somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বাস কর, আমি এখন আর ছাদে যাই না !!!!!

২১ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ২:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কখনো ভাবতেই পারিনি আমি কারো ভালোবাসা পেতে পারি । কেউ আমার জন্য ভাবতে পারে এমন কোনো ধারনাই যে আমার ছিল না । তারপর ও কিভাবে যেন তুমি আমার জীবনে এসে পড়েছ। আমার জীবনে খুবই ধীর গতিতে তোমার প্রবেশ করার কাহিনী না হয় সবার অজানাই থাকল। সবাই না হয় না জেনেই থাকল অনেক ঘটনার মাধ্যমে আমার জীবনে তুমি কিভাবে জড়িয়ে গেছ।

আমাদের সম্পর্কের তখন খুব সুদিন যাচ্ছে। নিয়মিত আমাদের যোগাযোগ হচ্ছে। ফোনে কথা হচ্ছে। কিন্তু এর ভিতর একটা সমস্যা হল, ওর তো নিজস্ব কোনো ফোন নাই। রাতের বেলা বাবার মোবাইলটা কোনো ভাবে চুরি করে নিজস্ব একটা সিমকার্ড ভরে তারপর আমাকে ফোন দিত। এইবার বলি আমার সমস্যা। আমার সমস্যা ও কিন্তু কোনো দিক দিয়ে কম না। তখন ভাইয়া আর আমি এক রুমে ঘুমাতাম। আর যেহেতু রাত ছাড়া কোনো ভাবেই ওর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব না, তাই রাতে তো ওর সাথে আমার কথা বলতেই হবে। রুমে বসে তো আর ওর সাথে কথা বলা যাবে না। কারন ভাইয়াকে তখন আমি যমের মত ভয় পাই। যেই রুমে ভাইয়া ঘুমাচ্ছে, সেই রুমে আমি ওর সাথে কথা বলব এইটা তো হইতেই পারে না। কে খাইতে চায় মাঝরাতে ভাইয়ার ঝাড়ি। কি আর করার !! নিরুপায় হয়ে আমাকে বেছে নিতে হল আমাদের বাসার ছাদ।

এই ভাবেই শুরু হয় আমাদের রাতে কথা বলা। সময় হলেই কোনো না কোনো ভাবে আমি গিয়ে ছাদে হাজির হতাম। আর শুরু হত আমাদের কোনো বিষয়বিহীন কথাবার্তা। যার কোনো আগা ও নাই মাথা ও নাই। আর এই ছাদে কথা বলার ক্ষেত্রে আমাকে সব চেয়ে বেশি সাহায্য করেছে এই দেশের অনিয়ম। কিছুটা অবাক হওয়ার মতই কথা !! অনিয়ম কিভাবে আবার সাহায্য করে। একটু খুলে বলি। রাতের একটা নির্দিষ্ট সময়ে আমাদের বাসার কারেন্ট চলে যেত। আমি গরমের উছিলা দিয়া ছাদে চলে যেতাম। আমিই মনে হয় একমাত্র মানুষ যে কারেন্ট যাওয়ার কারনে উপকৃত হতো। আমি অধির আগ্রহে অপেক্ষা করতাম কখন কারেন্ট যাবে। অবশ্য সত্যি কথা বলতে কি, আমাদের দেশের এই অনিয়ম কিন্তু আমাকে খুব একটা নিরাশ করে নাই। যেই ভাবেই হোক কারেন্ট যাইতই। তবে ডেসা অফিসের লোকদের ভুলে যদি আমাদের কারেন্ট না যাইত আমার চেয়ে অখুশি মনে হয় কেউই হইত না।

কত রাত তোমার সাথে কথা বলে পার করেছি। ভাইয়ার ঘুমটা খুব গভীর হওয়ায় ভাইয়া কিন্তু কখনই আমার এই কুকীর্তি টের পায় নাই। কত মধুর স্বপ্ন দেখেছি।কত কথা যে বলেছি। কত স্বপ্ন যে এঁকেছি। কত ভাবে কত প্ল্যান করেছি!! কোথায় কোথায় আমরা ঘুরতে যাব , কি কি করব !! ওর জীবনের সব চেয়ে বড় একটা ইচ্ছা ছিল, কোনো একটা নাইটকোচ এ ও আমার বুকে মাথা রেখে যাচ্ছে। সারা রাত আমরা কেউ ঘুমাচ্ছি না। শুধুই চেয়ে আছি জানালা দিয়ে বাইরে।যেই আকাশে থাকবে অনেক তারা। আর আমরা পেরিয়ে যাব হাইওয়ের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সবগুলো গাছ।

আজ কিন্তু তুমি আমার পাশে নেই। তোমার চোখের দিকে তাকালে কিন্তু আমাকে দেখা যায় না। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় কিন্তু তোমার একবার ও মনে পড়ে না যে একটি ছেলের সাথে কথা না বললে তুমি ঘুমাতে পারবে না। তোমার মনে একবার ও জেগে উঠে না কোনো নাইটকোচ এর সিটে বসে রাতের তারা দেখার স্বপ্ন। তুমি হয়ত ভুলে গেছ তোমার সব প্রতিশ্রুতি।

কিন্তু আমি?????

আমি কিভাবে ভুলে যাই যে আমার জীবনে একজন ছিল। যার কন্ঠ না শুনলে আমার ঘুম আসত না। যার ছবিগুলো যে এখনো আমার চোখে ভেসে উঠে। আমার কম্পিউটার এর কোথাও কেন দৃশ্যমান অবস্থায় তোমার কোন ছবি নেই??? কেন তোমার সব ছবি আমাকে পাসওয়ার্ড দিয়ে লুকিয়ে রাখতে হয়??? কেন তোমার ছবিগুলো আমি কাউকে দেখিয়ে বলতে পারি না, এই মেয়ে টাকে আমি আমার সব কিছুর বিনিময়ে পেতে চেয়েছিলাম, চাই, চাইব??? কেন তোমার দেয়া সবগুলো মেসেজ দেখে এখনো আমাকে চোখের পানি ফেলতে হচ্ছে???আমার অপরাধ কি ছিল??? তুমি তো ঠিকই ভাল আছ। কিন্তু কেন আমি আমার প্রতিদিনের রুটিনের মত ছাদে যেতে পারি না???

সব শেষ কথাটুকু শুধুই তোমাকে বলছি। তুমি বিশ্বাস কর, তোমাকে হারানোর পর আর কখনই আমি আমার বাসার ছাদে যাইনি। কারন ছাদে গেলেই যে আমার চোখে ভেসে উঠবে তুমি!!! তোমাকে তো আমার হাত বাড়িয়ে ধরতে ইচ্ছা করবে, কিন্তু আমি তোমায় কই পাব??? তুমি শুধু নিজে চলে যাও নি সাথে করে নিয়ে গেছ আমার জীবনের সবকিছু !!!

ভাল থেকো। সুখে থেকো।
১৬টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্যামুয়েল ব্যাকেট এর ‘এন্ডগেম’ | Endgame By Samuel Beckett নিয়ে বাংলা ভাষায় আলোচনা

লিখেছেন জাহিদ অনিক, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৮



এন্ডগেম/ইন্ডগেইম/এন্ডগেইম- যে নামেই ডাকা হোক না কেনও, মূলত একটাই নাটক স্যামুয়েল ব্যাকেটের Endgame. একদম আক্ষরিক অনুবাদ করলে বাংলা অর্থ হয়- শেষ খেলা। এটি একটা এক অঙ্কের নাটক; অর্থাৎ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রায় ১০ বছর পর হাতে নিলাম কলম

লিখেছেন হিমচরি, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১

জুলাই ২০১৪ সালে লাস্ট ব্লগ লিখেছিলাম!
প্রায় ১০ বছর পর আজ আপনাদের মাঝে আবার যোগ দিলাম। খুব মিস করেছি, এই সামুকে!! ইতিমধ্যে অনেক চড়াই উৎরায় পার হয়েছে! আশা করি, সামুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাঙ দমনের নেপথ্যে এবং রাষ্ট্রীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের সমন্বয়

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৭


ব্যাঙ দমনের বাংলায় একটা ইতিহাস আছে,খুবই মর্মান্তিক। বাংলাদেশে বহুজাতিক কোম্পানির কোন সার কেনা হতো না। প্রাচীন সনাতনী কৃষি পদ্ধতিতেই ভাটি বাংলা ফসল উৎপাদন করতো। পশ্চিমবঙ্গ কালক্রমে ব্রিটিশদের তথা এ অঞ্চলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পজ থেকে প্লে : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

লিখেছেন বন্ধু শুভ, ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১৫


.
একটা বালক সর্বদা স্বপ্ন দেখতো সুন্দর একটা পৃথিবীর। একজন মানুষের জন্য একটা পৃথিবী কতটুকু? উত্তর হচ্ছে পুরো পৃথিবী; কিন্তু যতটা জুড়ে তার সরব উপস্থিতি ততটা- নির্দিষ্ট করে বললে। তো, বালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামে ভুল থাকলে মেজাজ ঠিক থাকে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৫


বেইলি রোডে এক রেস্তোরাঁয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে একজন একটা পোস্ট দিয়েছিলেন; পোস্টের শিরোনামঃ চুরান্ত অব্যবস্থাপনার কারনে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডকে দূর্ঘটনা বলা যায় না। ভালোভাবে দেখুন চারটা বানান ভুল। যিনি পোস্ট দিয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×