somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্ব ব্যাংকের দুনীতির অভিযোগের বাউন্সারে প্রধানমন্ত্রী ছক্কা পেটালেন

১১ ই অক্টোবর, ২০১১ দুপুর ১:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছে এবং এ বিষয়ে স্বচ্ছতা প্রমাণ না করা পর্যন্ত অর্থায়ন করা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দাবি করা নির্দোষ, দুর্নীতিমুক্ত ও স্মার্ট সরকারের প্রতি বিশ্ব ব্যাংক সরাসারি দুর্নীতি ও জালিয়াতির কালিমা লেপন করে দিয়েছে। যেদিন এই খবর প্রকাশিত হয়েছে, ঠিক সেদিনই প্রধানমন্ত্রী আবারও সরকারকে নির্দোষ দাবি করেছেন, দুর্নীতির দূরতম সম্ভাবনাকেও তিনি নাকচ করে দিয়েছেন। যাকে বলে, বাউন্স বলে হুক করে ছয় মেরে দেওয়া। প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব ব্যাংকের অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছেন। বলেছেন,
বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ আমার কাছে ধোয়াচে মনে হয়। এমন অভিযোগ স্পষ্ট নয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুর কাজই শুরু হয়নি। এখানে দুর্নীতির প্রশ্ন আসবে কেন? তিনি বলেন, আমাদের পর্যায়ে দুর্নীতি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে কোনো দুর্নীতি হয়নি। সরকার কেবল পদ্মা সেতু প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ করেছে। আর বিশ্বব্যাংকই বলেছে ভূমি অধিগ্রহণে কোনো ধরনের দুর্নীতি বা অনিয়ম হয়নি।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন
লিংক: Click This Link

সাধারণভাবে কারোও বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে সেটা তদন্ত করে দেখা হয়; কমপক্ষে তদন্ত হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়। এতে অভিযোগকারী কিছুটা হলেও আশ্বস্ত হয়। কিন্তু এখানে ব্যাপারটা উল্টো। অভিযোগকে আমলে না নিয়ে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা হল। এতে বোঝা যায়, দুর্নীতি হয়েছে কি হয়নি তা খতিয়ে দেখার সাহসও সরকারের নেই। আমি আশা করেছিলাম, এ ব্যাপারে অন্য কোন মন্ত্রী, উপদেষ্টা বা সচিব পর্যায়ের কেউ প্রথমে বিবৃতি দেবেন। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত হওয়ার মত কোন বিবৃতি দেবেন। কিন্তু কিসের কী? প্রথমেই প্রধানমন্ত্রী সব কিছুর ইতি টেনে দিলেন। তবে দুর্নীতি হয়নি দাবি করা হলেও পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালককে বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দাবি যদি সত্যি হয় যে সরকারের পক্ষ থেকে কোন দুর্নীতি হয়নি, তাহলে খামাখা প্রকল্প পরিচালককে বরখাস্ত করা হল কেন? প্রথম আলো লিখেছে যে, সেতু তৈরি শুরুর আগেই জমি অধিগ্রহণ, বেতন-ভাতা এবং গাড়ি কেনায় ১০২১ কোটি টাকা খরচ হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী জনগণকে আশ্বস্ত করতে না পারলেও মন্ত্রী, উপদেষ্টা এবং সংশ্লিষ্টদেরকে ভালভাবেই আশ্বস্ত করতে পেরেছেন।

মন্ত্রী, উপদেষ্টা এবং সংশ্লিষ্টদেরকে আশ্বস্ত করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আরোও একটি কৌশল বাতলে দিয়েছেন। মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে খবর প্রকাশ করলেই সংশ্লিষ্ট সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। অর্থাৎ সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার প্রেক্ষিতে সরকার আরোও হার্ড লাইনে চলে গেছে। পদ্মা সেতু প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়া দেশের মানুষের জন্য একটি বিশাল হতাশাজনক ব্যাপার। এ সময়ে সংবাদ মাধ্যমের দায়িত্ব হল অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে দুর্নীতির খবর জনগণকে জানানো। আর এ রকম আশংকা থেকেই সম্ভবত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রী, উপদেষ্টা এবং নেতানেত্রীদেরকে সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে উষ্কে দিলেন। এটা কোনভাবেই কাম্য নয়। এমনিতেই নাচুনি বুড়ি, তার উপর ঢাকের বাড়ি। এমনিতেই মামলাবাজ সরকার, তার উপর প্রধানমন্ত্রীর আশকারা। কী যে হবে, কে জানে!

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার সরকার কতটা স্মার্ট বা সৎ তা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নাই। আমাদের প্রশ্ন হল, পদ্মা সেতু প্রকল্প কেন বন্ধ হয়ে গেল? এটি কবে চালু হবে? ঘটনা ঘটলে তার কারণ থাকবেই। আমরা সে কারণ জানতে চাই। একের পর এক ব্যর্থতা যুক্ত হচ্ছে আমাদের জীবনে। কেন আমাদেরকে এত সব ব্যর্থতা সইতে হবে? এত সব ব্যর্থতার পরও মন্ত্রী, উপদেষ্টারা সৎ এবং স্মার্ট কীভাবে থাকে? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার কাছে সততা এবং স্মার্টনেসের সংজ্ঞা কী তা খুবই জানতে ইচ্ছে করে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আল্লাহর দোহাই আপনাকে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার জন্য বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছে এ জাতীয় কোন বিবৃতি দিয়েন না।

প্রথম আলোর খবরের লিংক:
Click This Link
৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাকা ভাংতি করার মেশিন দরকার

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:১০

চলুন আজকে একটা সমস্যার কথা বলি৷ একটা সময় মানুষের মধ্যে আন্তরিকতা ছিল৷ চাইলেই টাকা ভাংতি পাওয়া যেতো৷ এখন কেউ টাকা ভাংতি দিতে চায়না৷ কারো হাতে অনেক খুচরা টাকা দেখছেন৷ তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেলা ব‌য়ে যায়

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩০


সূর্যটা বল‌ছে সকাল
অথছ আমার সন্ধ্যা
টের পেলামনা ক‌বে কখন
ফু‌টে‌ছে রজনীগন্ধ্যা।

বাতা‌সে ক‌বে মি‌লি‌য়ে গে‌ছে
গোলাপ গোলাপ গন্ধ
ছু‌টে‌ছি কেবল ছু‌টে‌ছি কোথায়?
পথ হা‌রি‌য়ে অন্ধ।

সূর্যটা কাল উঠ‌বে আবার
আবা‌রো হ‌বে সকাল
পাকা চু‌ল ধবল সকলি
দেখ‌ছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:১৪


কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়
আমার বাবা-কাকারা সর্বমোট সাত ভাই, আর ফুফু দুইজন। সবমিলিয়ে নয়জন। একজন নাকি জন্মের পর মারা গিয়েছেন। এ কথা বলাই বাহুল্য যে, আমার পিতামহ কামেল লোক ছিলেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×