somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মনে করেছিলাম ৫ই মে,২০১৩ তারিখের পর ১০/১২ দিন মতিঝিল দিয়া হাটা-চলা-ফেরা করতে পারবো না

০৯ ই মে, ২০১৩ বিকাল ৫:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভাবছিলাম ৫ ই মে, ২০১৩ তারিখের পর ১০/১২ দিন মতিঝিল দিয়া হাটা-চলা-ফেরা করতে পারবো না । এত এত লোক মারা গেল তাদের স্বজনরা এসে যদি মতিঝিলে ভিড় জমায় তখন আমরা কিভাবে হাটবো, কিভাবে অফিস করবো ব্যাপারটা নিয়ে সামান্য চিন্তা ছিলো । আমাকে ক্ষমা করবেন, আমি উল্ল্যেখ করতে চাইছিলাম না, সাভারে যেমন হাজার হাজার স্বজনদের ভিড়ে উদ্ধার কাজ ব্যহত হয়েছিলো । স্বজনদের দূঘর্টনাস্থল থেকে দূরে রাখার জন্য উদ্ধার কাজে নিয়োজিত সংস্থা সমূহকে অনেক বেগ পোহাইতে হয়েছিল । সেই তুলনায় শাপলা চত্বরে মৃতের সংখ্যা তিনগুন বেশী হলে স্বজনদের সংখ্যাও তিনগুন বেশী হইতে পারতো । কিন্তু গত তিন দিনে মতিঝিলে আমি একজন স্বজনকেও কাঁদতে দেখিনি । ৪০০ থেকে ২৫০০ মানুষ মারা গেল তাদের কোন আত্বীয় স্বজন নাই । কেউ আসলো না একটা খোজ খবর নিতে । অথচ যাদের কিছুই লাগে না তাদের যেন নাওয়া খাওয়াও বন্ধ হয়ে আছে । টেলিভিশনে দেখি যাদের কিছু লাগে না তারাই বেশী বেশী করে কাঁদতেছে আর সংবাদ সম্মেলন করতেছে । ৪০০ থেকে ২৫০০ মানুষ মারা গেল । লাশগুলি কোথায় গেল ? লাশগুলি কি হাওয়া হয়ে গেল ? ১০ মিনিটে লাঠি দিয়া বাইড়াইয়া খেদাইতে সময় লাগে নাই, পুলিশ গুলি করলো কখন ? যাদেরকে মারলো তাদের কেউ কিছু বলতে আসে নাই কিন্তু মাসীরা কাইন্দা বুক ভাষাইয়া ফালাইতাছে, তা'দের চোঁখের পানি থামতেই চায় না । 
যুক্তির কারনে যদি ধরে নেই, যে লোকটার শরীরে গুলি লেগে মারা গেল তার সাথের লোকটা অবশ্যই দেখতো । সেই লোকটিও এই তিন দিনের মধ্যে দাবী করলো না আমার সাথের জনকে পুলিশ গুলি করে মেরে ফেলেছে । হেফাজতে ইসলামের একটা লোকও আনুষ্ঠানিক ভাবে  আজ পযর্ন্ত বললো না যে, আমাদের ৪০০ নেতা কমীর্ উধাও বা মারা গেছে । রাজনৈতিকভাবে আওয়ামীলীগকে হেয় করতে গিয়ে সম্পূণর্ দেশটাকে পাকিস্তান আর তালেবানের মত জঙ্গীরাষ্ট্রের লেবাসটা পাকা পোক্তভাবে লাগিয়ে দিতে হবে । নামী দামী আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলি কিছু দিন যাবৎ বাংলাদেশকে নিয়ে এমনটাই প্রচার চালাচ্ছে । কেন রাজনীতিবিদদের জন্য আমাদের সাধারন জনগন বিদেশে গিয়ে জঙ্গী ক্যাটাগরি দেশের নাগরীক হওয়ার অপরাধে বিভিন্ন ধরনের হয়ড়রানীর স্বীকার হতে হবে ? যারা বিদেশে আছে তারা দেশে টাকা পাঠিয়ে দেশের রিজাভর্ বাড়ায় না ? একজন বা একাধীক জনের ইচ্ছার উপর নিভর্র করবে আমদের তালেবান জঙ্গী ক্যাটাগরি ষ্ট্যাটাস নিয়ে বিদেশে বসবাস করা । এটাতো দেশের বিড়াট ক্ষতি । ক্ষতিটা করলো রাজনীতিবিদগন । তাদের অপরাধ বিচার বিভাগের নজরে পড়ে না । যা খুশী তা করার অনুমতি দেশের জনগন অবশ্যই দেয় নাই । দিয়ে থাকলেও নৈতিকতার ধার রাজনীতিবিদগন কি ধারবেন না । দেশটাকে নিয়ে এমন খেলা বন্ধ হওয়া উচীৎ ।  কোন ব্যাক্তি বা কোন গোষ্ঠির কারনে যদি বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সুনাম ক্ষুন্য হয় তবে তাকে দেশদ্রোহী হয়েই বাঁচতে হবে । বতর্মান প্রজন্মকে আপনারা রাজনীতির পৃষ্ঠপোষকেরা মনে করবেন না যে ওরা বুঝি  ১৯৭২পরবতির্ প্রজন্মের ন্যয় সহজ সড়ল এবং দেশটাকে আবেগের অনুভতি দিয়ে ভালবাসে,তাদেরকে যা খুশী বুঝাতে পেরেছিলেন । বতর্মান প্রজন্মকে সম্ভবত সেই ক্যাটগড়িতে ফেলে রাজনীতি করা সহজ হবে না । এরা দেশটার চেয়ে বেশী দেশের ইতিহাসটাকে ভালবাসে । কেউ আর একবারও চেষ্টা করে দেখুন কোন একটা ইতিহাস বদলাতে পারেন কি না, পারবেন না । দেশের ইতিহাসটা আগামীতে এমন করেই লেখা হবে । কারন আজ থেকে ৫০ বৎসর পরও আজ ৮ই মে, ২০১৩ তারিখের প্রত্যেকটা পত্রিকার প্রত্যেকটা পাতা ইন্টারনেটে পাওয়া যাবে । নতুন প্রজন্ম আমাদের মত গত ২০ বৎসর বোডর্ের বই পড়ে পড়ে আর পরিবতর্িত ইতিহাস জানবে না । তারা অনলাইন থেকে সকল তথ্য খুজে নিবে । সেখানে সকল সঠিক তথ্য সংরক্ষিত আছে এবং আগামীতেও থাকবে । যদি কেউ দূই চারশ সাইট থেকে ওয়েব ভাসর্ন মূছেও ফেলে তার পরেও অনলাইনে আরও কয়েক হাজার ওয়েব ভাসর্ন থেকে যাবে । কেন বারে বারে রাজনৈতিক প্রয়োজনে ইতিহাস বদলাইয়া ফেলিতে হইবে । যে জাতী তার ইতিহাস বদলায় সেই জাতী তার নিজের অস্তিত্ব ক্ষণস্থায়ী করে যাতে অন্য কেউ এসে আমাদের ইতিহাসে তাদের অস্তিত্বকে মিশ্রীত করতে পারে ।
শাপলা চত্বরে মৃতদের নিকটাত্বীয়গন ভীড় না জমাবার আরেকটি কারন থাকতে পারে । হেফাজতে ইসলামের লোকেরাতো বাড়ি থেকে একবারে বিদায় নিয়ে চলে আসে । বাবা-মায়ের কাছ থেকে চীর বিদায় নিবে ইসলামের যুদ্ধে যাইতেছি,  কয়েকটা কোরান শরীফ পুড়বো, জায়নামাজ পুড়বো, টুপি পুড়বো তারপর কয়েকটা পুলিশ মারবো আর মসজিদে আগুন দিবো । পুলিশকে মারলে পুলিশতো আমাদের আদর করবে না । পুলিশ পাল্টা গুলি করতে পারে । যদি পুলিশের গুলিতে মারা যাই তবে মা বাবা তোমাদের দোহাই লাগে তোমরা কাঁদবে না । আমার জন্য কাঁদবার অনেক লোক রেখে গেলাম, তারাই আমার জন্য কাঁদবে । ইসলাম ধমর্ের নামে যত কিছু করা হউক না কেন সব যায়েজ হয়ে যায় । আলেম ওলামা সাহেবরা বলেছেন মরে গেলে আমি সোজা বেহেস্ত চলে যাবো । তোমরা থাকবে নো টেনশন । কোথাও খোজ করতে যাবে না । 
                  শাপলা চত্বরের ঘটনার বেনিফিট যে যেদিক দিয়ে পারতেছে সে দিক দিয়েই নিতেছে । যেন নতুন নতুন রাজনীতিতে নামছে বিভিন্ন টেলিভিশনের চ্যানেলগুলি । ওরাও রাজনীতিবিদদের মত করে ভাবতে শুরু করেছে যেন ওদের রাষ্ট্রের প্রতি কোন দ্বায়ীত্ব নাই । এমন চ্যানেলগুলি বন্ধ করার জন্য হাইকোটর্ থেকে স্বপ্রনদিত হয়ে কোন আইনজীবি কিংবা প্রতিষ্ঠান যদি সূ্যয়োমট রুলের পদক্ষেপ গ্রহন করেন তবে রাষ্ট্রের মানুষগুলি তাদের প্রতি চীর কৃতজ্ঞ থাকিবে । যেই সব চ্যানেলের লাইভ কভারেজের টিম অপারেশন চলার সময় যৌথ বাহীনির সাথে ছিলো কিন্তু লাইভ টেলিকাষ্ট করে নাই, ঘটনার প্রত্যক্ষদশীর্ এবং ক্যামেরায় চিত্রগ্রহন ঠিকই করেছিলো(সংবাদ প্রচারের সময় বুঝা গেছে) তারাই আবার টকশোর নামে অনুষ্ঠান করে বিভিন্ন জনকে প্রশ্ন করে, শাপলা চত্বরে ৫ই মে,২০১৩ রাত্রে হেফাজতে ইসলাম-র সমাবেশ স্থল খালি করাবার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহীনির ভুমিকা নিয়ে আপনার অনুভুতি কি । এর মানে কি ? সমাজের প্রতি তাদের কোন দ্বিয়ীত্ব নাই । তারা কেউ কি বলতে পারে না যে, সরকারী ভাবে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং তার বাইরে আমাদের রিপোর্টারদের ক্যামেরায় কোন প্রকার মৃত ব্যাক্তি বা মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি । তাদেরতো আর জনপ্রতি ৩০ হাজার টাকা করে দিতে হবে না যে, মৃতের সংখ্যা কম কম দেখালে সরকারী কোষাগার হইতে কোটি কোটি টাকা দাফন কাফনের জন্য দিতে হবে । যারা মারা গিয়েছিলো তারাতো বাংলাদেশেরই নাগরীক । আর যদি সত্যি সত্যি মারা যেত তারাও বাংলাদেশ থেকেই মারা যেত । তাহলে তাদের চ্যানেলের মাধ্যমে বলতে সমস্যা কোথায় ? চ্যানেলের পারমিশন দেশ ও জনগনের কল্যানের জন্য দেয়া হয়েছিলো, দেশ ভাগ করার জন্য দেয়া হয় নাই যে, টকশোতে প্রশ্ন করতে হবে (ভাবখানা এমন যে আমি উপস্থিত ছিলাম আমি কিছু জানি না, আপনি উপস্থিত ছিলেন না তবুও ৪০০ জন না ২৫০০ জন আপনি সব জানেন) আপনার অনুভূতি কি ? এর মানে হলো বিএনপির নেতার উত্তরটা বিএনপির সব সমথর্ককে বিশ্বাস করতে অনুপ্রানিত করবে আর আওয়ামীলীগ নেতা হলে সকল আওয়ামীলীগ সমর্থকদের বিশ্বাস করতে অনুপ্রানিত করবে । সোজা কথা এ জাতীয় স্পশর্কাতর বিষয় টকশোতে আলোচিত হওয়ার কারনেই দেশের মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করবে । কেউই যেহতু সত্যটা শুনতে চায় না বা জানতে চায় না তাহলে চ্যানেলগুলি উদ্দে্যগটা নিতে সমস্যা কোথায় । দেশের মানুষ সত্যটা জানুক ।
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×