষে স্কুলের ছাত্র-ছাত্র, শিক্ষকগণ, অভিভাবকগণ সবাই বলে উঠলেন- তুমি পারো সোনা!

ক্লাসে একবার কোন এক বিষয়ের পড়া না পারার কারণে শিক্ষক বিদিশাদের কাউকেই বেত দিয়ে আঘাত করতে ছাড়ছিল না৤ সেদিন বিদিশাও প্রচন্ড মার খেলো৤ প্রধান শিক্ষকের কাছে নালিশ করেও কোনো লাভ হচ্ছিল না৤ নতুন শিক্ষক, মাত্র কিছুদিন হলো স্কুলে জয়েন করেছেন৤ প্রধান শিক্ষক হয়তো আরও কিছুদিন তাকে দেখতে চাচ্ছেন৤ এই কারনে হয়তো কিছু বলছেন না৤ আরেকদিন সামাণ্য একটা কারণে ক্লাসের সবাইকে মারার জন্য বেত বের করেছেন তার ডেস্ক থেকে৤ ঠিক সেই মুহূর্তেই বিদিশা বলে উঠল- স্যার, আপনার হাতে কি ওটা? শিক্ষক বললেন- ফাজলামো করিস আমার সাথে? মার কাকে বলে আজ বুঝবি সবাই৤ বিদিশা বলল- স্যার, ভালো করে খেয়াল করুন, আপনার হাতে ওইটা বেত না সাপ! সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে ক্লাস রুম থেকে চিৎকার করতে করতে বের হয়ে গেলেন স্যার৤ শিক্ষকদের কমন রুমে গিয়ে কোন রকমে পড়িমরি করে বসলেন৤ এরপর থেকে ওই শিক্ষক আর ক্লাসে বেত নিয়ে ঢুকতেন না৤ তবে ঘটনা পরবর্তী কিছুদিন বিদিশা প্রধান শিক্ষকসহ সবার কাছ থেকে একটি বাক্যই শুনল- তুমি পারো সোনা!

বিদিশা এখন কোথায় আছে কি করছে সে প্রশ্ন হয়তো পাঠক আপনাদের মনে উঁকি দিতে পারে, তবে এটা বলা যাবে যে বিদিশার খোঁজ না জানলেও সেই চরিত্রটি এখনো এদিক সেদিক খুঁজে পাওয়া যাবে হরহামেশা৤ বিউটি পার্লারে গেছে সুইটি৤ গোপন একটি ছোট্ট কক্ষে নিয়ে বিউটি এক্সপার্ট বলল- ম্যাডাম এখানে আপনি ইউনিফর্মটা পরেন আর এই অফারলিস্টটা পড়ে দেখেন কোন সেবাটা আপনি আমাদের কাছ থেকে নেবেন৤ সুইটি দেখলো ছবি সহ অনেক কিছুর অফার ওই লিস্টটাতে আছে৤ দেখতে একটা পরিপূর্ণ বিউটি ম্যানুয়েল৤ ভালই লাগলো সুইটির৤ একটু পর সামনের দেয়ালে সাঁটা প্লাজমা টিভিটা অটোম্যাটিক্যালী অন হলো৤ ভিডিও চিত্র দেখানো শুরু হলো৤ ভিডিওতে লিস্টের অফারগুলোর অডিওভিজ্যুয়াল দেখা গেলো৤ বাহ্ চমৎকার সার্ভিস, অস্ফূট স্বরে সুইটি উচ্চারণ করল৤

হঠাৎ স্ক্রীনের একপাশে ভেসে উঠলো মিস সুইটি, বিউটি এক্সপার্ট কি আপনার সেবায় প্রবেশ করবে? এতো কিছু দেখে সুইটি অফার চয়েজ করতেই ভুলে গিয়েছিল৤ সম্বিৎ ফিরে পেয়ে হ্যাঁ সুচক ইঙ্গিত দিতেই দরজা ঠেলে একজন বিউটি এক্সপার্ট ভেতরে ঢুকল৤ হাফপ্যান্ট পরা৤ বুকজোড়া ভাসমান৤ চোখের ভ্রু জোড়া যেন তলোয়ারের মতো করে উপরের দিকে তোলা৤ কোমল, মোহনীয় ভঙ্গীতে বলল- ম্যাম, কোনটা শুরু করবো? সবশেষ করে বাসায় ফিরে গেলো সুইটি৤ কিছু কমন বিষয় সুইটকে তাড়া করতে থাকলো৤ আচ্ছা, স্ক্রীনে আমার নাম ভেসে উঠলো৤ আমার কাছে আসার অনুমতি চাইল৤ বাইরের কোন কন্ট্রোল প্যানেল থেকে আমার পোশাক পরিবর্তনের কোন চিত্র কি কম্পিউটারে রেকর্ড করা গেছে? চারপাশে ক্যামেরা তো দেখলাম না৤ তবে প্রাজমা টিভিতে আমার নাম ইনপুট দেয়া গেলে আউটপুট দেয়া কি সম্ভব নয়? ম্যাসাজ চলার সময় তো টিভিটা অটো অফ হয়ে গিয়েছিল৤ অনও তো অটো হয়েছিল৤ অবশ্যই তাহলে তারা কন্ট্রোল করছে ওই টিভিটা তাদের কোন গোপন কক্ষ থেকে?
প্রশ্নগুলো প্রশ্নই রয়ে গেলো৤ কাউকে বলল না৤

অনেক দিন পর স্কুলে পড়াকালীন এক বান্ধবী সুইটির বাসায় এসেছে একটি রাত যাপনের জন্য৤ ঢাকায় কি এক জরুরী অফিসিয়াল কাজ করতে হবে তার৤ ভুলে মোবাইলটা রেখে গেছে বিছানার ওপর বাইরে বেরুনোর সময়৤ বিছানাটা ঠিক করে সুইটি বাইরে বের হবে ঠিক এমন সময় মোবাইলটা বেজে উঠলো৤ রিসিভ করতে করতে লাইন কেটে গেলো৤ মোবাইলের ফোরকী বাটনের বাম পাশের বাটনটিতে আঙ্গুলের চাপ পড়তেই ভিডিও লিস্ট বের হলো৤ থ্রিজিপি কিছু ভিডিও ফাইল দেখলো সুইটি৤ কৌতূহল বশতঃ একটি থ্রিজিপি'র প্লে তে চাপ দেয়ার সাথে সাথেই মুখাবয়ব ঢেকে দেয়া যে নারীটির দিগম্বর ভিডিও চলতে থাকলো সে আর কেউ নয় এই সুইটি৤ সুইটি নিশ্চিত ওই দিনের ম্যাসাজ পার্লারের সেই ভিডিও চিত্র৤ পার্লারের নামটা এখনো চোখে ভাসে৤ এখন আরও সুনাম পাশাপাশি দূর্নামও করেছে৤ পারসোনা৤ এই কাহিনী নতুন নয়৤ অনেক আগের৤ যে কাহিনীর চিত্রনাট্য লেখা হয়েছে পারসোনার সৃষ্টিলগ্ন থেকে সেই কাহিনী ফিল্ম হয়ে বনানীতে মুক্তি পেলো৤ মোবাইলটা ছুঁড়ে ফেলে বিছানায় চোখমুখ বুঁজে কষ্টে, ঘৃণায় কাঁদলো সুইটি আর উচ্চারণ করলো- পারসোনা, তুমি পারো সোনা!
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যমদূতের চিঠি তোমার চিঠি!!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:০৮

যমদূতের চিঠি আসে ধাপে ধাপে
চোখের আলো ঝাপসাতে
দাঁতের মাড়ি আলগাতে
মানুষের কী তা বুঝে আসে?
চিরকাল থাকার জায়গা
পৃথিবী নয়,
মৃত্যুর আলামত আসতে থাকে
বয়স বাড়ার সাথে সাথে
স্বাভাবিক মৃত্যু যদি নসিব... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×