somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কবি ফররুখ আহমদ: একজন প্রকৃত মানবতার কবি

১৯ শে অক্টোবর, ২০১১ সকাল ১১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

[আজ কবি ফররুখ আহমদের ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে অনেক দিন আগের তৈরি করা এই লেখাটি ব্লগে শেয়ার করলাম। লেখাটি মূলত: ছোটদের উদ্দেশ্যে। তবে বড়োদের পড়তে কোন আপত্তি নেই।]
কবি-সাহিত্যিকরা তাঁদের গভীর চিন্তাকে পাঠকদের সামনে অত্যন্ত সহজভাবে তুলে ধরেন। কবিতা বড়োদের যেমন আকর্ষণ করে ঠিক তেমনি ছোটদেরও আনন্দিত করে। বিশেষ করে ছড়া। পৃথিবীর সকল কবিগণই তাই তো ছোটদের জন্য আলাদাভাবে কবিতা ও ছড়া লিখে গেছেন এবং এখনও লিখছেন। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামসহ বাংলা ভাষায় প্রায় সবাই শিশু-কিশোরদের জন্য লিখেছেন অসংখ্য ছড়া। আমাদের জাতী জাগরণের কবি হিসেবে খ্যাত ফররুখ আহমদও শিশু-কিশোরদের জন্য লিখেছেন অনেক মজাদার ও শিক্ষণীয় ছড়া।

কবিকে অনেকেই ‘ইসলামী রেঁনেসার কবি’ বলে থাকেন। আসলে তিনি শুধুমাত্র ইসলামী রেঁনেসার কবি নন, বরং তিনি একজন প্রকৃত মানবতার কবি। তিনি অনেক বড়ো কবি। তাঁর মতো কবিদের খন্ডিত করা উচিত না। কারণ প্রকৃত অর্থে সকল মানুষের জন্যেই তিনি কবিতা লিখেছেন।

শিশু-কিশোরদের জন্য ফররুখ আহমদ প্রচুর ছড়া-কবিতা লিখেছেন। তিনি শুধূই শিশু-কিশোরদের উপযোগী লেখা লিখে ক্লান্ত হননি, লিখেছেন এক্কেবারে সোনামণিদের জন্যেও। তাঁর ‘হরফের ছড়া’ গ্রন্থটি এরই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আসলে ফররুখ আহমদের কোন তুলনা হয় না। এ জন্যে কেউ তাঁকে সহজে ভুলতে পারে না। আর ভুলে থাকা কী সম্ভব? ধরা যাক একসময় তাঁকে আমরা ভুলেই গেলাম। অমনি শুরু হলো বৃষ্টি! ঠিক তখনই হৃদয়ে দোলা দিয়ে উঠবে তাঁর সেই বিখ্যাত ছড়াটিঃ
‌বিষটি এলো কাশবনে
জাগলো সাড়া ঘাস বনে
বকের সারি কোথারে
লুকিয়ে গেল বাঁশ বনে।
নদীতে নাই খেয়া যে,
ডাকলো দূরে দেয়া যে,
কোন্ সে বনের আড়ালে
ফুটলো আবার কেয়া যে!

প্রিয় কবি ফররুখ একজন রোমান্টিক কবিও বটে! শিশু-কিশোরদের তিনি দারুণ ভালবাসতেন। ভালবাসতেন সব মানুষকে। এমন কি প্রকৃতির প্রতিও ছিল তাঁর অফুরন্ত ভালবাসা। তাঁর 'শরতের সকাল', 'পউষের কথা' কিংবা 'হৈমন্তীর সুর' কবিতাগুলোর কোন তুলনা কী বাংলা সাহিত্যে আছে? 'ফাল্গুনে' শিরোনমের কবিতাটি পড়লেই আমরা তাঁর প্রকৃতির প্রতি ভালবাসার কিছুটা নিদর্শন পেয়ে যাই-

'ফাল্গুনে শুরু হয় গুনগুনানী,
ভোমরাটা গায় গান ঘুম ভাঙানি,
এক ঝাঁক পাখি এসে ঐকতানে
গান গায় এক সাথে ভোর বিহানে,
আযানের সুর মেশে নীল আকাশে
শির শির করে ঘাস হিম বাতাসে,
আচানক দুনিয়াটা আজব লাগে
আড়মোড়া দিয়ে সব গাছেরা জাগে,
লাল নয়, কালো নয়, সবুজ ছাতা
জেগে ওঠে একরাশ সবুজ পাতা,
হাই তুলে জাগে সব ফুলের কুঁড়ি
প্রজাপতি ওড়ে যেন রঙিন ঘুড়ি।'

বাংলা ভাষায় এমন কোন কবিকে খূঁজে পাওয়া কষ্টকর হবে, যার কবিতায় পাখির কথা নেই। কিন্তু কবি ফররুখ আহমদের পাখি বিষয়ক ছড়া-কবিতাগুলোর স্বাদই অন্যরকম! পাখি নিয়ে তাঁর অনেক বিবিত্রধর্মী ছড়া-কবিতা আছে। এখানে মাত্র কয়েক লাইন তুলে ধরছিঃ

'নদী নালার দেশে আবার আসে দূরের হাঁসগুলো,
চমকে ওঠে তাল, সুপারি, নারকেল গাছ, বাঁশগুলো।
নানান রঙের ঝিলিক দিয়ে পাখিরা সব যায় চলে,
হাজার সুরে দূর বিদেশের খবর তার যায় বলে।
পর পাখনা নাড়া দিয়ে রঙিন পাল যায় রেখে
ঝিল হাওরে, নদীর তীরে পাখিরা সব যায় ডেকে।'

কবি ফররুখ আহমদ বেশ কিছু মজাদার হাস্যরসের ছড়াও লিখেছেন। তবে সে সবের আলাদা বৈশিষ্ট হলো এই যে, তাতে শুধু হাসি আর কৌতুকই থাকে না, সেখানে থাকে জানা ও শেখার অনেক কিছু। এ ছাড়া কবির 'সিন্দাবাদ ও বুড়োর কিসসা', 'দুষ্ট জ্বিনের কিসসা', 'হাতেম তায়ীর কিসসা' ও 'নৌফেল বাদশা' প্রভৃতি দীর্ঘ কবিতাগুলো পড়লেও যেমন আনন্দিত হওয়া যায়, তেমনি অনেক কিছু শেখা যায়।

ব্যক্তি জীবনে কবি ফররুখ আহমদ ছিলেন অত্যন্ত জ্ঞানী। ছাত্র জীবনে তিনি খুব ভাল ছাত্র ছিলেন। ক্লাসে সবসময় প্রথম হতেন। সব সময় সাধারণ জীবন যাপনে অভ্যস্থ ছিলেন মানবতাবাদী এই কবি। অর্থ-বিত্তের লোভ কখনোই তাঁকে লালায়িত করেনি। তাঁর যে খ্যাতি এবং পরিচিতি ছিল তা দিয়ে তিনি চাইলেই অঢেল সম্পদের মালিক হতে পারতেন। কিন্তু তান না করে তিনি অর্থ কষ্টে দিন যাপন করেও কারো কাছে হাত পাতেননি। আমাদেরও তিনি তাঁর কবিতায় হাত না পাতারই পরামর্শ দিয়েছেন। কবি বলেছেনঃ
‘তোরা চাসনে কিছু কারো কাছে খোদার মদদ ছাড়া,
তোরা পরের উপর ভরসা ছেড়ে নিজের পায়ে দাঁড়া।’

আগেই বলেছি শিশু-কিশোরদের কবি ফররুখ আহমদ খুবই ভালবাসতেন। কবি তাদের সাথে প্রাণ খুলে কথা বলতেন, আদর করতেন। আর সেজন্যই তো কবি ফররুখ আহমদ ছোটদের জন্য লিখে গেছেন মজাদার এবং উপদেশমূলক অনেক বই।

১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১০ জুন বর্তমান মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার মাঝআইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আমাদের এই প্রিয় কবি। পুলিশ ইন্সপেক্টর খান সাহেব সৈয়দ হাতেম আলী এবং বেগম রওশন আরার দ্বিতীয় পুত্র ছিলেন ফররুখ। নিজ গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু। পরে কলকাতার তালতলা মডেল স্কুল ও বালিগাঁও হাইস্কুল এবং খুলনা জিলা স্কুলে পড়াশোনা করেন। শেষোক্ত স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাস করে কলকাতা রিপন কলেজে ভর্তি হন ও ১৯৩৯ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। সেখানকার স্কটিশ চার্চ কলেজ ও সিটি কলেজেও তিনি লেখাপড়া করেছেন। পরে প্রথমে দর্শন ও পরে ইংরেজিতে অনার্স পড়তে ভর্তি হলেও কবিতার প্রতি প্রচণ্ড আগ্রহের কারণে তিনি তা শেষ করতে পারেননি। স্কুলজীবনেই তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। কবি গোলাম মোস্তফা, অধ্যাপক আবুল ফজল ও কবি আবুল হাশেমের মতো বিখ্যাত ব্যক্তিরা তাঁর শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
ছাত্রজীবনে তিনি মানবেন্দ্রনাথ রায়ের মানবতাবাদী আন্দোলনে আকৃষ্ট হয়ে বামপন্থী মনোভাব পোষণ করতেন। পরবর্তীতে তিনি পুরোপুরি ইসলামী আদর্শের অনুসারী হয়ে যান।

কবি ফররুখ আহমদ ১৯৪২ সালে চাচাতো বোন সৈয়দা তাইয়্যেবা খাতুনকে বিবাহ করেন। ১৯৪৩ সালে আইজি প্রিজন অফিসে তার কর্মজীবন শুরু হয়। ১৯৪৪ সালে তিনি কলকাতায় এরপর সিভিল সাপ্লাই ডিপার্টমেন্টেও কিছু দিন কাজ করেন। ১৯৪৫ সালে তিনি বিখ্যাত মাসিক মোহাম্মদী পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। দেশ বিভাগের পরপরই তিনি রেডিও পাকিস্তান ঢাকায় যোগদান করেন। ১৯৭৪ সালের ১৯ অক্টোবর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এখানকার স্টাফ আর্টিস্ট ছিলেন।


-----------কবি ফররুখ আহমদের বিখ্যাত কবিতা 'পানজেরি'-------

পানজেরি
ফররুখ আহমেদ

রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?
এখনো তোমার আসমান ভরা মেঘে?
সেতারা, হেলার এখনো ওঠেনি জেগে?
তুমি মাস্তলে, আমি দাঁড় টানি ভুলে;
অসীম কুয়াশা জাগে শূন্যতা ঘেরি।

রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?
দীঘল রাতের শ্রান্তসফর শেষে
কোন দরিয়ার কালো দিগন্তে আমরা পড়েছি এসে?
এ কী ঘন-সিয়া জিন্দেগানীর বা’ব
তোলে মর্সিয়া ব্যথিত দিলের তুফান-শ্রান্ত খা’ব
অস্ফুট হয়ে ক্রমে ডুবে যায় জীবনের জয়ভেরী।
তুমি মাস্তুলে, আমি দাঁড় টানি ভুলে;
সম্মুখে শুধু অসীম কুয়াশা হেরি।

রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?
বন্দরে বসে যাত্রীরা দিন গোনে,
বুঝি মৌসুমী হাওয়ায় মোদের জাহাজের ধ্বনি শোনে,
বুঝি কুয়াশায়, জোছনা- মায়ায় জাহাজের পাল দেখে।
আহা, পেরেশান মুসাফির দল।
দরিয়া কিনারে জাগে তক্দিরে
নিরাশায় ছবি এঁকে!
পথহারা এই দরিয়া- সোঁতারা ঘুরে
চলেছি কোথায়? কোন সীমাহীন দূরে?
তুমি মাস্তুলে, আমি দাঁড় টানি ভুলে;
একাকী রাতের þöান জুলমাত হেরি!

রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?
শুধু গাফলতে শুধু খেয়ালের ভুলে,
দরিয়া- অথই ভ্রান্তি- নিয়াছি ভুলে,
আমাদেরি ভুলে পানির কিনারে মুসাফির দল বসি
দেখেছে সভয়ে অস্ত গিয়াছে তাদের সেতারা, শশী।
মোদের খেলায় ধুলায় লুটায়ে পড়ি।
কেটেছে তাদের দুর্ভাগ্যের বিস্বাদ শর্বরী।
সওদাগরের দল মাঝে মোরা ওঠায়েছি আহাজারি,
ঘরে ঘরে ওঠে ক্রন্দনধ্বনি আওয়াজ শুনছি তারি।
ওকি বাতাসের হাহাকার,- ও কি
রোনাজারি ক্ষুধিতের!
ও কি দরিয়ার গর্জন,- ও কি বেদনা মজলুমের!
ও কি ধাতুর পাঁজরায় বাজে মৃত্যুর জয়ভেরী।

পাঞ্জেরি!
জাগো বন্দরে কৈফিয়তের তীব্র ভ্রুকুটি হেরি,
জাগো অগণন ক্ষুধিত মুখের নীরব ভ্রুকুটি হেরি!
দেখ চেয়ে দেখ সূর্য ওঠার কত দেরি, কত দেরি!!
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×