somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রিয়তম নবী ( তাঁর উপর দরুদ অবিরত )

১৩ ই অক্টোবর, ২০১১ রাত ১০:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানবতার মুক্তিদূত সৃষ্টিকুলের প্রথম সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল হযরত মুহাম্মাদ ( তাঁর উপর দরূদ অবিরত ) কবিদের খুব ভালোবাসতেন । নবুয়তের গুরুদায়িত্ব পালনের ফাঁকে ফাঁকে তিনি সাহাবী-কবিদের কবিতা শুনতে আগ্রহ প্রকাশ করতেন । তাঁদেরকে উৎসাহ দিতেন ,পুরস্কৃত করতেন , পরামর্শ দিতেন । আলোচনা ও বক্তৃতায় তাদের কবিতা উদ্বৃতি করতেন । বিভিন্ন সময় কবি ও কবিতা সম্পর্কে জ্ঞানগর্ভ মন্তব্য করেছেন ।

ইসলামের প্রাথমিক যুগে কাফির -মুশরিকরা ইসলামের বিরোধিতায় কবি ও কবিতাকে ব্যাপকভাবে ব্যাবহার শুরু করে । এ অবস্থায় রাসুলুল্লাহ ( তাঁর উপর দরূদ অবিরত ) ইসলাম ও ইসলামের নবী ( তাঁর উপর দরূদ অবিরত ) এর সপক্ষে কবিতা রচনায় এগিয়ে আসার জন্য সাহাবী কবিবৃন্দদের আহবান জানান এবং বলেন " এ তো অনস্কীকার্য " আল্লাহ র রাসুলের হেফাযত করার জন্যে অস্র হাতে নিয়ে তোমরা অতন্র প্রহরী হয়ে কাজ করছো , কলমের ভাষা দিয়ে তাঁকে আজ হিফাযত করার সময় এসে গেছে । কে আছ তীক্ষ্ণ মসীর আঁচড় নিয়ে এগিয়ে আসবে ? রাসুলুল্লাহ ( তাঁর উপর দরূদ অবিরত ) -এর এ আহবানে সাহাবী কবি হযরত হাসৃসান বিন সাবিত (রা.) কাব বিন মালিক ( রা.) আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা (রা.) প্রমুখ কবিতার জিহাদে শবীক হন এবং রাসুলুল্লাহ (তাঁর উপর দরূদ অবিরত) -এর সর্বক্ষণের সন্গী হিসেবে আমৃত্যু ইসলামের খেদমতে নিজেদের নিয়োজিত রাখেন
রাসুলু্ল্লাহ (তাঁর উপর দরূদ অবিরত ) এর জিবদ্দশায় সাহাবী-কবিবৃন্দ কাফির -মুশরিকদের জবাব প্রদানের কাজে কবিতা ব্যবহ্রত হতো। মক্কা বিজয়ের পর ইসলাম যখন বিজয়ীর বেশে দিক -দিগন্তব্যাপী বিস্তৃতি লাভ করতে থাকে ,তখন রাসুল ( তাঁর উপর দরূদ অবিরত ) শাঁনে কবিতা লেখা একটি স্বতন্র ধারা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে

পরবর্তীকালে আরবী ভাষার সিমানা ছাড়িয়ে ফারসী-উর্দু-বাংলা-হিন্দি-ইংরেজি- স্পেনিস- ফরাসিশ দুনিয়ার সকল সেরা ভাষায় মহানবী ( তাঁর উপর দরূদ অবিরত ) এর শাঁণে কবিতা লেখার ধারা অব্যাহত থাকে । এ ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার স্হানও উল্লেখযোগ্য।
বাংলাভাষা ও সাহিত্যের উন্নয়ন ও সমৃদ্বিকরণে মুসলিম শাসকদের অবদান অনস্বীকার্য । তাঁদের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা ভাষা ইসলামি মেজাজ তথা কবি নজরুলের ভাষায় 'মুসনমানী ঢং' লাভ করে । ফলে বিস্বনবী ( তাঁর উপর দরূদ অবিরত ) ও ক্রমে বাংলা কবিতার এক অপবিহার্য বিষয় হয়ে উঠে ।
মধ্যযুগ থেকে পদ্যে-গদ্যে মহানবী ( তাঁর উপর দরূদ অবিরত ) এর জিবন চর্চা মুসলিম কবি সাহিত্যিকদের জন্য এক আত্বতৃপ্তির বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে । এ ধারা আজও অব্যাহত রয়েছে এবং ক্রমে তা বৃদ্বি পাচ্ছে। বাংলা সাহিত্যের প্রায় সকল কবিই জিবনে অন্তত একটি হলেও বিশ্বনবী মুহাম্মদ মুসতফা ( তাঁর উপর দরূদ অবিরত ) শাঁনে কবিতা রচনার সৌভাগ্য অর্জন করেছে ।

না'তে রাসুল ( তাঁর উপর দরূদ অবিরত ) বা রাসুলের শাঁনের ধারাটি আজ সমগ্র বিশ্বসাহিত্যে ,বিশেষত বাংলা -উর্দু-ফার্সী -আরবী প্রভৃতি মুসলিম অধ্যুষিত ভাষার এক স্বতন্র ও মর্যাদাবান ধারা । আর এর সুচনা পর্বটির সুচনা ঘটে চইত্তাকর্ষন ও হ্নদয়গ্রাহী এক গটনার মধ্য দিয়ে ।

তৎকালীন আরবের সাব'আ মুয়াল্লাকার কবি যুহায়র ইবনে আবি সুলমা'র পুত্র কা'ব বিন যুহায়রও পিতার মতোই কাব্য প্রতিভার অধিকারী ছিলেন । তিনি তাঁর এই প্রতিভা ওজস্বিতা ও উত্তাধিকারকে ইসলাম ও ইসলামের নবী মুহাম্মদ ( তাঁর উপর দরূদ অবিরত ) এর বিপক্ষে সর্বাত্নকভাবে নিয়োজিত করেন ।ফলে মক্কা বিজয়ের পর যে দশজন কুখ্যাত কাফেরের মৃত্যুদন্ড ঘোষিত হয় তার মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম ।
এক সময় হাবিবে রাব্বুল আলামীন এর প্রতি তাঁর অনুরাগ সৃষ্টি হলে তিনি নিজেকে রাসুল ( তাঁর উপর দরূদ অবিরত ) এর পদপ্রান্তে নিবেদন করার সিদ্বান্ত গ্রহন করেন এবং এজন্য সাওগাত স্বরূপ রচনা করেন এক সুদীর্ঘ কবিতা ---বানাত সু'আদ ।
'' উন্‌ বি'তু আন্না রাসুল্লালাহি আও'আদানি
ওল আগঊ ইন্‌দা রাসুল্লুলাহি মা'মুলু......।
অর্থাৎ --বার্তা পেলাম আমার পরে রূষ্ট নাকি শ্রেষ্ট রসুল ( তাঁর উপর দরূদ অবিরত )
ভয় কি তাতে এই জগতে সত্যি তিনি ক্ষমায় অতুল
চিত্তে আশা ভিক্ষে পাব সেই সাগরের বিন্দু বারি
হাজার পাপী আশেষ ভুলে পায় যে ক্ষমা নিত্য তারি....।

মদিনা মনোয়ারায় উপস্থিত হয়ে কা'ব বিন যুহায়র রাসুল ( তাঁর উপর দরূদ অবিরত ) এর সমীপে নিজ কৃতকর্মের জন্য ক্ষমাপ্রার্থি হয়ে এ কবিতা নিবেদন করলে বিশ্বনবী ( তাঁর উপর দরূদ অবিরত ) তাঁকে ক্ষমা প্রদর্শন করেন এবং আপন ডোরাকাটা চাদর খুলে তাঁকে পরিয়ে দেন । আর এভাবে সুচনাঘটে হুজুর রাহ্‌মাতুল্লিল আলামীন নবীর প্রেমিক দের ক্ষমা ও ভালোবাসার এক সুবর্ন ধারা।
রাব্বুল আলামীন তাঁর ফেরেস্তাদের নিয়ে হুজুর রাহমাতুল্লিল আলামীন এর প্রশংশা করেন অনবরত ।রাসুলের শাঁন মালা প্রশস্তি গেয়ে তাঁর ঘনিষ্ঠ সাহাবী ও তৎকালিন যুগের প্রায় সকল কবিই কবিতা লিখেছেন ।

রাসুল নাতের এ ধারা টি আরবী সাহিত্যে আরও বিকশিত হয় তাঁর ইন্তেকালের পর । রাসুল তনয়া হযরত ফাতেমাতুয যাহরা ( রা.) রাসুল ( তাঁর উপর দরূদ অবিরত ) এর ইন্তেকালের পর যে এলেজি বা শোঁকগাথা রচনা করেন তা আজও যে কোন পাঠকের মর্মমুল স্পর্শ করে ;
--যে কেউ সুঘ্রাণ নেয় নবীর মাযারে একবারে
লাগবেনা ভালো তাঁর পৃথিবীর কোন ঘ্রাণ আর ..।
আথবা
আমার হ্নদয়ে আজ অন্ধকার
কণাঁ মাত্র তাঁর
পড়তো যদি এ বিশ্বে যদি
আলো বলে কিছু থাকতো না আর...।

সাইরুন নাবী বা নবীর কবি বলে খ্যাত কবি-সাহাবী হযরত হাসসান বিন সাবেত (রা.) এর এ রাসুল শাঁনে নাত উল্লেখযোগ্য ও বিশ্বখ্যাত ;
---" তোমার চোখের মত ভালো চোখ পৃথিবীতে নেই
এবং তোমার মাতা এমন সুন্দর পুত্র আর প্রসব করেনি এই পৃথিবীর বুকে ..."

হযরত হাসসান বিন সাবেত এর জন্য নবী করিম ( তাঁর উপর দরূদ অবিরত ) মাসজিদে নববীতে একটি কাঠের মিম্বার বানিয়ে দিয়েছিলেন যাতে তিনি সেখানে বসে নাত তিলাওয়াত করতে পারেন । কিন্তূ হযরাত হাসসান বিন সাবেত জিবনে কখন নবির শাঁনে নাত ঐ মিন্বারে বসে পড়েন নাই তিনি মহানবির শাঁন চির দিন দারিয়েই শুনিয়েছেন হুজুরে কারিম কে ।

তাই প্রিয় বন্ধু রা এসো সে নবীর শাঁনগাথা মালা জপি মনে প্রানে লিখি যার শাঁন আজ আমরাও যাঁর শাঁন মালা দুরুদ শরিফ সয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর প্রিয় ফিরেশতা গন কে নিয়ে পড়ে থাকেন সেই প্রিয় মহা নবী যিনি তাঁর উম্মতের জন্য খুব মায়া এতো দরদী আমাদের প্রিয় নবীর প্রেমে গেয়ে উঠি

---হে নবী আপনাকে সালাম
বংশধর আসসাহাবো তামাম
মুহাম্মদ তব মধুর নাম
সেই নামে উজালা জাহান ...

নিস্চই এই কর্মের উছিলায় আমরা তাঁর ভালোবাসা অর্জন করতে পারবো আমরা প্রানের নবী ( তাঁর উপর দরূদ অবিরত) প্রান প্রিয় উম্মত হতে পারবো ।

ওমা তাওফিক ইল্লাহ বিল্লাহ ...
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ফাঁদ (The Middle Class Trap): স্বপ্ন না বাস্তবতা?

লিখেছেন মি. বিকেল, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:৪৫



বাংলাদেশে মধ্যবিত্ত কারা? এই প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে কিছু রিসার্চ এবং বিআইডিএস (BIDS) এর দেওয়া তথ্য মতে, যে পরিবারের ৪ জন সদস্য আছে এবং তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রোফেসরদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন সমবায়ের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন করি : প্রধানমন্ত্রী

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১২ ই মে, ২০২৪ ভোর ৪:১০



বিগত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নিজ সংসদীয় এলাকায় সর্বসাধারনের মাঝে বক্তব্য প্রদান কালে উক্ত আহব্বান করেন ।
আমি নিজেও বিশ্বাস করি এই ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক ।
তিনি প্রত্যন্ত অন্চলের দাড়িয়ারকুল গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×