somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাতীয় ঐক্য

১৩ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাঙ্গালীরা – টু বি মোর স্পেসিফিক – বাংলাদেশের বাঙ্গালীরা সব কাজেই দ্বিধা বিভক্ত। কিছু মানুষ একটা জিনিস সমর্থন দিলে বাকিরা দৌড়ে যায় ঠিক বিপরীত দিকটাতে।

জাতীয় স্লোগান কী হওয়া উচিৎ?
১) জয় বাংলা
২) বাংলাদেশ জিন্দাবাদ

স্বাধীনতার ঘোষক কে
(অপশন গুলা আর বললাম না)

ক্ষমতায় কার আশা উচিৎ?
১) চার দল
২) আঠারো দল

কে সবচেয়ে বড় চোর?
১) আওয়ামী লীগ
২) বি,এন,পি,

বিশ্বকাপ ফুটবলে কাকে সমর্থন দেয়া উচিৎ?
১) আর্জেন্টিনা
২) ব্রাজিল
(শহুরে ফুটবল বিশারদ রা অবশ্য ব্যতিক্রম)


তালিকা চলতেই থাকবে… এর কোন শেষ নাই। যখন-ই দেখবেন রাস্তায় কোন দু’জনের একটা ঝগড়া লেগে গেছে উপস্থিত জনতা সাথে সাথে দুই ভাগে ভাগ হয়ে পন্ডিতি করা শুরু করবে (এক্ষেত্রেও অল্প কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া)।

এমনকি, আমার মনে হয় কখনো যদি এই প্রশ্নটিও করা হয়, যে “বাংলাদেশের বাঙ্গালীরা সব কাজেই দ্বিধা বিভক্ত- আপনি এটি মানেন কিনা?” অর্ধেক মানুষ হ্যাঁ বলবে, আর বাকি অর্ধেক না বলবে। বুঝুন অবস্থা! বাঙ্গালীদের একত্র করতে পারে এমন ‘কনসেপ্ট’ আল্লাহর দুনিয়াতে কমই আছে।

এই প্রসঙ্গে আমার এক বন্ধুর এক অভিজ্ঞতা শেয়ার করিঃ

এই বন্ধুটি একটি দুস্টু(!) প্রকৃতির। ঢাকা শহরের ট্রাফিক পুলিশদের সাথে হাতাহাতি করা থেকে শুরু করে সদলবলে প্রতিপক্ষের দৈহিক ও মানসিক ক্ষতিসাধন পর্যন্ত তার কর্মকান্ডের ব্যপ্তী। তার দুষ্টুমি মাঝে মাঝে স্বদেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও বিকশিত হয়।

তো, সে একবার সবান্ধব দুষ্টুমি করতে গেলো থাইল্যান্ডের ব্যাংককে। সারাটাদিন এখানে সেখানে ঘুরে অবশেষে সন্ধ্যায় গিয়ে ঢুকল একটা পানশালায়। সেখানেও তার দুষ্টুমি অব্যাহত। সেটা একটা ‘নো স্মোকিং জোন’ হওয়ায় এক বাউন্সার এসে বারকয়েক তাকে ধূমপান করতে নিষেধ করে এবং যথারীতি সে কোন রকম গুরুত্ব না দিয়ে আপন আনন্দে বিদ্যমান থাকে।

কয়েক পেগের পর সে কিছুটা ভারসাম্যহীন, এরকম এক পর্যায়ে বাউন্সার এসে তাকে দিলো এক ধাক্কা। প্রচুর অভিজ্ঞতা থাকায় বন্ধুটি জানে যে কখন হাত পা চালাতে হয় আর কখন মুখ। তো, সাড়ে ছয় ফুট লম্বা নাক চ্যাপ্টা বডিবিল্ডার মুর্তিমান থাই দানবের সামনে পড়ে দ্বিতীয় অপশনটাই তার বেশি পছন্দ হোল। কি আর করা? ঢাকা হলে না হয় ১৫ মিনিটের নোটিসে দশ-বারো জন জোগার করে পালটা জবাব দেয়া যেত, কিন্তু শ্যামদেশে আর আপন জন পাবে কই? সাথে থাকা সহচরেরা আবার এই বন্ধুটির তুলনায় নিতান্তই অ্যামেচার , তাদের কাছ থেকে বিশেষ সহযোগিতার আশা করা মূর্খামি।

তো, যাই হোক। সে শরীরের সবটুকু শক্তি একত্র করে চিৎকার করে গালি দিয়ে উঠলোঃ- “**কির *লা!”

হঠাৎ করে সবাই চুপ – মৃদু গুঞ্জন বন্ধ। হালকা লয়ে বাজতে থাকা মিউজিক যেন প্রকট হয়ে উঠলো। এমনকি, নাচের ফ্লোরের সবাই-ও যেন স্ট্যাচু। কী ব্যাপার! আমার সে বন্ধু এবং তার সঙ্গী-সাথীরা পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে মানে মানে কেটে পড়ার তাল করছে, এমন সময় দূরের একটা টেবিল থেকে শোনা গেলঃ “কী হইসে ভাই? বেদ্দপী করসে?”

তারপর সে এক ইতিহাস।

মুহুর্তের মধ্যে বিশ-পঁচিশ জন জড়ো হয়ে গেলো।
“কী হইসে? কী হইসে?” …
“হারামজাদার সাহস কত?” …
“আপনার গায়ে হাত তুলসে নাকি?” …
“এক্ষন ফাটায়া লামু” …

আসল ঘটনা হোল কী – ঐ পানশালায় অনেক বাঙ্গালী ছিল। এই বিশেষ গালি শুনে আর আর কারো বুঝতে বাকি নেই যে চিৎকারটা করেছে সে আর কেউ নয়, তাদেরই প্রিয় স্বদেশী – খাঁটি বঙ্গদেশীয় বাঙ্গালী। তা ছাড়া এই মহিমান্বিত গালি সারা দুনিয়ায় আর কে দিতে পারে? পশ্চিমের দাদারা কি আর এতো স্মার্ট?

‘একতাই বল’ বলে একটা কথা আছে – এর সত্যতা ঐ থাই ব্যাটারা উপলব্ধি করলো। এর মধ্যে উৎসাহী জনতার মুখে গালির ফুলঝুরি ফুটছে। কয়েকজন অতি উৎসাহে একসাথে সিগারেট ধরিয়ে ফেললো – একটা দু’টো লাথিও চললো সামনে থাকা টেবিল গুলো টার্গেট করে। যাচ্ছেতাই অবস্থা! পরে ম্যানেজার এসে হাতজোর করে ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংলিশে মাপটাপ চেয়ে কোনমতে সামাল দেয়ায় আমার বন্ধু তার সঙ্গী-সাথী সহ সসম্মানে ঘটনাস্থল ত্যাগ করলো।

আমি অভিজ্ঞতাটা শুনে বললাম, “হায়রে বাঙ্গালী, জয় বাংলা – বাংলাদেশ জিন্দাবাদ দিয়ে তোগো এক করা যায় না… অবশেষে “**কির *লা শুনে এক হলি?

প্রথম প্রশ্নে ফিরে যাই – বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান কী হওয়া উচিৎ?
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

সততা হলে প্রতারণার ফাঁদ হতে পারে

লিখেছেন মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম নাদিম, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৯

বিষয়টি আমার ভালো লেগেছে। ক্রেতাদের মনে যে প্রশ্নগুলো থাকা উচিত:

(১) ওজন মাপার যন্ত্র কী ঠিক আছে?
(২) মিষ্টির মান কেমন?
(৩) মিষ্টি পূর্বের দামের সাথে এখনের দামের পার্থক্য কত?
(৪) এই দোকানে এতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০, কিংবা ২/১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, বুঝবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



আপনার পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, তখন খোঁজ নিলে দেখবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

কোন বিষয়ের উপর অনেক মানসম্পন্ন পোষ্ট লিখলেও সামুতে আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×