somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পথিক অন্তবিহীন পথে চলছে

১৩ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সসীম যখন অসীমের সাথে কোনভাবে যুক্ত হয় তখন সসীম অসীমের রুপের কিয়দাংশ দশনেই বিমোহিত হয়ে পড়ে।আসলে অন্তহীন পথে ছুটে চলে অনেক পথিক যাদের জীবন ও অস্তিত্বের আদি-অন্ত আছে। এইযে অনন্তকালের নিশ্চিত গন্তব্যস্থল বা যাত্রাপথ এখানে অনেক সৃষ্টিই নিজের অজ্ঞতার কারণে সীমাবদ্ধতা ভুলে বেপরোয়া আচরণ করে। এতে স্রষ্টা কিংবা সীমা-পরিসীমাহীন কালের কোন ক্ষতি হয় না ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেই পথিকটি। কেউ দিকভ্রান্ত হলে সেই দিকের দোষ নয়, পথভ্রষ্ট হলে সেই পথকে দোষারোপ করে লাভ নেই। বড় দোষ সেই পথভ্রষ্ট বা দিকভ্রান্ত পথিকটির।

সৃষ্টি কখনো স্রষ্টার চেয়ে বড় হতে পারে না। অনেকে ঘোড়ার চেয়ে চাবুকের দাম বেশি দিতে চায় এটা নিছক বিভ্রান্তি। প্রতিটি সৃষ্টিরই সীমাবদ্ধতা আছে। এই সীমাবদ্ধতা তার ক্ষমতা বা সামথ্যে,অস্তিত্বের সময়কালের, প্রভাব বা নিয়ন্ত্রণ বলয়ের।যখন চিরস্থায়ী কিছুর চেয়ে কেউ ক্ষণস্থায়ী কিছুকে প্রাধান্য দেয় তখন সেটাকে অজ্ঞতা-মূখতা বললে ভুল হবে না।কেননা সাময়িক প্রাপ্তির আনন্দে বৃহত্তর স্বাথ ভুলে যাওয়াটা খুব বুদ্ধিমানের কাজ নয়। বিদ্যা বুদ্ধি ছোট্ট শিশুর স্তরে থাকলেই কেবল ক্ষণভঙ্গুর চাকচিক্য ও আকষণে ভুলে থাকা যায়।ফলে অসীমের সন্ধান যে পেয়েছে সসীমের মাঝে সে সম্পণ হারিয়ে যেতে চাইবে না।

মানুষ যা পায় তাতেই যদি তৃপ্ত হয়, যাচাই বাছাই না করে তবে বিচার বিবেচনা বোধহীনতার কারণে অস্তিত্বের বিলয়কেই স্বাগত জানাবে।জীবনের অস্তিত্বের সংকটের সাথে জগতের অস্তিত্ব হুমকি জড়িয়ে আছে।অথাৎ জগৎটা ভাল না থাকলে জীবন ভাল থাকবে না আর প্রাণে রস না থাকলে দেহটাও অথহীন হয়ে পড়বে।এখন বিবেচ্য বিষয় হল- কে নিজ অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার স্বাথে অন্যের অস্তিত্বের জন্যে হুমকি হিসাবে আবিভুত হয় আবার কেউবা অন্যের অস্তিত্বের জন্যে হুমকি হয়ে নিজেকেই বিপদাপন্ন করে তুলে।সাময়িক ক্ষুদ্র স্বাথকে গুরুত্ব দিলে বৃহত্তর কল্যাণ লাভ করা যায় না।

কেউ কেউ হয়ত বলবেন, ধ্বংসই নতুন সৃষ্টির আগমন বাতা। তবে ধ্বংসাত্মক-আক্রমণাত্মক পথ ধরে স্বাভাবিক সৃষ্টি বা বিকাশ লাভ হয় না। তার মানে আমি এটা বলছিনা যে,অস্থিতিশীল ও অস্বাভাবিক অবস্থা সবসময় তূলনামূলক মঙ্গলময় কোন কিছুর জন্ম নেয়ার প্রতিবন্ধক তবে এটা বলছি সুস্থ-স্বাভাবিক-স্থিতিশীল পরিবেশেই অধিকতর সৃজনশীল ও রুচিশীল কাজ হওয়াটা সহজসাধ্য।তার মানে এই যে, ভেঙ্গে চূড়ে-চূণ বিচূণ করে মঙ্গলজনক কিছু হাসিল করা যেতেই পারে তবে সমঝোতা-সমন্বয়-সংমিশ্রণ-সংযোজন-বিয়োজন-পরিমাজন করেও অধিকতর কল্যাণকর নবতর পথ-পদ্ধতি-পন্থা বের হতে পারে।

গড়তে হলে ভাঙ্গতে হবে-ঠিক আছে। কিন্তু ভাঙ্গনটা যাতে বিদ্যমান অবস্থা বা পরিস্থিতির উত্তরোত্তর উন্নতির কারণ হয়।সৃষ্টির জন্যে ভাঙ্গা আর ভাঙ্গার জন্যে ভাঙ্গা এক নয়।অপরিকল্পিত কমপ্রয়াস আর পরিকল্পিত কমপ্রচেষ্টার ফলাফল এক হবেনা। সুচিন্তা থেকে সুকম আবার সুকম থেকেও সুচিন্তা । আসলে গ্রহণ বজনের খেলায় খেলোয়াড়ের বিবেক বিবেচনা অনেক সময় মানদন্ড হিসাবে চিহিৃত হয়। তবে অধিকাংশক্ষেত্রেই মূল্যায়ন বা বিশ্লেষণেরক্ষেত্রে ভেতরের উদ্দেশ্যটাই দেখা হয় না বাইরের ক্রিয়া-মিথষ্ক্রিয়া-প্রভাব-ফলাফলটা দেখা হয়।

কোন শত্রু পক্ষের নৌকায় আরোহী যদি অন্যদেরকে ডুবিয়ে মারার অভিপ্রায়ে সবার চোখের আড়ালে নৌকাটাকে ছিদ্র করে তবে তার জীবনটাও বিপদাপন্ন হবে।এখন জীবনটাকে মৃত্যুর মুখোমুখি স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে কেউ দাঁড় করায় কখন যখন জীবনের চেয়েও মূল্যবান কোন কিছুর ক্ষতির আশংকা থাকে। অথাৎ গুরুত্বদান বা অগ্রাধিকার দেয়ার ক্ষেত্রে মানুষের স্থান-কাল-পাত্র ভেদে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়।কেউ কয়েক লক্ষ টাকা কিংবা কয়েক বিঘা জমির বিনিময়ে তার জীবনটাকে দিয়ে দিতে চাইবেনা তবে দেশের স্বাধীনতা-মানুষের মুক্তি-আদশ বা চেতনার বিজয়তে তরান্বিত করার জন্যে নিজেকে সম্পূণ উৎসগ করতেও কাপণ্যতা করবে না।আবার কেউ হয়ত দেশ-জাতি-ধম গোল্লায় যাক তাতে প্রতিবাদ করবে না, প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করবে না অথচ সামান্য অথসম্পদের লোভেই হিংসা-বিদ্বেষ-মারামারি-কাটাকাটি-হানাহানিতে জড়িয়ে নিজেকে নি:শেষ করে দিবে।

নদীতে নৌকা চলে। বিশাল জলরাশির বুকে বৈঠার আঘাতের পর আঘাত, আন্দোলিত হয়, ঢেউ সৃষ্টি হয়। তবে সেই ঢেউ মিলিয়ে যায়, আঘাতের চিহৃ থাকে না। বালিযুক্ত কোন পথে হেটে চলা পথিকের পদচিহৃ থাকে তবে মুষলধারে বৃষ্টি হলে সেই দাগ আর থাকে না।জীবনটা কি তেমনি? কচুঁ পাতার পানির মত! আজ যা বতমান কাল তাই অতীত।কিন্তু যা অতীত তার কি আর কোন হিসাব- নিকাশ-পাশ্বপ্রতিক্রিয়া নেই? বাস্তবতা হচ্ছে,বিশ্বাসে পাথক্য থাকলে সকল কমে সামঞ্জস্য আশা করাটাই অযৌক্তিক।

আমার দাদা কৃষক ছিল এটা আর কি এমন কথা। আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের দাদাতো কাঠুরিয়া ছিলেন।তাহলে এত বংশ দেখে বিবেচনার কি মানে? এক আদম থেকেইতো গোটা মানবজাতি!একজন সাধারণ মানুষ মরলেই কি আর এমন হয়! অথচ প্রিন্সেস ডায়নার কবরের উপর ১৫হাজার টন ফুল ছিটানো হয়েছে।প্রশ্ন হলো এত ফুলে মৃত ডায়নার কি এমন লাভ? মূলত: মৃতের প্রতি জীবিতদের ভালবাসার বহি:প্রকাশ মাত্র।ব্যক্তি বিশেষে অনেক ঘটনার ব্যাখ্যাই ভিন্নমাত্রা পেতে পারে।যেমন: ভারতের প্রেসিডেন্ট এপিজে আবুল কালাম জীবনে বিয়েই করেন নাই! এখন গ্রামের কোন ক্লাবের প্রেসিডেন্ট তার পথ ধরলেই কি তার মত সম্মান পাবে? ব্যক্তিত্বের পরিসরে ভিন্নতা আচরণগত মিলের পরেও ভিন্নধমী গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতে পারে।

কিছু মানুষ আছে যাদের কাজকম দেখলে মনেই হবে না যে, তাদের মাথাটা কাজ করছে। কাঁকড়া যেমন মাথা ছাড়াই চলে অনেকে যেন সেরকমই চলে, সেরকমই বলে। মাথাটা খাটাতেই চায়না যেন মাথা না হলেও চলতে পারত বলে বোধ হয়। যারা অপদাথ, অকমা। এত অলস মানুষের পক্ষে অথবিত্তের মালিক হওয়া কিংবা জীবনে সাফল্য লাভ এত সহজ নয়। অবশ্য যদি মি. জোট এর মত হস তাহলে ভিন্ন কথা। তিনিতো এক মাসে ৯৬০০০ টাকার রক্তই বিক্রি করেছিলেন।ব্যক্তির রুচি-অভিরুচি অনেক সময় গুরুত্বপূণ কিন্তু এর চেয়েও বেশি গুরুত্বপূণ হয়ে ওঠে পরিবেশ।যেমন:জামানীর ফ্রাংকফুট শহরে গাছপালার চিকিৎসার জন্যও চিকিৎসক রয়েছে।আর আমাদের দেশে অনেকে বিনা চিকিৎসায় মারা যায়। ফলে এদেশে বসে সেই দেশের মানুষের জীবন-জীবিকার সাথে নিজেদের তুলনা করার কোন লাভ আছে কি? বোধহয় অথহীন হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:৩১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জুমার নামাজে এক অভূতপূর্ব ঘটনা

লিখেছেন সাব্বির আহমেদ সাকিল, ১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০



মসজিদের ভেতর জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাহিরে বিছিয়ে দেয়া চটে বসে আছি । রোদের প্রখরতা বেশ কড়া । গা ঘেমে ভিজে ওঠার অবস্থা । মুয়াজ্জিন ইকামাত দিলেন, নামাজ শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। হরিন কিনবেন ??

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৯



শখ করে বন্য প্রাণী পুষতে পছন্দ করেন অনেকেই। সেসকল পশু-পাখি প্রেমী সৌখিন মানুষদের শখ পূরণে বিশেষ আরো এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মাত্র ৫০ হাজার টাকাতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঠিক কোন বিষয়টা মৌলবাদী পুরুষরা শান্তি মত মানতে পারে???"

লিখেছেন লেখার খাতা, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৭


ছবি - গুগল।


ফেসবুক আর ইনস্টাগ্রাম এখন আর শুধু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নয়, রোজগার এর একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্মও। একটু স্মার্ট এবং ব্রেন থাকলে ফেসবুক/ইনস্টাগ্রাম থেকে রোজগার করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধখানা ভ্রমন গল্প!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৩৯


২০০২ সাল বান্দারবানের রিগ্রিখ্যাং-এর এই রিসোর্ট আজ সকালেই আমরা আবিস্কার করলাম! পাহাড়ের এত উপরে এই মোড়টাতে একেবারে প্রকৃতির মাঝে এমন একটা রিসোর্ট থাকতে পারে তা আমরা সপ্নেও কল্পনা করিনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×